somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কলঙ্কের জয়তিলক

২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১২ সকাল ১০:২১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :




আমরা আজ আশা হত। এই দেশ, দেশের সমাজ ব্যবস্হাপনার অতি করুন অবস্হা দেখে দুঃখে,কষ্টে,লাঞ্ছনায়,ঘৃনায়,অপমানে হৃদয়ও মথিত।আমরা আজ সর্বান্ত করনে ঘৃনা করতে শিখেছি রাজনীতিকে, রাজনীতিবিদদের। কিন্তু এর যৌক্তিকতা ঠিক কতটুকু?এর দায়ভার কি বর্তমান অগ্রজদের উপরও বর্তায়না?
বর্তায় বৈকি। কিন্তু আমাদেরও ত ভুলে গেলে চলবেনা আমাদের বাঙ্গালী জাতির গৌরব উজ্জল ইতিহাস। একেকজন লোক তার সফলতার উপায় হিসেবে একেকটি পথ বেছে নেয়।আমাদের শিক্ষা-জ্ঞান-বিশ্বাস-উপলব্ধী যেমন সম্পুর্ন আলাদা,আমাদের কর্ম ক্ষেত্রও তেমনি আলাদা। এই যে আজ আমরা নতুন ভূখন্ড পেয়েছি,নতুনভাবে বাঁচতে শিখেছি,বাঁচার স্বপ্ন দেখছি , আমরা ভুলে যাচ্ছি যে এর অধিকাংশ অবদান রাজনীতির।আর এই রাজনীতি দেশকে ভালবাসার একটা প্লাট ফর্ম মাত্র। দেশের জন্যে বৃহত কিছু করতে চাইলে আমাদের সভ্যদের আজ এই প্লাট ফর্মে এসে দাড়াতেই হবে।অনেকের মনেই হয়ত প্রশ্ন জাগবে বর্তমানে দাড়িয়ে এই বিশ্বাসের যৌক্তিকতা ঠিক কতটুকু!! প্রশ্নটা মোটেও অমুলক নয়।

আমাদের ক্ষয়ে যাওয়া এই সমাজ, স্বাধীনতার এতগুলো বছর পেরিয়ে এসেও নিজ পায়ে এখনো দাড়াতে পারেনি।এখনো মানুষ অনাহারে-অর্ধাহারে দিন কাটায়,পথশিশুরা ক্ষুদ্র একটি পলেথিন সম্বল করে কনকনে শীতের রাতে ফুটপাতে নিদ্রা যায়,নেশায় আসক্ত আজ যুব সমাজ।সমাজের এক শ্রেনীর মানুষের মাঝে যেখানে শিক্ষা নেই,চিকিৎসা নেই,সাস্থ্য নেই,কর্মসংস্থানের পর্যাপ্ত সুযোগ পর্যন্ত নেই-সেখানে এই প্রশ্ন উত্থাপিত হওয়াই স্বাভাবিক।

প্রশ্ন আছে বলেই মানুষ সমাধান খুঁজে পায়।আজ যা সত্য, কাল তাই অতীত হবে।আমরা অনেকেই শুধু নিজস্ব বিশ্বাসটুকু আকড়ে ধরে আছি, অথচ সেই বিশ্বাসের জোরটা যে ঠিক কোথায় তা ভেবে দেখিনি।

আমরা স্বধীন হয়েছি, প্রয়োজনেই হয়েছি।কিন্তু আমাদের পূর্ব পুরুষরা যে স্বাধীনতার লাল সূর্যটা এনে আমাদের মুঠি বদ্ধ করে দিয়েছিল,তার মূল্য আজ আমরা কতটুকু দিচ্ছি?তার সম্মান আজ কেন ভুলুন্ঠিত? আমরা আজ ভূলে যেতে বসেছি আমাদের ইতিহাস।একজন ছিল যিনি স্বপ্ন দেখতেন বাংলাকে নিয়ে।স্বপ্ন দেখতেন বাংলার মানুষ অর্ধাহার-অনাহার কিংবা বিনা চিকিৎসায় মারা যাবেনা।অনাচার,অত্যাচার,ব্যভিচার,শোষন হতে মুক্তি পাবে মানুষ।বিশ্বের দরবারে মাথা উচু করে দাড়াবে বঙ্গালী জাতি।থাকবেনা জাতিভেদ-হানাহানি।যেখানে মানুষের পরিচয় হবে শুধু মানুষ বলে।তিনি এবং আমরা স্বপ্ন দেখেছিলাম বলেই আজ একটা স্বাধীন ভূখন্ড পেয়েছি,স্বাধীন সত্তা পেয়েছি,স্বাধীন মতবুদ্ধির উপর দাড়িয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারি। কিন্তু তার পূর্নতা আজ কোথায়?

