কায়া।
নিখুঁত মুখশ্রী এবং শান্ত স্বভাবের কিশোরী। কিন্তু সম্ভবত এই মুখশ্রী বা অপ্রতিবাদি মনোভাবের কারণে কম বয়সেই পড়াশুনা ছারতে হল। পাড়ার সমস্ত বখাটেরা স্বভাবতই কায়ার জীবন দুর্বিষহ করে তুলেছিল তাই। যখন ক্ষমতা বা সম্পত্তি দুটোই নিম্ন মধ্যবিত্তের একটা বিন্দুতে আবদ্ধ থাকে তখন অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর শক্তি বা সম্ভাবনা কোনটাই থাকে না। তাই ঘর কুনো হয়ে শ্যাওলার মত গাড় কিংবা আরও ঘোলা হতে থাকলো।
কায়া।
নির্জীব পড়ে আছে মেঝেতে। বিছানার চাদরের কিছু অংশ মুঠো করে ধরে আছে। দু হাতের দশ আঙ্গুলে প্রতিবাদ। নিষ্ঠুর ‘পোষ্য খুনি’ স্বামীর করা পাপ গুলোর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ বা প্রতিবাদ করতে গিয়ে নিজের সাথে হওয়া ভয়াবহ অত্যাচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ! অন্তস্বত্বা হয়েও ‘মা’ না হতে পারার প্রতিবাদ। অনাগত সন্তানকে আগলে না রাখতে পারার প্রতিবাদ! রক্তের মত লোহিত কিংবা তীব্র প্রতিবাদ।
কায়া।
মর্গের এক কোণে আবর্জনার স্তূপের মত পড়ে আছে। মদ এবং রক্তের গন্ধে এক নেক্রোফিলিয়াক কামার্ত চোখে তাকিয়ে আছে কায়ার দিকে। শরীরের আঘাতের চিহ্নের মাঝে আরও কিছু খুবলে খাওয়া শকুনের খোঁচায় খুব বেশী কিছু যাবে আসবে না! এক পেশে পরিশ্রমের পর মদ এবং রক্তের গন্ধের সাথে মিশে গেল নেক্রোফিলিয়াকের ঝাঁঝালো ঘামের গন্ধ। নেক্রোফিলিয়াক এক দলা সাদা থুথু ফেলে দিল কায়ার শরীরে। ঘন অথচ মৌনতার সাদা!
কায়া।
মুখটা এখনো বেশ নিখুঁত, শুধু নীলচে বা কালচে হয়ে যাওয়া দাগ গুলো তাকিয়ে আছে।
কায়া।
এখনো ভিশন শান্ত। শুধু না বলতে পারা কিছু কথা বা বাঁচার জন্য চিৎকার অথবা শেষ মুহূর্তের এক ফোঁটা জলের আর্তনাদ হয়তো ফাঁকা দু ঠোঁটের মাঝে আটকে আছে!
একজন কায়া- অপ্রতিবাদি, নিথর অথবা নীরব!