somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নিউরাল নেটওয়ার্ক (NEURAL NETWORK)

২৮ শে মে, ২০১৮ রাত ১২:১৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



আন্দাজ করুন তো নিজের মাকে দেখে চিনতে আমাদের কতক্ষণ সময় লাগতে পারে?

উত্তরটা হচ্ছে আনুমানিক ০.১ সেকেন্ড।

আমাদের মস্তিষ্কটা হচ্ছে নিউরনের আখড়া। চোখ যা দেখে সে সেই তথ্য মস্তিষ্কে পাঠিয়ে দেয়, এরপর নিউরনে ফায়ারিং হয়। এই ফায়ারিং গোলা-বারুদের নয় বরং ফলাফলের। আমাদের মস্তিষ্কে আনুমানিক ১০^১১ টি নিউরন আছে, যারা একে অপরের সাথে সংযুক্ত। একটি নিউরন আবার প্রায় ১০^৪ টি নিউরনের সাথে সংযুক্ত থাকে। এদের কাজ হচ্ছে এদের কাছে আসা তথ্য ঠিকভাবে প্রসেস করে পরবর্তী নিউরনকে দেয়া, এভাবে “দশে মিলে” কাজ করে তারা একটা সিদ্ধান্তে পৌঁছায়। যেটা দিয়ে আমরা পরীক্ষার হলে পরীক্ষা দিই, প্রিয় মানুষগুলোকে চিনতে পারি আরো কত জটিল কাজ করি।

আমরা মঙ্গল গ্রহে বাস করার চিন্তা করতে পারছি যেই মস্তিষ্ক দিয়ে সেই মস্তিষ্কের সকলকিছু এখনো আমরা জানতে পারি নাই। কিন্তু এই মস্তিষ্কের গঠন আর কাজের ধরন সম্পর্কে আমরা যতোটুকু জানতে পেরেছি তা দিয়েই আমরা এগিয়ে যাচ্ছি।

এখন ব্যাপার হচ্ছে আমাদের মস্তিষ্ক সবচেয়ে দ্রুত সময়ে যেই কাজ করতে পারে তা করতেও সে সময় নেয় প্রায় ১০^-৩ সেকেন্ড যেখানে মোটামোটি মানের কম্পিউটারের সময় লাগে প্রায় ১০^-১০ সেকেন্ড। কিন্তু মানব মস্তিষ্ক এতোটুকু সময় বেশি নিয়েও যেই জটিল কাজ করতে পারে, মানব সৃষ্ট কম্পিউটার তো তা পারে না।

দুইটা বিশাল বিশাল সংখ্যা গুণ করতে দিলে কিংবা খুব বড় কোন সখ্যার বর্গমূল বের করতে দিলে যেকোন মানুষের অনেক সময় লাগবে ক্ষেত্র বিশেষে নাও পারতে পারে। কম্পিউটার কিন্তু খুব কম সময়ে নির্ভুলভাবে তা নির্ণয় করে দিবে। অপরদিকে আমরা মানুষরা যেভাবে ৪ বছরের বাচ্চার আঁকা-বাঁকা লিখা দেখেও বুঝতে পারি সে কি লিখতে চেয়েছে কিংবা তার অস্পষ্ট উচ্চারণ শুনেও আমরা বুঝতে পারি সে কি বুঝাতে চাচ্ছে, কম্পিউটারের পক্ষে কি কাজটা খুব সহজে করা সম্ভব? উত্তরটা অবশ্যই না। কম্পিউটার হলো বোকা, ওকে যা বলে দেয়া হয় তার থেকে “এক কলমও” ও বেশি বুঝতে পারে না/যায় না।

অসম্ভব বলেই তো মানুষ কোনদিন বসে থাকে নি, মানুষের কাজগুলো কম্পিউটারকে দিয়ে করাতে হলে মানুষের কাছ থেকেই কিছু ধার নিতে হবে। আর তা হলো মানুষের মস্তিষ্কের কাজের ধরন, সেই থেকে অনুপ্রাণিত হয়েই এসেছে Artificial Neural Network. মানুষের নিউরনের কাজের ধারার আদলে নির্মিত Neural Network। যা দিয়ে এখন “বোকা”টাও বিভিন্ন ভাষার হাতের লিখা, কোনটা মানুষ কোনটা বেড়াল তা চিনতে পারে। কাজটা মোটেও খুব সহজ নয়।

