দ্বীপের নাম পুলাউ বেরাস বাসা
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
যেহেতু আমরা পানিতে ভেজার প্রস্ততি নিয়ে এসেছি তাই তেমন কোন সমস্যা হয়নি । প্রায় বিশ মিনিট তুমুল বৃষ্টি ও বাতাস । আমরা পাহাড়ের কোলে মাঝেমাঝে তবুও বাতাসের ধাক্কা টের পাচ্ছি । বৃষ্টি থামার পর আবার নিচের দিকে চললাম । তারপর জেটি, হালকা বৃষ্টি ছিল । কেউ আর এখন এখানে থাকতে চায়না । গাইড বোট ডেড়ালো জেটিতে । সবাই লংকাউই দ্বীপে ফিরে যেতে চায় কিছুই ভাল লাগছে না । আমি সিদ্ধান্ত নিলাম বের যখন হয়েছি দেখা যাক কতটুকু দেখা যায় ।
এরপর ঈগল ফিডিং দেখতে পালাউ শিংগা বাসাহ দ্বীপের কাছে গেলাম । এখানে হালকা বৃষ্টি ও ঢেউ উপেক্ষা করে অনেকে জেট স্কী করছে । আমরা ছাড়াও আরো পাঁচ ছয়টা বোটে যাত্রী বোঝাই হয়ে ঈগল ফিডিং দেখতে এসেছে । সূর্যালোকিত দিন হলে এই দৃশ্য অপূর্ব । অনেক ঈগল পাখি দ্বীপের বাসা থেকে বেড়িয়ে সাগরে আসে । আবহাওয়া মেঘাচ্ছন্ন হওয়াতে ঈগলের সংখ্যা কম । বোটে মুরগীর মাংশ টুকরা করে রাখা আছে এগুলো ছুড়ে দিলে এবং পানিতে ফেললে ঈগলগুলো ডাইভ দিয়ে মাংশ তুলে নেয় । দুটো দ্বীপ যেহেতু দেখা হয়ে গেল তাই তৃতীয় দ্বীপে যেতে বললাম গাইডকে ।
দ্বীপের নাম পুলাউ বেরাস বাসা । এই দ্বীপের সামনের সাগরের পানি স্বচ্ছ । তলার বালু দেখা যায় । দ্বীপে স্কুবা ডাইডিং এবং প্যারাগ্লাইডিং এর ব্যবস্থা আছে । পর্যটকরা এখানে শ্নোরকলিং করছে । সাঁতার কাটছে । আবহাওয়া ভাল না । বাতাস বেশী, বৃষ্টিও আবার পড়া শুরু করেছে । তবুও সাঁতারুরা সাঁতার কাটছে । দ্বীপের জেটিতে বোট লাগানো যায়নি স্রোত বেশী । পিলারে ধাক্কা খাবার সম্ভাবনা ছিল । তাই দ্বীপের বেলাডুবিতে বোট থামালো।
আমরা পানিতে নেমে হেঁটে দ্বীপে গেলাম । অপূর্ব সুন্দর সাদা বালুর দ্বীপ । না এলে মিস করতাম । দুটো শপ আছে প্যারাগ্লাইডিং এবং স্কুবা ডাইডিং এর । আজ আবহাওয়ার কারণে সব বন্ধ । দ্বীপের নামের একটা বোউ গাছের সাথে লাগানো আছে । বেশ কিছু সুন্দর ছবি তুললাম এই দ্বীপে । এতক্ষণে সবার মুখে একটু হাসি দেখলাম । এখন সবাই বলছে না আসলে মিস করতাম । যাক ফিরব বলে প্রস্তুত হচ্ছি ঠিক তখনই ঝমঝম বৃষ্টি । আবার সেডের নীচে অপেক্ষা বৃষ্টি থামার পর বোটে উঠলাম । গন্তব্য লংকাউই দ্বীপের জেটিতে নেমে সাগরের দৃশ্য অপূর্ব লাগছিল, মনে হচ্ছিল আরো যদি কিছুক্ষণ থাকা যেত সাগরে । যাক এখন এসব ভেবে লাভ নেই । দুপুর দুটোর মত বাজে । জেটিতে সবার ছবি গুলো ম্যালামাইনের প্লেটে প্রিন্ট করে সাজিয়ে রেখেছে । যে ছবি নেব না বলে ভাল করে তুলিনি তাই স্মৃতি হিসেবে রাখার জন্য কিনলাম। ২৫ রিংগিত একটা প্লেট ।
মুসা এগিয়ে এলো । বললাম খাওয়া দাওয়া করব । তার আগে ইদা মনসুরীতে চল । এটা হলো এখানকার সিরামিকস কারখানা । এখানে খুব সুন্দর সিরামিকের জিনিষের পাশাপাশি ক্রোকারিজ পাওয়া যায় । খুব সুন্দর নকশাদার হয় সেগুলো । দামও বেশ সস্তা । ছুটির দিন থাকাতে ফ্যাক্টরী বন্ধ ছিল । আমরা তার পাশের একটা বড় ডিপার্টমেন্টাল ষ্টোরে ঢুকলাম । প্রায় সব জিনিষই এখানে পাওয়া যায় । কাপড় চোপড় ও আছে । দুটো গেঞ্জি কেনা হলো সুভ্যেনিয়র হিসেবে । চকলেটের দাম বেশ কমা এখানে তাই অনেক চকলেট কিনলাম ক্যাডবেরী বার, মাস ও দ্বিবখ¡ষঢ় পানি কিনলাম ছয় লিটার খাওয়ার জন্য । হোটেলের পানি খাওয়া যায় না । বৃষ্টি তখনো থামেনি, প্রায় তিনটা ত্রিশ বাজে, খেতে হবে । পাশেই মালয়ী খাবার হোটেল, সেখানে নাসি আইয়াম অর্ডার দিলাম, ভাত ও মুরগীর মাংশ সাথে সব্জীর অর্ডার ও দিলাম ।
