নেদারল্যান্ডে এসেই প্রথম যে জিনিসটা নিয়ে বিপদে পড়েছিলাম সেটা হল এদের ভাযা । উফফফ - সেইসব কথা মনে হলে এখনও কান্না পায় ।
তখন প্রায় ২ সপ্তাহ হয়ে গেছে - রটারডাম এসেছি । এই শহরটা অন্যান্য শহর থেকে একটু আলাদা এই অর্থে যে - এটা আক্ষরিক অর্থেই একটা বানিজ্যিক শহর । অন্যান্য শহরে টুকটাক কিছু এশিয়ান দোকানপাট থাকলেও এখানে মাত্র একটাই । আর যাওবা আছে - আমার বাসা শহরের একদম কেন্দ্রে হওয়ায় - সেই দোকানটাও আমার বাসা থেকে বেশ দূরে ।
তো ছেলের বাবার জন্য একটু পায়েস বানানোর শখ হলো । দেশে থাকতে কত কিছু রান্না করে খাওয়াতাম - ভাবলাম আজ একটু পায়েস বানিয়ে রাখবো । অফিস থেকে এলে বেশ একটা সারপ্রাইজ দেয়া যাবে ছেলেকে নিয়ে গেলাম একটা দোকানে । অনেকক্ষণ খোঁজাখুঁজির পর খুব সুন্দর একটা বক্সে কিছমিছ পেয়ে ঠোঁটটা কয়েক সেন্টিমিটার চওড়া হয়ে গেলো । কিন্তু কিছমিছ গুলোর সাইজগুলো একটু বেশী বড় দেখে ভাবলাম এটাকি কিছমিছ নাকি খেজুর ? দেখে তো কিছমিছ মনে হচ্ছে - কিন্তু এতো বড় কিছমিছ এরা কিসে দেয় । যাহোক ওরা যা খুশী করুকগে - আমি পায়েস রান্না করতে পারলেই হলো
বাসায় এসে পায়েস রান্না শুরু করলাম । বিপত্তিটা ঘটলো যখন পায়েসে দেয়ার জন্য কিছমিছ এর বক্সটা খুললাম । উফফফ - কি উৎকট একটা গন্ধ । আমিতো অবাক - এটা কি হল । তাড়াতাড়ি চুলা অফ করে দিয়ে প্যাকেটটার গায়ে লেখা জিনিষ গুলো পড়ার চেষ্টা করলাম । কিন্তু কিসে কি - সব ডাচে লেখা । পড়াতো দুরের কথা আমার মুখের ভিতরের বাসিন্দারা মনে হল নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে চাচ্ছে - একটুও নড়তে চাচ্ছেনা এইসব শব্দ দেখে । তারপরও উল্টে পাল্টে দেখতে থাকলাম - কোথাও কিছু পাওয়া যায় কিনা । কিছুক্ষণ পরে বক্সের পেছন দিকে একদম নীচে দেখি বিড়ালের ছবি আঁকা । আমি তখনও বিশ্বাস করতে চাচ্ছিলাম যে - আর যাই হোক আমি নিশ্চয়ই বিড়ালের খাদ্যদ্রব্য কিনে আনি নাই । নেটে চেক করে দেখলাম - বিড়ালের জন্য যে কিছমিছ পাওয়া যায় - আমি ৫ ইউরো দিয়ে সেটা কিনে এনেছি
এই ঘটনা শোনার পর টম ( আমার ছেলের বাবা) বেশ কিছুদিন আমার রান্না করা মিষ্টি জাতীয় আইটেম গুলো এড়িয়ে চলতো