[১] এই শোনো আমার অমুক বান্ধবীর লাভার এই করছেঃ মারছে রে, উনার বান্ধবীর প্রেমিক যেটা করছে আপনাকেও সেটা করতে হবে ব্যাপার এমন নয় বরং আপনাকে তার থেকেও ইউনিক কিছুই করে দেখাতে হবে আর তাই সে এমন আহ্লাদেপনা শুরু করেছে।
সমাধানঃ মনে মনে হয়তো আমরা ঐ ছেলের গুস্টি উদ্ধার করি কিন্তু ভুলেও সামনে কিছু বলবেন না, কিংবা আপনি কিছু করবেন তাও বলবেন না, বরং আপনি চুপ করে শুনুন, মিষ্টি একটা হাসি দিয়ে বলুন দেখছো আমরা ছেলেরা তোমাদের কতো ভালোবাসি। এখন দেখবেন খেলা, সে নিজেই এখন উল্টো যুক্তি দাড় করাতে আপ্রান চেষ্টা চালিয়ে যাবে।
[২] বারবার ফোন দেয়াঃ দেখা গেলো আপনাকে সারাদিন ফোন দিচ্ছে, আপনার কাজের বারোটা বাজাচ্ছে, এই সেই হাবিজাবি নিয়ে কথা বলে বিরক্তির চুড়ান্ত অবস্থা। হয়তো দেখা গেলো সারাদিন সারারাত কথা বলার পর, ঘুমের মধ্যেও ফোন দিয়ে বলবে, একটা কথা ছিলো কিন্তু ভুলে গেছি, এখন মনে করতে পারছি না, মনটাই খারাপ, কি করি বলো তো?
সমাধানঃ এইসব ক্ষেত্রে যেটা করবেন, প্রথমেই তাকে বলুন যে ফোনের রিংটোন আপনার মাথা ব্যাথার কারন হয়ে দাঁড়ায়, আর তাই ফোন সাইলেন্স করে রাখার একটা অভ্যাস গড়ে তুলুন। সে হয়তো আপনাকে অনেক ফোন দিবে, দেখলেও রিসিভ করবেন না, বলবেন দেখতে পান নাই, এবং ফ্রি হলে তাকে ফোন দিয়ে বলুন যে আজ কিংবা কাল তাকে নিয়ে একসাথে লাঞ্চ করবেন, যদি ফ্রি থাকেন।
[৩] আমি পুরোনো হয়ে গেছিঃ মিস্টার ঘটনা যদি এইদিকে যায় তাহলে কিন্তু খবর আছে, সে হীনমন্যতায় ভুগছে। সে প্রথমে বিভিন্ন দিকে কথা প্যাচাবে, এবং বারবার আপনার সাথে ঝগড়া লাগাবার চেষ্টা করবে, অভিমানে হয়তো ঠোট ফুলে থাকবে, চোখে থাকবে ভয়াবহ তৃষ্ণা, আপনার দিকে তাকিয়ে সে খুজতে শুরু করবে তার অভিযোগ আসলেই সত্য কিনা।
সমাধানঃ প্রথমেই তাকে এসব ঝগড়া টগ্রা করার সুযোগ বন্ধ করবেন নয়তো নিজেই পরে টেম্পার ধরে রাখতে পারবেন না, আর যদি নাই পারেন তাহলে সে ধরে নিবে সে পুরান হয়ে গ্যাছে। বরং যখনি সে এরকম শুরু করবে তখন তার বাম শক্ত করে ধরুন আর অনামিকায় সুন্দর করে একটা পাপ্পি দিয়ে, মুখে বলুন আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি। [আমার তো লিখতেই লজ্জা লাগছেরে]
[৪] নির্দিষ্ট ডেটের আগেই যদি সে এসে অপেক্ষা করেঃ অনেক সময় হয়তো কয়েকদিন দেখাই করতে পারেন নাই, ব্যস্ততার কারনে। তখন সে হয়তো ডেটের দিন আগেই এসে বসে আছে, কখনো কখনো ১ ঘন্টা আগেও এসে বসে থাকে। এসব ক্ষেত্রে মধুর মিলনের পরিবর্তে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় দিয়ে শেষ হয়, যা আপনার কয়েকদিনের শান্তির বারোটা বাজাবে।
