somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বাগদাদে - ২

২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ৯:৩১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বাগদাদে আমার সাময়িক আশ্রয় হোটেল কান্দিল, ইরাকী ভাষায় ফন্দুক কান্দিল। এটা কারাদা দাখিল রাস্তার পার্শ্বে । হোটেলে এসি ও অন্যান্য সব ব্যবস্থা আছে। বাংলাদেশী শোনাতে রিসেপশনের লোকজন বেশ খুশী , মুসলিম ব্রাদার। একটু একটু ঠান্ডা ছিল আবহাওয়া । সাথে শীতের প্রস্তুতি আছে । বাংলাদেশ থেকে কুয়েত হয়ে ইরাকের হাব্বানিয়া বিমান বন্দরে এসে পৌছাই। সেখান থেকে গাড়ীতে চড়ে বাগদাদ।
একটু ফ্রেস হতে হতে সন্ধা হয়ে গেল। আমরা কয়েকজন বাগদাদের রাস্তায় ঘুরতে বের হলাম। মানুষজন রাস্তায় তেমন নেই । আমাদের আরবী ভাষার জ্ঞান প্রায় শুন্য। মানুষের সাথে ইংরেজীতে কথা বলার চেষ্টা করি। হোটেল কারাদা ইন বা কারাদা দাখেল রাস্তার পাশে। কান্দিল হোটেল বা ফন্দুক কান্দিল থেকে কিছু দুর এগিয়ে গেলেই আলী বাবা স্কোয়ার।

কাহারমানা

আরব্য উপন্যাসের সেই আলীবাবা চললি¬শ চোর গল্পের মার্জানার কথা কে না জানে। এখানেই সেই কাহারমানা বা মার্জানার স্থাপনা। ইরাকী স্থপতি মোহাম্মদ গানি এটার স্থপতি। এখানে চললি¬শটা বড় লোহার পাত্রের উপর মার্জানা দাড়িয়ে আছে। মার্জানার হাতের পাত্র থেকে গরম তেল ঢালার দৃশ্য। এই মনুমেন্টে সেই গরম তেলের বদলে পানির ফোয়ারা নামছে মার্জানার পাত্র থেকে। রাতের বেলা এটা আলোকিত থাকে এবং অপূর্ব আরব্য রজনীর দৃশ্য ফুটে উঠে।
বড় রাস্তায় এসে আমরা খাবারের সন্ধানে বের হলাম । খাবারের দোকানও পেয়ে গেলাম । দুম্বার মাংস দিয়ে সোয়ার্মা , এক ধরণের লম্বা বনরুটির ভিতর সালাদসহ মাংস কেটে ভরে দিচ্ছে । রুটিকে এরা খবুজ বলে । ২৫০ দিনার দাম। এক ডলারে প্রায় ১৮৫০-১৯৫০ ইরাকী দিনার। বাগদাদে এগুলোকে ওরা ছাপানো টাকা বলে। আর কুর্দিস্থানে এক ডলারে পেতাম ২৫ দিনার , এটাকে বলে সুইস মানি, পুরানো ইরাকী টাকা । ইরাক ইরান যুদ্ধের আগে এক দিনার ছিল তিন দশমিক তিন ডলার । হায়রে অভাব ও মুদ্রাস্ফীতি ! একটা সভ্য, উন্নত ও ধনী জাতি কিভাবে তিলে তিলে অভাব সহ্য করছে এটা তখনকার ইরাকে না গেলে বোঝা যেত না। আমাদেরকে দেখে লোকজন বলল কোন দেশের? জানালাম বাংলাদেশ। ওরা বলে ইন্ডিয়ার কাছে, ভারতীয় বা হিন্ডিয়া । মুসলমান বলাতে বেশ খুশী। স্বাগত জানালো । লম্বা চওড়া মানুষগুলো, মুখে সুখের ছাপ নেই । অসুখী চেহারা নিয়ে জীবন টেনে নিয়ে যাচ্ছে । রাতের খাবারে খেলাম সোয়ার্মা ও খবুজ দিয়ে, সাথে ইরাকী কোকাকোলার মত পানীয়, বেশ মজা, এটার দাম ২০০ দিনার, ভালই লাগল । বিভিন্ন ফ্লেভারের আছে , লেমনটা বেশ মজার। এরপর ফুটপাত দিয়ে হাটতে লাগলাম উদ্দেশ্যহীন ভাবে। ফুটপাতে বই বিক্রি হচ্ছে, ইরাকী বই, আরবী ইংরাজী সব ধরনের । আরবী শিখার একটা বই কিনলাম । বই পড়ার সখ বরাবরের । এবার আরব দেশে এসে আরবী শিখতে ইচ্ছা করল । রাস্তার ফুটপাতে বসে মানুষজন খেলনা, চকলেট, বিস্কিট বিক্রি করছে । আমাদের দেশের মত এত হকার ও ক্রেতা নাই। মানুষ তাদের নিজেদের ঘরের আসবাবপত্র নিয়ে এসেছে বিক্রির জন্য। অভাবের একটা নগ্ন রুপ দেখলাম। তবে এরা ধৈর্য্য ধরে আছে। মুুখে দুঃখের কথা বা অভাব বলে না , দেখে বুঝা যায়।
বাগদাদের সুখের সময়ের রুপের চমক দেখার সৌভাগ্য হয়নি। তবুও ইরাকে প্রবাস জীবন যাপন কালে যা দেখেছি তাই মোহিত করেছে এই মনকে। একটার পর একটা যুদ্ধ ও অবরোধ না থাকলে এই দেশটা যে কতদুর চলে যেত তা সহজেই বোঝা যায়। রাস্তাগুলো ফ্রান্স ও জার্মান নির্মানকারী প্রতিষ্ঠান গুলো পঞ্চাশ বৎসরের পরিকল্পনা নিয়ে তৈরী শুরু করেছিল। একতলা দোতলা রাস্তার পর তৃতীয় তলায় এসে কাজ থমকে গেছে। কত আন্ডার পাস ও ফ্লাইওভার যে আছে বাগদাদ শহরে তা হিসাব করিনি। যুদ্ধ ও সঠিক নেতৃত্বের অভাব, একটা প্রানপ্রাচুর্যে ভরা নগরীকে নীরস দুঃখ জাগানিয়া নগরীতে পরিনত করে। বাগদাদ যেন তারই প্রতিমূর্তি।


