প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ঢাকা মহানগর (উত্তর) গোয়েন্দা পুলিশের উপ কমিশনার মোল্লা নজরুল ইসলামের নেতৃত্বে ডিবির বিশেষ একটি দল মাহমুদুর রহমানের অফিসে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করে। এরপর তাকে সাদা রঙের মাইক্রোবাসে তুলে মিন্টো রোডে নিয়ে যাওয়া হয়। এর আধা ঘণ্টা পর ডিবির ওই দলটিই পুনরায় ‘আমার দেশ’ অফিসে আসে। এ সময় মাহমুদুর রহমানের অফিসে তল্লাশি চালিয়ে তার ব্যবহৃত ল্যাপটপ, কয়েকটি পেনড্রাইভ, দু’টি হার্ডডিস্ক, একটি সিপিইউ জব্দ করে নিয়ে যায়।
শাহবাগ আন্দোলন ও ইসলাম বিদ্বেষী ব্লগারদের সমালোচনার পরিপ্রেক্ষিতে গত ২২ ফেব্রুয়ারি দৈনিক ‘আমার দেশ’ সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তারের দাবি জানান আন্দোলনকারীরা। একই দাবিতে গত ২৬ ফেব্রুয়ারি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে স্মারকলিপি দেয় গণজাগরণ মঞ্চ। এ দাবিকে যৌক্তিক মন্তব্য করে মাহমুদুর রহমানের বিরুদ্ধে শিগগিরই ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মহিউদ্দিন খান আলমগীর।
ওইদিনই আমার দেশ কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে মাহমুদুর রহমান অভিযোগ করেন, “আমাদের নিজস্ব পরিচয় আমার দেশ পত্রিকা তুলে ধরেছে। আমাদের নিজস্ব সংস্কৃতি ও ধর্ম আছে তা প্রচার করছে। এতে সাংস্কৃতিক বিপ্লব তৈরি হয়েছে। আমাকে গ্রেফতার করা হলেও আমার দেশ-এর সাংস্কৃতিক বিপ্লব অপ্রতিরোধ্য। এ বিপ্লব কেউ থামাতে পারবে না, বিজয় আমাদের হবেই।”
যেকোনো সময় গ্রেপ্তার হতে পারেন, এমন আশঙ্কা প্রকাশ করে মাহমুদুর রহমান বলেন, ‘কাল দেখা হবে কি না, জানি না। তবে যে সাংস্কৃতিক বিপ্লব শুরু হয়েছে, আমাকে গ্রেপ্তার করে তা থামানো যাবে না।’
শাহবাগের আন্দোলন সম্পর্কে তিনি বলেন, রাষ্ট্রের মধ্যে শাহবাগ নামের আরেক রাষ্ট্র হয়েছে। শাহবাগ থেকে আন্দোলনকারীরা জাতীয় পতাকা ওড়ানো, জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন, স্কুল বন্ধ রাখার কর্মসূচি পালনের নির্দেশ দিচ্ছে। দিনের পর দিন তারা আদালত অবমাননা করছে বলেও অভিযোগ করেন মাহমুদুর রহমান।
এর আগে ২০১০ সালের ১ জুন মধ্যরাতে দৈনিক আমার দেশ কার্যালয় থেকে মাহমুদুর রহমানকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ওইদিনই আমার দেশ পত্রিকার প্রকাশনা বন্ধ করে দেয় সরকার। এক মাসের মতো বন্ধ থাকলেও পরে আইনি লড়াইয়ে আবারও আমার দেশ প্রকাশিত হয়। তবে জেলে বন্দি থাকেন মাহমুদুর রহমান। দীর্ঘ ৯ মাস ১৬ দিন কারাভোগের পর ২০১১ সালের ১৬ মার্চ তিনি মুক্তি পান। #