বিনামূল্যে প্রদত্ত এই ফরেক্স প্রশিক্ষণ কোর্সটি আপনাকে ফরেক্স সম্পর্কে মৌলিক ও স্বচ্ছ ধারনা দিবে খুবই সহজ ভাবে। এটি অত্যন্ত দ্রুত ও উপযোগী পথ-নির্দেশিকা হিসেবে আপনাকে সাহায্য করবে একজন সফল ফরেক্স ব্যবসায়ী (Forex Trader) হয়ে উঠতে। ফরেক্স সম্পর্কে অনেক ব্যক্তি,প্রতিষ্ঠান এবং ইন্টারনেট এর ওয়েব সাইট গুলো হয়ত অনেক কিছু বলতে পারবে,কিন্তু সেগুলো কখনই সাধারণ মানুষের বোধগম্য হয়না। কারণ সেগুলো বিচ্ছিন্ন, ভ্রান্ত, অসম্পূর্ণ, দুর্বোধ্য এবং খুবই বিরক্তিকর হয়ে থাকে। আমাদের সর্বাত্মক প্রচেষ্টা থাকবে আপনাকে অত্যন্ত পরিষ্কার এবং দ্রুততম উপায়ে ফরেক্স এর মৌলিক শিক্ষা দান করা, যা হবে মজার ও আনন্দদায়ক।
এই কোর্সটি থেকে আপনি খুব সহজেই শিখে নিতে পারবেন-
ফরেক্স কি?
ফরেক্স ট্রেড(Forex trade) কি?
কিভাবে সফলভাবে ফরেক্স থেকে আয় করা যায়?
এরপর আপনি স্বচ্ছ এবং সঠিক এই জ্ঞান ব্যবহার করে একজন প্রকৃত এবং সফল ফরেক্স ট্রেডার হিসেবে নিজেকে আত্মপ্রকাশ করতে পারবেন।
চলুন এবার শুরু করা যাক:
ফরেক্স বাজার(Forex Market) কি?
ফরেক্স সম্পর্কে মৌলিক ধারনা:
মূলত, ফরেক্স বাজার(forex Market) হল সেই যায়গা যেখানে সবাই বিভিন্ন দেশের মুদ্রা কেনাবেচা এবং মূল্য নির্ধারণ করে। সবাই বলতে এখানে বিভিন্ন ব্যাংক, ব্যবসায়ী, প্রতিষ্ঠান, বিনিয়োগকারী, ক্রেতা-বিক্রেতা, এমনকি সরকারকেও বোঝানো হয়েছে। একে মুদ্রা বাজার(Currency market), বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময় কেন্দ্র(Foreign currency exchange center), বৈদেশিক মুদ্রার বাজারও(Foreign currency market) বলা হয়ে থাকে। তবে যে নামেই ডাকা হোক না কেন, এটি হল বিশের সবচেয়ে বড় এবং তরল বাজার। এইখানে প্রতিদিন প্রায় চল্লিশ লক্ষ কোটি ডলার এর সমপরিমাণ লেনদেন হয়। এটি একটি মুদ্রা ক্রয়-বিক্রয় এর ব্যবসা তাই খুব সহজেই অর্থ আয় ও রূপান্তর করা যায়।
এই বাজার প্রতিদিন ২৪ ঘণ্টাই খোলা থাকে এবং সপ্তাহে ৫ দিন কেনাবেচা চলে। সবচেয়ে বড় ও প্রভাবশালী বিনিময় কেন্দ্র গুলো লন্ডন, নিউ ইয়র্ক, জুরিখ, হংকং, ফ্রাঙ্কফুর্ট, টকিয়ো, সিঙ্গাপুর, প্যারিস ও সিডনিতে অবস্থিত। এটা অবশ্যই লক্ষণীয় যে ফরেক্স বাজার বলতে কখনই কোন একক বা কেন্দ্রীয় বাজার বা জায়গা কে বোঝানো হয়না। এটি নিউ ইয়র্ক স্টক এক্সচেঞ্জ এর মতো কোন কেন্দ্রীয় শেয়ার বাজার না যেখানে এক যায়গায় সকল লেনদেন ও অন্যান্য কাজ করা হয়ে থাকে। ফরেক্স বা বৈদেশিক মুদ্রার মূলত বিভিন্ন ব্যাংকগুলোতে কেনাবেচা হয় এবং এখানেই এর নির্দিষ্ট ও সঠিক মূল্যনির্ধারণ করা হয়ে থাকে ।