আল কাদেমিয়া - বাগদাদ

বাগদাদের রাস্তায় আমাদের দেখলে মাঝে মাঝে স্থানীয় লোকজন জিজ্ঞাসা করত হিন্দিয়া ? আমরা বলতাম লা। বাংলাদেশী অর্থাৎ হিন্দিয়া না বাংলাদেশী। বলত থাকি মুসকিলা কোন সমস্যা নেই। ভাল ভাল । এই সুবাদে আমরা শিয়া ও সুন্নী যে কোন মসজিদে যেতে পারতাম। শিয়া মসজিদে অন্য কেউ ঢুকতে পারত না। আমরা বুঝতে পারতাম না বলে মাঝে মাঝে ঢুকে গেলে আমাদেরকে নামাজের জন্য আলাদা জায়গা দেখিয়ে দিত। শিয়া সম্প্রদায়ের কাছে বেশ সম্মানিত জায়গা আল কাদেরিয়া সুন্নীদের কাছেও এটার গুরুত্ব কম না। তবে এটাতে শিয়া প্রাধান্য বেশী। ইরাকে শিয়ারা সংখ্যা গরিষ্ট তবে সাদ্দাম শাসনামলে তা মোটেও বোঝা যেত না। শিয়া সম্প্রদায় কেমন যেন চুপচাপ নিজেদেরকে গুটিয়ে রাখত। আল কাদেমিয়া যেতে তেমন কোন সমস্যাই হয়নি।
ট্যাক্সিতে উঠে জায়গার নাম বলতেই ট্যাক্সি আমাদের নিয়ে এলো। জায়গাটায় বহু মানুষের সমাগম সাধারণত বাগদাদের কোন এলাকায় এত মানুষ একসাথে দেখা যায় না। যুদ্ধ পরবর্তী বাগদাদে যুবক শ্রেণী প্রায় নেই বললেই চলে। একেত জন সংখ্যা কম তার উপর যুবক সম্প্রদায়ের সংখ্যা কম তাই মানুষ তেমন আছে বলে বোঝা যেত না। মহিলা, শিশু ও বৃদ্ধরা তো বেশীর ভাগ সময় ঘরের মধ্যেই কাটায়। কিন্তু কাদেমিয়াতে এর ব্যতিক্রম দেখলাম। এর বারান্দায় মসজিদের চত্বরে বাইরে বহু পুরুষ মহিলা বসে আছে আসা যাওয়া করছে। দলবেধে দোয়া দরুদ পড়ছে। মহিলারা প্রায় সবাই কান বোরকা পড়া কারো মুখ কিছুটা দেখা যায়, কারো মুখ ঢাকা। এখানে লোকজনের হাতে একটা গোল চাকতি দেখা যায় সবাই এটা সাথে রাখে। এটা কারবালার মাটি, শিয়া সম্প্রদায়ের অনেক লোকজন এই মাটিতে সেজদা দেয়। নামাজ পড়ার সময় সেজদার জায়গায় এটা রেখে তারা তার উপর সেজদা দেয়। আল কাদেমিয়া ইরাকের একটা অন্যতম প্রধান পুরাতন শহর বাগদাদের সৃষ্টিরও আগে আল কাদেমিয়া শোনজী নামে পরিচিত ছিল যার আরবী নামের অর্থ কাল শস্য। আব্বাসীয় খলিফা আল মনসুর টাইগ্রিস নদীর পশ্চিম পারে তাদের পারিবারিক গোরস্থানের স্থান নির্ধারণ করে এবং এটাকে কোরাইশ কবরস্থান নামকরন করা হয়। এই সমাধি ক্ষেত্রে খলিফা জাফর বিন আল মনসুর খলিফা আল আমিন এবং ফলিফা হারুন অর রশিদ এর স্ত্রী জুবাইদাকে সমাহিত করা হয়। পরবর্তীতে ৭৯৯ সালে ইমাম