বাহরাইন ঘুরে দেখার ইচ্ছা জাগল। পার্ক থেকে একটু হেঁটে গেলেই টেক্সি ষ্ট্যান্ড। এক বাংগালী টেক্সি ড্রাইভার পেলাম। কথা বার্তায় আন্তরিক মনে হলো। বলল চলেন আশপাশের এলাকা ঘুরে দেখাই। টেক্সিতে উঠে বসলাম। বিশাল বিশাল সুদৃশ্য চকচকে দালান ও রমরমা বাজার এলাকার বাইরে এসে পড়লাম। সাগরের পাড় দিয়ে বিভিন্ন গুরুত্ব পূর্ণ জায়গা দেখে দেখে আমরা এগুতে লাগলাম। মানামা বাহরাইনের রাজধানী এবং সবচেয়ে বড় দ্বীপ । এখানে নতুন ও পুরানোর অভূতপূর্ব সম্মিলন ঘটেছে । চকচকে হোটেল আধুনিক স্থাপত্য কলার পাশাপাশি পুরানো দোকান পাট সব মিলে মিশে আছে এখানে, থাকার জন্য হোটেলগুলো মূলতঃ মানামাতেই অবস্থিত । মানামার মূল সড়ক, গভর্নমেন্ট এভিনিউ শহরের পূর্ব পশ্চিমে সংযোগ রক্ষা করছে । এই সড়কের মাঝামাঝি বেশ বড় মোড় আছে । যার চারপাশে হিলটন এবং শেরাটন হোটেলের অবস্থান । এর সমান্তরালেই রয়েছে আল-খলিফা এভিনিউ । এই রাস্তার পাশেই সব কম খরচের হোটেল ও অসংখ্য রেষ্টুরেন্ট রয়েছে। বাহরাইনের প্রানকেন্দ্র বাব-আল বাহরাইন বা বাহরাইনের তোরন এর সামনের ছোট মোড়েই অবস্থিত । গভর্নমেন্ট এভিনিউর দক্ষিনেই সুক বা বাজার এলাকা। শহরের উত্তরে রয়েছে আল-ফয়সাল হাইওয়ে । এটা মুহাররাক দ্বীপের সাথে মানামার সংযোগ করেছে । মানামাতে হেটে হেটেই মোটামুটি অনেক কিছু দেখা যায় । গালফের পাড় দিয়ে পার্ক ও পায়ে চলার রাস্তা হয়েছে । ভালই লাগে সাগর পাড়ের নৈসর্গিক সৌন্দর্য্য ।
মুহাররাক আইল্যান্ড বাহরাইনের দ্বিতীয় বৃহত্তম দ্বীপ। এই দ্বীপে থাকার কোন ব্যবস্থা যদিও নেই তবে এখানে অনেক কিছু দেখার আছে। এখানে পোষ্ট অফিস, রেষ্টুরেন্ট ইত্যাদি সব কিছুই আছে । এটা বাহরাইন আইল্যান্ডের সাথে কজওয়ে দিয়ে সংযুক্ত । বাহরাইনের বিমান বন্দর এই দ্বীপেই অবস্থিত। এখানে এয়ার ফোর্সেরও ঘাটি আছে । বাহরাইন বিমান বন্দরকে গালফের অন্যতম ব্যস্ত বিমান বন্দর বলা চলে । বিভিন্ন দেশের বিমান এখানে উঠানামা করছে এবং মধ্যপ্রাচ্যের সব দেশ ও দূর প্রাচ্যের দেশের সাথেও এই দ্বীপের যোগাযোগ রক্ষা করছে এই বিমান বন্দর। মুহাররাক কজওয়ের শেষ মাথায় বিশাল সাদা রং এর ভবনটি ন্যাশনাল মিউজিয়াম । শনি থেকে বৃহস্পতিবার এটা খোলা থাকে । এখানে সুন্দর ভাবে কৃষ্টি, সংস্কৃতি, বিবর্তনের ধারাবাহিকতা ও ইসলাম এর প্রারম্ভিক যুগের বিভিন্ন সংগ্রহগুলো সাজানো আছে । মুহাররাক এর দক্ষিণ পশ্চিম প্রান্তে কা লাত আবু মাহির - আবু মাহির দূগ অবস্থিত । এটা মুহাররাক এর সাথে সংযুক্ত মনে হলেও এটা আলাদা ছোট্ট একটা দ্বীপে অবস্থিত । ১৬শ শতকে এই