আমার জানা মতে "আল-কোরআনকে" কখনো "বিজ্ঞানের বই" অর্থাৎ “Book of science” হিসেবে দাবি করা হয় না। তবে এই গ্রন্থের মাঝে স্রষ্টা প্রদ্ত্ত নিদর্শনসমূহ বিবৃত হয়েছে বিধায় এটিকে সহজ ভাষায় “Book of signs” হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়ে থাকে।
আল-কোরআন নিঃসন্দেহে স্রষ্টা প্রেরিত "জ্ঞানগর্ভ গ্রন্থ"-
সূরা লুকমান-
(৩১:০২) অর্থ- এগুলো জ্ঞানগর্ভ গ্রন্থের আয়াত/ নিদর্শন
Shakir: These are verses of the Book of Wisdom
সূরা ইয়াসীন-
(৩৬:০২) অর্থ- জ্ঞানগর্ভ কুরআনের শপথ,-
Yusuf Ali: By the Qur'an, full of Wisdom,-
সূরা যুখরুফ-
(৪৩:০৪) অর্থ- আর নিঃসন্দেহে এটি রয়েছে আমাদের কাছে আদিগ্রন্থে, মহোচ্চ এবং জ্ঞানসমৃদ্ধ।
Sahih International: And indeed it is, in the Mother of the Book with Us, exalted and full of wisdom.
কিন্তু কেউ যদি প্রশ্ন করেন- "আল-কোরআন" কি বিজ্ঞানময় গ্রন্থ?
বিষযটি সম্পর্কে কিছু বক্তব্য তুলে ধরার চেষ্টা করছি-
...................................
বিজ্ঞান= [Noun] Science; comprehensive knowledge.
Science= সুশৃঙ্খল, সুবিন্যস্ত, বিশেষত পর্যবেক্ষণজাত ও পরীক্ষানিরীক্ষার দ্বারা যাচাইকৃত জ্ঞান, বিজ্ঞান
Comprehensive= বিস্তৃত, ব্যাপক, সর্বাঙ্গীণ, প্রভূত বোধশক্তিসম্পন্ন
Knowledge= জ্ঞান, অভিজ্ঞতালব্ধ ধারণা বা পরিচিতি, বোধ, বিদ্যাবত্তা, অধীত জ্ঞান, জ্ঞাতব্য বিষয়
বিজ্ঞানময়= [adjective] = Scientific; intellectual
Scientific= বৈজ্ঞানিক (Adj), বিজ্ঞানসম্মত (Adj), বিজ্ঞানসংক্রান্ত (Adj.)
Intellectual= ধীশক্তিসম্বন্ধী,বৌদ্ধিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক
...................................
"আল-কোরআন" নিঃসন্দেহে একটি intellectual অর্থাৎ ধীশক্তিসম্বন্ধী, বৌদ্ধিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক ঐশী গ্রন্থ।
আল-কোরআনে অনেক বিজ্ঞানসংক্রান্ত বাণী রয়েছে। এর মধ্য থেকে বিশেষ কিছু আয়াত তুলে ধরলাম-
সূরা আল- ইমরান (মদীনায় অবতীর্ণ)
(০৩:১৯০) অর্থ- নিঃসন্দেহে আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবী সৃষ্টিতে এবং রাত ও দিনের আবর্তনে নিদর্শন রয়েছে অন্তর্দর্শি/ বোধশক্তি/ ধীশক্তি সম্পন্ন লোকদের জন্যে-