এবং বিভিন্ন ব্রোকার(Broker) বা দালালী(Dealer) প্রতিষ্ঠান গুলো এসব ব্যাংক থকে তথ্য নিয়ে আমাদেরকে এসবের একটি তুলনামূলক গড় মূল্য জানিয়ে থাকে। এই ব্রোকার প্রতিষ্ঠানগুলি মূলত ব্যবসায়ী ও বিনিয়োগকারীদের জন্য ফরেক্স এর বাজার তৈরি করে এবং লেনদেন এর ব্যবস্থা করে। যখন আপনি কোন currency pair কিনবেন তখন এই ব্রোকারই তা আপনাকে বিক্রয় করবে। এর জন্য আরেকজন বিক্রেতার কোনও প্রয়োজন হবেনা।
ফরেক্স এর সংক্ষিপ্ত ইতিহাস:
এই অংশটুকু অনেকেরই বিরক্তিকর হবে কিন্তু এই কথাগুলোও আপনার জন্য উপকারী হবে। ফরেক্স কি এবং কেন এটি তৈরি হয়েছিল তা জানার জন্য এর ইতিহাস তো জানতেই হবে। এখন সংক্ষিপ্তভাবে এর ইতিহাস বর্ণনা করা হল।
১৮৭৬ সালে স্বর্ণ ভিত্তিক মুদ্রা ব্যবস্থা( gold exchange standard) চালু করা হয়েছিল।এই ব্যবস্থায় মুদ্রার মূল্যমান স্বর্ণের মানের উপর ভিত্তি করে নির্ধারণ করা হয়। ফলে মোট স্বর্ণের মূল্যর সমপরিমাণ কাগুজে মুদ্রা কোন দেশের জন্য রাখা হত। এই পদ্ধতি বেশ ভালই ছিল। কিন্তু স্বর্ণ এর আকস্মিক মূল্যবৃদ্ধির ফলে এই পদ্ধতির ত্রুটি ধরা পরে এবং একে বিদায় নিতে হয়।
এই স্বর্ণ ভিত্তিক মুদ্রা ব্যবস্থা বাতিল করা হয় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শুরুর সময় যখন ইউরোপীয় দেশগুলোতে তাদের বিশাল সব প্রকল্পগুলোকে বাস্তবায়িত করার মতো টাকা ছিলোনা। কারণ তাদের স্বর্ণের মজুদ ঐ পরিমাণ টাকা ছাপার জন্য খুবই অপ্রতুল ছিল। যদিও এই স্বর্ণ ব্যবস্থা বাতিল হয়ে গেছে, তবুও স্বর্ণ তার মূল্য এবং মুদ্রামানে নিজের অবস্থান ভালভাবেই ধরে রেখেছে।
পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত হয় যে, সকল মুদ্রার মান নির্দিষ্ট হবে এবং আমেরিকান ডলার হবে মুদ্রার জন্য নির্ধারিত সংরক্ষিত ভিত্তি যা স্বর্ণ এর বিপরীতে একমাত্র পরিমাপকৃত মুদ্রা। এই ব্যবস্থাকে বলা হয় ব্রেটন উডস ব্যবস্থা ( Bretton Woods System) যা ১৯৪৪ সালে কার্যকর হয়। ১৯৭১ সালে যুক্তরাষ্ট্র ঘোষণা দেয় যে তারা আর স্বর্ণের বিপরীতে ডলার এর বিনিময় এ আগ্রহী নয় যা বৈদেশিক সংরক্ষণ হিসেবে রাখা আছে। এর ফলে ব্রেটন উডস ব্যবস্থাও বাতিল হয়ে যায়।
১৯৭৬ সালে এই ব্যবস্থা অকার্যকর হয় যার মাধ্যমে মূলত সর্বসম্মতভাবে পরিবর্তনশীল মুদ্রা ব্যবস্থার প্রচলন হয়েছিল। এর মাধ্যমেই আধুনিক বৈদেশিক মুদ্রার বাজারের প্রবর্তন হয় যা ১৯৯০ সালের দিকে বর্তমান যান্ত্রিক ও স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থার রূপ নেয়।
এখন কিছু আকর্ষণীয় ও কাজের কথায় আসা যাক।
ফরেক্স বাণিজ্য(Forex trading) কি?
