দিনদুপুরে একটা হারিকেন জ্বেলে তিনি শহরের পথে পথে ঘুরে বেড়ান।
কেউ এর কারণ জিজ্ঞেস করলে বলেন 'একজন সৎ মানুষ খুঁজছি গো!'
দালান বা কুঁড়েঘর নয় থাকেন তিনি মন্দিরের বাইরে একটা টবের মধ্যে।
সম্পদ বলতে তার ছিলো একটা পানি খাওয়ার মগ। একদিন হলো কি!
তিনি দেখলেন একটা বালক আঁজলা ভরে পানি পান করছে।তিনি ভাবলেন
আরে পানি খাওয়ার জন্য আবার পাত্রের দরকার কী? সুতরাং মগটাকেও
ছুঁড়ে ফেলে দিলেন।
বলছিলাম গ্রীক দার্শনিক ডায়োজিনিসের কথা।
তিনি দর্শনে স্টোইক দর্শন নামে একটি বিশেষ শাখা গড়ে তোলেন।
স্টোইক দর্শনের মূলকথা হলো,চূড়ান্ত আত্নসংযম,সুখেদুঃখে সমান অবিচল
থাকা এবং প্রকৃতিঘনিষ্ঠ সহজ সরল জীবনযাপন করা।
ডায়োজিনিসের গুরু ছিলেন এন্টিসথেন।এন্টিসথেন ছিলেন সিনিক দর্শনের
প্রবক্তা। যদিও ডায়োজিনিসই এই সিনিক দর্শনকে জনসমাজে পরিচিত করে
তোলেন।সিনিক শব্দটি এসেছে গ্রীক শব্দ 'সিনোস' বা 'সিনোকস' থেকে যার মানে
কুকুর বা কুকুরের মতো।যে সহজ,স্বাভাবিক ও খোলামেলা জীবনযাপনের কথা
ডায়োজিনিস বলতেন,তার মতে কুকুরই হতে পারে তার আদর্শ। কারন কুকুর
যখন যা পায় তাই খায়,যেখানে সেখানে লেজ গুটিয়ে ঘুমিয়ে পড়তে পারে,ভুল
করেনা শত্রু -মিত্র চিনতে।
ডায়োজিনিসের একটা ঘটনা উল্লেখ করে শেষ করবো এই পোষ্ট।
একদিন খোদ সম্রাট আলেকজান্ডার তার সাথে দেখা করতে এলেন।
ডায়োজিনিস তখন তার সেই টবে রোদ পোহাচ্ছেন। কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে
আলেকজান্ডার তাকে জিজ্ঞেস করেন "আমি কি আপনার কোন উপকার করতে
পারি?
ডায়োজিনিসের জবাব:হ্যাঁ,পার।সরে দাড়াও রোদটুকু আসতে দাও।