যেখানে রাস্তাটা উঁচু হয়ে গেছে অনেকদূর।
যেখানে উঠলেই বাড়িগুলোর ছাদ দেখা যেতো রাস্তা থেকে।
ছয় মিনিটের সেই পথটুকু শেষ হোক চাইনি কখনো!
কিছু পথ থাকে,যেখানে গেলে চেনা গন্ধর মত তুমি।
সেখানেই দেখা হয়েছিল আমাদের।
তুমি এই জায়গার নাম দিয়েছিলে শিলং।
শেষের কবিতার অমিত আর লাবণ্যর মত সেই হঠাৎ দেখা!
শহরের শেষ মাথায় সমুদ্রটা যেখানে আকাশ ছুঁয়েছে, সেখানে,
পুরনো এক কফিশপ এ বসে একটা পুরোদিন শুধু কবিতায় কথোপকথন!
কফি যে কতরকম ভ্যারাইটির হতে পারে,সেদিনই শেখা,
স্মোকড বাটার স্কচ লাতে খেয়ে তো রীতিমত মুগ্ধ আমি।
তুমি বলছিলে কফির ইতিহাস আর আমি, তোমার চোখের ভিতর
একটা বোহেমিয়ান ওয়াক্সউইং পাখিকে খুঁজছিলাম।
তুমি বলছিলে, একটা শহর এ বেড়াতে যাবার ইচ্ছের কথা।
ইতালীর রিওম্যাগিওর। সমুদ্রর পাশে বাড়িগুলোকে মনেহয় যেন শিল্পীর তুলিতে আঁকা ছবি।
বলছিলে,আনুশকার সেতার তোমার দারুণ পছন্দ।
পূর্ণিমারাত এলে ,জোছনার আলোয় যখন চারিদিকে ডুবে থাকে।
তুমি রাতভর সেই জোছনায় ভিজে সেতার শোনো।
বলছিলে, আলাস্কাতে থাকবো আমরা সাতষট্টি রাত।
সেখানে সেক'দিন সূর্য ওঠেনা। একথা শুনে আমার অন্ধকার আর বনলতা সেনকে মনে পড়ে।
এবার শীত নামার আগেই ,
উল দিয়ে একটা খয়েরী পুলওভার বানাই তোমার জন্য।
মেট্রো স্টেশনটার কাছে গেলে, তোমার কথা খুব মনেহয়।
তুমি বলেছিলে, শুধু ট্রেনে চড়ে সারাপৃথিবী ঘুরে বেড়াবো আমরা।
ডাইরীর এক পাতাতে হিসাব নিকাশ ও করেছিলে!
আমি বলেছিলাম,প্রশান্ত মহাসাগরকে বিক্রি করে দেবো আটলান্টিক এর তিমিদের কাছে।
বদলে তিমিদের পেটের ভিতর যত হীরা মানিক থাকে সব নিয়ে আসবো ।
এরপর, আমরা ট্যুরিস্ট ম্যুভির এঞ্জেলীনা জলি আর জন ডেপ এর মত ঘুরে বেড়াব ভেনিসের পথঘাট।
একথা শুনে তুমি এত জোরে হেসেছিলে!
মনে হচ্ছিল ভেঙে চুরে যাচ্ছিল আমার ভিতরের আনন্দকাল!
একটু পর মন খারাপ করে বলেছিলে, তিমিরা মরে যাচ্ছে সব।
পেটের ভিতর পলিথিন আর প্লাস্টিক নিয়ে!
আর একথা শুনে ভীষন মন খারাপ হতে থাকে আমার!
একটা জীবন এর ধারাপাত এ তুমি আমি মাঝে মাঝেই ঢুকে পড়ি এভাবেই।
জীবন তো শুধু ইউ টিউবে দেখা বাংলা নাটক না।
জীবন নেটফ্লেক্সে দেখা টার্কিশ সিরিয়াল না।
জীবন মাঝে মাঝে এমনি,
তোমার জন্য,
আমার জন্য,
হয়তোবা অন্য কারো কারো জন্য।
জীবন মানেই চলতে থাকা বায়োস্কোপ!
কখনো সাদাকালো ,কখনোবা রঙিন!