How a NASA Spacecraft May Help Aliens Find Earth
১৯৫৯ সালের সমসাময়িক পরিস্থিতি কেমন ছিল সেটাও একটু বুজতে হবে, সে সময়ে উন্নত রাষ্ট্রগুলোর বহু মানুষ বিশ্বাস করত উড়ন্ত সশারে করে ভিন গ্রহ দিয়ে মানুষ এই পৃথিবীতে আসছে, নিরন্তর বিভিন্ন পত্রিকাতে সব আজগুবি খবর হত ইটিদের নিয়ে, প্রচুর প্রমান্য চাক্ষুষ সাক্ষীর সাক্ষাৎকারের গাজাখুরি গপ্প ফেদে বসত, মানে রাতারাতি নাম কামানোর একটা উপায় হয়ে দাড়াল, এরই পাশাপাশি বছর কয়েক আগে বাজারে এসেছে প্রথম বানিজ্যিক কম্পুটার, তার থেকেও বড় সাফল্য আসল লুনা-১ এর মহাকাশ অভিযান, মানুষের মহাকাশে প্রথম অভিযান। এহেন পরিস্থিতিতে কোকোনি মরিসনের যুগল পেপার।
Cocconi giving a lecture in CERN's main auditorium 1967
তাদের পেপারে যে প্রশ্নটা গুরুত্বের সাথে এসেছে ইটি যদি সত্যিই থেকে থাকে তবে তারা কিভাবে আমাদের সাথে যোগাযোগ করবে? এর উত্তর সহজ। জানা মাধ্যমের মধ্যে “বেতার তরঙ্গের” মাধ্যমে। কারন বেতার তরঙ্গ হল অদৃশ্য আলো আর একথা আমরা সবাই জানি আলো সব থেকে দ্রুত গতি। মাধ্যম তো জানলাম কিন্তু কোন কম্পাঙ্কে? কোকোনি মরিসন সে জবাব দিলেন তাদের পেপারে এই মহাবিশ্বে যে পদার্থটির উপস্থিতি সব থেকে বেশী তা হল হাইড্রোজেন। আর এর পরমানু কম্পাঙ্ক ছড়ায় ১৪২০ মেগাহার্টজ এ। কোকোনি মরিসন পেপারে কতখানি উদ্ভুদ্ধ হয়েছিলেন ফ্রাঙ্ক ড্রেক তার প্রমান মেলে ইটির সিগন্যাল সনাক্ত করনে রেডিও টেলিস্কোপ ১৪২০ মেগাহার্টজে টিউন ই শুধু করেন নি তাক করেছিলেন পৃথিবী থেকে ১১ আলোকবর্ষ দূরে টাউ সেটি এবং এপসাইলন এরিদানি নামক দুটো নক্ষত্রের দিকে যার আছে নিজস্ব গ্রহ এবং যেখানে প্রান থাকার কথা অনুমান করেছিলেন কোকোনি মরিসন পেপারে।
এ ঘটনা আজ থেকে প্রায় ৬০ বছর আগের। এর মাঝে যে বিজ্ঞানীরা যে কত মরীচিকায় বিভ্রান্ত হয়েছেন তার তার ঘটনা লিখতে গেলে অন্ততঃ ১০০ সিরিজ লেখা যাবে, সেদিকে না গিয়ে একটা উদাহরন দেই, ১৯৬৭ সালের ২৮শে নভেম্ভর ব্রিটিশ রেডিও টেলিস্কোপে চোখ রেখেছিলেন দুই গবেষক জসলিন বেল বারনেল এবং এ্যান্টনি হিউইশ তারা পিক করলেন নির্দিষ্ট সময়ের পর পর বিপ বিপ শব্দ। উৎসাহের অতিশয্যে তারা বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষায় মন দিলেন, মন ভাঙতেও দেরী হল না, আসলে ওই বিপ বিপ শব্দ কোন গ্রহ থেকে আসছে না, আসছে অকল্পনীয় ভাবে ঘুর্নায়মান এক ধরনের বিশেষ তারা থেকে আর ওই ধরনের তারা মহাকাশে অনেক আছে এদেরকে “পালসার” বলে। এই পালসার আবিস্কারের জন্য হিউইশ অবশ্য পরে নোবেল পান। এমন আরো অনেক উদাহরন দেয়া যায় যেখানে বিপুল উৎসাহে ভিনগ্রহবাসীর সিগন্যাল পেলেও পরে দেখা যায় সেগুলো আসলে অন্য কোন মহাজাগতিক কারনে অথবা সেগুলোর কোন কন্টিনিউটি নেই।