এটি মূলত আমার আপনার মতো খুচরা ব্যবসায়ীদের সাথে জড়িত একটি ব্যবস্থা যা একটি মুদ্রার বিপরীতে অন্য একটি মুদ্রার তুলনামূলক মূল্য নির্ধারণ করে। ধরা যাক, আপনি অনুমান করছেন যে ইউরো এর মূল্য আমেরিকান ডলার এর বিপরীতে বৃদ্ধি পাবে এবং সেজন্য আপনি কম মূল্য এর ইউরো-ইউএসডি জোড় কিনলেন যা আপনি ইউরো এর মূল্য ইউএসডি এর বিপরীতে বৃদ্ধি পেলে বেচে দিয়ে লাভ করবেন। কিন্তু, কোনোভাবে যদি উল্টো আমেরিকান ডলার এর মূল্য বৃদ্ধি পায় তবে আপনাকে ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে। ফলে, ফরেক্স এ জড়িত বিনিয়োগকারীদের অবশ্যই এর ঝুঁকির ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে, শুধু লাভ এর কথা ভাবলে চলবেনা।
কেন ফরেক্স সারা বিশ্বে এত জনপ্রিয়?
ফরেক্স ব্যবসায়ীদের বলা হয় বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু ও সম্ভবনাময়ী পেশাজীবীদের মধ্যে অন্যতম। এটা সবার জন্য সত্যি না হলেও আপনি দৃঢ় সংকল্প ও অধ্যবসায় এর মাধ্যমে সাফল্যের চূড়ায় উঠতে পারেন। এখানে ফরেক্স এ সাফল্য লাভের জন্য যেসকল গুণ একজনের মধ্যে থাকতে হয় তা উল্লেখ করা হল:
ক্ষমতা- নিরাবেগ ভাবে ক্ষতি স্বীকার করার।
আত্মবিশ্বাস- নিজের এবং নিজের কৌশল এর উপর বিশ্বাস রাখার এবং নির্ভীক থাকার।
উৎসর্গ- সেরা বিনিয়োগকারী হওয়ার জন্য মন-প্রাণ কে উৎসর্গ করতে হবে।
আত্মসংযম- প্রলোভন ও উত্তেজনার এই জায়গায় নিজেকে নিরাবেগ রাখতে।
নমনীয়তা: সর্বদা পরিবর্তনশীল এই বাজারে সবসময় মানিয়ে নেয়ার জন্য।
সংহত: নিজের কৌশল ও পরিকল্পনাতে নিজেকে সর্বদা ধরে রাখতে যেন কখন পথভ্রষ্ট না হয়।
সুসংগঠিত: সঠিক ও ইতিবাচক বিনিয়োগ অভ্যাস এর জন্য নিজেকে দৃঢ়ভাবে চালনা করার জন্য।
যুক্তিবাদিতাঃ ফরেক্স কে সঠিক এবং বাস্তবিক চোখ দিয়ে দেখার জন্য।
ধৈর্য: পরিকল্পনা মাফিক চলার জন্য এবং সর্বোচ্চ সম্ভবনাময়ী ও লাভজনক কৌশল এর বাস্তবায়ন এর অপেক্ষার জন্য।
বাস্তববাদী: ফরেক্স, প্রকৃত অবস্থা এবং সহজে ও দ্রুত ধনী হওয়া যায়না তা বোঝার জন্য।
জ্ঞান: যে কোন পরিবর্তন ও সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে সাফল্য অর্জন করার জন্য।
আত্মনিয়ন্ত্রণ: প্রয়োজন ও উচিতের বাইরে অধিক লাভের আশায় যেন সব ধ্বংস না হয়ে যায়।