সমাধানঃ আপনি তো অবশ্যই আপনার বান্ধবীকে ভালো চিনেন, যদি সত্যি তার এই অভ্যাস থাকে তবে হাতে এক গুচ্ছ ফুল নিন, অবশ্যই রেড রোজ, আর পারলে একটা বেলী ফুলের মালা, আর হ্যা অতি অবশ্যই আধা ঘন্টা আগে আসুন। যদি সে না আসে তাহলে একটা সিগারেট আর একটা সেন্টার ফ্রুটো কিনে তার সদ্ব্যবহার করুন।
[৫] অনবরত ঝগড়া করার অভ্যাসঃ এইটা সেইটা নিয়ে সারাদিন খোঁচাবে, কি করছো কেন করছো কেন করো নাই ইত্যাদি ইত্যাদি। এতো খবরদারি বাপ মাও করে কিনা সন্দেহ আছে। যাই হোক আপনাকে সব সময় ঝাড়ির উপ্রে রাখবে মাঝে মধ্যে ধোলাইও দিতে পারে।
সমাধানঃ চুপ করে হজম করুন ভায়া, মেয়ের উপরে সবল হইলা লাভ নাই, বরং ঘরে শান্তি রাখতে হইলে উহাকে জিততে দিন। উহারাই আপনার সকল সুখের উৎস না হইলেও সকল দুঃখের উৎসে পরিনত হইবে অন্যথায়। আর হ্যা যেটা করতে পারেন, প্রতিদিন দেখা করতে যাবার সময় একটা বাবল গাম চুইংগাম নিয়ে যান। আর দেখা করার সময় বাদাম তুলে দিন হাতে। এতে তার মুখ এবং হাত উভয়েই থাকবে বিজি, যা আপনাকে দিবে সুরক্ষা।
[৬] তুমি ঐ মেয়ের দিকে তাকালে কেনঃ আপনি যদি কোনও মেয়ের দিকে তাকান সে পাশে থাকা অবস্থায় কিংবা কোনও মেয়ের হাত ধরেন হ্যান্ডশেক করার জন্যেও তাহলেই কিন্তু তার মুখে একটা ক্রুর হাসি দেখতে পাবেন, সে এখন মনে মনে বলছে দাড়াও চাদু তোমারে একলা পাইয়া নেই। আর একা হবার পর আচ্ছা মেয়েটা খুব সুন্দর আর ভালো তাই না? এই টাইপের আলোচনা দিয়ে শুরু হবে, বাকিটা আপনারা জানেন।
সমাধানঃ যখন সে একা পেয়ে শুরু করবে আচ্ছা মেয়েটা ভালো না? আপনি তখন বলবেন আর কিসের ভালো, তুমি জানো না তো, ঐ মেয়ের কাজিন এলাকার অনেক বড় গুন্ডা, ঐ মেয়েরে হাতে রাখলে ভবিষ্যতে আমাদের প্রেমের ব্যাপারে বিশাল হেল্প পাওয়া যেতে পারে, অথবা এরকম কিছু একটা ম্যানেজ করেন। আর যদি বলে হাত ধরেছো কেন? একটা মিচকা বুদ্ধি দেই, দেখলাম হাত গুলা কেমন, অনেক শক্ত বুঝলা, মনেই হয় না যে ওইটা মেয়েদের হাত, আর দেখো তোমার হাত কতো কোমল। ধরলেই শান্তি। বলেই তার হাত ধরুন।
[৭] এই আমার সব বান্ধবী বিয়ে করেছেঃ বিয়ের প্যাচাল শুরু করছে? সারাদিন কানের কাছে ঘ্যান ঘ্যান। এই জানো বাবুটা অনেক সুন্দর ছিলো। আজকে আম্মু বলল আমি নাকি মোটা আর অসুন্দর হয়ে যাচ্ছি দিনদিন, তারপর আমার চেহারা নষ্ট হয়ে গেলে তো তুমি অন্য কারো হাত ধরে পালাবা। ইত্যাদি ইত্যাদি।
সমাধানঃ তাকে বলুন, বিয়ে তো আজ বাদে কাল অবশ্যই করতে হবে। সো চলো প্ল্যান করি কি কি লাগবে বিয়ের সময়, বিশাল একটা লিস্ট তাকেই করতে দিন। অতঃপর বলুন এতো টাকা এই মুহূর্তে নাই আপনার কাছে, আগে নিজেকে গুছিয়ে তারপর বিয়ে করবেন। আর যদি বলে কিছুই লাগবে না, তাহলে তাকে নিয়েই প্ল্যান করুন সুন্দর সুন্দর বিয়ের পর কি কি করবেন তার। আর এভাবেই তাকে ব্যস্ত রাখুন দিনের পর দিন। সে রোম্যান্টিক মুডে থাকবে, আর তারপর যথা সময়ে তাকে বিয়ে করুন। তবে হ্যা বিয়ের একটা কার্ড আমাকে পাঠাতে ভুলবেন না কিন্তু।