“হোয়ার ইজ এভরি বডি” ইটিরা তাহলে কোথায়? নোবেলজয়ী পদার্থবিজ্ঞানী এনরিকো ফার্মির এই প্রশ্ন একদা ছুড়ে দিয়েছিলেন তার সতীর্থ অন্য তিন বিজ্ঞানীর দিকে টেলর, ইয়র্ক এবং কোনোপিনস্কির উদ্দেশ্যে। এই প্রশ্ন আজো আলোচিত হয় ইটি খোজার মহলে। অবশ্য এর একটা যেন তেন উত্তর ফার্মি নিজেই দিয়েছিলেন, পৃথিবীর বুকে ইটি দের খুজে পাওয়া যায় না কারন (১) মহাকাশের দূরত্ব এত বিশাল যে ইটিরা তা পাড়ি দিতে পারে না। (২) সাধ্য হলেও ইটিরা আলসেমি করে সেদিকে যায় না। (৩) মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সিতে এত সুদীর্ঘ কাল ইটি সভ্যতা টিকে থাকতে পারে না যে তারা সাম্রাজ্য বিস্তারে বেড়োবে। ১৯৫০ সালের গ্রীস্মে যে প্রশ্ন ফার্মি করেছিলেন তা আবার আলোচনায় নিয়ে আসেন ব্রিটিশ বিজ্ঞানী মাইকেল হার্ট কোয়ার্টারলি জার্নাল অভ রয়েল এ্যাষ্ট্রোনোমিক্যাল সোসাইটি” র জার্নালে “এ্যান এক্সপ্লানেশান ফর দ্যা এ্যাবসেন্স অভ এক্সট্রাটেরিষ্টিয়ালস অন আর্থ” প্রবন্ধে। তার প্রবন্ধের মুল বক্তব্য অনেকটা ফার্মির উত্তরের মত। কিন্তু এদের ব্যাখ্যাই শেষ কথা মানতে অনেকে মনে করেন না, তবে তাদের সেই ধাঁধা মানে “হোয়ার ইজ এভরিবডি” এটা এখনো ইটি খোজার মহলে “ফার্মি হার্ট প্যারাডক্স” নামে পরিচিত।
এর পাশাপাশি আর একটা ধাঁধা যা প্রায় “ফার্মি হার্ট প্যারাডক্সের” মত তা পরিচিত আছে “গ্রেট সাইলেন্স” নামে। গ্রেট সাইলেন্সের মূল কথা ধরে নিলাম দূর গ্রহে কোন বুদ্ধিমান প্রানী আছে মহাবিশ্বের অকল্পনীয় দূরত্ব পাড়ি দেয়া তাদের পক্ষেও সম্ভব না কিন্তু তারা তো পারে বেতার তরঙ্গের মাধ্যমে আমাদের সাথে যোগাযোগ করতে কিন্তু তাও কেন করে না? এটাই “গ্রেট সাইলেন্স” প্যারাডক্সের মুল কথা।
এই সব ধাধার বিপরীতে যারা অবস্থান করছে তারাও বিভিন্ন যুক্তি ফুক্তি নিয়ে হাজির তার কোনটা কিছুটা যুক্তিপূর্ন কিছু অত্যান্ত ছেলেমানুষী। সে আলোচনায় এখানে যাব না গেলে এ লেখা শেষ হবে না। তবে সামান্য একটা উদাহরন দেই যা “জু হাইপোথিসিস” নামে পরিচিত। তাদের মতে ভিন গ্রহের বাসিন্দারা আমাদের কে দেখছে মানে অবজার্ভ করছে কিন্তু চাচ্ছে না আমাদের আমাদের বিবর্তনে নাক গলাতে। মানে চিড়িয়াখানায় যেভাবে বন্দী পশুপাখিকে মানুষ অবজার্ভ করে আর কি! আর এক দল বলে রেডিও তরঙ্গ আমাদের জানা মতে ফাষ্টেষ্ট ওয়ে ফর কম্যুনিকেশান কিন্তু এর থেকে কি অন্য কোন আধুনিক উপায় নেই আমরা তা কেমন করে জানব যে উপায় হয়ত ওই সব ভিনগ্রহবাসীরা জানে মানে জ্ঞান বিজ্ঞানের বিবর্তনের ধারায় আমরা ওদের থেকে অনেক পিছিয়ে আছি, এই টাইপের হাজারো যুক্তি।
