somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অন্তরে অনুভবে (ধারাবাহিক উপন্যাস) পর্ব ২

১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১২ দুপুর ১২:৫৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



" দুই"

সংস্কৃতি ও প্রকৃতি মানুষকে যে আনন্দ দেয় বই মানুষকে সে আনন্দ দেয় না। আবার বই মানুষকে যে আনন্দ দেয় সংস্কৃতি ও প্রকৃতি মানুষকে সে আনন্দ দেয় না। কিন্তু উভয়ের মধ্যে যদিও বহু ব্যবধান তথাপি কোথায় যেন একটা মিল, একটা অন্তরঙ্গতা রয়েছে এবং এগুলিই যে বিনোদনের শ্রেষ্ট মাধ্যম বহু দিন ভেবে ভেবে তানভীর নিজেও এটা উপলব্ধী করতে পেরেছে।

প্রায় অন্ধকার আকাশ ক্রমেই স্বচ্ছ হয়ে আসছিল। কিন্তু বৃষ্টির উন্মত্ততা এতটূকুও কমেনি। সেই উন্মত্ত বৃষ্টি যেন তানভীরকে ক্রমশ আহবান করতে লাগল। বিছানা ছেড়ে উঠে এসে খানিকক্ষন জানালার ধারে দাড়াল। এরপর পায়ের সেন্ডেল খুলে বেড়িয়ে পড়ল পথে। বর্ষন সিক্ত পিচ ঢালা ফাঁকা পথটা তার মনে আজ অদ্ভুদ আনন্দের সন্চার করল। পথের ধারে কদম বৃক্ষটার পানে তাকিয়ে আপন মনে মৃদু হাসল। এরপর নিচে পড়ে থাকা একটি পূর্ন ফোটন্ত কদম হাতে তুলে নিল। আহ কি পরম সুখ! কি আনন্দ! জীবন যদি এমনি ভাবে চলত? উদ্যাম আছে-ক্লান্তি নেই, ভাবনা আছে-দু:খ নেই। সুখের ক্ষুদ্র অনুভুতি যদি বিশাল দু:খকে পরাস্ত করে ঠিক এমনিভাবে শ্রান্তিহীন পথ চলতে পারত! তানভীর জানে তা সম্ভব নয়। তবুও সে দু:খকে পাশ কাটিয়ে আনন্দ খুঁজে বেড়ায়। হোক সে ক্ষুদ্র, হোক সে সামান্য।

প্রায় ঘন্টাখানিক পরে সে বাসায় ফিরল। সন্ধ্যা হতেই বাতি জ্বালিয়ে পড়তে বসল এবং রাত অধিক হলে বিছানায় এসে শুয়ে পড়ল। কিন্তু সকালে যখন ঘুম ভাঙ্গল তখন শরীরে কেমন যেন একটু জ্বর জ্বর অনুভুত হল। তবুও সে উঠে দাঁড়াল এবং দীর্ঘ আট দিন পর ভার্সিটিতে এসে উপস্হিত হল।
কিন্তু ক্লাসে এসে রাজনের দেখা পেলনা। ফেরার সময় সে সামান্য অন্যমনস্ক হয়ে পড়েছিল। কিন্তু পাশের জলের ধারে দৃষ্টি যেতেই সেখানে শিখাকে একা বসে থাকতে দেখে একটু দাড়াল।

সেই প্রথম দিনটির কথা তার মনে পড়ল। সেদিনও সে এমনি একাকী এই জলের ধারেই বসেছিল। কেন যেন তার একটু মায়া হল। শিখার জন্যে মায়া তার সব সময়ই হয়। কিন্তু কেন যে সে একাকীত্বকে ভালোবাসে তা এত দিনেও সে বুঝে উঠতে পারেনি।

তানভীর সামান্য সয়ম সেখানে দাড়িয়ে কি যেন ভেবে পরে পাশে এসে বসল।
শিখা সেদিকে তাকিয়ে মৃদু একটু হাসল। পাশে পড়ে থাকা বইখানি নিজের হাটুর উপর রেখে জিজ্ঞাসা করল, এলে তাহলে?

এই একটি মাত্র লোক যার সাথে কথা বলতে শিখার ভেতরে কোন দ্বিধাবোধ কাজ করেনা। কেমন যেন এক প্রকার শজ এবং স্বাভাবিক য়ে যায় সে।
তানভীর জবাব দিল,একঘেয়ে জীবনের বাইরে ক'টা দিন কাটিয়ে দেখলাম কেমন লাগে।

কি দেখলে?

তেমন কিছু না, অন্ত:সারশুন্যতার মাঝে সামান্য কিছু আনন্দ। কিন্তু আজ রাজন কে যে দেখছি না?

শিখা মাথা নেড়ে বলল, আসেনি। হয়ত তোমারি মত কিছু একটা করছে।

তানভীর মৃদু প্রতিবাদ করল, সে ইচ্ছে ওর কখনো হবেনা। কিন্তু তুমি তার চাইতেও ব্যতিক্রম। জীবন খুবই সংকীর্ন। তবুও সেখানে স্বাদ থাকবে,ভালোলাগা-ভালোবাসা থাকবে, আপন ইচ্ছের বহি:প্রকাশ থাকবে। প্রস্ফুটিত মল্লিকা-মালতি-যুথির মৃদু আঘাতে প্রান হয়ে উঠবে চঞ্চল। আচ্ছা, গন্তব্য রেখাকে সামান্য একটু দীর্ঘায়িত করে দু'পাশের সারি সারি অজস্র শিমুল-পলাশ-কৃষ্ণচূড়ার নিচ দিয়ে হেঁটে যেতে কি তোমার ইচ্ছে করে না?

শিখা মৃদু হেসে বলল, ইচ্ছে যে করেনা তা নয়। কিন্তু মানুষের ইচ্ছে পুরন কি সকল ক্ষেত্রে সম্ভব? তুমি নিজেকে দিয়েই সকলের বিচার করছ। কিন্তু গন্তব্যেরও বিভিন্নতা আছে। মানুষ যা চায় তার সাথে পাওয়ার যদি একটা হিসেব মেলানো হয়, তবে কাঙ্খিত গন্তব্যের অনেকটাই ম্লান দেখায়। প্রতিটি ব্যক্তি জীবনের কোথাও না কোথও সীমাবদ্ধতা থাকেই।

তানভীর বলল, হয়ত আছে। কিন্তু সেই সীমাবদ্ধতা যদি তৈরি হয় আপন ইচ্ছেয়, তবে তাতে প্রভেদও থাকে অনেক। জীবন-মানবতা এবং মন, প্রত্যেকেরই আলাদা আলাদা দাবী আছে। বহিরাগত সংস্কার এসে যদি বাঁধা প্রয়োগ করে তবে তা ভীন্ন কথা, কিন্তু সত্য জেনেও সংশয়ের বসে নিজেই যদি সংস্কার তৈরি করে বাঁধা প্রয়োগ কর, তবে আর উপায় কি?

শিখা মলিন একটু হেসে দ্বিধাহীন কন্ঠে জবাব দিল, তা জানি না। তবে তোমার কথাগুলো শুনতে যে ভাললাগে তা স্বীকার করছি। কেমন যেন একটু উৎসাহ অনুভুত হয়।

জবাব শুনে তানভীর চমকে তাকাল, ভ্রু কুন্চিত করে বলল, তুমি কি আমার সাথে ঠাট্রা করছ?

শিখা হেসে বলল, সম্পর্ক যেখানে গভীর সেখানে ঠাট্রা করলেই বা দোষ কি?

দোষ কিছু না, তবে অবস্হা দৃষ্টে বেমানান, বলে সে শিখার দিকে তাকিয়ে বলল চল উঠা যাক। বাসায় ফিরেবে ত।

যাব, আরেকটু বসো। আজ কেন যেন কথা বলতে খুভ ভাললাগছে। সংসারের সবাই ব্যস্ত থাকে যে যার কাজে। সব সময় একা থাকি। মাঝে মাঝে খুব খারাপ লাগে। কিন্তু বন্দী পাখি ডানা ঝাপটে শুধু আহতই হতে পারে, মুক্তি পায়না। যদি একবার মুক্ত হতে পারতাম! বলে সে এমন একটা ভারি নি:শ্বাস ছাড়ল যে তানভীর চমকে গেল।

শিখা বলতে লাগল, আনন্দ খুঁজে বেড়ানো তোমার শখ। হয়ত পাও, হয়ত পাওনা। কিন্তু তোমাকে দেখে মাঝে মাঝে হিংসে হয়। কত স্বাধীন তুমি। আচ্ছা তোমার মনে কি কোন বেদনাবোধ নেই?