মুসা বিন জাফরকে এখানে সমাহিত করা হয়। তিনি আল কাদিস নামে পরিচিত ছিলেন যার অর্থ যে ব্যক্তি তার রাগ নিয়ন্ত্রন ও বশে রাখতে পারে। ৮৩৪ খৃষ্টাব্দে তাঁর পৌত্র ইমাম মোহাম্মদ আল জাওয়াদকে এখানে সমাহিত করা হয়। এই দুইজন হযরত মোহাম্মদ (সঃ) এর বংশধর। তাঁদের সমাধিকে ঘিরে একটা শহরতলী গড়ে উঠে এবং তা আল কাদিমিয়া হিসেবে পরিচিতি পায়। গোটা মাজার ও মসজিদ খুবই সুন্দর ও কারুকার্য খচিত। এর গ্যালারী এবং অন্যান্য জায়গা গুলো সিরামিক টাইলস এর পাশাপাশি ছোট ছোট আয়না এবং সোনা রুপার কারুকার্য করা। আব্বাসীয় খলিফা আল মুতাসাম বিল্লাহ এই দুটো সামাধি সৌধকে ঘিরে মাজার নির্মাণ করে ছিলেন। দুটো সমাধি সৌধের উপর দুটো বিশাল সোনালী গম্বুজ জ্বলজ্বল করছে। গম্বুজ গুলোর চারটা বিশাল মিনার ও চারটা ছোট মিনার দিয়ে ঘেরা। মাজারের বাইরে দুটো বিশাল বিশাল ঘড়ি আছে। এর দুটো দরজার পাশে আলকাদেমিয়া স্থাপত্যের একটা অন্যতম সুন্দর নিদর্শন। প্রতিদিন বহু লোকজন এবং বিদেশী এই মাজারে দোয়া করার ও দেখার জন্য আসে। মাজারে চাদিদিকে ও ভেতরে রক্ষণাবেক্ষণের অভিনবত্বে অবাক হতে হয়। অন্য অনেক মাজার শান্ত তেমন জনসমাগম নেই তবে এই মাজার যেন জীবন অসংখ্য মানুষে। চারিদিক ঝকঝক করে তবে বাইরে মাঝে মাঝে কিছু ময়লা দেখা যায় যা অবশ্য পরিস্কার করা হয়। আমরা মসজিদে দু’রাকাত নফল নামাজ পড়ে হাত তুলে মোনাজাত করলাম। মাজারের দেয়াল ধরে অনেকে কান্নাকাটি করছে এখানে পুলিশের কড়াকড়ি তেমন দেখিনি। লোকজন বেশীর ভাগ শিয়া তবে সুন্নি লোকজনও এখানে আসে। ইরাকে এ এক নতুন অভিজ্ঞতা। বহু মানুষ বিভিন্ন জিনিষ মানত করে সুতা তাবিজ ইত্যাদি এখানে বেশ আছে। বাইরে মাজারের জন্য বিভিন্ন ধরণের জিনিষ বিক্রি হয়। মাজারের বাধাই করা ছবি অনেকে কিনে নিয়ে যাচ্ছে সংগ্রহে রাখার জন্য। সারা ইরাক জুড়ে অসংখ্য নবী রসুল ও বুজুর্গ ব্যক্তির মাজার রয়েছে। তবে এখানে এসব নিয়ে মাতামাতি খুব কম। মানুষে শ্রদ্ধার হালতে যায়। নফল নামাজ পড়ে ও রুহের মাগফেরাত কামনা করে। ভীড় তেমন চোখে পড়ে না। কাদেমিয়াতে না আসলে এত আবেগ প্রবন মানুষ দেখতে পেতাম না। যাক কিছুক্ষণ মাজার ও মসজিদ এলাকা ঘুরে বের হয়ে এলাম। বাইরে তখন প্রখর রোদ অথচ ভিতরে বেশ ঠান্ডা দেরী না করে টেক্সিতে করে হোটেলে ফিরে এলাম।