(০৩:১৯১) অর্থ- যাঁরা স্মরণ করে আল্লাহকে দাঁড়িয়ে, বসে ও পার্শ্বদেশে শায়িত অবস্থায় এবং চিন্তা গবেষণা করে আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবী সৃষ্টির বিষয়ে। (তারা বলে) আমাদের রব! এসব তুমি অনর্থক সৃষ্টি করনি, সকল মহিমা তোমারই, অতঃপর আমাদেরকে আগুনের শাস্তি থেকে রক্ষা কর।
সূরা ইউনুস (মক্কায় অবতীর্ণ)
(১০:০৫) অর্থ- তিনিই তো সূর্যকে (দিয়া) তেজোদ্দীপ্ত বা জলন্ত প্রদীপের আলো ও চাঁদকে (নূর) আলো (অন্যের আলোয় আলোকিত হওয়ার কারণে যে আলো বা উজ্জ্বলতা প্রকাশ পায়) করে বানিয়েছেন এবং তার জন্য অবস্থানগুলো নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন যেন তোমরা বছরের গণনা ও সময়ের হিসাব ঠিকমত জানতে পার; আল্লাহ এসব অনর্থক সৃষ্টি করেন নি। যারা জানতে চায় তাদেরকে তিনি এই নিদর্শন বা আয়াতগুলোর বিশদ বিবরণ জানিয়ে দেন।
(১০:০৬) অর্থ- নিঃসন্দেহে দিন ও রাতের পরিবর্তনে এবং আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর মাঝে আল্লাহতায়ালা যা কিছু সৃষ্টি করেছেন, সেই সমস্ত আয়াত অর্থাৎ নিদর্শনগুলো তাদের জন্য যারা (আল্লাহকে) ভয় করে।
(১০:১০১) অর্থ- বল, "আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে তার প্রতি লক্ষ্য কর।" কিন্তু যারা বিশ্বাস করে না তাদের জন্য এসব আয়াত অর্থাৎ নিদর্শনগুলো ও সতর্ককারীরা কোন কাজেই আসে না।
সূরা রাদ (মক্কায় অবতীর্ণ)
(১৩:০২) অর্থ- আল্লাহ, যিনি উর্ধ্বদেশে স্থাপন করেছেন আকাশমন্ডলীকে স্তম্ভ ব্যতীত- তোমরা সেগুলো দেখছ। অতঃপর তিনি আরশের উপর সমাসীন হয়েছেন এবং সূর্য ও চন্দ্রকে কর্মে নিয়োজিত করেছেন। প্রত্যেকে নির্দিষ্ট সময় মোতাবেক আবর্তন করে। তিনি সকল বিষয় নিয়ন্ত্রণ করেন ও নিদর্শনসমূহ প্রকাশ করেন, যাতে তোমরা স্বীয় পালনকর্তার সাথে সাক্ষাত সম্বন্ধে নিশ্চিত বিশ্বাসী হও।
(১৩:০৩) অর্থ- তিনিই পৃথিবীকে করেছেন বিস্তৃত এবং তাতে স্থাপন করেছেন পাহাড় ও নদনদী। আর যে সব ফল বানিয়েছেন তাদের দুটিতে মিলে এক জোড়া। তিনি দিনকে রাত দ্বারা আবৃত করেন। নিঃসন্দেহে এসবের মধ্যে নিদর্শন রয়েছে তাদের জন্য যারা চিন্তা-ভাবনা করে।
সূরা আম্বিয়া (মক্কায় অবতীর্ণ)
(২১:৩০) অর্থ- যারা কুফরী করে তারা কি ভেবে দেখে না যে আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী মিশে ছিল ওতপ্রোতভাবে; অতঃপর আমি উভয়কে পৃথক করে দিলাম এবং প্রাণবান সমস্ত কিছু সৃষ্টি করলাম পানি হতে, তবুও কি তারা বিশ্বাস করবে না?
