আমাদের সন্তানদের প্রশ্নের জবাব হয়তো আমরা দিতে পারবো না।
একটা শিশু জন্ম গ্রহণ করার পর যখন তাদের পিতা-মাতা তার জন্ম নিবন্ধনের সময় এক বছর পিছিয়ে দেয়। তখন সেই পিতা-মাতা কি দুর্নীতির বীজ বপন করেননি। সেই সন্তান বড় হয়ে কি হবে। আমরা জাতি হিসেবে সাধু সাজার চেষ্টা করি। কাজের সময় সুযোগ নেওয়ার সময় ঠিকই সুযোগ খুঁজি। অনাগত সন্তানেরা কি তাদের বাবা-মাকে প্রশ্ন করবে না। তাদের জন্মের তারিখ কি ঠিক ঠিকভাবে লিপিবদ্ধ করে জন্ম নিবন্ধন করা হয়েছিল। এর জবাবে তারা কি পাবে। তাদের বিবেক কি সংশোধন করতে পারবে নিজেরা সৎ হতে চাইলে কি তারা সৎ, দুর্নীতিমুক্ত হতে পারবে। একটা পরিবর্তন পরিবার থেকে শুরু না হলে কোথা থেকেও শুরু হবে না। বর্তমান পরিস্থিতির জন্য এক এক করে আমাদের বিবেককে আপনা আপনি প্রশ্ন করি না। জবাবটা পেয়ে যাবো খুব তাড়াতাড়ি কোন বিলম্ব হবে না। এক বছর কমিয়ে দিয়ে জন্ম নিবন্ধন করে তারা যখন তাদের পরিচিত জনদের সাথে গর্বের সাথে আলোচনা করে তখন আমরাই তাদের বাহবা দেই। সম্মান শ্রদ্ধা দেখাই আপনি তো একটা দারুন কাজ করেছেন। নিজের ছেলে মেয়েদের বয়স এক বছর কমিয়ে দিয়েছেন। ভবিষতে পড়াশোনা চাকরির ক্ষেত্রে তারা অনেক সুবিধা পাবে। যদিও জন্মের ৪৫ দিনের মধ্যে জন্ম নিবন্ধনের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। তিনি মহান বেন যান। কারণ তিনি জন্ম নিবন্ধানের ৪৫ দিনের বাধ্যবাধকতাকে পাশ কাটিয়ে কোথাও কোথাও সিটি কর্পেোরেশনের কাউন্সিলর বা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের সাথে যোগসাজশ বা স্থানীয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সাথে সমঝতা করে এগুলো করিয়ে নেন।
এ সকলের মাঝেও আশার কথা থাকে। একটা ছোট উহাদারণ
ছোট বাচ্চা তার বাবার সাথে বাজারে গেলে আগে জিজ্ঞাসা করে- বাবা তোমার কাছে কি টাকা আছে। বাবা যদি বলে হ্যাঁ আছে তখন সেই ছোট্ট বাচ্চা কিছু কেনার আবদার করে । যদি বলে টাকা নেই তখন সে কোন আবদার করে না।
ভিন্ন চিত্রও রয়েছে এর বিপরীতে বাবার সাথে কোথাও গেলে যা পছন্দ হয় তাই লাগবে। বাবা হিসেবে নিজেকে মহান পরিচয় করিয়ে দেওয়ার জন্য তাদের আবদার পূরণে ব্যস্ত হয়ে পড়েন অনেকেই। সেই ব্যস্ত হয়ে পড়ার অভ্যস্থ হওয়া আর ছেলে মেয়েদের কাছে নিজের প্রকৃত অবস্থান বর্ণনা করার দুঃসাহস তারা হারিয়ে ফেলেন। সাথে সাথে তাদের বিবেকবোধও হারিয়ে যায়। যেকোনো পন্থায় যেকোনো উপায়ে উপার্জন করতে হবে। এই যে যেকোনো উপায়ে উপার্জন করতে হতে তার বিষবাষ্প সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে প্রবেশ করেছে। আমাদের কাছে মনে হয় এই ছোট ছোট পারিবারিক ব্যবস্থাপনার মধ্যে দিয়ে আমরা আগামী দিনের দুর্নীতির বীজ বুনি।
আমরা কি আমাদের বাবাদের প্রশ্ন করি কিভাবে তিনি আমাদের জন্য এতোসব করছেন। নাকি আমরা বাবাদের মাধ্যমে কোনো কিছু পেলেই বেশি খুশি। এই যে সিস্টেম এই যে প্রথা আমরা নিজেরাই তৈরি করি। যুগ যুগ ধরে তৈরি হয়ে আসা এই প্রথা, রেওয়াজ, রসম ভাঙ্গার মতো সাহসী এখনো হয়ে উঠতে পারেনি আমাদের জনপথের মানুষগুলো।