একদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে আবিষ্কার করলেন, আপনি নিজের বিছানায় নেই!

চলে গেছেন চীনের কোন এক গ্রামের কৃষক বাড়িতে! আপনার দিকে কুতকুতে চোখের অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে চীনা পরিবারটি!
কেমন হবে ব্যাপারটি!!
তেমন একটা সুবিধার যে হবে না সেটা এমনিতেই বলে দেয়া যায়।
যাই হোক! যা হওয়ার হয়ে গেছে, এখন ঐ চীনা পরিবারের সাথে টুকটাক কুশলাদি তো বিনিময় করতে হবে। ক্ষুধা লাগলে বলতে হবে, পানি খেতে চাইলে বলতে হবে ইত্যাদি ইত্যাদি।
আশা করা যাচ্ছে, আপনি চীনা ভাষা পারেন না। এবং ঐ পরিবারও বাংলা পারে না।

এখন উপায়!!?
নানা অঙ্গ-ভঙ্গি করে আপনি কাজ চালিয়ে নিতে পারবেন। অন্তত আবশ্যিক চাহিদা গুলো। পরের গুলো পরে দেখা যাবে।
.....................................
এখন আমাদের কাজের কথা চলে আসি।
আমাদের অতি প্রিয় কম্পিউটারকে যতটা বুদ্ধিমান ভাবেন, আসলে সে কিন্তু তা না!

গল্পের ঐ চীনা কৃষকটি মানুষ বলেই তারা আপনার অঙ্গ-ভঙ্গি বুঝতে পারবে, অনুমান করে নিতে পারবে। মানবিকতার কারণে আপনাকে সাহায্য করবে।
কিন্তু কম্পিউটারকে সুনির্দিষ্ট নির্দেশ না দিলে কোন কাজই করতে পারবে না।
এই নির্দেশ দেওয়ার কাজটি আবার করতে হবে, কম্পিউটারের নিজের মাতৃভাষায়। কারণ, এটা ছাড়া সে কোন ভাষা পারে না!

বড় অদ্ভুত তার মাতৃভাষা!
স্বরবর্ণ-ব্যঞ্জনবর্ণের কোন বালাই নেই।
আছে শুধু দুইটি বর্ণ!
১ আর ০
এই পদ্ধতির নাম হলো বাইনারি।
আর এই ভাষার নাম, মেশিন ল্যাংগুয়েজ।
চীনের ঐ পরিবারের সাথে কথা বলার জন্য চাইনিজ ভাষা শেখা যেমন দূরুহ, তেমনি মেশিন ল্যাংগুয়েজ দিয়ে কম্পিউটারের সাথে কথা বলাও দূরুহ।
তাই বলে কি কথা বলা থেমে যাবে?
কখনোই না!
সে জন্যই চুল-দাড়িঁপাকা বিজ্ঞানীরা এক এক সময়ে এক একটি ভাষা উদ্ভাবন করেছেন, যা দিয়ে আমরা কম্পিউটারের সাথে গল্প-গুজব করতে পারি, সাথে টুকটাক হিসাব-নিকাশ।

এই ভাষা গুলোকে তিন ভাগে ভাগ করা যায়।
১. হাই লেভেল
২. মিড লেভেল
৩. লো লেভেল।
হাই লেভেল ল্যাংগুয়েজ গুলো আমাদের দৈনন্দিন ভাষার সাথে মিল রেখে করা। আর লো লেভেল গুলো মেশিনের ভাষার সাথে মিল রেখে করা হয়েছে। মাঝামাঝিতে আছে মিড লেভেল।
অনেক রকম প্রোগ্রামিং ভাষার মধ্যে আমরা সি কেন শিখবো?
কারণ, এটার ব্যবহার ব্যাপক। সহজেই বুঝা যায়। সব ধরনেই কম্পিউটারে চালানো যায়। সবশেষে বলবো, এটা তুলনামূলক সহজ! যার কারণে শিশুরাও শিখতে পারবে!

......................................
এই সিরিজের শুরুটা একটু ধীর গতির। কারণ, ধৈর্য্য ধরে প্রোগ্রামিং শিখতে হবে।
দয়া করে প্রোগ্রামিং কে পাউরুটি মনে করবেন না! দোকান থেকে প্যাকেটে করে কিনে আনলেন, আর গাপুস-গুপুস খাওয়া শুরু করলেন!

মনে করবেন, এটা হলো ময়দা/আটার রুটি। নিজেরই বানিয়ে খেতে হবে।
পাউরুটি যেমন অস্বাস্থ্যকর হওয়ার সম্ভাবনা থাকে , তেমনি হুটহাট কোড লিখে প্রোগ্রামিং শুরু করলে প্রথম প্রথম সেটা ভালো লাগবে।কিন্তু দুই দিন পরে মনে না থাকার সম্ভাবনা থাকে।
বুঝে শুনে অগ্রসর হলে, এই ভয় নেই। আটার রুটির মতই প্রতিটি উপাদান আপনার চোখের সামনেই থাকবে।
........................................
"শিশুদের উপযোগী টিউটোরিয়াল: C - programming Language. " ভূমিকা
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই নভেম্বর, ২০১০ সকাল ১১:০৭