ফরেক্স বাজার এর উচ্চ পরিবর্তনশীলতা( volatility), লব্ধতা(Levarage) ও চাঞ্চল্য কে কাজে লাগিয়ে সাফল্য ও মুনাফা লাভ করতে পারে যে কেউ। কিন্তু এর জন্য প্রয়োজন কার্যকর কৌশল যা আপনাকে রপ্ত করতে হবে এবং তা প্রয়োগ করতে হবে লাভ-দায়ক ও সঠিক পরিকল্পনার মাধ্যমে। এর জন্য অত্যন্ত ধৈর্য ও সংযম দরকার। ফরেক্স এর মূল চাবিকাঠি হল অর্থ ব্যবস্থাপনা(Money Management)। ঋণ ও লব্ধ ব্যবসায় পদ্ধতি আপনাকে খুব দ্রুত মুনাফা দিতে পারে কিন্তু তা আবার নিমেষে সব শেষও করে দিতে পারে। অর্থ ব্যবস্থাপনা এর মূলমন্ত্র হল কি পরিমাণ অর্থ যে কোন বিনিয়োগের ফলে হারাতে পারে তা সঠিক ভাবে হিসাব করতে পারা এবং তা নিশ্চিন্ত মনে মেনে নেয়া। যে কেউ ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারে, এতে ঘাবড়ানোর কিছু নেই। অর্থ ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে আমরা পরবর্তীতে বিস্তারিত আলোচনা করব।
কারা ফরেক্স করে এবং কেন করে?
ব্যাংক: বেশীরভাগ বৈদেশিক মুদ্রার কেনাবেচা হয় আন্তঃ-ব্যাংক মুদ্রা বাজার এর মাধ্যমে যারা প্রচুর পরিমাণ মুদ্রার বেচাকেনা করে প্রতিদিন। বড় ব্যাংকগুলো প্রতিদিন কয়েক শত কোটি টাকার লেনদেন করে। কখনও এই কেনাবেচা হয় ব্যাংক এর মক্কেলদের জন্য কিন্তু বেশিরভাগ হয় ব্যাংকগুলোর মালিক-পক্ষের দ্বারা যারা ব্যাংক মাধ্যমে ফরেক্স এর কেনাবেচা করেন।
অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠান: বৈদেশিক মুদ্রার বাজার এর মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানগুলো বিভিন্ন দেশে তাদের পণ্য ও সেবা আদান-প্রদান করার জন্য থেকে অর্থ লেনদেন করে। ফরেক্স এর একটি গুরুত্বপূর্ণ ও বড় অঙ্কের লেনদেন হয়ে থাকে এইসব প্রতিষ্ঠান এর বিভিন্ন দেশে ব্যবসায়ী দেনা-পাওনা মিটানোর মাধ্যমে।
সরকার/ কেন্দ্রীয় ব্যাংক: বৈদেশিক মুদ্রা এর লেনদেন ও মূল্য নির্ধারণে দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক অনেক প্রভাবশালী ভূমিকা রাখে। কোন দেশের মুদ্রার মূল্য সে দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক হ্রাস-বৃদ্ধি করতে পারে তাদের অর্থের যোগান নিয়ন্ত্রণ, সুদের হার নির্ধারণ ও মুদ্রাস্ফীতি নিতির বাস্তবায়ন এর মাধ্যমে।