সূরা আনকাবুত (মক্কায় অবতীর্ণ)
(২৯:১৯) অর্থ- তারা কি লক্ষ্য করে না, কিভাবে আল্লাহ মখলুক বা সৃষ্টিকে আরম্ভ করেন অর্থাৎ অস্তিত্বে আনেন, অতঃপর তিনি এর পূণরাবৃত্তি করেন? এটা তো আল্লাহর জন্য সহজ।
(২৯:২০) অর্থ- বল, পৃথিবীতে পরিভ্রমন কর এবং অনুধাবন কর, কিভাবে মাখলুক অর্থাৎ সৃষ্টি প্রকাশিত হলো, অতঃপর আল্লাহ বানাতে আরম্ভ করবেন পরবর্তী বিশ্ব বা পরকাল, আল্লাহ্ তো সর্ববিষয়ে সর্বশক্তিমান।
সূরা ইয়াসীন (মক্কায় অবতীর্ণ)
(৩৬:৩৮) অর্থ- এবং সূর্যটা ছুটে চলেছে তার জন্য নির্ধারিত গন্তব্যের অভিমুখে; এটা হচ্ছে মহাপরাক্রমশালী, সর্বজ্ঞ (আল্লাহতায়ালা) কর্তৃক ঘোষিত এবং আইনের মর্যাদাসম্পন্ন আদেশ/ নিয়ন্ত্রণী ব্যবস্থাপনা।
(৩৬:৩৯) অর্থ- চাঁদের জন্যে আমি ক্রম/ অবস্থা/ মনজিল/ পর্যায় সমূহ নির্ধারিত করে দিয়েছি; যতক্ষণ না এটা পুরাতন শুষ্ক বাঁকা খেজুর শাখার অনুরূপ হয়ে যায়।
(৩৬:৪০) অর্থ- সূর্যের পক্ষে সম্ভব নয় চাঁদের নাগাল পাওয়া এবং রজনীর পক্ষে সম্ভব নয় দিবসকে অতিক্রম করা; এবং এরা প্রত্যেকে এক একটি কক্ষপথে সঞ্চালমান।
সূরা স্বাদ (মক্কায় অবতীর্ণ)
(৩৮:২৯) অর্থ- একটি কিতাব, আমি (আমরা- আল্লাহ- সম্মানসূচক) তোমার প্রতি অবতীর্ণ করেছি- যা বরকতময়, যেন তারা (মানুষ) এর আয়াতসমূহ অনুধাবন/ চিন্তা-ভাবনা করে, আর জ্ঞানীরা/ বুদ্ধিমানেরা/ মেধাবীরা/ ধীশক্তিসম্পন্নরা যেন উপদেশ গ্রহণ করে/ বিবেচনা করে/ স্মরণ করে।
সূরা জাসিয়া (মক্কায় অবতীর্ণ)
(৪৫:০৩) অর্থ- নিশ্চয় আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীতে মুমিনদের জন্য নিদর্শনাবলী রয়েছে।
বিজ্ঞানসংক্রান্ত সবগুলো বাণী এখন পর্যন্ত বিজ্ঞান অর্থাৎ বিশেষত পর্যবেক্ষণজাত ও পরীক্ষানিরীক্ষার দ্বারা যাচাই করা সম্ভব না হলেও, এ পর্যন্ত এই বাণীগুলোর প্রায় ৮০ - ৯০%-ই সর্বাধুনিক সুপ্রতিষ্ঠিত বৈজ্ঞানিক তথ্যের ভিত্তিতে সত্য বলে প্রমাণিত হয়েছে। আর বাকীগুলোকে যাচাই করার মত সামর্থ এখনও বিজ্ঞান অর্জন করতে পারে নাই। কাজেই বাকী ১০-২০% বাণীগুলোর সাথে যে বিজ্ঞানের সরাসরি অসঙ্গতি বা বিরোধ রয়েছে, এমনটি দাবি করা ঠিক হবে না। এখন যেমন "আল-কোরআনকে" সরাসরি "বিজ্ঞানের বই" হিসেবে দাবি করা হয়না। তেমনি এই মহাগ্রন্থের বিজ্ঞানসংক্রান্ত সবগুলো বাণী যদি কখনো বিজ্ঞান অর্থাৎ বিশেষত পর্যবেক্ষণজাত ও পরীক্ষানিরীক্ষার দ্বারা যাচাই করার মাধ্যমে সম্পূর্ণরূপে সঠিক প্রমাণিত হয়, তারপরও "আল-কোরআনকে" শুধুমাত্র "বিজ্ঞানের বই"- “Book of science” হিসেবে আখ্যায়িত করা ঠিক হবে না। কারণ এই মহাগ্রন্থে শুধু বিজ্ঞান নয়, বরং জীবন ঘনিষ্ট নানা মুখি জ্ঞানের সমাহার ঘটেছে। আল-কোরআনে নামাজ, রোজা, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্রনীতি, অর্থনীতি, বিজ্ঞান ইত্যাদি জীবন ঘনিষ্ট বিষয়াদি সম্পর্কে যে মৌল নিদর্শন ও তথ্যসমূহ রয়েছে, এখন পর্যন্ত সেগুলোর কোন একটিও বিশেষত পর্যবেক্ষণজাত ও পরীক্ষানিরীক্ষার দ্বারা যাচাই কোরে অনর্থক বা অকল্যাণকর বলে প্রতীয়মান হয়নি, বরং ধীশক্তিসম্বন্ধী, বৌদ্ধিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক জ্ঞান হিসেবে অত্যন্ত বাস্তব সম্মত ও কল্যাণকর হিসেবেই প্রমাণিত হয়েছে। আর চিন্তাশীল, বোধসম্পন্ন ও বিশ্বাসী মানুষ মাত্রই যা অনুধাবন করতে সক্ষম।
মূলত "আল-কোরআন" মানুষের জন্য মহান স্রষ্টা প্রেরিত "জীবন বিধান"। সেইসাথে জ্ঞানসমৃদ্ধ গ্রন্থ হিসেবে এটি ধীশক্তিসম্বন্ধী, বৌদ্ধিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন হওয়ায় এবং এর মাঝে স্রষ্টা প্রদত্ত বিজ্ঞানসংক্রান্ত মৌলিক জ্ঞান তথা নিদর্শনসমূহ বিদ্যমান থাকায় এটিকে "বিজ্ঞানময় গ্রন্থ" হিসেবে আখ্যায়িত করা যেতেই পারে। যেহেতু এই ঐশী গ্রন্থে আধ্যাত্মিকতার পাশাপাশি মহাবিশ্বের সৃষ্টি ও ধ্বংস, পৃথিবীতে প্রাণ সৃষ্টির মধ্য দিয়ে সকল প্রাণীজগৎ তথা মানব সৃষ্টি এবং পরকালীন জীবন ও জগৎ সম্পর্কে নানাবিধ বিজ্ঞানময় জ্ঞান ও তথ্যের সন্নিবেশ ঘটেছে। তাই "আল-কোরআনকে" মূলত একটি "জ্ঞানগর্ভ গ্রন্থ"। পাশাপাশি এটিকে "মৌল বিজ্ঞানের উৎস" হিসেবে উল্লেখ করা হলেও খুব একটা ভুল হবেনা।
আল-কোরআনের আলোকে জ্ঞানচর্চায় উদ্বুদ্ধ হলে মানুষ ধীরে ধীরে অলীক কল্পনা ও মিথ্যার মায়াজাল থেকে বেরিয়ে আসে। সত্যের স্বচ্ছ জ্যোতিতে তার জ্ঞানচক্ষু হয় শাণিত ও উন্মোচিত। সুদূরপ্রসারী চিন্তাশক্তির সহায়তায় প্রচলিত সকল মতবাদের মধ্য থেকে প্রকৃত সত্যটি সে সহজেই খুঁজে ও বুঝে নিতে পারে। এটি নিছক কোন বিজ্ঞানের বই নয়। তাই এতে বৈজ্ঞানিক তথ্য ও ত্বত্ত্বগুলোর বিস্তারিত বিবরণ না দিয়ে ঐশী ইংগিত দেয়া হয়েছে মাত্র। মহাবিশ্বের সৃষ্টি রহস্য সম্পর্কে একজন ইমানদার মানুষ যখন গভীর চিন্তা-গবেষণায় রত হয়, তখন পরম শ্রদ্ধা ও বিশ্বাসে জগৎসমূহের স্রষ্টা সর্বজ্ঞ ও সর্বশক্তিমান এক আল্লাহর সামনে মাথা নত করতে বিন্দুমাত্র কুন্ঠিত হয় না। জ্ঞানী মানুষেরা যেন আল্লাহতায়ালার সৃষ্টি বৈচিত্র সম্পর্কে চিন্তা-গবেষণা করে সেজন্য বার বার তাগিদ দেয়া হযেছে।