দূর্গটা নির্মিত হয়েছিল এবং পরবর্তীতে এটা বিভিন্ন সময়ে পুনঃ নির্মিত হয়েছিল । মুহাররাক কোষ্ট গার্ড ষ্টেশন এলাকার মধ্যে বর্তমানে এটার অবস্থান । আল-আরিন বণ্য প্রাণী অভয়াশ্রম প্রায় ১০ বর্গ কিঃমিঃ জায়গা জুড়ে অবস্থিত । এই অভয়াশ্রমটি বাহরাইনের দক্ষিণ পশ্চিম পার্শ্বে গড়ে উঠেছে । এখানে যে সব প্রাণীর বংশ বিলুপ্তির পথে সে সব প্রজাতির সংরক্ষণের জন্য এটা স্থাপন করা হয়েছে । এখানে মূলতঃ আরব দেশের প্রাণীগুলোকে সংরক্ষণ করা হয়েছে । তবে আরব দেশের নয় এমন প্রাণী যেমন - জেব্রা ও এতে স্থান লাভ করেছে । এন্ট্রি ফি এক বাহরাইন দিনার । বণ্য প্রাণী যারা পছন্দ করে তাদের জন্য এটা চমৎকার জায়গা ।
কিং ফাহাদ কজওয়ে বাহরাইনের এটা অন্যতম দর্শনীয় স্থান তাই ঠিক করলাম এক সকাল বেলা ট্যাক্সি নিয়ে সেখানে ঘুরে আসব। এটা সৌদি আরবের মূল ভূখন্ডের সাথে বাহরাইনের সংযোগ স্থাপন করেছে । সেতুর মাঝামাঝি দুদেশের বর্ডার। সকাল বেলা টেক্সিতে করে রওয়ানা হলাম। ছোট্ট দেশ, কিছুক্ষণের মধ্যে কজওয়েতে চলে এলাম। দুপাশে নীল পরিস্কার সাগর মধ্যখানে রাস্তা। রাস্তার দুপাশে রেলিং দিয়ে ঘেরা।বিশাল এক স্থাপত্য নিদর্শন এটা এবং এর রক্ষণাবেক্ষণ এর জন্য বেশ ভাল ব্যবস্থা রয়েছে । এই ব্রীজ দিয়ে প্রতিনিয়ত লোকজন/যানবাহন সৌদি আরব ও বাহরাইনের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছে । এই কজওয়ে ২৬শে নভে¤¦র ১৯৮৬ সালে উদ্ভোধন করা হয় । এটা ৭টা কংক্রিটের ফিলিং আপ ও ৫টা ব্রিজ নিয়ে গঠিত । এর সম্পূর্ণ দৈর্ঘ্য ২৫ কিঃ মিঃ । এর মধ্যে তৃতীয় ব্রিজটি দীর্ঘতম যার দৈর্ঘ্য ৫৯১৪ মিটার । ৫০৪ টা কংক্রিটের পিলার এর উপর সমগ্র ব্রিজটা অবস্থিত । কজওয়ের মধ্যবর্তী সাগরের সবচেয়ে গভীর অংশের গভীরতা ১৩ মিটার । এর বাহরাইন এবং সৌদি আরব প্রান্তে দুটো কজওয়ে রেষ্টুরেন্ট রয়েছে, দেখতে একই রকম এবং এদের উচ্চতা ৬৫ মিটার । এই রেষ্টুরেন্টগুলো একটা কৃত্রিম ভাবে তৈরী দ্বীপ এ অবস্থিত । এখানে কাষ্টম ও অন্যান্য কজওয়ে সম্পর্কিত সরকারী ভবনগুলো অবস্থিত । এর এলাকা হলো ৬,৬০,০০০ বর্গ মিটার ।
এই কজওয়ে দিয়ে যেতে হলে শুল্ক দিতে হয় ছোট কার বাস বা ছোট লরি ৩০ সৌদি রিয়েল। বড় বাস সৌদি রিয়েল ৫০, ট্রাক প্রতি টন এর জন্য ৩ সৌদি রিয়েল । এটা অতিক্রম করতে হলে পাসপোর্ট, গাড়ির মালিকানা সম্পর্কিত দলিলপত্র, ড্রাইভিং লাইসেন্স এ সব কিছু কাষ্টম ও ইমিগ্রেশন এ চেক করা হয় । কজওয়ে দেখার জন্যও অসংখ্য দর্শনার্থী আসে । কজওয়ে রেষ্টুরেন্ট এর উপরে ব্যালকনি আছে যেখান থেকে পুরো গালফ এর সৌন্দর্য উপভোগ করা যায় এবং দূরের বাহরাইনের দৃশ্যাবলী দেখা যায় । বিভিন্ন ধরনের নাশকতা মূলক কর্মকান্ড বন্ধ করার জন্য হাইওয়ে পুলিশ পেট্রল কার ও হেলিকাপ্টার রয়েছে এবং নিয়মিত প্রহরা রয়েছে এই কজওয়েতে । কজওয়েতে ট্যাক্সি থামানো যায় না। আমাদের একটু হাঁটতে মন চাইল তাই ট্যাক্সি থামালাম, আশেপাশে কোন লোকজন বা তেমন গাড়ীও নেই। মাঝে মাঝে দু চারটা গাড়ী চলাচল করছে। কিছুক্ষণ সাগরের বাতাস মেখে হাটাহাটি করলাম রাস্তায়। তারপর রেলিং টপকে সাগরের পনি ছুয়ে দেখতে ইচ্ছে হলো। কয়েকজন যেই সাগরের পানির কাছে গিয়েছে অমনি মাথার উপর দেখি ছোট্ট একটা হেলিকপ্টার আমাদের দিকে আসছে। আমরা মনে করলাম এটা অন্য কোথাও যাবে। পরে দেখি হেলিকপ্টার থেকে পুলিশ মাইকে কি যেন বলছে এবং উপর থেকে বেশ নীচে চলে এসেছে। আমাদেরকে রাস্তায় ফিরে আসতে বলছে মনে হলো। রাস্তায় আসার সাথে সাথে পুলিশ কার এসে হাজির, আমরা তো অবাক। সাথে সাথে আমাদের সব কিছু সার্চ করল। বললাম বুঝতে পারিনি। তখন বলল রাস্তায় থামা নিষেধ। আমাদেরকে ফিরে যেতে হবে কিংবা সামনে কজওয়ে রেষ্টুরেন্ট ও ইমিগ্রেশন অফিস আছে সেখানে চাইলে বেড়ানোর জন্য যেতে পারবো। আমরা টেক্সিতে উঠে রওয়ানা হলাম। বাইত-আল-জাসরাহ বাড়িটা সৌদি আরব সংযোগকারী কজওয়ের দক্ষিণ পার্শ্বে জাসরাহ গ্রামে অবস্থিত এবং এটা বাহরাইনের আমির শেখ ইসা- বিন-সালাম আল খলিফার জন্মস্থান । ১৯০৭ সালে এটা তৈরী করা হয় এবং এটা একই ভাবে তখন থেকে সংরক্ষণ করা হচ্ছে । শনি থেকে বুধবার সকাল ৮-২ টা পর্যন্ত এটা দর্শনার্থীদের জন্য খোলা থাকে । প্রবেশ মূল্য লাগে না এটা দেখতে । এই গ্রামে অনেকগুলো হস্ত শিল্পের দোকান আছে । হস্ত শিল্প কেন্দ্রে নামলে হেটেই বাইত আল জাসরাহতে যাওয়া যায় ।
বাহরাইনের সাগর ঘেষে রয়েছে আরব সাগর গামী জলপোতের কারখানা । এখন এগুলো শুধুমাত্র দেখার জন্য । এছাড়া বিভিন্ন ধরনের মাছ ধরার জাল ও এখানে দেখা যায় । এক সময় বাহরাইনের লোকজন আরব সাগরে দস্যুবৃত্তি ও মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করত । অবশ্যই তা এখন প্রাচীন ইতিহাস। একটা জায়গায় সেই পুরানো মাছ ধরার নৌকা ও বাড়ীঘর দর্শকদের জন্য সাজিয়ে রাখা। এটা এদের অতীত ইতিহাসের জেলেদের গ্রাম। এখানেই সাগর পাড়ী দেয়ার জন্য আরবদেশী নৌকা বা ডউ বানানো হতো। আমির এর প্রাসাদ ও অন্যান্য সুদৃশ্য জায়গা দেখে আমরা আবার আমাদের এলাকায় ফিরে এলাম। বিকেল বেলা মামার হোটেলে ইফতার। বেগুনী, মুড়ি,বুট, পায়েস, শশা সবই বাংলাদেশী খাবার। তৃপ্তির সাথে ইফতার করে