শেখ হাসিনার অপসারণ কি সমাধান ছিল, নাকি আরও বিপর্যয়ের শুরু?
দেশজুড়ে যখন রাজনৈতিক অস্থিরতা ছিল, তখন অনেকেই বিশ্বাস করেছিলেন শেখ হাসিনার সরকারই সমস্ত সমস্যার মূল। বলা হয়েছিল, তিনি জনগণের ইচ্ছার বিরুদ্ধে কাজ করছেন, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ, সিন্ডিকেটকে প্রশ্রয় দিচ্ছেন। সেইসব অভিযোগের ভিত্তিতে দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞ নেতৃত্বকে সরিয়ে ক্ষমতায় আনা হলো ইউনূস সরকারকে। কিন্তু আজ আট মাস পেরিয়ে গেছে প্রশ্ন জাগে, এই সরকার কি একটি খাতেও কোনো ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে পেরেছে?
সিন্ডিকেটের দায় এখন কার?
যে সরকার শেখ হাসিনাকে সিন্ডিকেটের রাঘববোয়াল বলে দোষারোপ করেছিল, তারাই আজ নিজে সেই একই সিন্ডিকেটের সামনে নীরব দর্শক। শেখ হাসিনার সময় অন্তত কিছুদ্রব্যের দাম ভর্তুকি দিয়ে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা ছিল, আর আজ বাজার যেন এক ভয়াল আগুন! চাল, ডাল, তেল, চিনি সব কিছুর দাম দিন দিন চড়ছে, কিন্তু এখন তো শেখ হাসিনা নেই! তাহলে কারা এই সিন্ডিকেট চালাচ্ছে?
উত্তর স্পষ্ট অদক্ষতা, দায়িত্বহীনতা আর ভেতরের অসাধু চক্রই এখনকার সরকারকে জিম্মি করে রেখেছে।
যাকে মিথ্যা অভিযোগে তাড়ানো হলো, তার চেয়ে কি ভালো কেউ এসেছে?
শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল যে তিনি স্বেচ্ছাচারী, গণতন্ত্র হরণ করেছেন, দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দিয়েছেন। অথচ তার সময়েই বিদ্যুৎ, অবকাঠামো, স্বাস্থ্য ও শিক্ষায় একধরনের স্থিতিশীলতা ছিল। এখন সেই সব খাতে অরাজকতা, অচলাবস্থা আর দুর্নীতি ফিরে এসেছে আরও ভয়ংকর রূপে।
সরকার পরিবর্তনের নামে মানুষ আজ হারিয়েছে আত্মবিশ্বাস, হারিয়েছে মৌলিক চাহিদা পূরণের সামর্থ্য।
উন্নয়নের বদলে প্রতারণা
আট মাসে ইউনূস সরকার একটিবারের জন্যও প্রমাণ করতে পারেনি যে তারা জনগণের কথা ভাবে। কোন খাতে উন্নতি হয়েছে? কোনো নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে? কোনো পণ্যের দাম কমেছে? বরং দেখা যাচ্ছে, যে কথায় কথায় শেখ হাসিনাকে দোষারোপ করা হতো, আজ তার সবই বাস্তবতায় ফিরে এসেছে, আরও ভয়াবহ রূপে।
জনগণের চোখে ধুলো দেয়া যাবে না
রাজনীতির মাঠে মানুষ আর প্রতিশ্রুতির চাতুর্য খুঁজে না। তারা চায় কাজ, চায় সত্যিকারের পরিবর্তন। মিথ্যা অভিযোগে একটি অভিজ্ঞ নেতৃত্বকে হটিয়ে এনে যদি আরও খারাপ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়, তাহলে সেটি জনগণের সঙ্গে প্রতারণা ছাড়া আর কিছুই নয়।
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৫ দুপুর ২:৫৫