যাওয়ারা পার্ক-বাগদাদ

ইরাক ইরান যুদ্ধের আগে বাগদাদ ছিল প্রাণ প্রাচুর্যে ভরা উচ্ছল নগরী। রাতের বাগদাদ ছিল আলোঝলমলে। ক্যাসিনো, ডিসকো ও নাইট ক্লাবগুলো ছিল জীবন্ত। পৃথিবীর নানা প্রান্ত থেকে পর্যটকরা ভিড় করত বাগদাদে আনন্দে মেতে থাকার জন্য। দিনের বেলায় বিনোদনের জন্য পার্ক ও নানা জায়গায় টুরিষ্ট ভিলেজ। যুদ্ধের পর আন্তর্জাতিক অবরোধের ফলে সব এখন প্রেতপূরী। হাজার পর্যটকের হাসি কোলাহল থেমে গেছে। স্থানীয় অল্প কয়জন মানুষ মাঝে মাঝে এখন বেড়াতে আসে। স্থানীয় পর্যটকরাই এখন জামিয়ে রাখার চেষ্টা করছে। তবে টাকার দাম কমে যাওয়ায় ও রক্ষনাবেক্ষনের অভাবে সবকিছুই জীর্ণ অবস্থায় ও বিপজ্জনক বলে মনে হয়। নব্বই এর দশকের মাঝামাঝি বাগদাদে গিয়ে জৌলুষ দেখার বদলে দুঃখ জাগানিয়া সমাহিত শান্ত রুপ দেখে ভাল লাগেনি তবুও যা কিছু আছে তা দেখতে তো কোন ক্ষতি নেই। এক বিকেলে তাই যাওয়ারা পার্কে বেড়াতে গেলাম।