Drake Equation | SETI Institute
১৯৬০ সালের নভেম্ভর মাস। ফ্রাঙ্ক ড্রেক ওয়েষ্ট ভার্জিনিয়ার গ্রীন ব্যাংকে ন্যাশনাল রেডিও এ্যাষ্ট্রোনমি অভর্জাভেশানে রেডিও রিসিভার সাজিয়ে বসেছেন, ওদিকে পেপারে শুরু হল হৈ চৈ। নাসা ঠিক করল ইটির অস্তিত্ব খোজা কতখানি বিজ্ঞান সম্মত তা আগে যাচাই করতে হবে। আয়োজিত হল এক আলোচনা চক্র। নাসার উদ্যেগে সে আলোচনায় সিদ্ধান্ত হল এ সংক্রান্ত সব কিছুর দায়িত্বে থাকবেন ড্রেক। ড্রেকই অতিথিদের তালিকা ঠিক করলেন। মোট বারোজন, এদের মাঝে জোর্তিবিজ্ঞানী, পদার্থবিদ, জীববিজ্ঞানী, সমাজতাত্ত্বিক এমনকি একজন শিল্পপতিও ছিলেন। আলোচনা তো হবে কিন্তু এ্যাজেন্ডা কি? ভাবতে বসলেন ড্রেক। ভাবতে ভাবতে পৌছুলেন এক সমীকরনে:
N=R* X fp X ne X fl X fi X fc X L যেখানে
R*= মিল্কি ওয়ে গ্যালাক্সিতে প্রতি বছর সূর্যের মত যতগুলো নক্ষত্র জন্মায়
Fp= সেই নক্ষত্রগুলোর যত অংশের চারপাশে গ্রহ পরিবার গড়ে ওঠে
Ne= সেই পরিবারগুলোর প্রত্যেকটাতে যত গুলো পৃথিবীর মত গ্রহ থাকে
Fl= সেই গ্রহগুলোর যত অংশের মধ্যে প্রানের আবির্ভাব ঘটে
Fi= তাদের মধ্যে যত অংশ বুদ্ধিমান প্রানী হয়ে ওঠে
Fc= সেই বুদ্ধিমান জীবদের যত অংশ গ্যালাক্সিতে অন্য গ্রহের বাসিন্দাদের সঙ্গে যোগাযোগের উপযোগী প্রযুক্তিগত উন্নতি করে
L= এ রকম সভ্যতার আয়ুস্কাল।
এই ইক্যুয়েশান “ড্রেক ইক্যুয়েশান” নামে পরিচিত। এই ইক্যুয়েশান আসলে কিছু ফ্যাক্টরের সম্মিলিত হিসাব। ইটি তো আর বাতাস থেকে আসতে পারে না তার বেড়ে উঠার জন্য কিছু ফ্যাক্টর লাগবে ড্রেক ইক্যুয়েশান ঠিস সেই ফ্যাক্টরগুলোকে একত্র করেছে। ২০০২ সালে নর্থ ইষ্টার্ন ইউনিভার্সিটির পদার্থবিদ্যার অধ্যাপক গ্রাহাম ফারমেলো বিজ্ঞানের ১১ টি সূত্র একত্র করে একটি বই সম্পাদনা করেন যার মাঝে আইনষ্টাইনের E = mc², ডিরাকের ইলেকট্রন সংক্রান্ত ফর্মুলা, শ্রোয়েডিংগারের পারমানবিক কনাদের আচরন নির্ধারন ই ক্যুয়েশানের পাশাপাশি ড্রেক ফর্মুলাও রাখেন। কেন এত মর্যদা ড্রেক ইক্যুয়েশানের? ব্যাখ্যা দেন ফারমেলো, বিখ্যাত ফর্মুলার যা মুল কাজ ঘটনাবলীর পূর্বাভাষ দেয়া (যেমন নিউটনের ফর্মুলা বলে দিতে পারে হাজার বছর পরে কবে কখন সূর্য গ্রহন হবে।) কিন্তু ড্রেক ফর্মুলা তা করে না এ বরং উন্নত সভ্যতার অস্তিত্বের সম্ভাবনা বিষয়ে আমাদের ভাবনা কে সুসংহত রূপ দেয়। গবেষনার ভাসা ভাসা চিন্তা আর অন্ধ বিশ্বাস কে একটা শৃঙ্খলায় আনে।
