somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ব্লগারদেরকে গোয়েন্দা জিজ্ঞাসাবাদের কিছু অভিনব পদ্ধতি B-)

০২ রা অক্টোবর, ২০১১ রাত ১১:৩৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

গতরাতে খুব বীভৎস কিছু স্বপ্ন দেখেছি। সহব্লগার আসিফ মহিউদ্দিনকে ডিবি’র জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটকের খবর শুনে ঘুমোতে গিয়ে ভালোই ফ্যাসাদে পড়লাম। কয়েক সিক্যুয়াল স্বপ্ন আমাকে প্রায় দোরত করে ছেড়েছে।

দেখলাম আমাকে ধরে নিয়ে যাচ্ছে। জিজ্ঞাসাবাদে প্রয়োগ করার জন্য কৌশল নিয়ে আলাপ চলতেছে। একজনে কইলো “স্যার, ওরে চোখে চোখে রাখেন। টর্চ মাইরা ধইরা রাখেন। কোনভাবেই যেন আইপিহাইড না করতে পারে। শুনছি আইপিহাইড করলে নাকি এদেরকে ধরা যায় না। ... আচ্ছা স্যার, আইপিহাইড জিনিসটা কি? আপনি জানেন কিছু?” জবাবে ভারী গলার একজনে কইলো, “আমারে জিগান ক্যান! ওরেই জিগান।“ বুঝতে পারলাম লোকটা হচ্ছে ডিবি পুলিশের এ টীমটার নেতা। মুখ ফসকে বেরিয়ে পড়লো, “ও... আপনি তাইলে চীপ, আপনারে গদাম!” পরে ভাবলাম উনিতো ছাগুচীফ তিনকোনা না, তাইলে হুদা গদাম দিলাম ক্যান! এরপর আবার কইলাম “স্যরি, আমার নিক থেকে একটু আগে যে কমেন্ট করা হয়েছে এটা আসলে আমার কমেন্ট নয়। এটা সামুর বাগ।“ কনস্টেবল টাইপের একজনে কইলো, “স্যার, এটারতো ব্রেন আউট হয়া গেছে। আবোল তাবোল বকা স্টার্ট করছে। আমরা মনে হয় আসল লোকরে ধরতে পারি নাই।“ এরপর আচানক ধাক্কা মেরে আমারে গাড়ি থেকে নামিয়ে দিলো! ... স্বপ্নটা বেশিদূর আগাইলো না। পোলার কান্দনে ঘুম ভাইঙা গেলো।

স্বপ্নতো স্বপ্নই, এর সোয়াতোলা দামও নাই। কিন্তু সরকারের গোয়েন্দা বাহিনীর বুদ্ধিসুদ্ধি দেখে একেবারেই হতাশ হলাম। ব্লগারদের ভার্চুয়াল আন্দোলন সংগ্রামের জবাব দিতে গিয়ে একচুয়াল গ্রেফতার কিংবা আটকের কোন মানে থাকতে পারে না। এটা অনেকটা মশকরার মতোই। ভবিষ্যতে ব্লগার কিংবা অনলাইন এক্টিভিস্টদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সরকার কিছু পদ্ধতি অবলম্বন করতে পারে। পদ্ধতিগুলো নিচে দেয়া হলো :

ব্লগে পোস্ট দেয়া
কোন ব্লগারকে যদি জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন হয়, সেক্ষেত্রে গোয়েন্দা বিভাগের লোকজন ব্লগে পোস্ট দিতে পারেন। পোস্টের শিরোনাম হতে পারে “ব্লগার সবাককে অনলাইনে দেখা যাচ্ছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য একটু সময় হবে?” এরপর গোয়েন্দা বিভাগের বিভিন্ন মাল্টি নিক থেকে “পোস্ট স্টিকি করা হোক” টাইপের কমেন্ট করতে পারে। স্টিকি আবেদনের কিছু হুজুগে ব্লগারও তখন স্টিকি করার আবেদন জানাবে।
তবে একটা জটিলতা হতে পারে। ব্লগের হিটের নেশা যদি একবার পেয়ে বসে, তাহলে হিটের আগুনে গোয়েন্দাগিরি জ্বলে পুড়ে ছারখার হয়ে যাবে।

ফেসবুক পেজ
“গোয়েন্দা জিজ্ঞাসাবাদ” নামে একটা ফেসবুক পেজ খুলতে পারে গোয়েন্দা সংস্থা। যাকে জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন হবে তাকে মেসেজ পাঠিয়ে জিজ্ঞাসাবাদে আমন্ত্রন জানাতে হবে। মেসেজটি হতে পারে এরকম – “আপনাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। দয়া করে আমাদের পেজে লাইক দিয়ে ওয়ালে হাজিরা দেন। এরপর বাকিটা আমরা দেখছি”।

ফেসবুক গ্রুপ
একই সাথে যদি বেশ কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন হয়, সেক্ষেত্রে তাৎক্ষণিক গ্রুপ খুলে ফেলাই বুদ্ধিমানের কাজ হবে। “পালাবি কোথায়” “খাইছি তোরে” ধরনের কোন একটা নাম দিয়ে দিলেই হয়। এরপর সবাইকে অ্যাড করে গ্রুপ চ্যাটে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের কাজটা সেরে নেয়া যায়। এক্ষেত্রে গ্রুপ চ্যাট হলেও একজন একজন করে জিজ্ঞাসাবাদ করা ভালো। নইলে এলোপাতাড়ি জবাব দেয়া শুরু করলে গোয়েন্দা অফিসারের ব্রেন হ্যাং করতে পারে।

