গত সপ্তাহে বিকেলে বাসায় বসে অবসরে বন্ধু ফয়সালের সাথে আড্ডা দিচ্ছিলাম, হঠাৎ করেই দেখি ফেরদৌস ভাইয়ের ফোন, আমাকে বলল কি কর? আমি বললাম অবসর ভাই... ভাই ভালো করেই জানেন আমি ঘুরা ফেরা পাগল মানুষ তাই প্রস্তাব দিয়ে বসলেন আজকে সূর্যোদয় দেখবো সমুদ্রের বুকে চল BOURNEMOUTH যাই। আমি মোটামুটি এক বাক্যে রাজি, সাথে সাথেই ফয়সাল কে নিয়ে দিলাম ছুট...... যদিও আবহাওয়া তেমন ভালো ছিল না কিন্তু হঠাৎ করা প্ল্যান সাধারণত এমনই হয়...
মোটামুটি রাত ১২টার দিকে পিজ্জা আর চিকেন কিনে আমরা রওয়ানা হলাম, সেদিন বেশ ভালোই ঠাণ্ডা ছিল... রাস্তায় কাজ চলছিল তাই আমাদের অনেক খানি ঘুরে যেতে হয়েছিল, প্রায় পৌনে ৫টায় গিয়ে আমরা BOURNEMOUTH পৌঁছেছিলাম, ভোরের আলো তখনো ফুটে নি, চারদিকে অন্ধকার এর সাথে যোগ হয়েছিল ঠাণ্ডা... কোথাও কেউ নেই একটা ভাব, গুড়ি গুড়ি বৃষ্টিতে মনে হচ্ছিলো দিনটাই মাটি। প্রথম যেই বিচে গিয়েছিলাম সেখানে আমি নামিই নি কারণ ভোরের আলো তখনো ফুটে নি তাই আমরা আরেকটি বিচের দিকে রওয়ানা হলাম। বলা বাহুল্য, BOURNEMOUTH এ অনেকগুলো বিচ আছে।
খুব ভোরে এই বিচে গিয়ে পৌঁছেছিলাম। পাহাড়ের উপর থেকে শান্ত বিচ দেখতে বেশ লাগছিলো।
চারপাশে তখনও সেভাবে ভোরের আলো ফুটে নি। সকালের মৃদু বাতাসে বেশ ভালো লাগছিলো।
হঠাৎ করেই যেন একটু আলোর রেখা খুঁজে পেলাম।
যদিও মেঘের কারণে সূর্যের দেখা পাই নি কিন্তু যা পেয়েছি সেটাই মন্দ কিসের ?
পাহাড়ের কোল ঘেঁসে এভাবেই রাস্তা বানানো হয়েছে।
পাহাড়ের উপর থেকে এরকম একটা জায়গায় বসে থাকার মজাই আলাদা।
আমি এবং ফয়সাল ।
সেখানে মোটামুটি ঘণ্টাখানেক সময় কাটিয়ে আমরা চললাম পরের বিচের দিকে। তখনও অল্প স্বল্প বৃষ্টি পড়ছিল কিন্তু আমরা দমে যাবার পাত্র নই। আমরা এরপর গিয়েছিলাম BOSCOMBE PIER নামে একটা বিচে। ঐ একটা বিচে গিয়ে একটু কক্সবাজার ভাব পেয়েছিলাম। এখানের অধিকাংশ বিচের কোন শব্দ পাওয়া যায় না, এমনকি পাওয়া যায় না ঢেউ এর ফিলিংস, আমাদের মেঘ্নার ঢেউ তার চেয়েও বেশি মনে হয়।
BOSCOMBE PIER এ গিয়ে দেখি আকাশ পুরোই মেঘাচ্ছন্ন, কোন মানুষজন নেই, সকাল ৭ টা বাজে। দুএকজন মানুষ জগিং করছিলো।
গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি সে তো থামবার নয় মনে হচ্ছিলো।
আমাদের গাড়ি পার্ক করা হলো।
আমরা পেট পুজো শেষে বিচের দিকে যেতে শুরু করলাম, ভাগ্যিস বৃষ্টি বন্ধ হয়েছিল।
পুরো আকাশ কালো মেঘে ঢাকা।
আমাদের কাঙ্ক্ষিত বিচের একাংশ।
বিচের ভিউ।
বিচটা লম্বায় বেশ বড় ছিল।
আঁচড়ে পড়ছে ঢেউ।
বিচের পানি বেশ ঠাণ্ডা ছিল।
ঢেউয়ের মধ্যে বেশ ভালো কারেন্ট ছিল।
আরেকটি ছবি।
সাদা ফেনা।
BOSCOMBE PIER আমি নিজে।
শান্ত, স্নিগ্ধ, জনমানবহীন সমুদ্রে সময় কাটানোর মজা সেদিন আবার নতুন করে টের পেয়েছিলাম।
মাঝে মাঝে মনে হয় পাগলামি করা ভালো, জীবনে একটু আধটু পাগলামি না থাকলে জীবনের মজাটাই হারিয়ে যায়। সেদিনে পাগলামি অনেকদিন মনে থাকবে। (আমরা সেখান থেকে Durdle Door নামে খুব সুন্দর একটি জায়গায় গিয়েছিলাম, সেই গল্প না হয় অন্যদিন হবে ).......।