দূর মসজিদ থেকে সুমুধুর কন্ঠে ভোরের আযান প্রকৃতিতে প্রবাহমান বাতাসের মত ছড়িয়ে পড়ল। কি সুমুধুর সে আযান--‘আসসালাতো খাইরুম মিনান নাউম...।’ পদ্মার বুকে জেগে উঠা দোয়াল্লীর চরের প্রকৃতিতে কেমন জানি নিরবতা ভাঙ্গতে শুরু করল। দূর থেকে আযানের ধ্বনি ধীরে ধীরে এ গাঁয়ে এসে বাতাসের সাথে মিশে যায়। গ্রামটির নাম স্বর্ণগ্রাম। হ্যাঁ স্বর্ণগ্রাম। এ গাঁয়ে এক কালে সোনা ফলত। সোনার ফসলে মুখরিত হত এ গাঁয়ের সহজ সরল জীবন যাত্রার। মাটির মত মায়াশীল মায়েরা মেয়ের নাম তাই হয়তো রাখতো স্বর্ণলতা, সবুজী, সোনাবিবি । ফসলের নামে নাম রাখত ছেলেদের--শৈষশ্যা, ধইননা, নীলা । আজ আর সেই দিন নেই। আউশ ধানের চালের সাথে মিশে গেছে ইরি ধানের চাল । খাঁটি সরিষা আজ আর পাওয়া যায় না। মানুষেরা আজ ছন্নছাড়া, ক্ষুধার্ত, তৃষ্ণার্ত। দু’বেলা জোটে না দু’মুঠো ভাত। দরিদ্র চাষী হাড় ভাঙ্গা খাঁটুনী আর দেহের ঘাম দিয়ে সোনালী ফসল ফলায়। তবুও জীবনের বিড়ম্বনা।
আযানের সুমুধুর কন্ঠের তান শেষ হতেই এক ছোট কুঁড়েঘর থেকে কান্নার একটানা একটা আওয়াজ পূর্বদেক থেকে পশ্চিম দিকে মিশে গেল। কোন এক কঙ্কালসার জননী তার কঙ্কালদেহ ব্যবচ্ছেদ করে একটি সন্তান প্রসব করে কোঁকাতে কোঁকাতে পৃথিবীর কঠিন জটিলতা থেকে সাধ্যহীন ভারের দেহটি হেলিয়ে দিল নরম মাটিতে। শিশুটি বিদ্রোহ করে উঠল তার মায়ের মৃত্যুর জন্য। শিশুটি আযানের ধ্বনির বিকল্প এক আযান শুরু করল। ওয়া...ওয়া...ওয়া...। যেন বলছে, আমি এসেছি আমাকে বাঁচতে দাও...আমি বাঁচতে চাই...।
মাথায় হাত দিয়ে খড়ের উপর বসে আছে এক প্রৌঢ় বয়েসী দাঁড়িওয়ালা লোক; মলিনতা, অসহায়ত্ব তার চোখে-মুখে। সে কাঁদছে একটি পাঁচ বৎসরের মেয়ে ফতিকে কোলে নিয়ে। ফতি ঘুমিয়ে আছে বাবার কোলে। আতুড় ঘরে চিরনিদ্রায় শায়িত আছে তার বউ জহুরা। জহুরার পেটের চামড়া পিঠের চামড়ার সাতে মিশে আছে, চোখ দুটি ডুবে গেছে। মুখটি মৃত বৃদ্ধের মত শুকিয়ে আছে। কপালটি ছোট আর তাতে জমে আছে কয়েক ফোঁটা জল বিন্দুতে গড়া দুর্গন্ধ ঘাম। এই পৃথিবী ছাড়তে তার এইটুকু ঘামের প্রয়োজন পড়েছিল। প্রয়োজন পড়েছিল এই ছোট শিশুটি জন্ম দেবার। এক টুকরা চটের ছালা তার বুকে; আর নাভি থেকে হাঁটু পর্যন্ত এক টুকরো ছিন্ন কাপড়। অতি দুর্বল দেহ তার। অবুঝ বাচ্চার কান্না থামাতে ধাই বুকের উপর চঠের ছালা সরিয়ে বাচ্চাটির মুখে মায়ের দুধের একটি বোঁটা ঢুকিয়ে দিয়েছে । বাচ্চাঁটি কাঁদতে কাঁদতে মায়ের বুকে ঘুমিয়ে গেছে, আর তার দেহ সেই ভোর থেকে মায়ের বুকে কাঁচুলি হয়ে আছে ।