সংরক্ষিত তহবিল( Hedge funds): প্রায় ৭০-৮০ ভাগ বৈদেশিক মুদ্রার লেনদেন হয় এর মূল্য পরিবর্তন এর মাধ্যমে কেনাবেচা করে লাভের আশায়। অর্থাৎ, যে কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেন করলে তা আসলে সেগুলো হাতে নেয়ার জন্য নয় বরং তা করা হয় শুধুই মুদ্রার মূল্য হ্রাস-বৃদ্ধির মাধ্যমে মুনাফা লাভের আশায়। আমরা যারা খুচরা বা ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী আছি, তাদের লেনদেনর পরিমাণ ঐ বিশাল তহবিল এবং তার শত শত কোটি ডলার এর দৈনিক লেনদেন এর সামনে যেন সমুদ্রের সামনে এক গ্লাস পানি। এই বিশাল লেনদেন ও তহবিল-ই বিভিন্ন মুদ্রার মান পরিবর্তন ও নির্ধারণ করতে পারে।
ব্যক্তিঃ আমরা যখন অন্য কোন দেশে ভ্রমণ বা কাজে যাই অথবা অন্য দেশ থেকে টাকা পায় বা দেই (আত্মীয়র কাছে বা কাজের বা পণ্যের মূল্য হিসেবে) এবং সেই অর্থ ব্যাংক বা অন্য কথাও প্রয়োজনীয় মুদ্রায় ভাঙিয়ে নেই তখন সেটিও একটি বৈদেশিক মুদ্রার লেনদেনের মধ্যে পড়ে।
বিনিয়োগকারী: বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানগুলো যারা তাদের মক্কেলদের জন্য বৈদেশিক মুদ্রা কেনাবেচার ব্যবস্থা করে এবং তাদের বিনিয়োগ ও হিসাব নিয়ন্ত্রণ ও রক্ষা করে। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, যেসকল ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান যারা আন্তর্জাতিকভাবে বিনিয়োগ হিসাব নিয়ন্ত্রণ করে, তারা কিন্তু এই সকল প্রকার মুদ্রা-জোড় এর কেনাবেচার জন্য ফরেক্স বাজারকেই ব্যাবহার করে।
খুচরা ফরেক্স ব্যবসায়ীঃ সবশেষে আছে আমার আপনার মতো ফরেক্স ব্যবসায়ী ও বিনিয়োগকারীগণ। ফরেক্স এ এই প্রকার অংশগ্রহণের হার দিন দিন জ্যামিতিক হারে বাড়ছে। এর মূল কারণ হল ফরেক্স এর নানাবিধ ব্যবস্থা, সুযোগসুবিধা ও ইন্টারনেট এর সহজলভ্যতা। এখন আমরা সহজেই কোন ব্যাংক বা ব্রোকারের মাধ্যমে লেনদেন করতে পারি। বর্তমানে ২ প্রকার খুচরা ব্রোকার দেখা যায় যারা ফরেক্স এর দামদর জানতে ও লেনদেন করতে আমাদের সাহায্য করে থাকে- ১। ব্রোকার(Broker) ২। ডিলার(Dealer) ব্রোকারগণ বিনিয়োগকারীদের প্রতিনিধি হিসেবে ফরেক্স এর বাজারে কেনাবেচা করে থাকে, তাদের বিশ্লেষণে সবচেয়ে লাভ-দায়ক ও সম্ভাবনাময় যায়গাগুলোতে। প্রতি কেনাবেচার জন্য তারা নির্দিষ্ট হারে মাশুল বুঝে নেয়। ডিলার দের