ভালোবাসা আর ভালোলাগা এক নয়।
আসলেই তাই.... মাঝির বেটা হঠাৎ করেই বুঝতে পারে।
বুঝবেই না কেন?
এতটা দিন ত শুধু ভালোলাগা নিয়েই কাটিয়েছে, ভালোবাসা ত পায়নি। তুই এলি ভালোবাসা রং নিয়ে। আর মাঝি অবাক হয়ে বুঝলো ভালবাসা, সেতো পুরাই আলাদা।
গঞ্জের হাটের টিমটিম করে জ্বলতে থাকা হলদে আলোর বাতিগুলো তাদের সারাদেহে গুবরে আর ঝিঝি পোকার লালা লাগিয়ে ঘোলা থেকে ঘোলাটে হয়ে যতটুকু আলো দিচ্ছে তাতে থালায় মাছ বিছিয়ে বসা জেলে পাড়ার দেহাতি মেয়েটা...অথবা জয়কালি বস্র ভান্ডারের রাতের আলোর সাথে পাল্লা দিয়ে লাগানো হ্যাজাক বাতি আর সাদা সাদা ফ্লুরোসেন্ট আলোয় কেনাকাটা করতে আসা গ্রামের আটপৌরে মেয়েগুলোকেও দেখে মাঝির ভালো লাগে।
কিন্তু, কিন্তু, কিন্তু, কিরে.....????
কিন্তু এই ভালোলাগা শুধুই যে ভালোলাগা, অনুভুতিহীন ভালোলাগা।
মাঝি কেপে কেপে উঠা কুপিবাতির লম্বা শিষতোলা আলোয় দেখেছে তোর কাজল দেয়া মুখখানির আলোছায়া ছবি।মমতায় মাখা মায়াবী মুখখানি। সারা মুখ জুড়ে স্নিগ্ধতার বেসাতি,কপোল থেকে চিবুক, বাকানো ভ্রু থেকে টান টান গলা। এলে পড়া আলতো চুলের পাকানো গোছা, বার বার ছুতে চাওয়া তোর ভ্রমর কালো তিল,
তোর গভীর চোখের বুক খুড়েফেলা দৃষ্টি,তোর চোখদুটি যেন স্বচ্ছ জলের আধার তোলা এক পাতকোয়া । যেখানে প্রতিফলন ঘটে মাঝির বেটার সব আবেগ অনুভুতি। গভীর থেকে গভীর। যে চোখের দিকে তাকালে সময় পাখা লাগিয়ে উড়ে চলে আগের থেকেও দ্রুত।
এও ভালোলাগা , তবে মনের ভিতর থেকে জোয়ারের মতো বের হ য়ে আসা সুখ সুখ অনুভুতির ভালোলাগা।
মুর্খ মাঝির বেটা এইটা বুঝতে পারে ভালোবাসা একেই বলে।
এই অনুভুতি বড্ড আপন।
ঘরের দাওয়ায় বসে মাঝি হেলান দিয়ে যখন তাকায় তোমার দিকে, ঘাড় ঘুরিয়ে এক্টু মিষ্ট হাসি আর মিষ্ট কথায় মাঝি ভুলে যায় তার সারাদিনের ক্লান্তি।
হাজারো জোনাকি তখন দাওয়ার চারপাশ আলো করে ঘুরে বেড়ায়। মিহি সুরে জোনাকির গান সেতো শুধু আমিই শুনি।
ভালোবাসা আমি তোকেই বাসলাম, তুইই আমায় দিলি।
এক্টা বিড়ি দেও মিয়া!
এতো তাড়া ক্যান মাঝির পো?
দোকানের পাশেই রশিতে জ্বালিয়ে রাখা আগুন থেকে বিড়টা ধ রিয়ে মাঝি দোকানদার শোনায়, বাড়ি যাই মিয়া!
নয়া এক্টা গপ বানছি....
শোনান লাগবো তারে........
দোকানির হাসি আর উত্তর মাঝির বেটার শোনা হয়না..........
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ সকাল ৯:৪৩