* জানতাম, ভিকারুন্নেসায় আসলে তেমন কিছুই হয়নি। - (বেশির ভাগ মিডিয়ার নীরবতার কারণে)
* জানতাম, আন্দোলন রত ছাত্রীরা আসলে দুই ভাগে বিভক্ত। (প্রথম আলোর নিউজ থেকে)
* জানতাম, ভিকারুন্নেসার মেয়েরা আসলে উগ্র হয়ে গিয়েছে, তাদের অভিভাকরা তাদের নিয়ন্ত্রন করতে পারছে না। (আজকের এটিএন-এ মুন্নি সাহার বক্তব্য থেকে)
* জানতাম, পরিমল এবং হোসনে আরার বিরুদ্ধে ফুঁসে ওঠা ছাত্রীদের সাহায্য করছে বিরোধী দলীয় শক্তি।
কিন্তু আসল ঘটনা যে পুরোপুরিই ভিন্ন তা জানার জন্য আমাকে নির্ভর করতে হলো ব্লগ পোস্ট আর ফেসবুকে তৈরি করা ভিকিদের গ্রুপ 'ভিকারুননিসা নূন স্কুল ও কলেজে ঘটে যাওয়া প্রকৃত ঘটনা ' থেকে। সাংবাদিক ভাইয়েরা, এটা কি আপনাদের ব্যর্থতা না? এটা কি আপনাদের জন্য লজ্জ্বার কথা না যে আপনাদের উপরে ভরসা করতে আমাদের কষ্ট হচ্ছে? এটা কি আপনাদের ব্যর্থতা না যে ফেসবুকে আপনাদের বয়কট করার আহ্বান জানিয়ে পেজ হয় এবং সেখানে শত শত লোক অংশগ্রহণও করে?
সাংবাদিকতা একটা মহান পেশা বলেই আমরা জেনে এসেছি। সাংবাদিক হতে হলে অনেক বুদ্ধিদৃপ্ত ও সাহসী হতে হয় বলেও সবাই জানে। কিন্তু অতীতের আরো অনেক ঘটনার মত ভিকারুন্নেসার ঘটনার পর যখন সাংবাদিকদের কাছ থেকে আমাদের উদ্ভট ও বুদ্ধিপ্রতীবন্ধীর মত সব যুক্তি শুনতে হয় তখন আপনাদের প্রতি আমাদের আস্থা কোথায় অবস্থান করবে? আমাদের কেন শুনতে হয় 'আন্দোলনরত ছাত্রীদের পেছনে আসলে বিরোধী দলের সহায়তা আছে'? আচ্ছা ধরে নিলাম বিরোধী দলের হাত আছে তাহলে সেটার জন্য বিরোধী দলের সমালোচনা করা উচিত না বাহবা দেয়া উচিত? পরিমল এবং হোসনে আরা-রা যা করেছে সেটা কি সভ্যতা বিবর্জতি কাজ নয়? সেই কাজের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো কি বাহবা পাওয়ার যোগ্য কাজ নয়? আপনাদের অক্ষমতা বা অসততা যদি সেই কাজের পক্ষে দাঁড়ানোর পথে বাঁধা হয়ে দাঁড়ায় অন্যের দাঁড়ানোকে কেন নেতিবাচক দৃষ্টিতে প্রচার করবেন? আমার তো মনে হয়, বিরোধী দল যদি এর সাথে জড়িত নাও থাকে, তাদের জড়ানো উচিত। এরকম একটা ভাল কাজে যে জড়াবে তাকেই সাধুবাদ।
সাংবাদিক ভাইয়েরা, আপনাদের অবস্থা দেখুন- আপনারা নিজেরাই সর্বক্ষন ব্লগে এসে বসে থাকেন কোন খবরের সর্বশেষ আপডেট জানার জন্য আর আপনাদের কাছেই হুমকি পেতে হয় একজন ব্লগারকে, সঠিক খবর পৌঁছে দেয়ার অপরাধে। আলম আল রাজী নামের ব্লগারকে দেয়া এই নিকৃষ্ট হুমকিটা একবার পড়ে দেখুন তো-
"পানিতে নেমে কুমিরের সাথে লড়াই করতে আসবেন না আলীম আল রাজি। আপনি আপনার অনেক বড় ক্ষতি করে ফেলেছেন। আধা ঘন্টার মধ্যে সামুর পোস্ট থেকে সাংবাদিকদের against-এ লেখা প্রতিটা লাইন মুছবেন। নাহলে আপনার জন্য অনেক খারাপ কিছু অপেক্ষা করছে। মাইন্ড ইট।"
Click This Link
শুধু তা-ই নয়, দুজন টিভি সাংবাদিক অান্দোলন রত ছাত্রীদের হুমকিও দিয়েছে শুনলাম। এটা নিয়ে ফেসবুকে পেজ খোলা হয়েছে, ভিডিও নাকি আপলোড করা হচ্ছে। মুন্নি সাহার রিপোর্ট নিয়ে ফেসবুকের আলোচনাটা দেখুন- Click This Link ... একবার শুধু দেখুন আপনাদের অপসাংবাদিকতা কোন পর্যায়ে এসে পোঁছিয়েছে! ভেবে দেখুন, এই যদি হয় মহান পেশার মহান সৈনিকদের অবস্থা তাহলে জনগণের কাছে আপনাদের অবস্থা কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে?
গতকাল ফেসবুকে বিকল্প মিডিয়া কি হতে পারে জানতে চেয়ে একটা প্রশ্ন করেছিলাম, তেমন কাউকে আমন্ত্রন জানানোর আগেই যারা উত্তর দিয়েছে তাদের কেহ-ই বর্তমান অবস্থায় সুখী বলেনি, এই ব্যর্থতা কি আপনাদের নয়?
লিঙ্ক- Click This Link
ফেসবুক আর ব্লগে শত শত মানুষের কাছে সাংবাদিকরা হয়ে ওঠছে খল নায়ক, হুমকি দাতা, অসৎ ও দূর্নীতিবাজ। এর পরিনতি আসলে কী? পুলিশের আজকের অবস্থা দেখেও কি সাংবাদিকরা শিক্ষা নিতে পারে নাই? সকল পুলিশই কি খারাপ? গুটি কয়েক অসৎ লোকের জন্য যেভাবে পুলিশ ডিপার্টমেন্ট সকলের শ্রদ্ধা হারিয়েছে গুটি কয়েক অসৎ সাংবাদিকের জন্য কি সাংবাদিকতাও একটা অসৎ পেশা হিসেবে ভবিষ্যত প্রজন্মের কাছে পরিচিত হবে? এই প্রশ্নের উত্তর চিন্তাশীল ও বিবেকবান সাংবাদিকদের কাছে রইলো, তাদের নিজেদের ভালোর জন্যই।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই জুলাই, ২০১১ রাত ১২:২১