ভোর শেষ হয়ে সকাল, জহুরা চিরনিদ্রায় শুয়ে আছে। এক বুড়ো ধাই নিজের এক হাত কপালে রেখে অন্য হাত দিয়ে মরা মায়ের বুক থেকে শিশুটিকে নিজের কোলে তোলে নিল। শিশুটি ধাইয়ের বুকে খুঁজছে তার খাবার। বুড়ো ধাই একটি চুষনি শিশুটির মুখে পুড়ে দিল। শিশুর কান্না থেমে গেল। তাহলে ক্ষুধাই কি মানুষকে কাঁদায় চেঁচায়। যাদের আছে তারাও তো কাঁদে, তারাও তো আরো পাবার জন্য চিৎকার করে। বুড়ো ধাই গুমড়ে গুমড়ে কাঁদছে আর তার সাদা কাপড়ের আঁচল দিয়ে চোখ মুছছে। শিশুটি আবার কাঁদছে। আতুড় ঘরের বাইরে কেহ কাঁদছে, কেহ আফসোস করছে। কেহ শকুনের মতো পাখা মেলতে চেষ্টা করছে। ওরা চায় শিশুটিকে...।
এক টুপিওয়ালা মৌলবী, নিঃসন্তান সে, চান্দু মিয়াকে লক্ষ্য করে বলছে,
ঃ কি করবা চান্দু--আল্লার মাল আল্লায় লইয়া গেছে। তোমার আমার হিম্মত আছে, যে হেরে ঠেকাই। লও দাফনের কামডা হাইরা হালাই।
ষোড়শী যুবতী চান্দু মিয়ার বড় কন্যা স্বর্ণলতা। বড় নর্তকী সে। পাড়াময় তার অবাধ যাতায়াত। তার প্রতি লোভ বিপত্মীক কালাই বেপারীর। সে মৌলবীর দিকে তাকিয়ে চেঁচিয়ে উঠল,
ঃ কি যে কন মুন্সী ভাই; আমি তো সব ব্যবস্থা কইরা হালাইছি। এই যে কাফনের কাপড়।
আরেকজন বলে উঠল,
ঃ কি যে কও কালাই ভাই; আমি তো লোক পাঠাইয়া দিছি কবর খোঁড়ার লিগা।
মুন্সী প্রচন্ড রেখে গেল। সে কালাই বেপারীর দু’জন সাঙ্গপাঙ্গদের দিকে রাগত চোখে তাকিয়ে বলল,
ঃ না আমগো খাইয়া কাম নাই। হেরা হাজী মোঃ মহসীন। চল তোরা...।
কালাই বেপারী আড়চোখে ৩য় জনের দিকে তাকাতেই সে চলে গেল ‘হু-’ শব্দ করে।
নাড়ার স্তূপে সেই মধ্যরাত থেকে মেঝো মেয়ে ফতিকে কোলে নিয়ে চান্দু মিয়া মাথায় হাত দিয়ে বসে ছিল। নাড়ার উপর মেয়েকে শোয়ায়ে আতুর ঘরের দিকে সে ধীরে পায়ে এগোতে লাগল। আতুর ঘরের একেবারে কাছে পূর্বদিকে ফিরে এক দৃষ্টিতে অনেকক্ষন দাঁড়িয়ে রইল। ঘর থেকে অস্পষ্ট কান্না এখন স্পষ্ট থেকে স্পষ্টতর হতে লাগল। ম্বর্ণলতা কাঁদছে। ওর বান্ধবীদের স্ন্তানা স্পষ্ট শুনতে পাচ্ছে চান্দু মিয়া। কালাই বেপারী চান্দু মিয়ার