somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পুত্রজায়া লেক ভ্রমন

১১ ই মার্চ, ২০১৩ রাত ১০:০৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আগষ্ট ২০১২

সিংগাপুর থেকে মালেশিয়ান এয়ার লাইনের বিমান সকাল দশটা বিশ মিনিটে টেকঅফ করল। গন্তব্য কুয়ালালামপুর আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর। ফ্লাইট টাইম পঞ্চাশ মিনিট বিমানে প্যাকেট বাদাম ও জুস দিল । সাড়ে এগা্েরাটায় স্থানীয় সময় কুয়ালালামপুর বিমান বন্দরে অবতরণ করলাম । অবতরণ গেইট থেকে ইমিগ্রেশন বেশ দুরে, চলমান রাস্তা একটু পরে পরে, দ্রুত ইমিগ্রেশনে চলে আসলাম । বিমান বন্দর চকচকে, আধুনিক এবং রক্ষণাবেক্ষনের মান বেশ উন্নত ।

ডিজিটাল পদ্ধতিতে ইমিগ্রেশন ফর্মালিটিজ খুব দ্রুত শেষ হলো । কোন ফর্ম ফিলাপ করতে হয়নি । ভিসা চেক করে পাসপোটে ছোট ছোট স্টিকার লাগিয়ে দিল । সিংগাপুর বিমান বন্দরে অবতরণ কার্ড ফিলাপ করতে হয়েছিল । এদিক দিয়ে মালেশিয়া উন্নত । বিমানে বাংলাদেশী একজন আমাদের পাশে ছিলেন । তিনি ঢাকা থেকে প্যাকেজে এসেছেন তবে সিংগাপুরে তাকে নিতে এজেসির লোকজন এয়ার পোর্টে সময় মত আসেনি । তাই এখানে এক সাথে ট্যাক্সি নেয়ার জন্য লাইনে দাঁড়ালাম । মালপত্র নিয়ে বাইরে এলাম দ্রুত । এয়ার পোর্ট থেকে ট্রেন ও ট্যাক্সি সার্ভিস আছে । কাউন্টারে গিয়ে টিকেট কাটতে হয়। ট্রেন কুয়ালালামপুর (কেএল) সেন্ট্রাল ষ্টেশনে যায়, আর ট্যাক্সিতে করে নিজ গন্তব্যে যাওয়া য়ায় । আমাদের হোটেলের নাম এবং সংখ্যা ৪ জন বললাম । ১১২ রিংগিতের টিকেট দিল । বাইরের গেইটে ট্যাক্সি আছে । গেইটের সামনে সুন্দর কিউ এর ব্যবস্থা । তবে ভীড় তেমন নেই।