ড্রেকের ইক্যুয়েশানের দিকে খেয়াল করুন তা এগিয়েছে জোর্তিবিজ্ঞান থেকে জীববিদ্যায়। জীব বিদ্যা থেকে সমাজতত্ত্বের দিকে। তার থেকে বড় কথা অল্প অনিশ্চয়তা থেকে আরো বড় অনিশ্চয়তার দিকে। ১৯৬১ সালে এই ইক্যূয়েশান তৈরী করার (আমি আবিস্কার বলব না কারন এখানে আবিস্কার লিখলে অনেক কিছুই মেলে না) পর বিভিন্ন ফ্যাক্টরের যে সব মান কাজে লাগান N এর মান পাবার জন্য তা নিম্নরূপঃ
Anybody out there? | Scienceline
R*= ১০ (মিল্কি ওয়ে গ্যালাক্সিতে বছরে গড়ে ১০ টার মত নতুন সূর্য জন্মে)
Fp= ০.৫ (যত সে রকম তারা জন্মায় তার অর্ধেকের গ্রহ থাকে)
Ne= ২ (এরকম দুটো গ্রহের মাঝে অন্তত দুটোতে প্রানের আবির্ভাব হবার সম্ভাবনা থাকে)
Fl= ১ (এরকম গ্রহের ১০০% সত্যিকার প্রান গড়ে ওঠে)
Fi= ০.০১ (তাদের মাঝে ১ শতাংশ বুদ্ধিমান হয়)
Fc= ০.০১ (ও রকম প্রানীর ১ শতাংশ রেডিও সিগন্যাল পাঠানোর উপযোগী হয়।)
L= ১০০০০ (এ রকম সভ্যতা ১০০০০ বছর স্থায়ী হয়)।
সুতারাং N= ১০ X ০.৫ X২ X১ X০.০১ X০.০১ X১০০০০ = ১০ অর্থ্যাৎ বছরে দশটি করে নতুন সভ্যতা গড়ে উঠছে এই মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সিতে। আমাদের গ্যালাক্সির বয়সই তো কয়েক শো কোটি বছর তাহলে ড্রেক ইক্যুয়েশান অনুযায়ী কত লক্ষ কোটি ইটি সভ্যতা গড়ে উঠেছে তার কোন হিসাব নাই! রেডিও খুললেই তো ভিন গ্রহ বাসীদের পাঠানো রেডিও সিগন্যালের জ্বালায় নিজ দেশের কোন চ্যানেল ই ধরা সম্ভব না। কিন্তু কোথায়? কেন?
এ প্রশ্নের জবাবে অনেক বিরাট আলোচনার ছিল, কিন্তু অত আলোচনায় যাবার মত পরিসর ব্লগ না এটা শুধু ধারনা দেবার জায়গা, যে প্রশ্ন আপনার আমার মাথায় আসে সে সব প্রশ্ন দুনিয়ার বড় বড় বিজ্ঞানীর মাথায় আসবে না এটা ভাবাও বোকামী। ড্রেক ইক্যুয়েশান বিরাট জটিল এক জিজ্ঞাসাকে ছোট ছোট করে জবাব খোজার চেষ্টা করে, তবে ওই ছোট প্রশ্ন গুলোর উত্তর কি হবে তা কিন্তু অনেক টা আন্দাজের ওপর এখনো। মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সিতে কি প্রতি বছর ১০ টা নক্ষত্রের ই জন্ম হয় (R*)? তার মাঝে কি ৫ টার চার পাশে গ্রহ থাকে (fp)। এগুলোর কোন স্বীকৃত জবাব নেই। ড্রেক ইক্যুয়েশানের প্রতিটা ফ্যাক্টরই প্রশ্ন সাপেক্ষ কিন্তু তারপরো এত ইম্পর্ট্যান্ট কারন আগেই বলছি উন্নত সভ্যতার অস্তিত্বের সম্ভাবনা বিষয়ে আমাদের ভাবনা কে সুসংহত রূপ দেয়। গবেষনার ভাসা ভাসা চিন্তা আর অন্ধ বিশ্বাস কে একটা শৃঙ্খলায় আনে।