খাঁটি ধর্মীয় জ্ঞান অর্জনের পাশাপাশি পার্থিব জ্ঞান অর্জন করলে বোধের উন্মেষ ঘটে। অন্তর হয় আলোকিত। এই শাণিত অন্তর্চক্ষুর সহায়তায় ভাল ও মন্দের মধ্য থেকে ভালকে চিনে নেয়া ও গ্রহণ করা সহজ হয়। মহান স্রষ্টা তাঁর শ্রেষ্ঠ সৃষ্টি মানবজাতিকে শান্তি ও কল্যাণ দানের জন্যই আলোকবর্তিকা স্বরূপ ‘পবিত্র কোরআন’ প্রেরণ করেছেন। এই মহাগ্রন্থে উল্লেখিত তথ্যসমূহের বিশ্লেষণ ও পর্যালোচনার মাধ্যমে বিশ্বমানবতার কল্যাণে সময় উপযোগী যে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করলে তা ফলপ্রসূ হতে বাধ্য। কিন্তু দুঃখের বিষয় আমরা অর্থাৎ মুসলিমদের মধ্যে বেশির ভাগ অংশই আজ এই জ্ঞানগর্ভ গ্রন্থখানা বুঝে পড়ার পরিবর্তে না বুঝে পড়ার দিকেই ঝুকে পড়েছি। আবার অনেকে খন্ডিতভাবে এর কিছু অংশ বোঝার চেষ্টা করে এবং বাকী অংশটুকু এড়িয়ে যাওয়ার কারণে অনেক ক্ষেত্রই বিভ্রান্ত হচ্ছে। ফলে মহান স্রষ্টা তাঁর শ্রেষ্ঠ সৃষ্টির জন্য যে মহামূল্যবান সংবাদ প্রেরণ করেছেন তা প্রকৃত অর্থে অজানাই থেকে যাচ্ছে। তাই একজন মুসলিমকে সর্বপ্রথমে অবশ্যই ইসলামের মৌলিক বিষয়গুলো সম্পর্কে জ্ঞান অর্জনের প্রতি মনোনিবেশ করতে হবে। আল-কোরআনের আলোকে জীবন পরিচালনার প্রতিটি বিষয়ের উপর স্বচ্ছ-ধারণা নিতে হবে এবং সেই অনুযায়ী জীবন যাপনের জন্য স্বচেষ্ট হতে হবে। একজন মুসলিমের প্রতিটি পদক্ষেপই যে ইবাদতের অন্তর্ভুক্ত তা প্রতিটি মুহূর্ত স্মরণ রাখতে হবে। এরপর যদি কেউ মনমত কোন বিষয়কে বেছে নিয়ে সেটার উপর গবেষণা ও ব্যুৎপত্তি অর্জন করতে চান তবে সেই বিষয়টির সঙ্গে সম্পর্কিত আল-কোরআনের তথ্যগুলোকে সত্যের মাপকাঠি হিসেবে ধরে নিয়েই তাকে সামনে এগোতে হবে। তাহলেই কেবল সঠিক শিক্ষা অর্জিত হবে এবং সার্বজনীন কল্যাণকর সিদ্ধান্ত নেয়া এবং দিকনির্দেশনা দেয়া সম্ভব হবে। মানুষ যত বেশী জ্ঞান অর্জন করবে, তার জ্ঞানের পরিধি হবে তত বিস্তৃত ও স্বচ্ছ এবং মহামান্বিত প্রতিপালকের মহত্ব অনুধাবনের সাথে সাথে ইমানও হবে সুদৃঢ়। খাঁটি ইমান ও স্বচ্ছ জ্ঞানের আলোয় আলোকিত মানুষেরা একদিকে যেমন এক আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো কাছেই মাথানত করবে না। অপরদিকে তেমনি ধর্ম ও বর্ণ নির্বিশেষে সকল মানব তথা সৃষ্টিকুলের কল্যাণের জন্য নিঃস্বার্থভাবে এগিয়ে আসবে।
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে মে, ২০১৪ সকাল ১০:৫৫