Neural Network এর বাস্তবসম্মত একটা উদাহরণ নিয়ে কথা বলি –

আমাদের প্রত্যেকের হাতের লিখা আলাদা, একই অক্ষর আমরা একেকজন একেকভাবে লিখে থাকি। কম্পিউটারের নিজস্ব কোন বুদ্ধি নেই, আমি-আপনি যতোটুকু বলবো ওর জানা বা করার ক্ষমতা ততোটুকুই। নিউরাল নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে হাতের লিখা চেনার মতো জটিল কাজ কম্পিউটারের পক্ষে এখন করা সম্ভব হচ্ছে। প্রতিটা জিনিস(দৃশ্যত) পিক্সেলে আমরা রিপ্রেজেন্ট করতে পারি। 0-9 পর্যন্ত প্রতিটা সংখ্যার একটা নির্দিষ্ট প্যাটার্ন আছে, একটা নির্দিষ্ট ফ্রেমে বন্দী করে ব্যাপারটা চিন্তা করতে পারি। 28×28 2-D একটা ফিল্ড চিন্তা করি, যেকোন একটা সংখ্যা আঁকতে নির্দিষ্ট কিছু বক্সের উপর দিয়ে আমার কলম ঘুরাতে হবে। এটা হবে আমার মেশিনের জন্য ইনপুট। সে এটাকে খুব ছোট ছোট ভাগে ভাগ করবে – Part A। এই ছোট ছোট পার্টগুলি দিয়ে আরেকটু বড় একটা পার্টের সাথে মিল খুঁজে পাবে। যেমনঃ 1 এর ক্ষেত্রে ধরি ছোট ছোট পার্টগুলি হলো চারটা লম্বা দাগ। যার সমষ্টি করলে(একটার উপর একটা দাঁড় করালে) 1 হয়। এবার পরের ধাপে দেখবে দুইটা লম্বা দাগ যোগ করে কি পাই? কারণ 4 এর ক্ষেত্রে দেখুন ওর 1 এর মতো লম্বা দাগের একটা প্রোপার্টি আছে। দ্বিতীয় ধাপে এই লম্বা দাগের কাছাকাছি গেলো। এবার ও পরের ধাপে সিদ্ধান্ত নিবে ধরি – আচ্ছা – আমার এই সংখ্যায় আমি একটা লম্বা দাগ পেয়েছি তাঁর সাথে আর কিছু নাই। তার মানে এটা 1 ।

এক ধাপ আরেক ধাপকে ট্রিগার করে বলতে পারেন। এর আরেকটা প্রয়োগ কিন্তু আমরা প্রায়ই দেখি – ফেসবুকে ছবি আপ্লোড করলে মানুষগুলোর ফেস রিকগ্নাইজ করা আবার তাদের অটো ট্যাগ করা।



নিউরাল নেটওয়ার্কে একটা ইনপুট লেয়ার আরেকটা আউটপুর লেয়ার থাকে। এর মাঝের লেয়ারগুলোকে হিডেন লেয়ার বলা হয় যার সংখ্যাটা যে নিউরাল নেটওয়ার্কটা ডিজাইন করছে তার উপর নির্ভর করে। এই হিডেন লেয়ারের উপরই কোন একটা ফলাফলের Accuracy(কতটা সঠিকভাবে সে কাজ করছে এবং সঠিক উত্তর দিতে সক্ষম) নির্ভর করে।

লিখাটা পড়ার জন্য ধন্যবাদ।

১ – Machine Learning by Tom Mitchell
২ - Chapter 10. Neural Networks
৩ - Chapter 1, deep learning
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে মে, ২০১৮ রাত ১২:১৪
১০টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্বৈরাচারী আওয়ামীলীগ হঠাৎ মেহজাবীনের পিছে লাগছে কেন ?

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৭:৪১


স্বৈরচারী আওয়ামীলীগ এইবার অভিনেত্রী মেহজাবীনের পিছনে লাগছে। ৫ ই আগস্ট মেহজাবীন তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছিলেন ‘স্বাধীন’। সেই স্ট্যাটাসের স্ক্রিনশট যুক্ত করে অভিনেত্রীকে উদ্দেশ্য করে আওয়ামী লীগ তার অফিসিয়াল ফেইসবুকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিড়াল নিয়ে হাদিস কি বলে?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:২৪



সব কিছু নিয়ে হাদিস আছে।
অবশ্যই হাদিস গুলো বানোয়াট। হ্যা বানোয়াট। এক মুখ থেকে আরেক মুখে কথা গেলেই কিছুটা বদলে যায়। নবীজি মৃত্যুর ২/৩ শ বছর পর হাদিস লিখা শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। বকেয়া না মেটালে ৭ নভেম্বরের পর বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না আদানি গোষ্ঠী

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৪১





বকেয়া বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে কোটি কোটি টাকা। ৭ নভেম্বরের মধ্যে তা না মেটালে বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না গৌতম আদানির গোষ্ঠী। ‘দ্য টাইম্স অফ ইন্ডিয়া’-র একটি প্রতিবেদনে এমনটাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারত থেকে শেখ হাসিনার প্রথম বিবৃতি, যা বললেন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:৩২



জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে বিবৃতি দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (২ নভেম্বর) বিকালে দলটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এটি পোস্ট করা হয়। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার... ...বাকিটুকু পড়ুন

=বেলা যে যায় চলে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:৪৯



রেকর্ডহীন জীবন, হতে পারলো না ক্যাসেট বক্স
কত গান কত গল্প অবহেলায় গেলো ক্ষয়ে,
বন্ধ করলেই চোখ, দেখতে পাই কত সহস্র সুখ নক্ষত্র
কত মোহ নিহারীকা ঘুরে বেড়ায় চোখের পাতায়।

সব কী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×