somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রাজশাহী মেডিক্যালের ইন্টার্নি ডাক্তার ও সাংবাদিকদের ঘটনা রটনা ও বাস্তবতা

২২ শে এপ্রিল, ২০১৪ রাত ১০:৩৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

পত্রিকার বা সংবাদের শিরোনাম হতে হবে লোমহর্ষক। ইহা অনেকদিনের স্টাইল।
যে ঘটনা বা দূর্ঘটনা যতটা বিরাটাকারে হবে তা পাঠক পড়বে বা দর্শক দেখবে । তাই বাংলাদেশের শীর্ষ পত্রিকা বা সংবাদ মাধ্যমগুলির হেডলাইন হয় কিছুটা এরকম খুন হয়েছেন অমুক, প্রেমিকার আত্মহত্যা, বিশ্ববিদ্যালয় গুলিতে বোমা বিস্মোরন, হাতাহাতি, একের হাতে অপর খুন। জিম্মি , ফাসির আদেশ কাদের মোল্লা। রানা প্লাজা ধ্বস , খুজে পাওয়া যায়নি ... টি মৃতদেহ। গর্ত থেকে বেরিয়ে আসা অমুক কে জিজ্ঞাসা , আপনার অনুভূতি কি ?? কিছু কিছু গাজাখুরি গল্প ও চলে আসে ।
সম্প্রতি সেন্টমার্টিনে জীবিতদের মৃত বলে ঘোষনা করা ও তাদেরকে লাইভ টেলিকাস্ট ও শীরোনামের বাহানা দিয়ে নাজেহাল করা ।
সাংবাদিকতা অনেক বড় একটা চ্যালেঞ্জ । সত্য ঘটনা লেখার জন্য অতীতে অনেক সাংবাদিকদের পরিবার সহ গুম করার ঘটনাও ঘটেছে। এই পেশার সাথে জড়িত ব্যক্তিদের অনেক দূর্ভোগ পোহাতে হয় সেজন্য তাদের প্রতি আমরা সবাই কৃতজ্ঞ।
কিন্তু সম্প্রতি রাজশাহী মেডিক্যালের ইন্টার্নি ডাক্টারদের অবহেলার অভিযোগে যে রিপোর্ট করা হচ্ছিল তাতে সাংবাদিকদের উপর চড়াও হওয়া ভবিতব্য ডাক্টারদের অনেকে দোষারোপ করছেন। একে তো ডিউটিতে অবহেলা তার উপর সে খবর প্রচারে সাংবাদিকদের উপর হামলা। কিন্তু একবার কি ভেবে দেখেছেন সাংবাদিকদের আচরন সে সময় কি ঠিক ছিল আর তারা কি আদৌ সত্য প্রচার করছিলেন নাকি নিরীহ যেসব ভাল ভাল ছেলেমেয়েরা সত্যি ডিউটি তাদের নামে অপপ্রচার চালিয়ে বাকীদের যারা ফাঁকি ঝুকি দেয় তাদেরকে রেহাই ওদেরকে বিপাকে ফেলছিলেন ?? আসলে কাদের পক্ষে যাব আমরা । কাদের বিশ্বাস করব ??
কদিন পর এই সব পত্রিকায় যারা রাজশাহী মেডিক্যালের ইন্টার্নি ডাক্তারদের নাজেহাল করছিলেন তারাই আবার তাদের স্তুতি গাইতে শুরু করে দিবেন। এসব সাংবাদিকদের ১০০০ টাকা ২০০০ টাকা দিলেই তাদের সংবাদটি পুরাপুরি অন্যরকম করে ফেলবেন। বা তাদের এই অদ্ভূত সংবাদটি প্রচার বন্ধ করার জন্য ২০০- ৫০০ টাকা নিয়েও অনেক সময় সংবাদ ধামাচাপা দেওয়া হয়। এইসব ক্ষেত্রে সরকারী বেসরকারী দলের লোকরা যদি ইনভল্ভ হয়ে যান। নিচের সারির সৎ সাংবাদিকদের ছেটে ফেলে সম্পাদকেরা বিরাট অঙ্কের টাকা পকেটস্থ করে ফেলেন। আর ছোট খাট যেসব পত্রিকা খবর প্রচার বন্ধ করে তা বাজার থেকে উধাও হয়ে যায় । তাদের পরিবারদের উপর চলে রোষানল।