নিকটে এসে বলতে লাগল, “চাচাজান, আপনে ভাইঙ্গা পইরেন না। তাইলে স্বর্ণারে কে বুঝাইব। ... কি করবেন, আল্লায় যা করে, ভালর লাইগাই করে। আল্লার উপর ভরসা রাহেন। কহন আল্লা পাক কি খেল দেহান--কেউ বুচতে পারে না।” এবার চান্দুমিয়া চিৎকার করে উঠল, ‘আল্লায় যা করে ভালই করে? তয় ঐ মাছুম পোলাডার কি অইব, কে অরে বাঁচাইবো? কে অরে পালব? ’ কালাই বেপারী এবার শশব্্যস্ত হয়ে বলতে লাগল, ‘কেন? কেন? আমার মা আর লতা মানে স্বর্ণলতা--ওরা পালব।’ ভবিষ্যতের নির্মম আঘাত চান্দু মিয়া কালাই বেপারীর চোখের আনন্দের মাঝে দেখতে পেল।
কালাই বেপারীর ইশারায় তার লোকজন সব ব্যবস্থা করতে লাগল। কালাই বেপারীর মৃতা প্রথম স্ত্রীর ঘরের ছেলে রুহুল চিৎকার করতে লাগল,‘ আব্বা, ও আব্বা, লতা খালা বেহুশ অইয়া গেছে।’ চান্দু মিয়া দৌড়ে ঘরে গেল। চিৎকার করে সে কাঁদতে লাগল মেয়ের নাম ধরে।
অনেক সময় বয়ে গেল। স্বর্ণলতার বান্ধবী কণা চান্দু মিয়ার কাঁধে হাত রেখে বলল, ‘অরে রাহেন চাচা, মৌলভীসাব জানাজায় আপনেরে ডাহে।’ স্বর্ণলতাকে নিজের হাত থেকে বিছানায় শুয়ায়ে চান্দু বাইরে বেড়িয়ে গেল। পূর্বদিকে তাকাতেই সূর্যের প্রখর রেখা তার চোখে তীব্র আঘাত দিতে লাগল। অনেক বেলা হয়ে গেছে। আদুকে নিয়ে মোল্লার ধান কাটতে হবে। আজ মোল্লার টাকা দেবার কথা। আজ তাকে ধান কাটতে যেতেই হবে । সে এদিকে ওদিকে অনুসন্ধিৎসু চোখে তাকাতে লাগল। কোথাও আদুকে দেখতে পেল না। সোজা উঠান বরাবর সে হাঁটতে লাগল। উঠানের পূর্ব প্রান্তে এসে, সে উত্তর দিকে তাকিয়ে অবাক হয়ে গেল। সব ব্যবস্থা হয়ে গেছে। ঈমামসাব তাকে ডাকছে।
বুকের না বলা সুপ্ত বেদনা যেন মেঘ গর্জনের মত প্রচন্ড গর্জনে তার সমস্ত জীর্ন দেহ ভেঙ্গে চূর্ন-বিচূর্ন করে দিল। এবার সে নিজের কান্না চেপে রাখতে পারল না। আঠার বৎসরের সংসার জীবন তার। জহুরার বাবার মৃত্যুর সময় জহুরাকে তার বাবা চান্দু মিয়ার কাছে দিয়ে যায়। চান্দু তখন মাছ ধরত নদীতে। ছোট বেলা থেকেই বউ-জামাই আর পুতুলের বিয়ে খেলতে খেলতে একদিন তারা সত্যিই বউ-জামাই হয়ে গেল। যতটুকু জমি-জমা ছিল--তা দিয়ে কোনমতে চান্দুর সংসার চলত। ছোট বেলা থেকে চান্দু ছিল হেংলা-পাতলা। এ নিয়ে জহুরা প্রায়ই ঠাট্টা করত--
ঃ তুই আর মোটা অলিনা চান্দু।
ঃ দেহিস, এই ধান কাডনের কাঁচি ধইরা কইতাছি, একদিন মোটা অমু। তুই তহন হিন্সায় মরবি।
