গত বছর থেকেই ছেলেকে শিখাচ্ছিলাম - কেউ তোমাকে কিছু দিলে বা তোমাকে লক্ষ্মী ছেলে বললে ( যদিও সেই সম্ভাবনা খুবই কম ) তাকে থ্যাঙ্কু বলবা । ছেলে জিজ্ঞেস করলো - থ্যাঙ্কু বললে কি হয় ? তাকে বুঝালাম থ্যাঙ্কু জিনিসটা আসলে কি ? কেন বলতে হয় ?
ছেলে বেশ ভালোই ট্রেনিং প্রাপ্ত হয়ে এতোদিন তার মায়ের মান ইজ্জত রক্ষা করেই চলছিলো । কিন্তু কিছুদিন আগেই মায়ের সেই ইজ্জত পানিতে ভাসিয়ে দিয়ে এসেছে । ঘটনা হলো - তার স্কুলে একটা পার্টি ছিল - যেখানে আমরা গার্জিয়ানরাও ইনভাইটেড ছিলাম । তো পার্টি শেষে ক্লাসের সব বাচ্চাদেরকে টিচাররা একটা করে গিফটের প্যাকেট হাতে দিচ্ছিলো । যথারীতি আরদির সামনে এসে সেই টিচার প্যাকেটটা হাতে দিয়ে ওর সামনে হাসি মুখে দাঁড়ালো - হাতে পাওয়ার সাথে সাথেই আরদি খুবই নির্দয় ভাবে সেই প্যাকেট টা খুলেই মুখটা হপপপ করে থাকলো । স্বাভাবিক ভাবেই সেই টিচার অপেক্ষা করছে - আরদি'র কাছ থেকে একটা থ্যাঙ্কু শোনার জন্য । এদিকে আরদি তো আর মুখই খুলে না ।
আমি বললাম - আরদি থ্যাঙ্কু ইউ বলো ।
সে ডাচে উত্তর দিলো - " হুফদ নিত" (প্রয়োজন নেই)
আমি বললাম - কেন ?
সে আবার ডাচে উত্তর দিলো - " ইখ নিত গ্রাখ দেইজা" ( আমি এইটা লাইক করছিনা ) ।
[ মনে মনে বলি - ব্যাটা এই কথাটা বাংলায় বললে তো আমার ইজ্জত টা থাকতো । চল বাসায় - মজা দেখবি

যাহোক - ম্যানেজ করে বেরিয়ে এলাম । বাইরে এসেই বুঝলাম আসলে ভুলটা আমারই । আমিই তো ওকে শিখাইনি - গিফট পছন্দ না হলেও থ্যাঙ্কু বলতে হয় । বাসায় ফেরার পথে সারাটা রাস্তা বোঝাতে থাকলাম যে -এখন থেকে গিফট পছন্দ না হলেও তুমি থ্যাঙ্কু বলবা ।
কয়েকদিন আগেই আমি রান্নাঘরে কাজ করছিলাম - ছেলে দৌড়াই এসে বলল " মা - আমি থ্যাঙ্কু দিতে চাই " ।
আমি বললাম - কাকে থ্যাঙ্কু দিতে চাও ?
সে বলল - তোমাকে । আমি বললাম - ওকে দাও তাহলে ।
সে বলল - কোলাও দাও তাইলে ?
আমি বললাম - কোলাও কি জিনিষ ? [কোক সে বলতে পারে - তাইলে কোলাও কি ?]
আমি যতো জিজ্ঞেস করি - ছেলে ততোই বিরক্ত হয়ে চিল্লায় ।
আমি বললাম - বাবা কোলাও কি আমি তো জানিনা ।
সে বলল - ঐ যে চিকেন এর সাথে খেতে হয় ?
[ আগের রাতে পোলাও আর চিকেন রোস্ট রান্না করেছিলাম - সেইটা তার খুবই ভালো লেগেছিল - তাই সে আবার সেই পোলাও নিয়ে আমাকে থ্যাঙ্কু দিতে চায় ]
