অনেকদিন পরে ব্লগে এসে দেখলাম ছবি প্রতিযোগীতা শুরু হয়েছে। কেন জানি, বেশ উৎসাহ পেয়ে গেলাম! আমি মোটেও ভাল ফটোগ্রাফার নই, তবুও মাঝে মাঝে শখের বসে দালান কোঠা, প্রকৃতি-গাছপালা, মানুষের অভিব্যাক্তি ইত্যাদি তুলে ফেলি। না, আমার কোন প্রফেশনাল ক্যামেরা নেই..এই আই ফোনেই যা পারি, তাই তুলে ফেলি! আমার এই ছবি গুলো বিভিন্ন সময়ে, বিভিন্ন শহরে, আর কি কিছু কিছু কাজের সুত্রে সাইট পরিদর্শনের সময়ে তোলা, দেখি আপনাদের একটু হলেও ভাল লাগে কিনা! (আমি জানি, এই ব্লগে প্রচুর ভাল ফটোগ্রাফার আছেন,... তাদের তোলা প্রফেশনাল ছবির পাশে এগুলো দিতে একটু লজ্জা লাগছে অবশ্য!)
ছবির কাহিনী: এই ছবি গুলো আমি এ বছরের জানুয়ারীর এক প্রচন্ড শীতের সকালে তুলেছিলাম আমার এক বিল্ডিং সাইটে গিয়ে-- ছাদ পরিদর্শন কালে ঠক ঠক করে কাঁপতে কাঁপতে হঠাৎ খেয়াল করলাম,..এই কঠোর ঠান্ডা, আর ধুসর প্রকৃতিতেও কি অসম্ভব সুন্দর লাগছে ম্যানহাটানের স্কাই লাইন দেখতে, ইস্ট হাডসন রিভারের তীর ঘেষে!..দেরী না করে, হাতমোজা খুলে দ্রুত তুলে ফেললাম কিছু সেই পানি, স্থাপত্য আর আবহাওয়ার অপুর্ব সমন্বয়ের মুহূর্তটা কে!
স্থাপত্যের কাব্য: দালান কোঠা, ঘর বাড়ি সব কিছুই একজন স্থপতি হিসেবে আমাকে ভিষন আকর্ষন করে, আর সেগুলোর কাব্যিক সমন্বয় বা, কম্পোজিশন ক্যামেরার ফ্রেমে আটকাতেও খুবই ভাল লাগে! প্রথম ছবি দুটি নিউ ইয়র্ক শহরের গুগেনহাম মিউজিয়াম (Architect: Frank Lloyd Wright) এর ভেতরে তোলা, বেশ কয়েক বছর আগে। দেশ থেকে আমার কিছু আর্কিটেক্ট বন্ধু বান্ধবরা এসেছিল, ওদের নিয়ে গিয়েছিলাম ওখানে..আহা, কতই না পড়েছি বুয়েটে থাকতে এই মহান বিল্ডিং সম্পর্কে! পরের ৩ ও ৪ নং ছবিগুলো এক ইটালীয়ান রেস্তোরার ভেতরের উঠোনে তোলা..কি যে মায়াবী সেই বিলডিংয়ের আচ্ছাদন (Facade), যেন সেই ইতালীর এক মফঃস্বল পাড়ার কোন বাড়ীর শান্ত উঠোন! রাধুনী ইসাবেলার অমায়িক ব্যবহার ছিল আরেক মধুর সংযোজন!..এটিও নিউ ইয়র্কের কুইন্স শহরে তোলা।
[নারী, প্রকৃতি আর একটি খিলান: আহা, এই ছবিগুলোর স্থানটি আমার ভিষন প্রিয়!..আমার দেখা, স্থানীয় বীচগুলোর মধ্যে (মানে, আমার শহর কে বুঝিয়েছি) এই মরগ্যান মেমোরিয়াল বীচ (গ্লেন কোভ, লং আ্যাইলান্ড) টা সবচাইতে সুন্দর! আমি সময় পেলেই চলে যাই ওখানে..ছবি গুলো ২ বছর আগে তোলা..প্রকৃতির সাথে মিশে থাকা নারীটি আমার ভাগিনি, বেড়াতে এসে আমের ক্যামেরার ফ্রেমে বন্দি হয়ে গেলো!
স্থাপত্য, মানুষ আর মৌনতা: স্থাপত্যের সাথে মানুষের আর তার মনের এক অদ্ভুত যোগাযোগ আছে..বৈরী, রুক্ষ দালান কোঠা মানুষ কেমন নিস্ঠুর, যোদ্ধা বানিয়ে দেয়..আবার সেই দালানই কেমন স্নিগ্ধ প্রকৃতির সাথে মিশে গিয়ে মানব মনকে এক অপার্থীব মৌনতায় ভরে তোলে! প্রথম ছবি দুটো টেক্সাসের এক পুরোনো শহরে তোলা, ২০১৬ সালে। শেষের ছবিটি আমারই গৃহকোনে,.।গত বছরের করোনাকালীন এক বিকেলে আমার মেয়ের ধ্যানী মুহূর্ত!
কেন লাগল কে জানে ছবিগুলো আপনাদের! সবাই খুব ভাল থাকুন!
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে জুন, ২০২১ ভোর ৪:৫১