ইহা অনেক সত্য কথা তা ইন্টার্নি ডাক্টারদেরই হোক বা অন্য পেশাদার ডাক্টারদেরই হোক তিন চার জায়গায় ইহারা রোগী দেখে বেড়ান বলে সরকারী হাসপাতালে তাদেরকে খুঁজে পাওয়াই মুশকিল। কিন্তু সব ডাক্তার নিশ্চয়ই এক নন। তাদের মধ্যে দুচারজন ভাল ডাক্তারও আছেন। এই ডাক্টাররা কিন্তু স্পেশাল কিছু করেন না শুধু তাদের অর্পিত দায়িত্ব যথাযথ পালন করেন। অথচ এই যথাযথ কাজ করাটাই এখন অনেক কষ্টকর ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তাহলে কি দাড়াল ব্যাপারটা সাংবাদিক ও ডাক্টার উভয় পেশায় ৮০ ভাগ লোক যথাযথ কাজ করেন না আর তাদের মধ্যে যারা যথাযথ কাজ করেন না তাদের ৫০ ভাগই অসৎ কাজ করেন।
যে পেশায়ই কাজ করা হোক না কেন তার প্রতি যথাযথ শ্রদ্ধাবোধের অভাব ও সকলের মধ্যেই অনিয়মকেই নিয়ম মেনে কাজ করাটাই যেন নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে। এসব পেশার লোকদের কাছ থেকে যারা সেবা নিয়ে থাকেন তারা ভুক্তভোগী আর এমন ব্যাপারটা হয়ে দাড়িয়েছে একেক জন ডাক্তার যেন ঈশ্বরের থেকেও যেন ধরাছোয়ার বাইরে। সরকারী ইন্টার্নি ডাক্তারই আর এমনি ডাক্টারই হোক এরা তিন চার জায়গায় ডিউটি দিয়ে বেড়ান। আগে আয়া, ওয়ার্ডবয় তার পর কম্পাউন্ডার এদেরকে ঘুষ দিয়ে হাতে পায়ে ধরে আর্জেন্ট ডাক্তারদের খোঁজ নিতে হয়। অনেক সময় কাঙ্খিত ডাক্তারদেরও পাওয়া যায় না। তাদেরকে ধন্না দিয়ে ডাক্তারদের জন্য পনেরো থেকে বিশ মিনিট অপেক্ষা করতে হয় আর যদি তারা আউটডোরে থাকেন তাদেরকে কোনভাবেই সম্ভব না খুঁজে পাওয়া। আর তারা এমন একখানা ভাব নেন যেন তারা আমাদের সেবা করে অনেক মহৎ কাজ করছেন।
তাদের ভাবের মধ্যে একখানা নিজেকে ঈশ্বরতুল্য ভাবার ভাব থাকে।
এখন যত কিছুই হোক এদের কাছে সাধারন মানুষ জিম্মি। রোগ হলে এভাবেই সরকারী হাসপাতালে দেখাতে হবে। নাহলে কড়কড়ে নোট গুনে বড় বড় ক্লিনিক বা হাসপাতালে দেখাতে হবে। আর সাংবাদিকরাও এ ব্যপারগুলি কিছুদিন পর ভুলে যাবেন। আজ চারিদিকে যে ব্যবস্থা আর নাজেহালের যে সিস্টেম হয়ে দাড়িয়েছে তা থেকে মুক্তির কোন উপায় কেউ খুজার চেষ্টা করছেন না । বরঞ্চ এই অব্যবস্থাকেই সবাই কিভাবে কে কার পকেটে কত টাকা ঢূকাবেন আর কে কিভাবে এই ব্যবস্থাতেই নিজেদের স্ট্যাটাস বাড়িয়ে স্বনামধন্য ডাঃ অরুপ ... এর সাক্ষাতকার নামেই বেরুবে আর টিভিতে এসব সফল মানুষের সাক্ষাতকার প্রচার হবে যে কিনা কসাইয়ের মত রোগীদের বুকে আর পিঠে খঞ্জর¬¬¬¬¬ চালিয়েছেন। তাদের যত অপবাদই থাকুক না কেন লোকে বলবে এই সেই ... ডাক্তার। এর কাছেই যেতে হবে ।
ইনিই সেই তারকা যে আকাশে টিমটিম করে জ্বলে আর যার বি,এম,ডাব্লু গাড়ীতে চড়ে তার লোভী পরিবার যমুনা সিটি থেকে বসুন্ধরা সিটিতে মার্কেটিং মুভি আর বি,এফসি আর কেএফসিতে না খেলে দিনই যায় না। যাদের জীবন যেন একখানা আশির্বাদ । হ্যা এরাই আমাদের জীবন বাচান । এই সফল সাংবাদিক আর সফল ডাক্তারদের সাথে দেখা হয়ে যেন আমাদের জীবন ধন্য হয়ে যাবে।
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে এপ্রিল, ২০১৪ রাত ১১:১৩
৫১৪ বার পঠিত
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ট্রানশিপমেন্ট বাতিলের পর বাংলাদেশ কী করতে পারে!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৩ ই এপ্রিল, ২০২৫ দুপুর ১:২৩