ফোরাম
যেসব ব্লগার কিংবা অনলাইন এক্টিভিস্ট অতীতে চটি লিখতো কিংবা পর্নগ্রাফির সাথে জড়িত, তাদেরকে আবার ব্লগ পোস্ট কিংবা ফেসবুক আইটেম দিয়ে যুত করা যাবে না। ওদের জন্য খুলতে হবে জিজ্ঞাসাবাদ ফোরাম। ওরা ব্লগ কিংবা ফেসবুকের চেয়ে ফোরামে আরাম পায় বেশি। ফোরামগুলোর নাম রাখতে হবে “দেশি মামী” “যৌবন জোয়ার” ধরনের।


এসব কিছু করার আগে গোয়েন্দা পুলিশকে যে যে যোগ্যতা অর্জন করতে হবে :
(১) ব্লগ ল্যাংগুয়েজ নিয়ে শর্টকোর্স করে নিতে হবে। এক্ষেত্রে এ পর্যন্ত লেখা সবগুলো ব্লগাভিধান পড়ে নিতে পারেন।

(২) এমন অফিসার নিয়োগ দিতে হবে, যারা নীতিমালা ভঙ্গের দায়ে কয়েকবার জেনারেল কিংবা ওয়াচে গিয়েছিলো।

(৩) মাল্টি নিক এবং রিভার্স নিয়ে পর্যাপ্ত স্টাডি থাকতে হবে। নইলে গোয়েন্দা অফিসারকেই অবশেষে জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হয়ে যেতে পারে।

(৪) একই সাথে একাধিক নিক থেকে ব্লগিং করার অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। সেক্ষেত্রে একজনই একাধিক অফিসারের ভূমিকা পালন করতে পারবেন। সরকারি অর্থ সাশ্রয় হবে এবং লোকবল সংকট কেটে যাবে।

(৫) স্ক্রীণশট নেয়ার কাজে বিশেষ পারদর্শিতা থাকতে হবে।


আমরা জানি উপরের যোগ্যতাসমূহ অর্জন করা চাট্টিখানি কথা নয়। তবে সরকার খুব সহজে এ সমস্যার সমাধান করতে পারে। কয়েকজন ব্লগার এবং ফেসবুক এক্টিভিস্টকে নিয়োগ দিয়ে গোয়েন্দা বিভাগের লোকজনকে প্রশিক্ষণ দেয়ার ব্যবস্থা করতে পারে। তবে কোনভাবেই যেন ছাগু ব্লগাররা নিয়োগ না পায়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। নইলে প্রশিক্ষণ নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদে এসে কাঠাল পাতা আর গদাম খেতে খেতে গোয়েন্দা অফিসারদের রুহ’র উপর হা-ডু-ডু খেলা শুরু হয়ে যেতে পারে।


পোস্ট শেষ, খোদা হাফেজ
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা অক্টোবর, ২০১১ রাত ১১:৪৩
৩৫টি মন্তব্য ৩৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ফখরুল সাহেব দেশটাকে বাঁচান।

লিখেছেন আহা রুবন, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:৫০





ফখরুল সাহেব দেশটাকে বাঁচান। আমরা দিন দিন কোথায় যাচ্ছি কিছু বুঝে উঠতে পারছি না। আপনার দলের লোকজন চাঁদাবাজি-দখলবাজি নিয়ে তো মহাব্যস্ত! সে পুরাতন কথা। কিন্তু নিজেদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হচ্ছে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। প্রধান উপদেষ্টাকে সাবেক মন্ত্রীর স্ত্রীর খোলা চিঠি!

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:০৩




সাবেক গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনকে মুক্তি দিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে খোলা চিঠি দিয়েছেন মোশাররফ হোসেনের স্ত্রী আয়েশা সুলতানা। মঙ্গলবার (২৯... ...বাকিটুকু পড়ুন

কেমন হবে জাতীয় পার্টির মহাসমাবেশ ?

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:৫৬


জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিক্ষুব্দ ছাত্র জনতা আগুন দিয়েছে তাতে বুড়ো গরু গুলোর মন খারাপ।বুড়ো গরু হচ্ছে তারা যারা এখনো গণমাধ্যমে ইনিয়ে বিনিয়ে স্বৈরাচারের পক্ষে কথা বলে ,ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ হওয়াতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

দ্বীনদার জীবন সঙ্গিনী

লিখেছেন সামিউল ইসলাম বাবু, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১২:১৩

ফিতনার এই জামানায়,
দ্বীনদার জীবন সঙ্গিনী খুব প্রয়োজন ..! (পর্ব- ৭৭)

সময়টা যাচ্ছে বেশ কঠিন, নানান রকম ফেতনার জালে ছেয়ে আছে পুরো পৃথিবী। এমন পরিস্থিতিতে নিজেকে গুনাহ মুক্ত রাখা অনেকটাই হাত... ...বাকিটুকু পড়ুন

জাতির জনক কে? একক পরিচয় বনাম বহুত্বের বাস্তবতা

লিখেছেন মুনতাসির, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৮:২৪

বাঙালি জাতির জনক কে, এই প্রশ্নটি শুনতে সোজা হলেও এর উত্তর ভীষণ জটিল। বাংলাদেশে জাতির জনক ধারণাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যেখানে একজন ব্যক্তিত্বকে জাতির প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে মর্যাদা দেওয়া হয়। তবে পশ্চিমবঙ্গের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×