ভূমিকা এক্ষেত্রে উল্টো। এরা বাজারের মূল্য নির্ধারণকারী(Market Maker) বলে পরিচিত। এরা নিজেরাই ব্যবসায়ীদের সাথে দর কষাকষি ও কেনাবেচা করে থাকে। তাদের উদ্ধৃত মূল্য অনুযায়ী তাদের সাথে আমরা কেনাবেচা করে থাকি। এই ক্রয় ও বিক্রয়মূল্য এর মধ্যে যে পার্থক্য থাকে তা হল তাদের অংশ যা ব্যাপ্তি বা Spread নামে পরিচিত। এ বিষয়ে পরবর্তীতে আরও আলোচনা করব।
ফরেক্স এর সুযোগ-সুবিধাঃ
১। ফরেক্স হল বিশ্বের সবচেয়ে বড় বাজার যার দৈনিক লেনদেন এর পরিমাণ গড়ে প্রায় ৪০ লক্ষ কোটি ডলার। এর তারল্য এতই বেশী যে এখানে নিমেষেই লেনদেন ও কেনাবেচা সম্পন্ন করা যায়।
২। যখন খুশি তখন কাজঃ এখানে সময়ের কোন বাধ্যবাধকতা নেই। রবিবার বিকাল৫ টা হতে শুক্রবার বিকাল ৫টা পর্যন্ত যখন যা খুশি লেনদেন করতে পারবেন।
৩। সহজে ও মুহূর্তেই বাজারে প্রবেশ ও লেনদেনঃ যে কেউ চাইলেই মুহূর্তের মধ্যেই মাত্র ১০ ডলারেও চাইলে খুচরা ব্রোকার এর কাছে হিসাব খুলে কেনাবেচা শুরু করতে পারবে। এর জন্য চাই শুধু ইন্টারনেট ও কিছু মাউসের ক্লিক।
৪। অল্প কিছু মুদ্রা জোড় ও কৌশল এ চোখ রাখলেই যথেষ্ট। পুরো বাজারের অসীম জটিলতা মাথায় কেন নিবেন?
৫। ফরেক্স এর জন্য চলমান ইন্টারনেট থাকেলেই যেকোনো স্থানে ল্যাপটপ, মোবাইল বা পিসি থেকে আপনি ফরেক্স এ মূল্য, বিশ্লেষণ, খবর দেখতে ও ইচ্ছামত লেনদেন করতে পারবেন।
৬। শেয়ার বাজারের তুলনায় এর মাশুল ও লেনদেন সহ অন্যান্য খরচ প্রায় অতি নগণ্য।
৭। ফরেক্স অতিমাত্রায় পরিবর্তনশীল ও মুনাফা অর্জনের জন্য অতি সম্ভাবনাময়। মুদ্রার দর যত পরিবর্তন হবে ততই মুনাফা অর্জন করা যাবে।
সবচেয়ে মজার ও আকর্ষণীয় তথ্য এই যে ফরেক্স কখনই শেয়ার বাজারের মতো এক-পাক্ষিক নয়। এখানে দাম বাড়লে যেমনভাবে মুনাফা অর্জন করা যায়, একই ভাবে দাম কমলেও মুনাফা অর্জন করা যায়। ফরেক্স বিনিয়োগ ও মুনাফা অর্জনের এক অসাধারণ যায়গা, তবুও আপনাকে সর্বদা ঝুঁকি ও মুনাফার অবিচ্ছেদ্য সম্পর্ক ও সম্ভাবনার কথা মাথায় রাখতে হবে। অনেকই এখানে দ্রুত অনেক লাভ করতে আসে এবং বোকামি করে ফলস্বরূপ খালি হাতে ফেরে। এখানে দীর্ঘ মেয়াদীভাবে মুনাফা অর্জন করে টিকে থাকতে চাইলে সঠিক কৌশল জানতে ও প্রয়োগ করতে হবে এবং যে কোন মুহূর্তে ক্ষতি হওয়াটাকে মেনে নিতে হবে হাসিমুখে।
Click This Link