সকাল ৮ টার মধ্যে গাড়ী চলে আসলো আমাদের হোটেলের নীচে আমরা ২ জন ছোট্ট একটা মারুতী টাইপের গাড়ী সামনে ড্রাইভার আর পেছনে আমরা দুজন , আমাদের গায়ে হাল্কা শীতের কাপড় কিন্তু গরমের ঠেলায় তাও খুলে ফেললাম, গাড়ী চলছে চলছে হঠাত গাড়ী ব্রেক একটা দোকানের সামনে যেখানে মোটা মোটা ঠান্ডার ড্রেস পাওয়া যায়, আমি বললাম কি হয়েছে গাড়ী থামালেন কেন? ড্রাইভার বলল এখান থেকে ড্রেস নেন ! আমি বললাম মানে কি ? কিসের ড্রেস ? এমনিতেই গরম লাগছে তার ওপর আবার এই মোটা মোটা কাপড় নিতে বলছে ! আমি তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানালাম দরকার নেই এই সকল কাপড় চোপড় দোকানী মহিলা বলছে, ভাইসাব লে লো ওপর মে বহত ঠান্ডি হে !দেখলাম আমাদের পেছন পেছন আরো কিছু টুরিস্টের গাড়ী থামল সবাই ড্রেস ট্রায়াল দিচ্ছে এবং ড্রেস ভাড়া নিচ্ছে, সুতরাং আমি কনফিউসড হয়ে গেলাম, আমার বন্ধুকে বললাম আমরা ২ জন মিলে একটা নেই, তারপর অনেক জল্পনা কল্পনা শেষে ২ জন ২ টা ড্রেস ভাড়া নিলাম ৫০০ রুপি দিয়ে। পাশেই কিছু আপেল গাছ ছিল সেখানে ঠাস ঠুস কিছু ছবি তুলে নিলাম।
আপেল এবং আমি, শুধু দেখা যাবে ছবি তোলা যাবে, ছিড়লে এবং খাইলে জরিমানার বিধান বোর্ড দেয়া আছে
আবার গাড়ী চলা শুরু করলো এবার উপরের দিকে উঠতে লাগলো গাড়ী। যতই উঠছে গায়ে ঠান্ডা লাগা শুরু হচ্ছে, অনেক উপরে চলার পর একটা জায়গাতে গাড়ী এন্টি করাতে হলো তারপর আবার গাড়ী চলা শুরু খুব বেশী স্প্রীডে চলতে পারছে না অনেক বাকের কারনে সারি সারি গাড়ী গুলো উপরে উঠতে লাগল এবং ঠান্ডার পরিমাণ ও বাড়তে লাগল। প্রায় ২ ঘন্টা গাড়ী চলার পর আমরা পাহাড়ের গায়ে স্নো দেখতে পেলাম এবং অসম্ভব আনন্দ লাগলো মনে হলো এত জার্নির পর ১০০% সেটিস্ফেকশান চলে আসলো মনে। ডাইভার বলল ভাইসাব আপ লোক ড্রেস পেহেন লো, এত বেশী ঠান্ডা লাগছে যে গাড়ীর গ্লাস খুলতে পারছি না, তারপর ও এক পাশে গাড়ী থেকে নেমে ড্রেস পড়ে নিলাম আর মনে মনে ভাবলাম না ড্রেস নেবার টাকা উসুল হইছে। যাক আমরা তখন রোটাং পাসের অনেক খানি কাছাকাছি চলে এসেছি অনেক টুরিস্ট এসেছে দেখছি, এখানে ফোনের কোন নেটওয়ার্ক নেই ! তাই এই স্থান থেকে কোন প্রিয়জনের সাথে কথা বলা যাবে না, যাই হোক আমরা অবশেষে পৌছলাম সেই কাঙ্খিত রোটাং পাসে,জায়গাটা একটা পাহাড়ের চুড়া এখান থেকে চারিদিকের অনেক সুন্দর ভিউ দেখা যায় সিজনে অনেক স্নো ফল হয় সেটা বোঝা যাচ্ছে, ঝিরি ঝিরি বাতাস বইতেই থাকে গা হাত পায়ের কাপুনি তো চলবেই। এখানে কয়েকজন চা বিক্রেতা এবং ছোলা বিক্রেতা ছাড়া আর তেমন কিছু খাবার নেই তাই আমরা ও এই দুই আইটেম দিয়েই চালিয়ে দিলাম। ঘন্টা খানেক ওখানে থাকার পর আবার গাড়ীতে ফিরে আসলাম এবং মানালী শহরের দিকে রওনা দিলাম, পথে অবশ্য আমাদের ড্রাইভার গাড়ী থামালো দুপুরের খাবার খাওয়ানোর জন্য, আমরা কিছু মিছু খেয়ে নিলাম এবং বিকেল নাগাদ মানালী শহরে পৌছলাম।
হঠাত সিদ্ধান্ত রাতেই আমরা দিল্লি চলে যাব, তড়ি ঘড়ি করে একটা ট্রাভেল এজেন্সীতে গিয়ে বাসের টিকিট কনফার্ম করলাম এবং রাত ৯ টার বাসে দিল্লি রওনা দিলাম।
কিছু ছবি দেই রোটাং পাসে যাওয়া আসার পথে,
চলবে >>>
আশা করছি কালকে দিল্লী আগ্রার কাহিনী নিয়ে শেষ করে দিব।
৭ দিনে ভারতের ৩ প্রদেশ ভ্রমণ ( দৌড়ের উপরে ট্যুর ) পঞ্চম অংশ
অনেক ধন্যবাদ।
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই এপ্রিল, ২০১৭ সকাল ১০:৪৮