যেহেতু বিশ্বের ২০টি রহস্যময় স্থান (১ম পর্ব) কারোরই ভাল লাগে নাই তাই ভেবেছিলাম এই লেখার শেষ পর্ব আর পোষ্ট দিব না। কিন্তু কেমন যেন অসম্পূর্নতা থেকে যায় তাই দিলাম।
========>
কত না রহস্যে আবডালে ঘেরা আমাদের এই ধরনি। বর্তমান সময়ের বিজ্ঞানের অভুতপূর্ব উন্নতি সত্ত্বেও এই সব রহস্যের আসল সত্য এখন পর্যন্ত সম্পূর্ন ভাবে খোলাশা করা সম্ভব হয় নাই।
১১) স্যালিসবারি সরলঃ
ইংল্যান্ডের স্যালিসবারি সরল (Salisbury Plain) এর রহস্য যেন কোন ভাবেই বের করা যায় না। এটি কারা তৈরি করেছিল এবং কেন তৈরি করেছিল তার কোন হদিস এখন পর্যন্ত পাওয়া যায় না। তবে অনেকের ধারনা আজ থেকে প্রায় ৫০০০ বছর আগে মানুষ উৎসর্গ দেওয়ার জন্য এটি বানানো হয়েছিল।
১২) আটলান্টিসঃ
আটলান্টিসের গল্প শুরু হয় প্লেটোর একটি লেখায়। অনেকেই ভাবে, আটলান্টিস আর কিছুই ছিলনা প্লেটোর কল্পনা মাত্র। আবার অনেকেই খুঁজে যাচ্ছেন আটলান্টিসের জনপদকে। আজ পর্যন্ত অনেক প্রত্নতাত্বিক নির্দশন আবিষ্কার হয়েছে তবে এগুলো যে হারানো আটলান্টিস তার কোন জোরালো প্রমাণ নাই। রহস্যের আবডালে এখনো রহস্যময় এই আটলান্টিস।
আটলান্টিস নিয়ে বিস্তারি জানতে হারিয়ে যাওয়া শহর "আটলান্টিস" লেখাটি পড়তে পারেন।
১৩) যৌবনের ঝরনাঃ
স্পেইনের ডন জুয়ায়ন দিলিওন (Don Juan Ponce de Leon) ১৫০৯ সালে আমেরিকায় থাকা কালিন সময়ে প্রথম দবি করেন এই যৌবনের ঝরনার অস্তিত্ব আছে। যার পানিতে গোছল করলেই বয়স যেন পিছিয়ে যায় আর বৃদ্ধ ধীরে ধীরে যুবকে পরিনত হয়। রহস্যে ঘেরা পেরুর গভার্নর নির্বাচন হবার ৬ বছর পরে ইন্ডিয়ান কল্পকথা অনুসারে তিনি বিমিনি দ্বিপ ভ্রমন করেন। আর তখন থেকে তিনি এই দাবি তোলেন। কিন্তু এর অস্তিত্ব আছে কি নেই তার কোন প্রমান না দিয়ে তিনি নিখোঁজ হয়ে যান।
১৪) চুক্তির সিন্দুকঃ
এর অস্তিত্য আছে বলে ইতিহাস সাক্ষি দেয় কিন্তু কোথায় আর কার কাছে তার কোন প্রমান এখন পর্যন্ত মিলে নাই। এটি কাঠের বাক্স বা সিন্দুক যা আড়াই হাত লম্বা, দেড় হাত চওড়া এবং দেড় হাত উচ্চতা বিশিষ্ট (21⁄2×11⁄2×11⁄2 royal cubits or 1.31×0.79×0.79 m)। এর উপরিভাগ স্বর্ণের আবরণে আবৃত ছিল। এর সাথে চারটি স্বর্ণের রিং সংযুক্ত ছিল যার দ্বারা আর্কটি বহন করা হতো। আর্কটি প্রথমে চামড়া এবং এর উপর নিল রঙের বিশেষ কাপড় দিয়ে মোড়ানো থাকতো এবং সবসময় এটি একটি কাপড় দিয়ে আচ্ছাদিত থাকতো যাতে এটি বহনকারী পুরোহিতরাও এটি দেখতে না পারে।
এ নিয়ে বিস্তারিত জানতে "রহস্যেঘেরা চুক্তির সিন্দুক" লেখাটি পড়তে পারেন।
১৫) চুপাকাব্রাঃ
