আবারো প্রান হানির আশঙ্কা। আমারো আমাদের মৃত্যুর সন্মুখিন হতে হবে।
তবে এবার আমরা পরাজিত হব না, আমরা সাবধান থাকব।
বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় ‘মহাসেন’ উপকূলের দিকে আরও অগ্রসর হচ্ছে। শনিবার একটি নিম্নচাপ ঘনীভূত হয়ে ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিয়ে উৎপত্তিস্থল থেকে তিনশ’ কিলোমিটারের বেশি অগ্রসর হয়েছে, যা আরও ঘনীভূত হয়ে উত্তর-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে।
সাগর উত্তাল থাকায় সমুদ্রবন্দরগুলোতে তিন নম্বর সতর্কতা বহাল রয়েছে।
শনিবার নিম্নচাপটি চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে এক হাজার ৮০০ কি.মি. দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছিল। পরে তা একশ’ দশ কিলোমিটার এগিয়ে মহাসেনে রূপ নেয়।
ঘূর্ণিঝড়ের সময় সমুদ্রের পানি স্ফীত হয়ে ঘূর্ণিঝড়ের সঙ্গে উপকূলের কাছাকাছি যে উঁচু ঢেউয়ের সৃষ্টি হয়, তাকে জলোচ্ছ্বাস বলে। জলোচ্ছ্বাসের সঙ্গে ঘূর্ণিঝড়ের সাগরগর্ভে ভূমিকম্পের এবং অগ্ন্যুৎপাতের প্রত্যক্ষ সম্পর্ক বিদ্যমান। সাগরে ঘূর্ণিঝড়ের তীব্রতা বৃদ্ধি পেলে জলোচ্ছ্বাসের উচ্চতা বৃদ্ধি পায়। ঘূর্ণিঝড় উপকূল অতিক্রমের সময় উঁচু জলোচ্ছ্বাস উপকূল এলাকার অসংখ্য জীবনহানি এবং সম্পদনাশের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
যেহেতু আমাদের দেশের বেশির ভাগ মানুষই গরিব তাই তাদের বাড়িঘর সাধারন মানের হয় (দালান কোঠা থাকে না) তাই ঘূর্ণিঝড়ের সতর্কতা শুনবার সাথে সাথেই আপনারা নিকটবর্তী নিরাপদ উঁচু স্থানে গিয়ে আশ্রয় নিন। এখন প্রায় অনেক জেলায়ই সাইক্লন সেন্টার আছে সেখানে আশ্রয় নিতে হবে। না থাকলে নিকটবর্তী নিরাপদ স্থানের স্কুল বা কলেজের বিল্ডিংএ অবস্থান করতে পারেন।এবং রুমের জানালা দরজা বৃষ্টির পানি রোধ করার জন্যে ভাল ভাবে বন্ধ করতে হবে। হাল্কা কিন্তু মজবুত কাঠ দিয়ে জানালা বন্ধ করতে পারেন। (নিন্মের ছবির মত)
তবে আপনার নিজ বাড়ি থেকে আশ্রয় কেন্দ্রে যাবার আগে যে সব কাজ করতে হবে সেগুল হলঃ
১। জরুরী কিট প্রস্তুত করে সাথে নিন: পোর্টেবল ব্যাটারি রেডিও, টর্চ এবং অতিরিক্ত ব্যাটারী;ম্যাচ কাঠি/ম্যাচ লাইট, মোমবাতি।জলরোধী ব্যাগ ও প্রয়োজনীয় হাল্কা বিছানাপত্র কম্বল।
২।। পানির বোতলে খাবার পানি, শুকনো বা টিনজাত খাবার যেমন চিড়া মুড়ি সাথে নিন।
৩।। যদি সম্ভব হয় তাহলে জ্বালানী ল্যাম্প, পোর্টেবল চুলা, রান্নার হাড়ি ইত্যাদি সাথে নিতে পারেন।
৪। যদি আপনার পোষা প্রাণী থাকে তাহলে সঙ্গে নেয়া সম্ভব হলে নিন নতুবা ছেড়ে দিন। এদের বেধে রাখবেন না, বেধে রাখলে এরা নিশ্চিতমৃত্যুর সন্মুখিন হবে।
৫। আপনার জরুরী কিট. বা মুল্যবান দ্রব্য বা ভাড়ি বস্তুগুল একসাথে করে বাসার বড় একটি শক্তিশালী আলমারিতে রাখতে পারেন, তবে ভাল হয় যদি মাটিতে বেশ অনেক খানি গর্ত করে পলিথিন পেচিয়ে রেখে দেন। ফিরে এসে তুলে নিতে পারবেন।
৬। ঘরের সব বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতির সংযোগ বিচ্ছিন্ন করুন।
৭। সাইক্লোন সেন্টার বা আশ্রয় কেন্দ্রে যাবার আগে বাড়ির ও আশে পাশের শিশু বৃদ্ধ ও গর্ভবতি মহিলাদের খোজ নিন, তাদের কে আপনার সাথে যাবার জন্যে সাহায্য করুন।
এখানে উল্লেখ্য যে, ১৯৮৫ ও ১৯৯৭ সালের মে মাসে চট্টগ্রাম কক্সবাজার উপকূলে, ১৯৮৮ সালের নভেম্বরে খুলনা উপকূলে ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানে। ২০০৭ সালের ১৫ নভেম্বর খুলনা ও বরিশাল উপকূলে আঘাত করে ঘূর্ণিঝড় 'সিডর'। সিডরের পর ২০০৮ সালের ২ মে ঘূর্ণিঝড় 'নার্গিস' একই এলাকায় আবারও আঘাত হানে। একই বছরের ২৬ অক্টোবর ঘূর্ণিঝড় 'রেশমি', ১৫ নভেম্বর 'খাইমুক', ২৬ নভেম্বর ঘূর্ণিঝড় 'নিসা', ১৩ ডিসেম্বর ঘূর্ণিঝড় 'ওয়ার্ড' এবং ২০০৯ সালের ১৭ এপ্রিল 'বিজলি', ২৫ মে 'আইলা' আঘাত হানে।
এতএব আগে থেকেই ঝড়ের পুর্বাভাশ জানুন ও সতর্কতার সহিত পুর্বপ্রস্তুতি নিন।
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই মে, ২০১৩ সকাল ১১:২২