নারীর বাড়ি দিনাজপুর। স্বামী ঢাকায় ব্যবসা করেন। পারিবারিক কলহের কারণে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কথাবার্তা বন্ধ ছিল কয়েকদিন। এরমধ্যে ফেসবুকে রংপুরের কাউনিয়ার যুবক শামীমের সঙ্গে পরিচয় হয় ওই নারীর। পরে মোবাইল নম্বর আদান-প্রদানের মাধ্যমে তাদের মধ্যে ইমোতে কথাবার্তা হয়। শামীম নিজেকে সেনাবাহিনীর সদস্য পরিচয় দিয়ে ওই নারীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন। পরে তাকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দেন।
সম্পর্ক তৈরি হওয়ার চারদিন পর গত ৫ মার্চ বিকেলে ওই নারী তার ১৫ মাসের ছেলেসন্তানসহ স্বামীর গচ্ছিত ১১ লাখ টাকা নিয়ে দিনাজপুর থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হন। পথিমধ্যে শামীম মোবাইলে ওই নারীকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে তাকে সারাই ইউনিয়নের ধুমেরকুঠি এলাকায় আসতে বলেন। ওই নারী ঘটনাস্থলে পৌঁছালে অজ্ঞাত এক যুবক তাকে ধুমেরকঠি এলাকায় একটি ভুট্টাক্ষেতে নিয়ে যান। সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হন ওই নারী।
দুই
গত বছরের জুনে সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজারের গণারগাঁও গ্রামের আবু সাঈদ নামে এক পুলিশ সদস্যের সঙ্গে পরিচয় ও সম্পর্ক তৈরি হয় স্বামী পরিত্যক্তা ও তিন সন্তানের জননী এক নারীর। ওই নারী সিলেট নগরীর রিকাবীবাজার এলাকার বাসিন্দা। একপর্যায়ে ওই নারীর বাসায় আসা-যাওয়া শুরু করেন ওই পুলিশ সদস্য। বিয়ে করে বিদেশ যাওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে শারীরিক সম্পর্ক অব্যাহত রাখেন তিনি। পরবর্তীতে ওই নারীর সহায়তায় একটি পাসপোর্টও তৈরি করেন আবু সাঈদ।
ক্রোয়েশিয়া যাওয়ার ভিসার অনুমতি পেয়ে পুলিশ সদস্য আবু সাঈদ ওই নারীর সঙ্গে সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করার চেষ্টা করেন। এ সময় ওই নারী বিয়ের জন্য চাপ দিলে নানা টালবাহানা শুরু করেন আবু সাঈদ। এখন ওই নারীকে হুমকি-ধমকিও দিচ্ছেন। পুলিশ অভিযোগের একুশ দিন পর মামলা নিলেও আসামি ধরতে গড়িমসি করছে।
ওপরে যে দু’জন নারীর বর্ণনা দেওয়া হলো, এরা কিন্তু অবুঝ না। বয়সও কম না। কী বুঝে শুধু মোবাইলের মাধ্যমে পরিচয়ে এমন গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে পারল? সেনাবাহিনী আর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য অথবা বড় চাকরি করে শুনলে লোভে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে? পত্র-পত্রিকায় প্রতিদিনই প্রতারিত হওয়ার খবর আসে। তাও লোকজনের হুঁশ হয় না। এই যে এদের দুর্ভোগ হয়; এগুলো দেখে কেউ যদি নির্বিকার থাকে অথবা ঠাট্টা-মশকরা করে সেটা কি দোষের হবে?
প্রেমিক বিয়ে করবে বলে ঝোঁকের বশে স্বামীকে তালাক দিয়ে বসে। পরে দেখা যায় আর বিয়ে করে না। পরে ছেলের বাড়িতে গিয়ে অনশন করতে হয়। কেন? আর ওই ছেলেগুলোই বা কেমন ক্রিমিনাল! তুই বিয়ে করবি না, তাহলে কেন মিথ্যে আশ্বাস দিয়ে একটা ঘর নষ্ট করিস?
তুচ্ছ কারণে খুন-খারাপিও ঘটে যায়। পরে কিন্তু দেখা যায় কেউ ভালো থাকে না। জেল-জরিমানা-মৃত্যুদণ্ডও হয়। শুধু যে নেশাখোর আর খারাপ লোকেরাই এমন কাজ করে, তা কিন্তু না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং বুয়েটের মতো জায়গায় এমন এমন ঘটনা ঘটেছে, তা অবিশ্বাস্য। কেন এরা এমন করে?
বিদ্যুৎ-সংযোগ না থাকলেও রাতের অন্ধকারে জোনাকি পোকা আলো দিতে পারে, অথচ কিছু কিছু মানুষ জ্ঞান-বুদ্ধি সম্পন্ন হওয়া সত্ত্বেও তা কাজে লাগাতে পারে না। আমার মনে হয় দেশের ঘরে ঘরে সরকারি উদ্যোগে মনোরোগ বিশেষজ্ঞ পাঠানো উচিত। পুরো জাতিই মানসিক রোগে আক্রান্ত।
ছবিঃ সংগৃহীত
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে এপ্রিল, ২০২৫ বিকাল ৩:০৩