এক কাপ স্পেশাল চা খেয়ে হোটেলে এসে নামাজ পড়লাম। সন্ধ্যায় বেড়িয়ে পড়লাম মার্কেট এলাকা ঘুরে দেখতে। ঘুরতে ঘুরতে মাদার কেয়ার এর বিশাল দোকানের সামনে এসে পড়লাম। বাচ্চাদের জন্য ‘মাদার কেয়ার’ ব্র্যান্ডের কিছু খেলনা কিনলাম। সবগুলো দোকান এত সুন্দর ভাবে সাজানো যে দেখতে ভাল লাগে। অনেকে আবার রাস্তা দিয়ে যেতে যেতে এক নজর দোকান গুলো দেখছে পছন্দ হলে ভেতরে যাচ্ছে। বাহরাইনে মোটামুটি সব কিছুই পাওয়া যায় । ভারতীয় শাড়ী, পোষাক হতে শুরু করে ইলেক্ট্রনিক্স সামগ্রী ও অন্যান্য নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রীর বাজার এই বাহরাইন । অনেক বড় বড় কোম্পানীর শোরুম রয়েছে এখানে । বিভিন্ন দেশ থেকে ব্যবসায়ীরা এখানে ও ডুবাইতে আসে কেনা বেচার জন্য । শাড়ীর দোকান গুলোতে যেতেই হবে। সবার জন্য অন্তত একটা শাড়ী তো দরকার। কেরালার সেলসম্যানরা আমাদেরকে মুগ্ধ করে অনেক শাড়ী বিক্রি করে ফেলল। আমরাও বেশ সুন্দর সুন্দর কিছু শাড়ী কিনে হোটেলে ফিরে এলাম।
আমার এই স¦ল্প সময়ের ভ্রমনের আনন্দ সত্যি ভোলার মত না । একাধারে সাগর ও প্রকৃতি, অন্যদিকে কিছু কেনা কাটা এবং একটা দেশ দেখার আনন্দই আলাদা , আরো ভালো লেগেছে যে অনুভবই করিনি দেশ ছেড়ে দূরে আছি, সবই হাত বাড়ালেই পাওয়া যায় । বাহরাইনে টাকা বদলের জন্য অনেক ব্যাংক ও মানিচেঞ্জার রয়েছে । মোটামুটি ২৪ ঘন্টাই মানিচেঞ্জারগুলো খোলা থাকে । বাহরাইনে ঘুরে বেড়ানোর জন্য বাস রয়েছে এ ছাড়া ট্যাক্সিতেও বেড়ানো যায় । বাহরাইন দেশটা এত ছোট যে ৩/৪ দিনের একটা ছোট্ট ট্রিপে সম্পূর্ণ বাহরাইন ভালভাবে দেখা যায় । পর্যটকদের জন্য এখানে টুরিষ্ট দ্বীপ আছে । স্পীড বোটে করে সেখানে যাওয়া যায় । ভাল বালুবেলা আছে সেখানে, সমুদ্র স্নানের উপযুক্ত জায়গা ।
বাহরাইনের জায়গাগুলো দেখতে দেখতে কেউ যদি ক্লান্ত হয়ে যায় তবে তার জন্য বিশ্রামের ব্যবস্থা আশে পাশেই মিলে যেতে পারে, কোন পার্ক কিংবা রেষ্টুরেন্টে । বাহরাইনে প্রতিদিন একটা ইংরেজী পত্রিকা প্রকাশিত হয় এবং এটা বিভিন্ন ধরনের তথ্য সংগ্রহের জন্য বেশ প্রয়োজনীয় । বাহরাইনের সরবরাহকৃত পানি খাওয়ার উপযুক্ত না । সবচেয়ে ভাল হলো মিনারেল ওয়াটার, বোতলে পাওয়া যায় । টেপের পানি লবনাক্ত । নভে¤¦র থেকে ফেব্র“য়ারি এই সময়টা বাহরাইন ভ্রমনের জন্য সবচেয়ে ভাল সময় । তাপমাত্রা ও আবহাওয়া এসময় সবচেয়ে মনোরম । অজস্র পর্যটক তখন এদেশে আসে তাই হোটেলে রুম পাওয়া একটু কষ্টকর হয়ে পড়ে । প্রবাসী বাংগালীরা বেশ আন্তরিক এবং সব সময় তারা দেশী ভ্রমনকারীদের সাহায্য করে থাকে ।