তারপর দুজনেই হাসতে হাসতে একে অপরকে জড়িয়ে ধরত। স্বর্ণলতা জন্মের দু’একদিন আগে চান্দু জহুরাকে বলেছিল-
ঃ ঐ জহুরা কতো আমাগো মাইয়া না পোলা অইব।
জহুরা হেসে বলেছিল--
ঃ ওমা! তোমার কি অইব। অইব সেন আমার, তুমি তো পোলা মানুষ--
ঃদূর! আমার কথা কইতাছিনি। তোর পেটের কথা কইতাছি।
ঃ পোলা অইব--
খিলখিল হাসিতে চান্দু হেসেছিল সেদিন। বউয়ের গালে চুমো দিয়ে বলল,
ঃ যাউক, টেহা-পয়সা লাগবে না। মাইয়া অইলে কত টেহা লাগে।
ঃ মাইয়াই অইব--
ঃ কি কইলি? পেডের মধ্যে পাড়া দিয়া তরে কব্বরে পাডামু।
হলও তাই। ফি বছর একটি করে চারটি মেয়ে হল চান্দুর। দুইটি মেয়ে মারা গেল আবহমান বাংলার চিরাচরিত নিয়ম অনুসারে। ছেলে পাওয়ার আশায় চান্দু বেকুল হয়ে উঠল। তার কতস্বপ্ন! ছেলেকে নিয়ে সে মাছ ধরতে যাবে ভোগদিয়ার বিলে। ছেলে ডোলা নিয়ে ডাঙায় বসে থাকবে, সে মাছ ধরবে। ছেলেকে নিয়ে মাছ ধরা তার বড় শখ। এমনি একটি স্বপ্ন জহুরার মৃত্যুর তিনদিন আগে জহুরাকে শুনিয়েছিল।
ঃজানস জহুরা--তরে আমি বকি। তয় মনে সুক পাইনা। তুই আমার লগে রাগ করছস। কর,রাগ কর। বেশী কইরা কর। আমি কি হুদাহুদি রাগ করিরে। একটা পোলার লিগা আমি কত স্বপ্ন দেহি। জানস কাইল রাইতে স্বপ্নে দেহি আমগো একটা পোলা অইছে। কি সুন্দর! আমি অরে কোলে লইয়া ধান মাড়াইতাছি মোল্লাগো উডানে। তুই ঘোমটা দিয়া--
স্ত্রীর কোকানিতে সেদিনকার স্বপ্নের কথা চান্দু জহুরাকে আর বেশী শুনাতে পারেনি। তবে চান্দুর স্বপ্ন পূরণ হয়েছিল। জহুরা আর দেখতে পায়নি তার ছেলে নাকি মেয়ে হয়েছে। মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত জহুরা কোনদিন চান্দুর উপর রেগে কথা বলেনি। স্বাস্থ্যবতী দেহটি ক্রমেই চান্দুর মত শীর্ণ হয়ে আসছিল। ঈদের কোন এক বিকালে চান্দু জহুরার মুখের দিকে তাকিয়ে কিছু কথা বলতে গিয়ে থেমে গিয়েছিল। সেদিন সে বলতে চেয়েছিল--সে আবার বিয়ে করবে। জহুরা জানত; বুঝতে পারত স্বামীর মনের কথা। স্বর্ণলতাকে আদর করতে করতে জহুরা দুঃখের মাঝেও হেসে বলেছিল--তোর যদি সোয়াধ হয় আরেকটা বিয়া--। চান্দু মরিচ দিয়া পান্তা ভাত খাচ্ছিল। হঠাৎ সে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে গেল। আদুকে ডাকতে ডাকতে সে কাচি নিয়ে মাঠে চলে গেল।
