এখনও বিয়ের পিড়িতে বসিনি, তাও একটা মাত্র বড় ভাই রাগ হলে হুঙ্কার দেয় বিয়ের পর থেকে তোর সাথে আমার কোন সম্পর্ক নেই, তোকে আমি কোনদিন ভালবাসিনি। তুই জামাই বাড়ি গেলে আর কোনদিন আসবি না। তোর কোন গন্ডগোল লাগলে আমরা এতে নেই। অথচ তার বউ আর তার সব সমস্যার সমাধান করে দিতে এই অধম বোনটিকেই লাগে। খুটি নাটি বিবিধ কারনে ভাবী আর আমি বন্ধুর মত। অথচ আমার স্বামীর সাথে নাকি ও খুব খারাপ ব্যবহার করবে আগে থেকেই যেন প্রস্তুত হয়ে আছে। আবার এমন মনোভাবও যে আমার স্বামী যেমন হবে তেমন আপ্যায়ন হবে।সে যদি অবস্থা ভাল হয় একরকম আপ্যায়ন, সে যদি স্টাবলিশ না হয় আরেকরকম আপ্যায়ন।
কিন্তু আমি কিন্তু ভাবীর অবস্থা ভেদে তার সাথে আচরন করছি না । আর শ্বশুর বাড়িতে এক শালা ও এক সম্বন্ধীর থেকে আচার ব্যবহার দেখেও কি ওর বোধদয় হয় না । বোনদের জন্য নাকি কোন ভাই করে না । এই কথা উঠতে বসতে শুনাচ্ছে। মাঝে সাঝে এও বলে তোর তো বিয়ে হচ্ছে না আমার বাচ্চা পালবি, আমার সংসারে আগুন লাগাবি না।
এর মাঝে আমার আম্মা তো আছেনই সারাক্ষন ঘ্যানর ঘ্যানর তুই এই করতে পারবি না, সেই করতে পারবি না এই বাসায় যেতে পারবি না ঐ বাসায় যেতে পারবি না।
এই বাসায় গেলে এই হবে , সেখানে বিবাহযোগ্য কোন ছেলে থাকলে যাবি না।
ছোট থেকে এপর্যন্ত অনেক বাসাতেই যাওয়া হয়নি, কোন বিবাহযোগ্য ছেলেদের সাথে কথা বলারও ইচ্ছে আমার ছিল না।
বাসাতেই থাকি সারাক্ষন, কোন কাজ থাকলে বেড়ুই নাহলে কাজ করি। কোথাও যাওয়ার মনও নাই। গেলে দেখি এর সংসার তার সংসার। জীবনটা ত্যানা ত্যানা হয়ে গিয়েছে।
বোনদের প্রতি ভাইদের বিদ্বেশ ও না করার মন মানসিকতা খুব খারাপ। এজন্য মায়েরা দায়ী। যেসব মায়েরা ছেলেদের অতিরিক্ত আদর করতে গিয়ে মেয়েকে আদর করেন না ও মেয়েদের ভাল মন্দ দেখেন না তাদের ভাইরা ও মায়েরা মেয়েকে অত্যাচার করে মহানন্দ পান।
বাবা মায়ের সম্পত্তির উপর ভাই ও বোনের দুজনের অধিকার আছে।কিন্তু কজন মানুষ নিজের বোনদের সম্পত্তি দেন ও সেই বোনটির খোঁজ রাখেন। বোন কি শ্বশুড় বাড়িতে ভাল আছে নাকি মন্দ আছে তার অবস্থা কেমন তা খোজ নেওয়ার দায়িত্ব ভাইটির। যদি বোনটির স্বামী ও শ্বশুড় বাড়ির লোক তার উপর যেন অত্যাচার না করতে পারে সেজন্য তাদেরকেই ভাল সম্পর্ক ও মনোভাব রাখতে হবে।
আমাদের দেশ না সব দেশের মানুষই তার নিজের বউ ও তার শ্বশুড় বাড়িকে অত্যাচার করে মহানন্দ পান। মেয়েটির ভাই যেন তার মহাশত্রু। একটু পান থেকে চুন খসলেই ভাই ভাল না , মা বাবা ভাল না অমুকে ভাল না তমুকে ভাল না।
সবচেয়ে বড় কথা সেই মেয়েটিকে বিয়ে না করলে অন্য কোন মেয়েকে নিয়ে সে সুখে থাকতে পারত। এর চেয়ে লজ্জ্বাজনক কিছু নেই , যে বহুবিবাহের বেড়াজাল থেকে কিছুটা বেরুলেও এখনও যে ব্যাটারা বহুগামীতার হাত থেকে নিজেদের সরাতে পারে না।
ভাই বোন বাবা মা ও শ্বশুড় শ্বাশুড়ি জামাই বউ নিয়ে যখন তর্ক উর্ধে, তার মাঝে আরো কিছু বিতর্ক বাধে যখন আত্মীয় স্বজন অমুক তমুকের বিবিধ বিষয় নিয়ে পড়ে থাকে। অমুকে কেন এই দিল না সেই করল না ।
মনে হয় জীবনটা যেন বাঙ্গালীরা এই প্যাচাপ্যাচিতেই নিজেদের আবদ্ধ করে রাখবে।
ওদের মুখে কোনদিন শুনলাম না বা করে দিতে দেখলাম না যে ঐ মানুষটি দুখে আছে বা ঐ পরিবারে এই সমস্যার মাঝে আছে তাদের এটা ঠিক করে দেই।
তাদের খালি ক্যাচকালি করা একটা অভ্যাস, ওদের জীবনটাই ঘুরপাক খায় এর মাঝেই।
কেউ নিয়ম কানুন মানতে চান না । ভাই বোনকে ঠকাতে চায়, মা তার নিজের মেয়েকে ঠকাতে চায়। বউকে স্বামী ঠকাতে চায়। একটা জিনিস পর্যবেক্ষন করলাম মেয়েদের ঠকানোর জন্যই যেন সমাজ ব্যবস্থা, যদি মেয়েটি রাগ করে চিৎকার না করা পর্যন্ত মেয়েটিকে ঠকানোর জন্য সবাই ব্যস্ত। আর মেয়েটি তার প্রাপ্যতা আদায় না করতে পারলেই মেয়েটি আহাম্মক।
অধিকার এত ঠুনকো কেন হবে রাগ করে বা চিৎকার চেচামেচি করে আদায় করতে হবে আর সমাজ ব্যবস্থা কেন এমন হবে মেয়েদের পদে পদে ঠকানোর জন্য প্রস্তুত হয়ে থাকবে ?
যেসব মেয়েরা সাহসী আচরন করছে, দুচারটা প্রেম করছে বা চিৎকার করছে তাদের সবাই ভয় পাচ্ছে, যতদিন কোন মেয়ে নিজেদের খারাপ না বানাচ্ছে সে অধিকার আদায়ে গড়িমসি খাচ্ছে, অধিকার আদায়ের জন্য মেয়েদের কেন খারাপ হতে হবে ও বদমেজাজী হতে হবে আর মেয়েদেরকে যখন তখন যা তা কেন শুনানো হবে?
এত সেক্রিফাইস ও বাসার সব কাজ করার পরেও কেন মেয়েটিকে শুনতে হচ্ছে মেয়েটি ভাল না ?? মেয়েটি আহাম্মক, যেন মেয়েদের নানান খারাপ বিশেষনে বিশেষায়িত করার জন্যই সবাই প্রস্তুত হয়ে আছে।