কোরিয়ন মুভি নো মার্সির রিভিউ:
বেশ নামডাকওয়ালা একজন বিখ্যাত ফরেনসিক ডাক্তার, নিজের কাজে সিদ্ধহস্ত বলে বেশ সুনাম তার । স্ত্রী অনেক আগেই মারা গেছেন, এক মেয়ে আছে, সেও বোর্ডিং স্কুলে । খুশির খবর হল ১৩ বছর পর তার মেয়ে তার কাছে ফিরে আসছে । ডাক্তার ভাবছেন- “মৃত” শরীরের সাথে তো অনেক বছরই কাটানো হল, এবার নাহয় শুধু নিজের মেয়েকে একটু সময় দিবেন । এমন সময়ই একটা খুনের ঘটনা ঘটে । জঙ্গলে একটি মেয়ের লাশ পাওয়া যায়, যার শরীর থেকে তার মাথা, দুটি পা এবং দুটি হাত বিচ্ছিন্ন করে অত্যন্ত নির্মমভাবে তাকে হত্যা করা হয়েছে । ডাক পড়ে সেই ফরেনসিক ডাক্তারের । এই কেসের ইনভেস্টিগেশন এর দায়িত্ব পড়ে এক সদ্য জয়েন করা লেডি পুলিশ অফিসারের ঘাড়ে, যিনি কিনা আবার এই ডাক্তারেরই প্রাক্তন ছাত্রী । খুনিকে বের করতে খুব একটা ঝামেলা পোহাতে হয়না তাদের, নিজের দোষ স্বীকারও করে নেয় খুনি । খুনির সাথে ডাক্তার যখন প্রিজন সেলে একা দেখা করতে যান, তখন তিনি জানতে পারেন, খুনি আগেই তার একমাত্র মেয়েকে অপহরণ করেছে, নিজের মেয়েকে বাঁচানোর একটাই উপায় ডাক্তারকে বাতলে দেয় খুনি- “আমার বিরুদ্ধে যত প্রমাণ পেয়েছ, তার সবগুলোকে নিশ্চিহ্ন করে আমাকে সম্পূর্ণ নির্দোষ ব্যক্তি হিসেবে জেল থেকে বের করো, তানাহলে তোমার একমাত্র মেয়ের চেহারা তোমার আর জীবনেও দেখা হবে না !” রাগে, দুঃখে, ক্ষোভে দিশেহারা হয়ে যান ডাক্তার !
কি করবেন এখন তিনি ?
নিজে আইনের লোক হয়ে কীভাবে তিনি একজন দোষী ব্যক্তিকে নির্দোষ প্রমাণ করবেন ? কিন্তু না করতে পারলে যে নিজের মেয়েকে আর ফিরে পাবেন না !
এই খুনিই বা কেন তার সাথে এমন করছে ?
এত সহজে আইনের কাছে নিজেকে ধরা দেয়ার পিছনে কি তার কোন উদ্দেশ্য আছে ?
খুনি কি চায় আসলে ?
এই সব প্রশ্নের উত্তর জানতে চান , তাহলে দেখুন No Mercy ( নো মারসি) ।
ভালো স্ক্রিপ্ট, ভালো অভিনেতা, মানানসই ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক এবং সর্বোপরি একজন ভালো পরিচালক থাকলে যে কতটা দুর্দান্ত একটা টানটান উত্তেজনার সিনেমা বানানো যায়- তার উদাহরণ হল নো মারসি । অভিনয়ে সবাই ভালো- তবে ফাটিয়ে দিয়েছেন ডাক্তারের চরিত্রে অভিনয়কারী ।
এটি একটি রিভেঞ্জ থ্রিলার । প্রতিশোধ যে কি পরিমাণ নির্মম হতে পারে, কতটা ভয়ানক আর নির্মম হতে পারে, কোরিয়ানদের থিঙ্কিং লেভেল যে কোন পর্যায়ের তা কোরিয়ান রিভেঞ্জ থ্রিলার গুলো দেখলেই বুঝবেন- নো মারসি এক্ষেত্রে আপনার জন্য হবে মাস্ট সি একটি সিনেমা । “প্রতিশোধ” শব্দটা সম্ভবত নিজেও ভয় পেয়ে যাবে কোরিয়ান সিনেমার প্রতিশোধের নির্মমতা দেখলে !
সব শেষে আর একটি কথা , নো মারসি সিনেমার প্রায় শুরুর দিকেই নগ্নতার দৃশ্য রয়েছে । সুতরাং, এটা মাথায় রেখেই সিনেমা দেখতে বসবেন ।
আর মুভিটা শেষ করে খিঁচ খায়ে মাথায় হাত দিয়ে বসে চিন্তা করতে থাকেন ” এইটা কি দেখলাম ” ।
আর জাজবাতে ডাক্তারের যায়গায় উকিল। এই আর লাফ ঝাপ।
কৃতজ্ঞতায় রায়োস্কপ ব্লগ।