১.০
আমি তখন সাউথ কেরিয়ার কিউং হি বিশ্ববিদ্যালয়ে ইন্ডাস্ট্রি ও ট্রেড পলিসিতে মাস্টার্স করছি। আমার একটা কোর্সের নাম ছিল থিওরি অ্যান্ড প্রকটিসেস অব গ্লোবাল ট্রেড গভর্নেন্স। কোর্সটি পড়াতেন প্রফেসর Wook Chae... ...বাকিটুকু পড়ুন

সময় থাকতে মনা হুশিয়ার......

লিখেছেন জুল ভার্ন, ১৩ ই এপ্রিল, ২০২৫ বিকাল ৩:২৪

সময় থাকতে মনা হুশিয়ার......


ফ্যাসিবাদের দুঃশাসনকালে সময়ের চলমান প্রক্রিয়ায়, নাগরিক দ্বায়িত্ব পালনে দেশের প্রয়োজনে রাজপথে আমরা অন্যায়ের প্রতিবাদ করেছি। কীবোর্ডকে অস্র বানিয়ে স্বৈরশাসকের হৃদয় ফালাফালা করে দিয়েছি। ফলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

=এক ঝাঁক শূন্যতা=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৩ ই এপ্রিল, ২০২৫ বিকাল ৫:৪৩


আপনজনেরা অপেক্ষার প্রহর গুনে
কার্ডিয়াক হাসপাতালের চেয়ারে বসে,
সব থেকেও যেন কী নেই
এক ঝাঁক শূন্যতা বুকে মানুষগুলো কী উদাস।

কেউ বা সিসিইউতে, কেউ আইসিইউয়ে
হাতে গাঁথা সেলাইনের মালা,
সাদা চাদর গায়ে শুয়ে অপেক্ষায় অনন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

চৈত্র সংক্রান্তি থেকে পহেলা বৈশাখ বহমান আনন্দধারা।

লিখেছেন মনিরা সুলতানা, ১৩ ই এপ্রিল, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:২৮


চৈত্র মাসের বাতাসে যে সুগন্ধা হওয়ার দোলন সে ব্যাপারটার প্রশান্তি অনন্য! মাঝ দুপুরের তপ্ততা, নুয়ে আসা বিকেলে আচমকা দুরন্ত দুষ্ট ঝড়, অথবা সন্ধ্যার আজানের ঘরে ফেরার ব্যস্ত ধ্বনি।... ...বাকিটুকু পড়ুন

গাজা, ওসামা, পাকিস্তান, নাজি : বাংলাদেশে মাল্টিভার্স পতাকা বিপ্লব !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৩ ই এপ্রিল, ২০২৫ রাত ৮:১২


গত একসপ্তাহ ধরে ফিলিস্তিনের গাজাবাসীর উপর ইসরায়েলের হামলার প্রতিবাদে সারা বাংলাদেশে প্রতিবাদের ঝড় বয়ে গেছে। কিন্তু এই প্রতিবাদের মিছিলে এমন সব পতাকা, সিম্বল ও ছবি হাতে প্রতিবাদীরা মিছিল করেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×