সহজ-সরল আদু আজ ৫ বৎসর হল চান্দুর সাথে কাজ করে। শিবচর তার বাড়ী। দুনিয়াতে তার কেউ নেই। বয়স তার সতের। হালকা-পাতলা গড়ল। হালকা ফর্সা, নাকটা তীরের মত চোকা। চোখ দুটি স্বর্ণলতার ভাষায় ‘বিলাই চোখ’। অনেকে আদুকে আধা পাগলও বলে। আদু আর স্বর্ণলতার সম্পর্ক ছিল এ রকম: হয়তো আদু দৌড়ে গরু ঘর থেকে এসে বলল, ঐ স্বর্ণ, ভাত দে--
ঃ ভাত খাওন লাগবো না। বাজান না খাইয়া কামে গেছে। তুমিও যাও--
জহুরা আদুকে ডেকে বসান।
ঃ স্বর্ণা তুই আদুকে ভাত দে--
ঃ বহ আদু ভাই। আমি ঠাট্টা কল্লাম।
ঃ আইজ তোর লিগা শাপলা ফুল আনুম না বিল থিকা।
ঃ কও কি আদু ভাই। এই তোমার পা ধইরা কইলাম আর ঠাট্টা করুম না।
সবাই দাঁড়িয়ে আছে উঁচু ঢিবির উপর। খাটের উপর মৃতা জহুরাকে শোয়ায়ে সবাই খাটটিকে ধরে কাঁধে তুলল। তারপর ছয় বেয়ারার পালকি চলছে আল্লার নামে...। সবার মাথায় টুপি। স্বর্ণলতা হতভম্ব হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। নিস্তব্ধ সে। আদুর ভীষণ জ্বর। সে কোনমতে বিছানা থেকে উঠে গরু দু’টিকে ঘাস দিয়ে তেঁতুল গাছের গোড়ায় বসে মাথাটা গাছের গোড়ায় হেলিয়ে দিল। আদুর অভ্যাস হল গান গাওয়া। যত সুখ অথবা দুঃখ তার থাকুক, সে গান গাইবে । জ্বরের ঘোরেও সে গান গাইবে। তার গান ক্ষেতের অন্য সব মজুররা খুব পছন্দ করে। কোথা থেকে যে এত গান শিখেছে, সেও জানেনা। তেঁতুল গাছের গোড়ায় বসে পশ্চিম দিকে তাকিয়ে সে জহুরা চাচীর চিরযাত্রা দেখছে। তার কন্ঠ থেকে গান বের হয়ে এল । সে গাইতে লাগল--আমারে সাজাইয়া দিও নওসার সাজন...।
উঁচু ঢিবির উপর স্বর্ণলতা দাঁড়িয়ে ছিল। সে এক পা দু’পা করে আদুর কাছে আসতে লাগল। নিজেকে আজ সে বড় অসহায় ভাবছে। আজ আদুর কাছে বসতে তার খুব ইচ্ছে করছে। আদুকে আজ বড় আপন মনে হচ্ছে। কে বলে আদু পাগল? আদু যে মনের কথা বলতে পারে। এ পৃথিবীতে তার মত কে তাকে এত আদর করে--কেউ না। প্রতিদিনের কত আব্দার সে পূরণ করার জন্য চেষ্টা করে। আজ মনে পড়ে, তাকে সে কত বকেছে কারনে-অকারনে।
আদুর গান শেষ। সে কাঁদছে। স্বর্ণা আদুর চোখের জল নিজের আঁচল দিয়ে মুছে দিল। তারপর আদু ভাই বলে চিৎকার দিয়ে তার বুকে মাথা রেখে কাঁদতে লাগল। এ কান্নার শেষ নেই। এ কান্না আনন্দের। এ কান্না ভালোবাসার । আদু স্বর্ণার মাথা উঠিয়ে বলল, স্বর্ণা, ঐ দেক্, চাচী বেহেস্ত যাইতাছে।