নাইন-টেনে মনে হয় জহির রায়হানের এই লেখাটা ছিল। আজকে সুমনের লেখা পড়ে ঐ শিরোনামটা আবার মনে পড়ল। সুমনের লেখা আর ঐখানে সবার নৈরাশ্ববাদী মন্তব্য দেখে বিশেষ করে। জহির রায়হানের ঐ গল্পটাতে ছিল এক মুক্তিযোদ্ধা বোঝার চেষ্টা করছে কেন তারা যুদ্ধ এসেছে, শেষমেশ উত্তরটা ছিল, আদর্শের চেয়েও বড় কারন সময়ের প্রয়োজন। আসলেও তাই। ঘটনার পাত্র-পাত্রীর আড়ালে আমরা প্রায়ই ঘটনার inevitabilityকে হারিয়ে ফেলি। যেমন আইনস্টাইন না জন্মালে কি আপেক্ষিক তত্ত্ব আবিস্কার হতো না? অবশ্যই হতো। কেউ না কেউ ঠিক ঐসময়ের আশে পাশেই করে ফেলত। কারন বিংশ শতাব্দির শুরুতে পদার্থবিজ্ঞান প্রস্তুত হয়ে ছিল আপেক্ষিক তত্ত্বের জন্য। ঠিক সে রকম বিভিন্ন রাজনৈতিক ঘটনার জন্য এক দুজন পাত্র পাত্রীকে ঘটনার পটভুমির চেয়ে গুরুত্বদিয়ে বসি। বঙ্গবন্ধু না থাকলে কি বাংলাদেশ স্বাধীন হতো না? আমরা এখনও পাকিস্তানের সাথে থাকতাম? নাহ। ৭১ এ হতো না হয়তো, ৭২ এ হতো, নাইলে ৭৫ এ হতো, নাহলে জিয়াউল হক আসার আগে অবশ্যই হতো। আবার একই ভাবে সামরিক শাসক জিয়াকে যারা ত্রানকর্তা ভাবেন তারা মানতে চান না যে জিয়া কেবল ঘটনা চক্রের সংঘটন। মেডিকেল কলেজে চান্স না পেয়ে জিয়া আর্মিতে গেলেন, এর সেখান থেকে রাষ্ট্রনায়ক। সেই সময় মেডিকেলে চান্স পেলে জিয়া থাকতেন স্রেফ ডাক্তার, ঐটাই তার লক্ষ্য ছিল। খালেদা জিয়া তখনও তার স্ত্রীই হতেন হয়তো, কিন্তু প্রধানমন্ত্রী হতেন না।
তাড়াতাড়ি শেষ করি তাহলে। সেরকম আজকের বাংলাদেশের যাদেরকে পর্দার আড়ালের চালক বলে মনে হচ্ছে তারাও আমার মনে হয় না স্রেফ পরিস্থিতির শিকারের বাইরের কিছু। এবং একই সাথে তারা নিজেদের ব্যাক্তিগত কোন এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে পারবেন (যদি থেকে থাকে) এটা মনে হয় না। বিশ্বটা এবং বাংলাদেশ অনেক বদলে গেছে, আর বাংলাদেশের লোকের গনতন্ত্রে বদ অভ্যাস হয়ে গেছে। এই অভ্যাস ছাড়ানো সহজ নয়। একবার খাচা খুলে দিলে বন্দি ভীষন করা কঠিন, যদি না অসম্ভব হয়ে থাকে।