পানি কিনে সুন্দর করে ঝোল, মুরগী, ভাত, প্যাক করে দিল সবার জন্য । একটা ব্যাগে সবগুলো ভরে গাড়ীতে ফিরে এলাম । লংকাউইতে আজ শেষ দিন ও শেষ রাত্রি । বিকেলে কোথাও যেতে পারব কিনা জানিনা । হোটেলে এসে ফ্রেশ হয়ে খেলাম । ভালই লাগল স্থানীয় খাবার । বিকেলে শুয়ে বসে কাটালাম । বৃষ্টি থামেনি আমাদের ও আর বেড়াতে বেড় হওয়া হলো না । মুসাকে পরদিন সকালে আসতে বলে দিলাম ।
সন্ধায় বৃষ্টি থেমে গেল । সবাই হোটেলের আশপাশের এলাকা দেখতে বের হলাম । হোটেলের পাশেই একটু এগিয়ে গেলে ছোট্র দোকান । এখানে ড্রিংকস, বিস্কিট, সাবান ও অন্যান্য ছোট খাট জিনিষ পাওয়া যায় । বাচ্চাদের জন্য ড্রিংকস ও জুস নিলাম দাম বেশ রিজনেবল । একটা মহিলা দোকান চালায়, তার ছোট্র মেয়ে তারই সাথে দোকানে থাকে ।
দোকানের পাশে একটা খাবারের রেষ্টুরেন্ট দেখে পরিচ্ছন্ন লাগেনি, এখানে বার্গার, চা, ভাত সবই আছে কিন্তু খেতে ইচ্ছে করেনি । কিছুক্ষণ ঘোরাফেরা করে হোটেলে ফিরে এলাম ।
ডিনার হোটেলেই করলাম । আজ ফিস এন্ড চিপস নেই তাই চিকেন, রাইস, ব্রেড, ডিম অমলেট ইত্যাদি দিয়ে হেভি ডিনার হলো । রাতে জিনিষপত্র গোছানো এবং পরদিনের ফেরার প্রস্তুতি শেষ করে ঘুম দিলাম ।
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর
আলোচিত ব্লগ
ফখরুল সাহেব দেশটাকে বাঁচান।
ফখরুল সাহেব দেশটাকে বাঁচান। আমরা দিন দিন কোথায় যাচ্ছি কিছু বুঝে উঠতে পারছি না। আপনার দলের লোকজন চাঁদাবাজি-দখলবাজি নিয়ে তো মহাব্যস্ত! সে পুরাতন কথা। কিন্তু নিজেদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হচ্ছে।... ...বাকিটুকু পড়ুন
শাহ সাহেবের ডায়রি ।। প্রধান উপদেষ্টাকে সাবেক মন্ত্রীর স্ত্রীর খোলা চিঠি!
সাবেক গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনকে মুক্তি দিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে খোলা চিঠি দিয়েছেন মোশাররফ হোসেনের স্ত্রী আয়েশা সুলতানা। মঙ্গলবার (২৯... ...বাকিটুকু পড়ুন
কেমন হবে জাতীয় পার্টির মহাসমাবেশ ?
জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিক্ষুব্দ ছাত্র জনতা আগুন দিয়েছে তাতে বুড়ো গরু গুলোর মন খারাপ।বুড়ো গরু হচ্ছে তারা যারা এখনো গণমাধ্যমে ইনিয়ে বিনিয়ে স্বৈরাচারের পক্ষে কথা বলে ,ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ হওয়াতে... ...বাকিটুকু পড়ুন
দ্বীনদার জীবন সঙ্গিনী
ফিতনার এই জামানায়,
দ্বীনদার জীবন সঙ্গিনী খুব প্রয়োজন ..! (পর্ব- ৭৭)
সময়টা যাচ্ছে বেশ কঠিন, নানান রকম ফেতনার জালে ছেয়ে আছে পুরো পৃথিবী। এমন পরিস্থিতিতে নিজেকে গুনাহ মুক্ত রাখা অনেকটাই হাত... ...বাকিটুকু পড়ুন
দ্বীনদার জীবন সঙ্গিনী খুব প্রয়োজন ..! (পর্ব- ৭৭)
সময়টা যাচ্ছে বেশ কঠিন, নানান রকম ফেতনার জালে ছেয়ে আছে পুরো পৃথিবী। এমন পরিস্থিতিতে নিজেকে গুনাহ মুক্ত রাখা অনেকটাই হাত... ...বাকিটুকু পড়ুন
জাতির জনক কে? একক পরিচয় বনাম বহুত্বের বাস্তবতা
বাঙালি জাতির জনক কে, এই প্রশ্নটি শুনতে সোজা হলেও এর উত্তর ভীষণ জটিল। বাংলাদেশে জাতির জনক ধারণাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যেখানে একজন ব্যক্তিত্বকে জাতির প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে মর্যাদা দেওয়া হয়। তবে পশ্চিমবঙ্গের... ...বাকিটুকু পড়ুন