"নদী আর পাহাড় " প্রিয় না ,এমন লোক পাওয়া আসলে দুষ্কর না ,অসম্ভব। বোধহয় অসম্ভবকে সম্ভব করতে পারা (!) সেই ব্যক্তির ক্ষেত্রেও ব্যপারটা অপ্রিয় হওয়া সম্ভব না !
আর, আমি ত কোন !
ষষ্ঠ শ্রেনী থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত যে জার্নি বিষয়ক রচনা গুলি মূলত পরীক্ষায় লেখার জন্য ,মুখস্ত করছিলাম কিংবা মনের অজান্তে হয়ে গেছে , সেগুলোর মধ্যে কিছু লাইন এখনও ভুলি নাই ।
From, Chowdhury and Hossain's book , "Whenever I get a chance of making a journey by Boat/Train/Bus my heart lips up with joy ." তখনও লাইনটা হৃদয়ে দোলা দিত এখনও দেয় ।
এখনও স্পষ্ট মনে পরে , পরীক্ষায় যেটাই আসত , Journey by Boat/Train/Bus, একই জিনিস, ছোটখাটো মোডিফিকেশান করে ধুম বসায় দিতাম !
তিনি বই ভরাট করার জন্য লিখছিলেন ,আর আমি খাতা ভরাট করার জন্য শিখছিলাম , কিন্তু সত্যি কথা বলতে , কথা একটাই , এই নৌকা ভ্রমন বাদে তামাম দুনিয়ার সকল ভ্রমণই পেইন, বলে দিলাম, আপনি লিখে রাখেন ।
যেকোন নৌকা ভ্রমণের সুযোগ পেলেই আমি আসলেই খুশি হয়ে যাই , আমি শেষ , খুশিতে শেষ !! এর আগে লালাখাল গিয়েছিলাম , এবার গেলাম লোভাছড়া । দুইটাই সিলেটেই অবস্থিত । দুইটাই বেশি অসাধারণ । দুটার মধ্যে তুলনা করাটাই অসম্ভব।
নদীর টলটলে স্রোতস্বীনি জল আর পাহাড়ের গা বেয়ে নেমে আসা র্ঝনা ধারার তুলনা হয় না। এখন ঝর্না নাই কিন্তু পাহাড় ( যা আমাদের না ! ) এবং নদী উভই আছে । প্রতিবারই পাহাড় দেখি আর আফসোসে মরে যাই , দুইটা করে গালি দিয়ে দেই মনের অজান্তে , ইংল্যান্ড , পাকিস্তান আর ভারত কে । ধর্মের ভিত্তিতে দেশ ভাগ হয় কিভাবে , এখনও বুঝি না । কালচার,ভাষা যেভাবেই হোক না ক্যান আরও কয়েকটা পাহাড় পাইতাম , হয়তোবা আরও দুয়েকটা ঝামেলা কম থাকত , হয়তোবা , সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা , সংখ্যা লঘু , সংখ্যা গুরু এই ধরনের নিম্নমানের টার্ম ও জীবনেও শোনা লাগত না ।
নৌকার গলুইয়ের উপর বসে ( উফ ! রোদের কারনে এবার বসতে পারি নাই !) কিংবা , ইঞ্জিন নৌকার ছোই এর ভিতর বসে, নদীতে পা ডুবিয়ে রাখা আর পাহাড়ের সৌর্ন্দয অনুভবের ব্যাপারটাই আলাদা। রচনা মুখস্ত যারা করেছেন কিংবা করেননাই, দ্রুত আসুন , উপভোগ করে যান । বিফলে মুল্য ফেরত ও সম্ভব নয় , ইহা অমূল্য ......
আসলেই , প্রাকৃতিক সৌর্ন্দযের এক লীলা ভুমি সিলেটের লোভাছড়া । এবার, লোভাছড়ার চা বাগান থেকে ঘুরে আসা যাক । ভেবে দেখেন , দু পাশে চা বাগান , গ্রামের মেঠোপথ আর সবুজ বনের ভেতর দিয়ে যাচ্ছেন, আর বেশ কয়েকটা টিলা অতিক্রম করার পর , মোটামুটি নৌকা যেখানে ভিড়ায় সেখান থেকে ১ কিলো (!) দূরে মনোমুগ্ধকর একটি ঝুলন্ত ব্রিজ। যদিও স্থানীয় লোকজন বলে ১ কিলো দূরে তবে, ব্যাপারটা আমার এবং আমার ভ্রমণসঙ্গীদের জন্য যথেষ্ঠ সন্দিহান ছিল ! তবে হ্যা < 3 কিলো হবে ! হাটার রাস্তা , সাইকেল নিতে পারেন ,তবে এঞ্জয় করবেন সিউড় !
আগের রাতে প্ল্যানিং , যাওয়ার কথা যাদের, ছিল প্রায় সবাই । বান্ধুবীরা অবশ্য মিস দিয়ে দিছে । যারা মিস করলা কিংবা বলতেছো কেন তাকে বলা হইল না , তাদের জন্য আবার যাব , প্রয়োজনে একাধিকবার পরবর্তি কোন এক উইকেন্ডে... কিপ টিউন্ড !
বিঃদ্রঃ লেখা শেষ করলাম । এরপর একবার রিভিশন দেয়ার সময় লক্ষ্য করলাম , এই নোট টা অল্প একটু করে মোডিফাই করলে একাধারে লালাখাল আর বিছনাকান্দি ও কন্ট্রল ! রাতারগুলের জন্য কিছুটা বেশি মোডিফিকেশন লাগবে । ঠিক চৌধুরী অ্যান্ড হোসাইন স্যারের বইয়ের মত, I assure you .
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই আগস্ট, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:২১