প্রশ্ন শুনে তানভীরের গম্ভীর মুখ আরো গম্ভীর হল। সামান্য সময় নিয় বলল, এমন প্রশ্ন করা তোমার উচিত নয়। দু:খ-বেদনা, হাসি-কান্না নিয়েই মানব জীবন। সংসার সংঘাতে বেদনা হয়ত কিছুটা হয়, কিন্তু তাকে প্রাধান্য দিয়ে আর সব কিছুকে তুচ্ছ করাকে আমি সমিচীন মনে করি না। তোমার সব কথা আমি জানিনা, তবে এটুকু বলতে পারি,অবস্হা দৃষ্টে ঘোলাটে আবহাওয়া যদি কিছুটা তৈরিও হয়,তা হতে পরিত্রানের জন্য ব্যক্তিকে আপ্রান চেষ্টা করা উচিত।

শিখা চুপ করে রইল।

তানভীর পুনরায় বলল,সমস্যা এবং মানুষ এ দু'য়ের মধ্যে তফাত কতুটুকু জান? কিন্তু জীবন তরঙ্গে একটি ছাড়া আরেকটি মূল্যহীন। এই সামাজ এই সংসার-এই মানুষ, প্রত্যেকের যে চাহিদা ,যে দাবী,তা পুরন করতে গিয়ে সামান্য একটু সংঘর্ষও যদি না হয় তবে মূল্য কি সে স্বার্থ পুরনের? তুমি যা নেবে তার দাম দে বেনা? তাহলে সে পাওয়াও যে অর্থহীন হবে।

শিখা ভেবে দেখল কথা সত্য, কিন্তু এ নিয়ে দু:খ বোধের দিন তার বহু পূর্বেই ফুরিয়ে গেছে। সেই ভাবনা এখন আর তাকে নিত্য নতুন করে আঘাত করেনা। তথাপি সে জবাবও দিলনা।

তানভীর সামান্য সময় অপেক্ষা করে শিখার দিকে মুখ ফিরিয়ে পুনরায় বলতে লাগল, ছেলেবেলাটা আমার কেটেছে পাড়া গাঁয়ে। সেখানে আমার বাবা ছিল, মা আছে, আত্বিয় স্বজনও আছে। শিক্ষক মশাই নানান অজুহাতে মেরেছেন অনেক, কিন্তু বিনিময়ে শেখাতে পেরেছেন সামান্যই।আত্বীয় স্বজনরাও শিখিয়েছেন কিছু কিছু। কিন্তু যে বিদ্যা বাবা আমাকে শিখিয়ে দিয়ে গেছেন তা কেউ শেখাতে পারেনি। তিনি সব সময় বলতেন দিব্য চোখে যা দেখতে পাচ্ছ মনে কর তা কিছুই নয়। দেখবে অনেক সমস্যার সহজ সমাধান হয়ে গেছে।

শিখা এর জবাব দিলনা। অপেক্ষাকৃত মৃদু কন্ঠে বলল, তোমার কথা আলাদা। ভাবনার স্পর্শ দোষ তোমার নেই। মেঘের সাথে তাল মিলিয়ে আনন্দ সন্ধনে যত্র-তত্র ভেসে বেড়াও ।হয়ত পাও হয়ত পাওনা। কিন্তু গভীর ভাবনা কিছুতেই তোমাকে স্পর্শ করতে পারেনা।

কথাটা তানভীরের কানে অদ্ভুদ শুনাল। গভীর ভাবনা তাকে স্পর্শ করে না সত্য, নিত্য নতুন করে মর্মভেদ করেনা এও সত্য, কিন্তু অপরের নিরুৎসাহিত মুখের পানে তাকিয়ে সে মর্মভেদ না করার আনন্দে আনন্দিতও হতে পারলনা। কি মনে হতে সে গম্ভীর মুখে জিজ্ঞাসা করল, তুমি বোধ হয় ইদানিং খুব ভাব?