[৮] সন্দেহপ্রবনঃ আপনার ফোন যদি কোনও কারনে একবার বিজি পায় কিংবা আপনি যদি কোনও ক্লাসমেট, আত্মীয়া কিংবা বড় অথবা ছোট আপুর প্রশংসা তার সামনে করেন, অথবা কোনও কারন লাগবে না, সন্দেহ তার বাতিকে পরিনত হইছে। বারবার সে মোবাইলের হেডফোনের মতো প্যাচ খায়া যায়, আর আপনারেও সেই প্যাচে ফেলার ধান্দায় থাকে।
সমাধানঃ দুইটা ওয়ে আছে এখানে, প্রথমত সে যদি এধরনের টেনশনে থাকে তাহলে সেটা আপনার জন্যে ভালো কারন সে নিজে আপনাকে এসব টেনশনে ফেলতে পারবে না। আর যদি খুব প্রকট হয়ে উঠে তাহলে যা যা করবেন। ফোন বিজি পাইলে পরে ফোন দিয়ে বলুন অমুকের অমুক মারা গ্যাছে, অমুকের ওইখানে আগুন লাগছে, অমুক দুস্তের জিএফ আরেকটা প্রেম করা শুরু করছে ও ব্যাচারা অনেক কষ্টে আছে, অমুকের জিএফ বিয়ে করছে অন্য পুলা, এইভাবে তারেই থামায়া রাখেন। পারত পক্ষে আপনার বান্ধবীর সামনে অন্য মেয়ে নিয়ে আলোচনা করবেন না একদম, পুরোন জিএফ থাকলেও খুব সৎ হবার জন্যে তাদের কথা শেয়ার করবেন না একদম। তাদের সামনে থাকাকালীন নিচের দিকে এবং তার দিকে তাকিয়ে কথা বলুন, একেবারে চোখে চোখ রেখে যাতে সে নিজেই লজ্জা পেয়ে চোখ নামিয়ে নেয়।
[৯] ছিচকাদুনেঃ আপনার বান্ধবী ভয়াবহ ছিঁচকাঁদুনে, অল্পতেই কেঁদে কেটে অস্থির কিংবা ন্যাকামি করতে করতে এমন পর্যায়ে চলে যায় যেন এই মুহূর্তে ভূমিষ্ঠ হলো। আপনি হয়তো একটু বকা দিলেন কিংবা সামান্য ঝাড়ি প্রথমেই ঠোট ফুলিয়ে রাখবে তারপরেই কান্নার নদী বইয়ে দিবে। অথবা বাচ্চাদের মতো আহ্লাদেপনা করতেই থাকবে।
সমাধানঃ প্রথমেই বলি যে মেয়েটি আপনাকে ভালোবাসে সে আপনার কাছে অনেক অধিকার আশা করে, সে চায় আপনার পুরোটা পেতে, আই মিন মনোযোগ দাবী করে আর কি। সো তার কান্না করার কারন হচ্ছে এইটাই। এসব ক্ষেত্রে তার কান্নার সময় আপনি অট্টহাসি দিতে পারেন এবং যদি খুব ক্লোজ হন তো কাতুকুতু ভালো অথবা বিভিন্ন রকম ফান করতে পারেন। মোট কথা তার ছিচ কান্না একদম পাত্তা দিবেন না। আর যদি ন্যাকামী করে এর মানে তো খুব সহজ, বাচ্চারা আহ্লাদেপনা করে আদর পাবার জন্যে আর আপনার সামনে দাঁড়ানো এই বুড়ো বাচ্চাটাও আদর চায়। বুঝে নিন।
আপাতত এই কয়টা সমস্যা মাথায় এলো, আরো কিছু ছিলো কিন্তু এখন ভুলে গেছি। আপনাদের যদি আরো সমস্যা জানা থাকে তাহলে জানান, আমি সমাধান দেয়ার চেষ্টা করবো। আর হ্যা জয়তু প্রেম। প্রেম হোক অমর। প্রেম বিহীন জীবন একটা মৃত জীবন বলেই মনে করি আমি। সবার জীবনে একবারের জন্যে হলেও প্রেম আসুক। ভালো থাকুন সবাই।
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই মার্চ, ২০১৩ সকাল ১১:০৫