ইউনিভার্সিটি লাইফ এর শেষ পর্যায়ে আছি, আমার ভালোলাগার এই ছোট্ট সময়টা আপনাদের সাথে শেয়ার করলাম।
ফার্স্ট ইয়ার
অনেক ভালোলাগা নিয়ে রুয়েট এ ভর্তি হয়েছিলাম। কিন্তু প্রথম দিক এ ফিজিক্স ল্যাব এ স্যার দের ভয়াবহ মানসিক নির্যাতন, ম্যাথ এর স্যারদের নোট নিয়ে মুখস্ত ক্লাস করে সত্যি হাপিয়ে উঠেছিলাম। নিজেকে নিয়ে খুব হতাশ ছিলাম সেই সময়টা। ।অবশ্য সার্কিট ল্যাব ও অনেক ভাল লাগত কিন্তু সেটা ছিল ১ সপ্তাহ পর পর । সার্কিট ল্যাব ভাল লাগলেও , এই সাবজেক্ট টা শুধু ক্লাস এই বুঝতাম, যখন মুর্তজা স্যার বোঝাত । কিন্তু রুমে আসলেই সব ফাকা । কিছু বুঝে উঠার আগেই থার্ড সপ্তাহ থেকেই ক্লাসটেস্ট ।মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা হিসেবে থাকতো ল্যাব ।আর ল্যাব মানেই রিপোর্ট । রিপোর্ট – রুয়েট ফার্স্ট ইয়ার এর ছাত্রদের জন্য এক আতংকের নাম । সারা রাত রিপোর্ট লেখে সকালে যদি সেটা সবার সামনে স্যার ছিড়ে ফেলে, তখন কেমন লাগে??? এই ব্যাপারটা সবথেকে বেশি ফেস করে সিভিল এর পুলাপাইন। অনেক ফ্রেন্ড কে দেখেছি সারারাত ধরে ড্রয়িং করে , সকালে স্যার এর মেগা ঝাড়ি খাইতে। সেই সময় সবথেকে মজা পেতাম, যদি শুনতাম কোন পরীক্ষা হবে না অথবা স্যার নাই তাই ল্যাব হবে না। আমাদের সপ্তাহে ২দিন ছুটি ( শুক্র+ শনি)। বৃহস্পতি বার ক্লাস শেষ হলে হল এ ঈদ এর আমেজ চলে আসত। আমরা ফ্রেন্ডরা ক্লাস শেষ করেই সাহেব বাজার ,পাশে পদ্মা (প্রায় ১০ মাস এ চর থাকে ) তে যে কতবার যাওয়া হয়েছে তার হিসেব নেই। রাত এ আড্ডা, মুভি আর ও কত কি । মাক্সিমাম সময় দেখা যেত রবিবার এ ক্লাসটেস্ট থাকতো । কিন্তু এই CT এর জন্য শনিবার রাত ১০ টার আগে সময় হতো না। এভাবে ১১ সপ্তাহ যে কত তাড়াতাড়ি শেষ হয়ে গিয়েছিল টের ও পাইনি। তবে ১২ সপ্তাহে এসে বুঝতাম BAMBOO কারে কয়? । কুইজ, ল্যাব ভাইভা, এক গাদা ক্লাস টেস্ট +বোর্ড ভাইভা( শেষ পুলসিরাত) , জীবন পুরা শেষ । (বোর্ড ভাইভা কি জিনিস... এইটা নিয়ে আর একদিন লিখব)। ১৩ সপ্তাহ ক্লাস এর পর আসত PL। যার OFFICIAL MEANING-Preparatory Leave কিন্তু আমরা বলতাম পা---য় লাথি। সব পরীক্ষার আগে ৫ দিন করে ছুটি । যারা পড়ার ছাত্র(কেল্টু) তারা ৫*১৮=৯০ ঘণ্টায় পড়ত। আর আমরা ৩*৫=১৫ ঘণ্টায় পরেই সব আইনস্টাইন এর ছোট ভাই হয়ে যেতাম, যার প্রকাশ দেখা যেত পরীক্ষা হল এ ।
আজ আর না, ভাল থাকবেন সবাই।
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে মে, ২০১১ রাত ১০:১৯