চুপাকাব্রা (Chupacabra) এক রহস্যে ঘেরা প্রানির নাম। টক্সাসের ফিলিস ক্যানিওন (Phylis Canion) যে প্রানীটির মাথা ধরে আছে এটির নাম চুপাকাব্রা। এই অদ্ভুদ দেখতে প্রানিটিকে প্রথম দেখা যায় পেরুতে ১৯৯৫ সালে। অনেকেই বলেন এই চুপাকাব্রা এর প্রিয় খাবার হচ্ছে মুরগী ও ছাগলের রক্তো। যদিও অনেক প্রমান রয়েছে এই প্রানীর অস্তিত্বের পক্ষে তারপরেও প্রানীবিদরা মানতে নারাজ এমন কোন প্রানীর অস্তিত্ব সম্পর্কে। তাই বলতে পারেন এই প্রানীর অস্তিত্ব এক অজানা রহস্যে ঘেরা।
১৬) দিল্লীর লৌহ দন্ডোঃ
দিল্লীর এই লৌহ দন্ডোর বয়স আনুমানিক ১৬০০ বছর, আর এটির উচ্চতা ২২ ফুট। এই পিলার বানানো হয়েছে ৯৮% লোহা দিয়ে। যে কারনে এটি সকলের নজর কেরেছে তা হল, এত বছর পরেও এই লৌহ দন্ডে কোন ক্ষয় নাই বা কোন মরিচা ধরে নাই। যা ৯৮% লোহার ক্ষেত্রে অসম্ভব বিষয়।
১৭) কোষ্টারিকার গোলাকার পাথরঃ
এই পাথর গুলি প্রথম আবিস্কৃত হয় ১৯৪০ সালে কোষ্টারিকা থেকে। আবিস্কার করেন ইউনাইটেড ফ্রুট কম্পানি। এই পাথর গুলি একদম সম্পূর্ন গোল ভাবে বানানো। আর এর এটি বানানোর সময় খ্রীষ্টপূর্ব ৬০০ শতকে। এর উপর খোদাই করা বেশ কিছু চিহ্ন আছে যার উদ্দেশ্য এখন পর্যন্ত জানা যায় নাই। তবে ধারনা করা হয়, এটি সূর্য দেবতাকে উপাসনা করার ক্ষেত্রে ব্যাবহৃত হতে পারে।
১৮) টাঙ্গুস্কা বিস্ফোরণঃ
এই টাঙ্গুস্কা বিস্ফোরণ ঘটে সকাল ৭:৪০ মিনিটে ৩০শে জুন ১৯০৮ সালে রাশিয়াতে। এই বিস্ফরনের ফলে ৮৩০ স্কোয়ার মাইল এলাকা জুড়ে ৮০ মিলিয়ন গাছ ধ্বংস হয়ে যায়। আর যে সকল প্রানী জীবিত ছিল তাদের বেশীর ভাগই শব্দের তীব্রতার কারনে বধির হয়ে যায়। অনেকেই মনে করে এটি হয়েছিল মহাকাশ থেকে আশা কোন উল্কার অথবা কোন আস্ত ব্লাক হোলের কারনে। আসল রহস্য কেউ এখন পর্যন্ত জানে না।
টাঙ্গুস্কা বিস্ফোরণ নিয়ে আরো বিস্তারিত জানতে "রহস্যময় টাঙ্গুস্কা বিস্ফোরণ" লেখাটি পড়তে পারেন।
১৯) পতঙ্গ মানবঃ
পতঙ্গ মানব (Mothman) ১৯৬০ দশকের বেশ আলোচনা সৃষ্টি করেছিল এটি। মানুষের মত দেহ কিন্তু সারা শরীর পশমে ঢাকা আর পোকাদের মত মুখের বৈশিষ্ট্য আর পাখা থাকার কারনে এর নাম করন হয় পতঙ্গ মানব। যদিও এর অস্তিত্ব নিয়ে তেমন জোড়ালো কোন প্রমান পাওয়া যায় নাই শুধু মাত্র কয়েক জনকে পাওয়া গেছে যারা দাবি করেন এই পতঙ্গ মানবকে সচক্ষে তারা দেখেছেন।
২০) জার্সির শয়তানঃ
ইতিহাস অনুযায়ি ২৫০ বছর আগে, আমেরিকার নিউ জার্সি শহরের, মিসেস লিডস তার ১৩ তম সন্তানের প্রসব বেদনার সময় চিতকার দিয়ে বলতে থাকেন ‘Let it be the Devil!’। এরপর বাচ্চা প্রসব হবার পরে দেখা যায় বাচ্চাটি অনেকটা ক্যাঙ্গারুর মত দেখতে, সাথে আছে বাদুরের মত পাখনা। বাচ্চাটি জন্ম নেওয়ার সাথে সাথেই তা উড়াল দিয়ে পালিয়ে যায়। তখন থেকেই এর নাম হয়ে যায় "জার্সির শয়তান" (Jersey Devil), তখন থেকেই বিশ্বাস করা হয় সেখানকার যত অকর্ম, কুকর্ম আর নষ্টামির মূল হোতা এই জার্সির শয়তান। যদিও এর অস্তিত্বের কোন প্রমানই নেই।