একটু পরে ট্যাক্সি এলো সেখানেও কাউন্টার আছে । কর্তব্যরত সহকারী ট্যাক্সিকে টিকেট দিয়ে আমাদের উঠতে বলল ট্যাক্সিতে । বড় টয়েটা এভেঞ্জা ট্যাক্সি । ড্রাইভার ওমর মালয়ী মুসলিম, ইংরেজী অল্প বুঝে । তার সংগে মালেশিয়াতে ঘোরা ঘুরি কথা বলতে সে বলল আমার এক ভাই আছেন। নাম মোহাম্মদ ওর মোবাইলে মোহাম্মদ এর সাথে যোগাযোগ করিয়ে দিল এবং তার নাম্বার দিল । আমরা মোহাম্মাদকে বিকাল ৩ টার দিকে যোগযোগ করব বলে জানালাম । মোহাম্মাদ ভালই ইংরেজী বলে ও ফোনে তাকে প্রাণবন্ত বলে মনে হলো । হরিরায়া বা ঈদুল ফিতর এর ছুটির কারনে রাস্তা ঘাটে প্রচন্ড ভীড় কুয়ালালাম পুরের ভেতরে ঢোকার পরই ট্রাফিক জ্যাম । আমাদের হোটেল জালান প্যাটালিং এলাকায়। এই এলাকার আশে পাশে অনেক বাংলাদেশী বসবাস করে এবং ছুটির দিনে বেড়াতে আসে । ১টার দিকে হোটেল এলাম মানুষে গিজ গিজ করছে হোটেলের সামনের রাস্তা গুলো । সিংগাপুর থেকে হঠাৎ এত বড় জনারন্যে এসে সবাই একটু থমকে গেলাম ।
হোটেলে জিনিস পত্র রেখে মোবাইলে সিম কিনতে বাইরে এলাম । হোটেল ভাড়া রিজনেবল এবং ইটারনেটে বুকিং করাতে বেশ কম রেটে রুম পাওয়া গেছে। বাইরে বাংলাদেশী একজনকে সিম কেনার কথা বলতে বেশ আন্তরিকতার সাথে আমাদের নিয়ে একটা দেশী ভাইর দোকানে গেল। ১৫ রিংগিত দিয়ে সিম কিনলাম । প্রায় ২৫ মিনিট কথা বলা যাবে । ছোট খাট যোগাযোগের জন্য খুবই প্রয়োজন এই সিম ।

দুপুরের লাঞ্চ করার জন্য বের হলাম । বেশ কিছু হোটেল আছে তবে ম্যাকডোনাল্ডসে সবাই খেতে চাইল । এই ফাঁকে ড্রাইভার মোহাম্মাদকে ফোন দিলাম আসার জন্য । বিকালটা নষ্ট করার কোন মানেই হয় না । ম্যাক এর খাবার নিয়েছি এমন সময় ট্যাক্সি হাজির। প্যাক খাবার নিয়ে ট্যাক্সিতে উঠে গেলাম, গন্তব্য পুত্রজায়া, ড্রাইভারকে বেশ পছন্দ হয়ে গেল । ট্যাক্সিতেই খাওয়া দাওয়া চলল যদিও এটা আইন সম্মত না ।

ট্যাক্সি কুয়ালালামপুরে ব্যস্ত ট্রাফিক পার হয়ে টোল প্লাজায় এসে থামল । মালেশিয়াতে টোল প্লাজা গুলোর অপারেটর অধিকাংশ মহিলা। আট দিন মালেশিয়াতে অবস্থান কালীন নেনাং ফেরীর টোল প্লাজায় কেবল একজন পুরুষ অপারেটর দেখেছি । কি সুন্দর ভাবে দুর দুরান্তে তারা নিরাপত্তার ব্যবস্থা নিশ্চিত করছে, সত্যি তা প্রশংসার দাবী রাখে ।


আধুনিক স্থাপত্যের ভবন, পুত্রজায়া
পুত্রজায়া ফেডারেল প্রশাসনিক রাজধানী । কুয়ালালামপুর থেকে ৪০ মিনিট লাগল এখানে পৌছাতে। পুত্রজায়া মুল স্কোয়ারে আমরা নেমে গেলাম । মোহাম্মাদ তার ট্যাক্সি পার্ক করে রাখল । ট্যাক্সি ড্রাইভার মোহাম্মাদের সাথে এটাই আমাদের প্রথম সাক্ষাত । আমাদেরকে ঘুরে আসতে বলল । মুল চ্ত্ত্বরের পার্শ্বেই পুত্রজায়ার সেই সুন্দর বিশাল মসজিদ। প্রথমে এক্সেলেটরে নীচে নেমে এলাম । নীচে ফুট, কোর্ট ও অন্যান্য দোকান পাট একটু এগিয়ে গেলে সামনেই লেক, বহু পর্যটক রেলিং এ ভর দিয়ে লেক মসজিদ এবং এর আসে পাশে নয়ানভিরাম কৃত্রিম ও প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখছে । পুত্রজায়ার বাড়ীগুলো আধুনিক স্থাপত্যের ছোয়া দিয়ে বানানো এবং দৃষ্টি নন্দন।


