বর্তমান যুগ তথ্য প্রযুক্তির যুগ। আমাদের তরুন প্রজন্ম প্রযুক্তির সঙ্গে সপরিচয়ে বেড়ে উঠুক এটা অবশ্যই আমাদের সবার প্রত্যাশা। ফেসবুক, টুইটারের মতো সামাজিক গণমাধ্যমগুলো জীবনের অনিবার্য অংশ হয়ে উঠছে দিন দিন। সব বয়সের ক্ষেত্রে সত্য হলেও ছাত্রসমাজ প্রভাবিত হচ্ছে সবচেয়ে বেশি। সামাজিক গনমাধ্যমগুলো ব্যবহারে ছাত্রসমাজকে অবশ্যই বেশী মাত্রায় সতর্কতা অবলম্বন করতে হবেই বৈকি। সামাজিক গনমাধ্যমে ছাত্রদের শিক্ষার জন্য ক্ষতিকর কতকগুলো বিষয় শুধু যে শিক্ষার উপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলছে তা-ই নয়, ক্যারিয়ার গঠনেও বাধা সৃষ্টি করছে বলে অনেকের বিশ্বাস। সামাজিক গণমাধ্যম তথা যে কোন শেয়ারিং সাইট ব্যবহারে ছাত্রদের অবশ্যই বর্জনীয় কতকগুলো বিষয় নিয়ে আজকের আয়োজন।
১) অনৈতিক কিছু পোস্ট না করা
অনৈতিক কোন কিছু পোস্ট করা থেকে অবশ্যই সতর্ক থাকা উচিত। নিজের কোন ছবি বা ভিডিও আপলোড করতেও সতর্ক থাকতে হবে। কেননা ভবিষ্যতে যে কেউ তা সংগ্রহে রেখে পোস্টকারীর বিরুদ্ধে ব্যবহার করবে না তা কে বলতে পারে। আর অন্য কারও সম্পর্কীয় কোন তথ্য, ছবি, ভিডিও বা অন্য কিছু ব্যবহারেও অবশ্যই সতর্ক হওয়া উচিত। নৈতিকতার প্রশ্নে বিবেককে আগেভাগেই ভাবতে হবে। কেননা পোস্ট করে ফেলা মাত্রই যে তা অন্য কেউ দেখবে না তা কে বলতে পারে?
২) গালাগালির ভাষা না ব্যবহার করা
সামাজিক গনমাধ্যমে অবশ্যই গালাগালির ভাষা ব্যবহার করা উচিত নয়। শিক্ষাংগনে আজকাল গালাগালির ভাষা ব্যবহারে অভ্যস্ত বন্ধুগ্রুপ প্রায় দেখা যায়। পরস্পরের দেখা হতেই তারা বাজে ভাষায় কথা বলে। এটাকে তারা কিছুই মনে করে না। কারণ তারা এতে অভ্যস্ত হয়ে যায় যেন গালাগালি না করাটাই অভদ্রতা। সামাজিক গণমাধ্যমগুলোতেই এরূপ প্রবণতা দেখা যায়। এটা যৌনতা বা সামপ্রদায়িকতা বা অন্যের প্রতি যেকোন ভাবে আক্রমণাত্মক হয়ে থাকে। এমনটি অবশ্যই বর্জনীয়।
৩) শিক্ষাগুরুকে ভৎসনা
স্কুল কলেজে শিক্ষকদের অন্য নাম (ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে যে নাম ব্যবহত হয়) দেওয়া একটা বাজে অথচ বাস্তব সত্য বিষয়। এমনটি হয়ে থাকে শিক্ষকদের ভালো লাগা বা না লাগা থেকে বা তাঁদের কোন বৈশিষ্ট্যকে কেন্দ্র করে। কিন্তু এই অন্যায় কাজটি আবার যদি সামাজিক গণমাধ্যমে হয় তবে তার মত জঘন্য ঘৃণ্য কাজ আর কি হতে পারে।
৪) গোপনীয় তথ্য প্রকাশ না করা
এ ব্যপারটি শুধু ছাত্র নয় সবার জন্যই অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। গোপনীয় তথ্য সামাজিক গনমাধ্যমগুলোতে দেওয়া অবশ্যই অতীব অনুচিত। ক্রেডিট কার্ড নম্বর, ড্রাইভিং লাইসেন্স নম্বও, জাতীয় পরিচয় পত্রের নম্বর, স্টুডেন্ট আইডি ইত্যাদি কখনই সামাজিক গনমাধ্যমগুলোর মাধ্যমে শেয়ার করা উচিত নয়।
৫) লোকেশান শেয়ারিং এর ক্ষেত্রে সতর্ক থাকা
লোকেশান শেয়ারিং এর ক্ষেত্রে অবশ্যই সতর্ক থাকা উচিত। স্পেসিফিক লোকেশানা শেয়ার না করাটই বুদ্ধিমানের কাজ। হয়ত খটকা লাগতে পারে বৈকি কিন্তু সতর্কতা অবলম্বনের জন্য এ ব্যপারে সতর্ক থাকার বিকল্প নেই। আর বাসায় একা থাকলে বা কোন দুরবর্তী এলাকায় একা ভ্রমণে গেলে তা ঘটা করে সামাজিক মাধ্যমে প্রচার না করাটই বুদ্ধিদীপ্ত কাজ বলে পরিগণিত হতে পারে।
৬) মিথাচার না করা
সামাজিক গণমাধ্যমে অযথা নিজের বা অন্য কারো সম্বন্ধে মিথ্যাচার না করা উচিত।
৭) প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ হুমকি বা অন্যকোন ভাবে অন্যকে জব্দ করতে ভয় ভীতি প্রদর্শন
সামাজিক গণমাধ্যমে এমনটি করা শুধুই যে অনুচিত তা-ই নয় এটি সাংঘাতিক অপরাধও বটে।
৮) অটোমেটিক প্রাইভ্রেসি সেটিং এর উপর ১০০% আস্তা না রাখা
অটোমেটিক প্রাইভ্রেসি সেটিং এর উপর ১০০% আস্তা না রাখাটা বুদ্ধির পরিচয়। প্রাইভ্রেসি সেটিং মাঝে মধ্যেই নিজ থেকে চেক করে নেওয়া ভালো। অটোপ্রাইভ্রেসি সেটিং অনেক সময় ক্ষতিকর বলে গণ্য হতে পারে।
৯) আবেগপ্রবণ পোস্ট না করা
সামাজিক গণমাধ্যমগুলোতে আবেগপ্রবণ পোস্ট করা থেকে বিরত থাকা উচিত। কোন পোস্ট করতে আবেগ কাজ করছে মনে হতেই থেমে গিয়ে সজীব নিঃশ্বাস নিয়ে কিছুটা সময় ভাবা উচিত। ভুল করবার আগেই ভুল সনাক্তকরা বুদ্ধিমানের পরিচায়ক বৈকি!
বিডিটিউনার ব্লগ