কিছু ভালো লাগে না। মরে যাবো।
নানা বাড়ির উঠোনে নতুন ধানের গন্ধ ছিলো
নাড়ীর স্পন্দনে থেমে গেছে ধান ভাঙানোর গীত
কাঠ ইট কংক্রিটের স্থাপনা ভাঙবে না কোনোদিন,
তোমাকে ভাঙবো। অপরাহ্নের রোদে পিঠ পেতে বসো
চুলের অলিগলি পথ ভেঙে আকুল অন্ধকার শুঁকে
একদিন খুব করে মরে যাবো।
বড় অসহ্য এই বেঁচে থাকা। মরে যাবো।
ঘেমো ভীড়ে ঠাসাঠাসি, ইঁদুরের দৌড় খেলা
হাঁপাতে হাঁপাতে সপ্তাহ শেষে গিয়ে ঘুম ঘুম আয়েশ
সেদিনও টিভি স্ক্রিনে শিরোনাম, “বেডরুমে গলাকাটা লাশ”
টিক ট্যাক টো এই কাটাকাটি থামবে না কোনোদিন,
তোমাকে থামাবো। প্রগলভ ঠোঁট দুটোয় তর্জনী চেপে
একদিন চুপ করে মরে যাবো।
এইটুখানি জীবনে দীর্ঘ অবসাদ। মরে যাবো।
ওরা জন্মায় অনাদরে, অনাহারে বরবাদ দিবস যাপন
ওদিকে ফ্লাইওভারে গতিশীল প্রগতির চাকা
উইন্ড শিল্ডে ঝাপসা অমুক তন্ত্র তমুক তন্ত্র
মনের সুখে বাঁশি বাজাচ্ছে উলুখাগড়ার রাজা
দালানের সদর দরজায় সি,সি ক্যামেরার দালালি
মানুষের মৌন মন্বন্তর খুঁজবে না কোনোদিন,
তোমাকে খুঁজবো। এতো মেঘের ভীড়ে কোন ছায়াটা তোমার
এতো বৃষ্টির গভীরে কোনটা তোমার মসৃণতা, খুঁজতে খুঁজতে
একদিন টুপ করে মরে যাবো।
পুঁজ হয়ে জমে আছে অভিমান। মরে যাবো।
অভিনব পুঁজি নিয়ে ব্যবসায় নেমেছে কালের কসাই
প্রার্থনার নেপথ্যে জবাইকৃত সরলতার লেনদেন
জ্ঞানের গহীনে মূর্খতা, দূর্বৃত্তের বিত্তসমাগমে অহংকার
অমায়িক মায়ায় কারো দিকে কেউ তাকিয়ে দেখবে না কোনোদিন,
তোমাকে দেখবো। অন্তত একবার প্রাণ ভরে দেখার পর
তোমার বেদনার বুদবুদে নিস্তেজ নিঃশ্বাস ছড়িয়ে দিয়ে
একদিন বুপ করে মরে যাবো।
কবিতা টবিতা সব অশ্লীল মনে হয়। মরে যাবো।
চিঠির চল উঠে গেছে বহুদিন আগে
অস্থায়ী অক্ষর পিটপিট করে বাইনারি কোডে
রিকশা পেইন্টে দোলে নায়িকার সুঠাম শরীর
লুপ্ত হাতির ফসিল পায় জাদুঘরে ঠাঁই
লণ্ডভণ্ড হয়ে একদিন জাদুঘরে চলে যাবে জাদুঘরটাই
উইকিপিডিয়া নামের কোনো অস্তিত্ব থাকবে না,
তোমাকে রাখবো। চাকু চিকিৎসার হম্বিতম্বি বিফলে গেলে
অনন্ত আত্মার মাদুলিতে বিশল্য করণী তোমাকে রেখে
জাদুর মঞ্চে যবনিকা পতনের মতো
একদিন ঝুপ করে মরে যাবো।
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই মার্চ, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:০৮