যাওয়ারা পার্ক
ট্যাক্সি করে দামাসকাস ষ্ট্রিটে এসে পড়লাম, পার্কটা এখানেই। ট্যাক্সি আমাদেরকে পার্কের গেইটে নামিয়ে দিল। বিশাল এলাকা নিয়ে পার্ক। ছোট বড় সবার জন্য নানা ধরনের বিনোদনের ব্যবস্থা আছে। বিভিন্ন রকম রাইড এখনো সচল, তেলের অভাব নেই বাগদাদে, তাই নেই বিদ্যুৎ সমস্যা। তবে বিশ্বমানের রাইড গুলোর স্পেয়ার পার্টস আমদানী ও মেরামত কার্য সঠিক ভাবে না হওয়াতে মাঝে মাঝে ভয় লাগে যদি ভেংগে পড়ে। বাগদাদের লোকজন এসব চিন্তা না করেই চড়ছে সেগুলোতে। এত আনন্দ পূর্ণ জীবন ছেড়ে তারা আজ পথে বসেছে। তবুও ‘যতক্ষণ শ্বাস ততক্ষণ আশ’ একথা মনে করে যা পাচ্ছে তা থেকে আনন্দ আহরনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। পার্কের ভেতর সুন্দর ভাবে রাস্তা বানানো। বাগান গুলো এক সময় রঙিণ ফুলে ভরা ছিল এখন তেমন রং বাহারী অবস্থা নেই। হাঁটতে হাঁটতে ওপেন এয়ার সিনেমার কাছে চলে এলাম। বিশাল খোলা জায়গা। ধাপে ধাপে সিড়ির মত বসার জায়গা, সন্ধ্যা বেলায় এখানে সিনেমা শো হতো খোলা জায়াগায়। বহুদিন ধরে এগুলো বন্ধ। এর পাশেই কতগুলো কৃত্রিম ফোয়ারা আছে। দুই একটা মাঝে মাঝে প্রাণ পেয়ে ঝরছে বাকীগুলো বন্ধ। চিড়িয়াখানাও আছে এই পার্কে তবে চিড়িয়া এখন তেমন নেই মারা গেছে অনেক, নতুন আনা হয়নি। সুইমিং পুল চমৎকার এখন কেউ সাঁতার কাটছে না। পানি বদল সময়মত হয় না এখন। তবে লেকের মধ্যে অনেক রঙ্গীন নৌকা চলছে। লেকের উপর কেবল কারে লোকজন চড়ছে। নীচ থেকে মনে হচ্ছিল যদি তার ছিড়ে পড়ে যায় ! এ রকম একটা দুর্ঘটনা ঘটেছিল বলে শুনেছিলাম। বর্তমানে উদ্ধার এর ব্যবস্থা নেই তাই লেকের পানিতে পড়ে গেলে সাঁতরে আসা ছাড়া কোন উপায় নেই। কেবল কারে উঠা হলো না। রেষ্টুরেন্ট, কফিসপ সব কিছুই ইউরোপীয় মানের। স্থানীয় লোকজনই এখন এখানকার খদ্দের আর আমরা কজন বিদেশী আজ আসলাম। কফি খেলাম মজা করে।