প্রশ্ন শুনে শিখা মৃদু একটু হাসল। বলল, ভাবতে ভাললাগে। কিন্তু সে সবই সুখের ভাবনা। বেদনা এসে সেখানে আঘাত হানতে পারেনা। আকাশের শুভ্র মেঘ সেখানে ভেসে বেড়ায়, প্রজাপতি উড়ে পরম সুখে,শিমুল-পলাশ পুষ্পিত করে রাখে পথ। আহ্‌ কি সুখ! মনকে কেমন যেন আচ্ছন্ন করে ফেলে। ভাবনা গুলো পরতে পরতে জমা হয়ে অদ্ভুদ এক অনুভূতির সঞ্চার হয়। ভাবতে ভাবতে চোখ ভরে যায় জলে। তবুও ভাবতে ভালোলাগে। আহ্‌ কি আনন্দ! বলতে বলতে শিখার চোখ বেয়ে দু'ফোটা জল গড়িয়ে পড়ল। হাত দিয়ে মুছে নিয়ে কৃত্তিম হেসে বলল, চল উঠি। অনেকটা সময় পেরিয়ে গেছে ............. চলবে। © সুজন মাহমুদ



বি:দ্র: আমি নামি কেউ নই, সমাজের সামান্যদের মাঝের একজন। শুধু শখের বশেই কিছুটা লেখালেখি করা, তাই ভুল-ভ্রান্তি মার্জনার দাবী রাখি। আলোচনা কিংবা সমালোচনা অবশ্যই কাম্য, কিন্তু অনুরুধ আমার এই লেখাটি কেউ কপি করবেন না, অথবা অন্য কোন সামাজিক ওয়েব সাইটে শেয়ার করবেননা।

ধন্যবাদ
সুজন মাহমুদ
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আসসালামু আলাইকুম। শুভ সকাল!

লিখেছেন রাজীব নুর, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৫ সকাল ৯:০৪





মাঝেমধ্যে খুব বেশি মন চায় চলে যাই চিরঘুমের দেশে।
এতো বেশি চষে বেড়িয়ে মূর্খের মতো ভেবেছিলাম জমেছে কিছু সঞ্চয়।
কিন্তু বেলা শেষে দেখি সবই অনাদায়ী দেনা সঞ্চিতি!



মাঝেমধ্যে মনে হয় নিদেনপক্ষে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সাময়িকঃ ব্লগার গোফরান ভাই আমার সাথে যোগাযোগ করছেন

লিখেছেন সত্যপথিক শাইয়্যান, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৫ সকাল ১১:১৭



একটু আগে ব্লগার গোফরান ভাইয়ের সাথে যোগাযোগ হয়েছে। উনি কল করে জানালেন যে, উনার মেয়ে অসুস্থ্য। আর, ৩৬ জুলাই পরবর্তীতে কিছু অসুবিধার কারণে উনি যোগাযোগ করতে পারেন নাই।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আজ যদি খালেদা জিয়া পালিয়ে যেতেন…

লিখেছেন বিচার মানি তালগাছ আমার, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৫ বিকাল ৩:১৬


১. কল্পনা করুন...
৫ই আগস্ট ফ্যাসিস্ট খালেদা জিয়া তার গৃহকর্মী ফাতেমা সহ হেলিকপ্টারে করে সৌদি আরব পালিয়ে যাওয়ার পর ঢাকা শহরে তুমুল উল্লাস হয়। বিভিন্ন জায়গায় জিয়ার ম্যূরাল ভাঙা হয়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

পাকিস্তানের কাছ থেকে পাওনা আদায়ের এখনোই মোক্ষম সময়।

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৫ বিকাল ৩:২১



পাকিস্তানের পররাষ্ট্র সচিব আমনা বালুচ গতকাল বুধবার ঢাকায় আসেন এবং আজ সকালে তিনি বৈঠকে যোগ দেবেন। মধ্যাহ্নভোজের পর পররাষ্ট্র উপদেষ্টা এবং এর পর প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভালো কাজের মন্ত্রণালয়: এক অলৌকিক ভাবনার বাস্তব সম্ভাবনা?

লিখেছেন সত্যপথিক শাইয়্যান, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৫ বিকাল ৪:৩৪



গতকাল রাতে গুগলে বিশ্বজুড়ে অপরাধের পরিসংখ্যান নিয়ে গবেষণা করছিলাম। হঠাৎই মাথায় এলো—“ভালো কাজের পরিসংখ্যান কি আছে?” যেমন, প্রতি বছর কত মানুষ রাস্তার ময়লা নিজের হাতে তুলে ফেলেছে? কতজন নিজের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×