গোলাপী গম্বুজ মসজিদ
পুত্রজায়ার প্রাশাসনিক ভবন এবং প্রধান মন্ত্রীর সরকারী বাসভবন সবচেয়ে সুন্দর ভবন গুলোর মধ্যে রয়েছে। গোলাপী গম্বুজ ওয়ালা বিশাল মসজিদটিও সবার দৃষ্টি কাড়ে । মসজিদে আসরের নামায পড়লাম । বিশাল অজু খানা পুরুষ ও মহিলাদের জন্য আলাদা তলাতে নামাজ ও ওজুর ব্যবস্থা । এতবড় মসজিদ কিন্তু সে তুলনায় মুসল্লি প্রায় নেই । বৃষ্টিতে মসজিদের বিশাল বারান্দা বা চত্ত্বর ভিজে ছিল । ভারতীয় এবং বাংলাদেশী লোকজন সেগুলো পরিস্কারের কাজে লেগে রয়েছে । একজন বাংলাদেশীর সাথে কথা বললাম, বলল ভালই আছে । বাচ্চারা আইসক্রীম খেলো, আইসক্রীম হাতে নিয়েই লেকের পাড় ধরে এগিয়ে গেলাম ।
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই মার্চ, ২০১৩ সকাল ১০:১১
৪টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ফখরুল সাহেব দেশটাকে বাঁচান।

লিখেছেন আহা রুবন, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:৫০





ফখরুল সাহেব দেশটাকে বাঁচান। আমরা দিন দিন কোথায় যাচ্ছি কিছু বুঝে উঠতে পারছি না। আপনার দলের লোকজন চাঁদাবাজি-দখলবাজি নিয়ে তো মহাব্যস্ত! সে পুরাতন কথা। কিন্তু নিজেদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হচ্ছে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। প্রধান উপদেষ্টাকে সাবেক মন্ত্রীর স্ত্রীর খোলা চিঠি!

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:০৩




সাবেক গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনকে মুক্তি দিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে খোলা চিঠি দিয়েছেন মোশাররফ হোসেনের স্ত্রী আয়েশা সুলতানা। মঙ্গলবার (২৯... ...বাকিটুকু পড়ুন

কেমন হবে জাতীয় পার্টির মহাসমাবেশ ?

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:৫৬


জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিক্ষুব্দ ছাত্র জনতা আগুন দিয়েছে তাতে বুড়ো গরু গুলোর মন খারাপ।বুড়ো গরু হচ্ছে তারা যারা এখনো গণমাধ্যমে ইনিয়ে বিনিয়ে স্বৈরাচারের পক্ষে কথা বলে ,ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ হওয়াতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

দ্বীনদার জীবন সঙ্গিনী

লিখেছেন সামিউল ইসলাম বাবু, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১২:১৩

ফিতনার এই জামানায়,
দ্বীনদার জীবন সঙ্গিনী খুব প্রয়োজন ..! (পর্ব- ৭৭)

সময়টা যাচ্ছে বেশ কঠিন, নানান রকম ফেতনার জালে ছেয়ে আছে পুরো পৃথিবী। এমন পরিস্থিতিতে নিজেকে গুনাহ মুক্ত রাখা অনেকটাই হাত... ...বাকিটুকু পড়ুন

জাতির জনক কে? একক পরিচয় বনাম বহুত্বের বাস্তবতা

লিখেছেন মুনতাসির, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৮:২৪

বাঙালি জাতির জনক কে, এই প্রশ্নটি শুনতে সোজা হলেও এর উত্তর ভীষণ জটিল। বাংলাদেশে জাতির জনক ধারণাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যেখানে একজন ব্যক্তিত্বকে জাতির প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে মর্যাদা দেওয়া হয়। তবে পশ্চিমবঙ্গের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×