চরিত্রহীন শরৎ
‘চরিত্রহীন’ লিখে শরচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় বেশ সাড়া ফেলে দিয়েছেন। সে সময় বহুদিন পর হঠাত্ রাসত্মায় এক বাল্যবন্ধুর সাথে দেখা। বন্ধুটিকে কৌতূহল নিয়ে তার মুখের দিকে তাকিয়ে থাকতে দেখে শরত্চন্দ্র বললেন, কি হে, চিনতে পারছ না? আমি শরত্।
: কোন শরত্?
আমি ‘চরিত্রহীন’ শরৎ। শরত্চন্দ্র মুচকি হেসে বললেন।
আগেও এক সতীন, এখনও ১০৩
হোক দ্বিতীয় বিয়ে। বন্ধুর বিয়ে বলে কথা! রজনীকান্ত্ম সেন বন্ধুর বিয়েতে নিমন্¿িত হয়ে গেলেন। ফেরার পথে নববধ– জ্বরে আক্রান্ত্ম হলো। বন্ধু রজনীকান্ত্মের কাছে তার উদ্বেগের কথা জানালেন, বন্ধু এখন উপায়? জ্বর তো ১০৩ ডিগ্রি উঠেছে।
বন্ধুর উদ্বেগ দেখে রজনীকান্ত্ম হেসে বললেন, ভেব না, আগেও এক সতীন, এখনও ১০৩।
ততদিনে বিখ্যাত
একমাত্র বন্ধুর কাছেই মনের কথা অকপটে খুলে বলা যায়। কথা প্রসঙ্গে একদিন মার্ক টোয়েন তার এক ঘনিষ্ঠ বন্ধুকে বললেন, বছর দশেক লেখালেখি করে বুঝলাম এ ব্যাপারে আমার কোনো প্রতিভাই নেই!
: এটা বুঝার পরেও তুমি লেখালেখি চালিয়ে যাচ্ছ কেন?
: ততদিনে আমি বিখ্যাত হয়ে গেছি যে!
দামি ছবি
পিকাসো তখন দক্ষিণ ফ্রান্সে। একদিন বাসায় বন্ধুদের নিয়ে জম্পেস আড্ডা দিচ্ছেন। বন্ধুরা অবাক হয়ে লড়্গ করল, ঘরে পিকাসোর আঁকা একটা ছবিও নেই। এক বন্ধু তো বলেই ফেলল, ঘরে তোমার আঁকা কোনো ছবি দেখছি না কেন? তুমি কী ওগুলো পছন্দ করো না?
শুনে পিকাসো বললেন, পছন্দ করি না এমন নয়। আসল কথা হলো এত দামি ছবি কেনার সামর্থ্য আমার নেই।
মতবাদের প্রতিবাদ
বন্ধুদের মধ্যে মতভেদ থাকবে, তা নিয়ে তর্ক-বিতর্ক হবে এটাই স্বাভাবিক। টমাস আলভা এডিসনের এক বন্ধু ছিলেন যে সব সময় এডিসনের যে কোনো মতের প্রতিবাদ করতেন। একবার সেই বন্ধু টাকা ধার নিলেন এডিসনের কাছ থেকে। তারপরই পাল্টে গেল বন্ধুর চরিত্র। এডিসন লড়্গ করলেন বন্ধু আগের মত কারণে-অকারণে তার পেছনে লাগে না, মন্ত্মব্যেরও প্রতিবাদ করে না। একদিন যথারীতি এডিসনের কী একটা মন্ত্মব্যে বন্ধুটি সমর্থন করতেই এডিসন রেগে বললেন, হয় তুমি আমার মন্ত্মব্যের প্রতিবাদ করো না হলে আমার টাকা ফেরত দাও।
দুর্ভিড়্গের কারণ
জর্জ বার্নার্ড শ যেমন রোগা পাতলা ছিলেন তার লেখক বন্ধু চেস্টারটন ছিলেন তেমনি মোটা স্বাস্থ্যবান। দুই বন্ধু দেখতে দুরকম হলেও দুজনেই ছিলেন সমান রসিক। একদিন আড্ডায় দুর্ভিড়্গের প্রসঙ্গ উঠতেই চেস্টারটন বার্নার্ড শ’র দিকে তাকিয়ে বললেন, বুঝলে শ, দেশে যে দুর্ভিড়্গ চলছে তা তোমাকে দেখলেই বোঝা যায়। শুনে বার্নার্ড শ বললেন, তা না হয় বুঝলাম। কিন্তু তোমাকে
দেখে লোকে অন্তত এটুকু বুঝবে যে দুর্ভিক্ষের কারণটা তুমিই।
কথাবার্তা বন্ধ
মৃতরা জীবিতের সঙ্গে যোগস–ত্র স্থাপন করতে পারে স্যার আর্থার কোনান ডয়েল একথা বিশ্বাস করতেন। একবার তার এক ঘনিষ্ঠ বন্ধুর মৃত্যুর পর তাকে জিজ্ঞেস করা হলো, মৃত বন্ধুটি তার সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেছে কিনা?
ডয়েল বললেন, করেনি। তখন প্রশ্নকর্তা বললেন, তাহলে এখনও কী আপনার মনে হচ্ছে না আধ্যাত্মবাদ বিষয়টি আসলে ভুয়া?
ডয়েল দৃঢ়ভাবে বললেন, এ ঘটনায় তা প্রমাণিত হয় না। কারণ বন্ধুটির যখন মৃত্যু হয় তখন আমাদের দুজনের মধ্যে কথাবার্তা বন্ধ ছিল।
শত্রু নেই
ভল্টেয়ার। ফরাসী বিপস্নবের স–চনাপর্বের প্রেরণাদায়ী লেখক। একদিন তিনি বিপস্নবী বন্ধু রম্নশোকে বললেন, এখন পৃথিবীতে আমার কোনো শত্রু নেই। রুশো তো এ কথা শুনে অবাক। ভল্টেয়ারের মত মানুষের শত্রম্ন নেই! তা কী করে সম্ভব? ভল্টেয়ার বললেন, আমার বয়স এখন প্রায় পঁচাত্তর। একসময় আমার শত্রুর অভাব ছিল না। কিন্তু তারা সবাই মারা গেছে। সমবয়সীদের মধ্যে একমাত্র আমি এখনও জীবিত আছি।