স্বপ্নের মেট্রোরেল উদ্বোধনের মাধ্যমে বাংলাদেশ আজ গণপরিবহণের এক নতুন যুগে প্রবেশ করছে। পত্রিকা এবং টিভি প্রতিবেদনগুলোতে বার বার বলা হচ্ছে, নগরবাসীকে অভ্যস্ত করে তোলার জন্য মার্চ ২০২২ পর্যন্ত ট্রেনগুলো দিয়াবাড়ি থেকে আগারগাও পর্যন্ত সরাসরি চলাচল করবে। অর্থাৎ, মধ্যবর্তী স্টেশনগুলোতে ওঠা নামার কোন সুযোগ থাকছে না আরো বেশ কিছু দিন।
প্রশ্ন হলো, লোকজনকে যদি মধ্যবর্তী স্টেশনগুলোতে ওঠা-নামাই করতে না দেয়া হয়, তাহলে যাত্রীরা অভ্যস্ত হবেন কিভাবে?? প্রয়োজনে স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ করে প্রথম ৬ মাস লোকজনকে টিকেট কাটা, স্টেশনে প্রবেশ, ট্রেনে ওঠা/নামা, স্টেশন থেকে বের হয়ে যাওয়াতে অভ্যস্ত করানো যেতে পারে। কিন্তু, শুধু এক মাথা থেকে আরেক মাথায় লোকজনকে যাতায়াত করিয়ে কিভাবে যাত্রীদের MRT তে চড়া অভ্যস্ত করানো হবে সেটা বোধগম্য হল না!
আরেক জায়গায় দেখলাম, প্রয়োজনীয় লোকবল না থাকায় আপাততঃ মধ্যবর্তী স্টেশনগুলোতে ট্রেন থামবে না! যদি তাই হয়, এটা খুব খোঁড়া একটা যুক্তি হবে। ৬ বছর কি কম সময়?
MRT এর পুরো কথা হল Mass Rapid Transit, নামেই এর কাজের পরিচয় আছে। এর মাধ্যমে অধিক সংখ্যক লোকজন ছোট ছোট দূরত্বে খুব কম সময়ে যাতায়াত করবে। এজন্য মেট্রোরেলের বগিতে বসায় জায়গা থাকে কম, দাঁড়ানোর জায়গা থাকে বেশী! মধ্যবর্তী স্টেশনগুলোতে যদি যাত্রীদের এখনই ওঠা-নামা করার সুযোগ না দেয়া হয়, তাহলে জনগণ যেমন এর সুফল থেকে বঞ্চিত হবে, পাশাপাশি MRT ও অনেক রাজস্ব হারাবে। কারণ, শুধু দিয়াবাড়ি এবং আগারগাও এর মধ্যে যা যাত্রী হবে তার চেয়ে বহুগুণ যাত্রী হবে ছোট ছোট যাত্রায়। মনে হচ্ছে, এই প্রকল্পটিতে যারা সংশ্লিষ্ট আছেন তারা বাণিজ্যিক দিকটি নিয়ে উদাসীন। মনে রাখতে হবে, MRT নতুন কোন ধারণা নয়, এটি বিশ্বের বহু দেশে চলমান, এটি বাস্তবায়নে আমরা অনেক দেরি করে ফেলেছি। আমাদের উচিৎ হবে যত দ্রুত সম্ভব এই প্রকল্পের সুফল জনগণের কাছে পৌঁছে দেয়া। পাশাপাশি উচ্চ ভাড়া কমানোর ব্যাপারেও চিন্তা করার পরামর্শ রইল যেন এটা গণমানুষের পরিবহন হয়।