একদিন বিকেলে হোটেলে ফিরছি এমন সময় দেখি এক বুড়ো ৪/৫ টা মহিলার সাথে হেঁটে আসছে। মহিলারা তাকে যেন গার্ড করে নিয়ে আসছে। তার হাতে ঝলসানো মুরগী, নানরুটি ও পানীয়। বিশাল বিশাল প্যাকেট। মহিলা গুলো সব মধ্য এশিয়া প্রজাতন্ত্রের, বিভিন্ন বয়সী। তারা হাসাহাসি করছে বুড়োর সাথে। বুড়ো খুশি,রুমে নিয়ে সবাই মিলে আনন্দ করে খাওয়া দাওয়া চলবে। প্রতিটা বড় বড় হোটেলেই বার ডিসকো রয়েছে এবং সবার জন্য বার ও ডিসকো উম্মুক্ত । আরব ও মধ্যপ্রাচ্যের অনেক লোকজন বাহরাইনে আসে ব্যবসা কিংবা ঘুরে বেড়ানোর জন্য । বাহরাইনে থাকার জন্য অভিজাত থেকে শুরু করে সস্তা হোটেল প্রচুর রয়েছে । মোটামুটি ১৫-২০ ইউ এস ডলার এ বাহরাইনে সাধারন হোটেলে থাকা যায় । খাওয়া দাওয়া বাংলাদেশীদের জন্য কোন সমস্যাই না । এটাকে দেশের বাইরে দেশও বলা যেতে পারে । ভাল সব্জি, ভাত, মাছ সব কিছুই বাংলাদেশী হোটেলে পাওয়া যায় । ভারতীয় হোটেলও প্রচুর আছে এবং এখানে পাওয়া যায় না এমন জিনিষ দূর্লভ । ভাব আদান প্রদানের মাধ্যম বাংলা এবং বাংলাদেশের লোকজন নিজেদের মধ্যে বেশ ভাল যোগাযোগ রক্ষা করে । বিপদে আপদে সাহায্য সহযোগীতার হাত বাড়িয়ে দেয় । বিদেশীদের জন্য বার, ক্যাফে, কে এফ সি, ম্যাকডোনাল্ড এসব ফাষ্ট ফুডের দোকান সবই এখানে আছে । চিনা রেস্তোরাও প্রচুর আছে । ভারতীয় এবং চীনা খাদ্যই তুলনা মুলক ভাবে অন্যান্য হোটেল বা পাশ্চাত্য খাদ্য বস্তুর তুলনায় সস্তা । টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা এদেশের বেশ উন্নত এবং পৃথিবীর যে কোন দেশের সাথেই যোগাযোগ করা যায় ।
ব্যবসার স্থান হিসেবে ডুবাইর পরেই বাহরাইনের স্থান । সারা দেশে ছড়িয়ে আছে অসংখ্য দোকান পাট ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান । মোটামুটি পৃথিবীর প্রায় সমস্ত আন্তর্জাতিক কোম্পানী এর শাখা বাহরাইনে । বর্তমানে যেমন ব্যবসাগুলো মূলতঃ ইরানী বংশোদ্ভুত বাহরাইনীরা এবং কিছু ভারতীয়দের দখলে এবং প্রায় সমস্ত সেলসম্যান ভারতের কেরালা প্রদেশের অধিবাসী । এদের ব্যবহার এবং সেলসম্যান হিসেবে দক্ষতা যে কোন ক্রেতাকে আকর্ষণ করে । ইদানিং কিছু বাংগালীও এসব দায়িত্ব পাচ্ছে তবে এদের সংখ্যা কম এবং এরা মূলতঃ বাংলাদেশী মালিকের সাথেই কাজ করে । অফিস আদালতে ফিলিপিনো পুরুষ ও মহিলা সব জায়গা দখল করে রেখেছে ও দক্ষতার সাথে কাজ করে যাচ্ছে । বাহরাইনে এক সপ্তাহ প্রায় শেষের দিকে। জিনিষ পত্র যা কেনাকাটা হলো তা গোছালাম। পরদিন সকাল বেলার ফ্লাইটে বাগদাদের উদ্দেশে উড়াল দিলাম।