আমাদের অহংকার-সাম্প্রদায়িক সম্প্রিতি,সামাজিক সখ্যতা ও ব্যক্তি হৃদ্যতা আজ বানের জলের মত ভেসে যাচ্ছে। আমরা এখন পথ চলতে ভয় পাই। স্বাধীন হয়েও স্বাধীনভাবে কথা বলতে পারিনা।আমাদের এখন দাড়ি রাখতে হবে,মাথায় টুপি পড়তে হবে।দেশটা মানুষের নয়, হবে শুধু মুসলমানদের।

এই দিনগুলি দেখার জন্যে এত রক্ত দেবার ত প্রয়োজন ছিলনা।বিশ্বাস করতে কষ্ট হয় যে আজ সমাজে এই মিথ্যাগুলিই সত্যকে ধ্বংসের মুখোমুখি এনে দাড় করিয়েছে, আর এর দায়ভার আমরা যারা শিক্ষিত,নিজেদের সভ্য বলে দাবি করি তাদের উপরও বর্তায় বৈকি।আর তাদের এই নিদারুন অবহেলায় কলঙ্কের জয়তিলক যদি জুটে ত সে জুটবে কার?সে বাঙ্গালী জাতির।কিন্তু সে পরোয়া তাদের নেই।কিন্তু যারা মানুষ,তারা সত্যিকার অর্থেই দুর্বল-পিড়িত ও অবহেলিত মানুষের দাবিকেই অগ্রাধিকার দেয়,পরাজিত রাজাকার শক্তিকে এগিয়ে আসতে দেখে রুখে দাড়ায়,হিংসাত্বক-লোভী কর্ম কান্ড দেখলে হিতাহিত জ্ঞান শূন্য হয়ে পরে।এরা আছে বলেই এখনো দেশ আছে,মানুষ আছে,তাদের আশা আছে।

চলতি পথে সমস্যা আসবেই। কিন্তু সেই ভয়ে পিছু হটলে জীবনে কিছুই করা হয়ে উঠেনা।আমরা ব্যক্তি হিসেবে ক্ষুদ্র হতে পারি কিন্তু এটাও ত সত্যি যে ক্ষুদ্র হতেই বৃহতের সৃষ্টি? ঘৃনা দিয়ে নয়,আমাদের মননশীল সুস্থ চিন্তা চেতনা-মন্দ এড়িয়ে ভালয় আত্বনিয়োগ এবং সর্বোপরি চলতি পথের সব অপশক্তিকে রুখে দিয়ে এগিয়ে চলার সাহসিকতার মাধ্যমেই আমরা আমাদের ইতিহাস -গৌরব উজ্বল বাংলাকে ফিরে পেতে পারি।
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১২ সকাল ১০:২৬
৫টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

এই শহর আমার নয়

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০৬ ই এপ্রিল, ২০২৫ বিকাল ৫:০২




এই শহর আমার নয়
ধুলিমলিন, পোড়া ধোঁয়ায় ঘেরা
ধূসর এক স্বপ্নহীন চেহারা।
এই শহর, আমার নয়।

ঘোলাটে চোখে জমে হাহাকার,
চেনা মুখেও অচেনার ছাপ।
পথে পথে স্বপ্নরা পোড়ে,
আলোর ছায়ায় খেলে আঁধার।

এই শহর... ...বাকিটুকু পড়ুন

টিউবওয়েলটির গল্প

লিখেছেন নাহল তরকারি, ০৬ ই এপ্রিল, ২০২৫ রাত ৯:০৪



এটা একটি টিউবওয়েল।

২০০৯ সালে, যখন আমি নানী বাড়ি থেকে লেখাপড়া করতাম, তখন প্রতিদিন এই টিউবওয়েল দিয়েই গোসল করতাম। স্কুল শেষে ক্লান্ত, ঘামাক্ত শরীর নিয়ে যখন ঠান্ডা পানির ঝাপটায় নিজেকে স্নান... ...বাকিটুকু পড়ুন

গাজায় গণহত্যা : মুসলিম বিশ্বের নীরব থাকার নেপথ্যে !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৬ ই এপ্রিল, ২০২৫ রাত ৯:৫৮


গাজার প্রতিটি বিস্ফোরণে কেবল ধ্বংস হয় না —প্রতিধ্বনিত হয় একটি প্রশ্ন: মুসলিম বিশ্ব কোথায় ? মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতির আয়নায় এই প্রশ্নটি এক খণ্ড অন্ধকার, যা শুধু আন্তর্জাতিক রাজনীতির ব্যর্থতা... ...বাকিটুকু পড়ুন

লেখকের প্রাপ্তি ও সন্তুষ্টি

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ০৭ ই এপ্রিল, ২০২৫ রাত ১২:০০

একজন লেখক যখন কোন কিছু লিখেন, তিনি কিছু বলতে চান বলেই লিখেন। বলাটা সব সময় সহজ হয় না, আবার একই কথা জনে জনে বলাও যায় না। তাই লেখক কাগজ কলমের... ...বাকিটুকু পড়ুন

ওয়াকফ: আল্লাহর আমানত নাকি রাজনীতির হাতিয়ার?

লিখেছেন শাম্মী নূর-এ-আলম রাজু, ০৭ ই এপ্রিল, ২০২৫ সকাল ৯:৫৯


"একদিকে আমানতের আলো, অন্যদিকে লোভের অন্ধকার—ওয়াকফ কি এখনও পবিত্র আছে?"

আমি ইকবাল হোসেন। ভোপালে বাস করি। আমার বয়স প্রায় পঁইত্রিশ। জন্ম থেকে এখানেই বড় হয়েছি, এখানেই আমাদের চার পুরুষের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×