যাওয়ারা পার্ক
এই পার্কের অন্যতম আকর্ষণ হলো ৫০ মিটার উচু একটা টাওয়ার। এর উপরে ইসলামিক স্থাপত্যের এক সুন্দর গম্বুজ। এই গম্বুজের নীচের বারান্দা চারপার্শ্বে কাঁচ দিয়ে ঘেরা। লিফটের সাহায্যে এখানে উঠতে হয়। আমাদের সাথে বাগদাদের কিছু যুবক ও লিফটে উঠল। শুভেচ্ছা বিনিময় করলাম। ওরা আমাদের ছবি তুলে দিল। মলিন বেশ তবুও মুখে হাসি। চুল হেয়ার জেল দিয়ে আঁচড়ানো। এই টাওয়ারের বারান্দা থেকে বাগদাদ শহরের অপূর্ব দৃশ্যাবলী দেখা যায়। এর উপরে একটা ক্যাফেটারিয়া এবং তার উপর রেষ্টুরেন্ট আছে। সবচেয়ে উপরে এয়ার কন্ডিশন এর যন্ত্রপাতি লাগানো আছে। লিফটে প্রায় ১২ জন একসাথে উঠা যায়। চারপাশের দৃশ্য ঘুরে ঘুরে দেখলাম। ইতিহাস বিখ্যাত বাগদাদ শহর যেন থেমে আছে। উচ্ছলতা নেই, তবে এর স্থাপত্য স্থির হয়ে আছে। দুর থেকে বাড়ী ঘর বাগান, রাস্তা দেখে চোখ জুড়ালাম। লিফটে করে নেমে এলাম নীচে। টাওয়ার এর উপর থেকে সাদ্দাম হোসেন এর নতুন বানানো উঁচু দুর্গের মত প্রাসাদ দেখা যায়। ক্যামেরা দিয়ে ছবি তুলতে চাইলাম। নিরাপত্তার লোকজন কোন মতে জানতে পারলে গ্রেফতার করে নিয়ে যাবে, ক্যামেরার ফ্লাস দুর থেকে দেখা যায়। ছবি তোলা হলো না। একদিকে অসহায় দেশ, অন্যদিকে বাগদাদে একটার পর একটা প্রাসাদ তৈরী হচ্ছে এই বৈপরীত্য মনে ব্যাথা জাগায়। সন্ধ্যায় ট্যাক্সি নিয়ে হোটেলে ফিরে এলাম আনন্দময় কিছু সময় কাটিয়ে।




১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ফখরুল সাহেব দেশটাকে বাঁচান।

লিখেছেন আহা রুবন, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:৫০





ফখরুল সাহেব দেশটাকে বাঁচান। আমরা দিন দিন কোথায় যাচ্ছি কিছু বুঝে উঠতে পারছি না। আপনার দলের লোকজন চাঁদাবাজি-দখলবাজি নিয়ে তো মহাব্যস্ত! সে পুরাতন কথা। কিন্তু নিজেদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হচ্ছে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। প্রধান উপদেষ্টাকে সাবেক মন্ত্রীর স্ত্রীর খোলা চিঠি!

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:০৩




সাবেক গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনকে মুক্তি দিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে খোলা চিঠি দিয়েছেন মোশাররফ হোসেনের স্ত্রী আয়েশা সুলতানা। মঙ্গলবার (২৯... ...বাকিটুকু পড়ুন

কেমন হবে জাতীয় পার্টির মহাসমাবেশ ?

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:৫৬


জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিক্ষুব্দ ছাত্র জনতা আগুন দিয়েছে তাতে বুড়ো গরু গুলোর মন খারাপ।বুড়ো গরু হচ্ছে তারা যারা এখনো গণমাধ্যমে ইনিয়ে বিনিয়ে স্বৈরাচারের পক্ষে কথা বলে ,ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ হওয়াতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

দ্বীনদার জীবন সঙ্গিনী

লিখেছেন সামিউল ইসলাম বাবু, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১২:১৩

ফিতনার এই জামানায়,
দ্বীনদার জীবন সঙ্গিনী খুব প্রয়োজন ..! (পর্ব- ৭৭)

সময়টা যাচ্ছে বেশ কঠিন, নানান রকম ফেতনার জালে ছেয়ে আছে পুরো পৃথিবী। এমন পরিস্থিতিতে নিজেকে গুনাহ মুক্ত রাখা অনেকটাই হাত... ...বাকিটুকু পড়ুন

জাতির জনক কে? একক পরিচয় বনাম বহুত্বের বাস্তবতা

লিখেছেন মুনতাসির, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৮:২৪

বাঙালি জাতির জনক কে, এই প্রশ্নটি শুনতে সোজা হলেও এর উত্তর ভীষণ জটিল। বাংলাদেশে জাতির জনক ধারণাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যেখানে একজন ব্যক্তিত্বকে জাতির প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে মর্যাদা দেওয়া হয়। তবে পশ্চিমবঙ্গের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×