দাবি মানেই বিরোধীতা নয়, প্রত্যাশা ভাবুন...
নিচের প্রথমটা ৩০ মার্চ-র (শাহবাগে নার্সদের আন্দোলনে পুলিশ লাঠিপেটা, আহত ৩০) এবং দ্বিতীয়টা ৩১ মার্চ-র (তনুর জন্য প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরমুখী যাত্রায় বাধা, ধস্তাধস্তিতে আহত ৪)। এ ধরনের ঘটনা শুধু আহত ও অনাকাঙ্গিত ঘটনার জন্ম দেয় না। সরকারের ভাবমুতিকে ক্ষুন্ন করে। জনগন ও সরকারের মাঝে দুরত্ব সৃষ্টি করে। আইনশৃঙ্খলার অবনতি করে। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে এ অবস্থা যাতে সৃষ্টি না হয়, সে জন্য সরকারে বিভাগগুলো জনবান্ধব ও দায়িত্বশীল হাওয়া জরুরি।
জনতা অধিকার আদায়ে বা অধিকারের কথা সরকারের জানাতে নিরুপায় হয়েই এ ধরনের পথ বেছে নেয়। রাস্তায় জনতার অবস্থানের সাথে সাথে পুলিশ আসে।কিন্তু সংশ্লিষ্ট বিভাগের কেউ আসে না। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই পুলিশের সাথে সংঘাত হয়।
আমার প্রশ্ন পুলিশ যদি আসতে পারে তবে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের প্রতিনিধিদের আসতে সমস্যা কোথায়। নার্সদের এ আন্দোলনের খবর নিশ্চিয় সংশ্লিষ্ট বিভাগও জেনেছে। তারা তাদের একজন প্রতিনিধি পাঠিয়ে তাদের আলোচনার জন্য আহবান জানাতে পারতো। এ আন্দোলন অনেকদিনের, কেন সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলো তাদের আলোচনায় বসেনি
তনু হত্যার বিচারের দাবিতে ছাত্র যদি প্রধানমন্ত্রীকে স্মারকলিপি দিতে যায় তবে সমস্যা কোথায় ছিল? প্রধানমন্ত্রীর উপর অনেক আস্থা আছে বলেই তারা প্রধানমন্ত্রীকে স্মারকলিপি দিতে চায়। প্রধানমন্ত্রী দেশের নানা সমস্যা বিষয়ে যে ধরনের বক্তব্য দেন বা খোজ রাখেন। সংশ্লিষ্ট বিভাগের অধিকাংশ মন্ত্রীকেই এ ধরনের অবস্থানে দেখা যায় না।
এ ধরনের অনাকাঙ্গিত ঘটনা এড়াতে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর হতে একজন কর্মকর্তা তাদের কাছ হতে স্মারকলিপি নিতে আসতে পারতেন। অথবা পুলিশ তাদের একটি প্রতিনিধি দলকে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে নিয়ে যেতে পারেন। বিষয়গুলো খুবই সাধারণ কিন্ত জনবান্ধব চিন্তা না থাকায় বিষয়গুলো খুবই জটিল হয়।
বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক একটি রাষ্ট্র। এ রাষ্ট্রে জনগণ তার অধিকারের কথা বলবেই। দাবির জন্য কথা বলা একটা সংবিধানিক অধিকার। অধিকার ও দাবি নিয়ে কথা বলা মানেই সরকারের বিরোধীতা নয়। সরকারের কাছে যখন দাবি করা হয়,তখন এটা উপলব্ধি করা প্রয়োজন সরকারের কাছে প্রত্যাশা হতেই এ দাবি করা হয়।
পরবতীতে এ ধরনের সামাজিক আন্দোলনে পুলিশের উচিত নিম্নোক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করা। যা পুলিশের সাথে জনগনের সম্পর্ক উন্নয়ন করবে।
১) সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের সাথে যোগাযোগ করে, তাদের প্রতিনিধিকে আসতে বলা।
অথবা
২) আন্দোলনকারীদের প্রতিনিধিদলকে সংশ্লিষ্ট বিভাগের কাছে নিয়ে যাওয়া।
সরকারের উচিত
১) এ ধরনের ঘটনার প্রেক্ষিতে আন্দোলনকারীদের সাথে পূর্বে সংশ্লিষ্ট বিভাগ/বিভাগের দায়িত্বশীল ব্যক্তি তাদের সাথে আলোচনা করেছে কিনা বা তাদের সাথে যোগাযোগ করেছে কিনা তদন্ত করা।
২) সরকারের কোন বিভাগের কাছে এ ধরনের দাবি উত্থাপিত হলে, যদি সংশ্লিষ্ট বিভাগ তাদের কথা শুনার জন্য যোগাযোগ না করে, তবে সংশ্লিষ্ট বিভাগের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ।
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে মার্চ, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৫৭