ভিগ্র গ্রহে জীবন আছে কি নেই তা নিয়ে বিজ্ঞানী মহলে তর্কের শেষ নেই, বরং এটা বিজ্ঞান থেকে আমাদের দর্শনের দিকে ঠেলে দিচ্ছে কোন কোন ক্ষেত্রে প্রানের উদ্ভব হয় কিভাবে? বুদ্ধি জিনিস টা কি? সভ্যতা কাকে বলে? হয়ত এজন্যই কার্ল সাগান “সার্চ ফর দ্যা এক্সট্রা টেরিষ্ট্ররিয়াল ইন্টেলিজেন্স” (SETI) কে বলতেন “সার্চ ফর হু উই আর”। ইটি অভিযান যেন এক দিক দিয়ে মানুষের নিজেকে চেনার সাধনা। যাই হোক ষাঠ (৬০) বছর প্রায় হতে চলল ইটিদের পাঠানো সংকেত ধরার জন্য, লাভের লাভ কিছু হয়নি, নাসা তার বাজেট বন্ধ করে দিয়েছে, ফলে ইটি সন্ধান এখন মুলতঃ ধনাঢ্য ব্যাক্তি বা প্রতিষ্ঠানের সাহায্যের মুখাপেক্ষী, যেমন মাইক্রোসফট কোম্পানীর অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা পল অ্যালেনের পয়সায় ক্যালিফোর্নিয়ায় তৈরী হয়েছে অ্যালেন টেলিস্কোপ এ্যারে – ৩৫০ টি এ্যান্টেনার সমন্বয়ে তৈরী বিশাল এলাকা জুড়ে অভজারভেটরী।
এখনো কিন্তু সময় আসেনি সেই সিদ্ধান্ত নেবার যে মহাবিশ্বে আসলে প্রানের কোন অস্তিত্ব নেই, এই ব্রম্মান্ডে গ্যালাক্সির সংখ্যা দশ হাজার কোটি তাও আনুমানিক, তার মাঝে নক্ষত্রের সংখ্যা পৃথিবীর সব কটি সমুদ্রতটে যত বালুকনা আছে তার থেকেও অনেক অনেক গুন বেশী। রেডিও টেলিস্কোপে এখন পর্যন্ত ধরা পড়ছে মাত্র ৩০০০০ হাজার তারা। সেন্টার ফর সেটি রিসার্চ সেন্টারের ডিরেক্টর জিল টারটার কে দেখে কার্ল সাগান তার “কন্ট্যাক্ট” (এই ছবিটা দেখার জন্য আমাকে ব্লগার নীল আকাশ ভাই ষ্ট্রংলি সাজেষ্ট করছেন, আমি অল রেডি ডাউন লোড করে ফেলছি দেখে ফেলব যে কোন সময়) উপন্যাসের নায়িকা এলি অ্যারোয়া (সিনেমায় জোডি ফষ্টার)র কল্পনা করছিলেন। যারা ইটির সন্ধান না পেয়ে হতাশ তাদের উদ্দেশ্যে জিল বলেছেন, “ আট আউন্স এর গ্লাসে সমুদ্রের পানি তুলে তার মধ্যে মাছ না পেয়ে আপনি যদি ডিসিশান নেন সমুদ্রে মাছ নেই তবে ইটি অনুসন্ধানে হতাশা হয়ে সিদ্ধান্তে পৌছানোও তার সামিল।”
Jill Tarter | SETI Institute
১৯৭২ এবং ১৯৭৩ সালে মহাশুন্যে গেছে দুই মহাকাশ যান পাইওনিয়ার ১০ এবং ১১ তাতে আছে খোদাই করা সোনার পাতে মানুষ এবং এই গ্রহের ছবি আশা যদি কোন বুদ্ধিমান প্রানীর হাতে এগুলো পরে তবে তারা যেন দেখে বুজতে পারে আমরা কোথায় আছি। ১৯৭৪ সালে ফ্রাঙ্ক ড্রেক রেডিও মেসেজ পাঠিয়েছেন M13 নক্ষত্রপুঞ্জে পৃথিবী থেকে যার দুরত্ব ২৫০০০ হাজার আলোক বর্ষ। অর্থ্যাৎ ওই মেসেজ ওখানে পৌছাবে ২৫০০০ বছর পর। আর ইটিরা তার জবাব যদি বেতার তরঙ্গে পাঠায় তবে তবে তা আসতে লাগবে আরো ২৫০০০ বছর। ১৯৭৭ সালেন ভয়েজার ১ এবং ২ বহন করছে গোল্ড প্লেটেড ফোনোগ্রাফিক রেকর্ড, আশা ওই একই যদি তা কোন বুদ্ধিমান প্রানীর হাতে পরে।
The Golden Record
এদিকে সব শেষে এই বিতর্কে ঘি ঢালছেন প্রয়াত পদার্থবিজ্ঞানী হকিন্স, তিনি বলেছেন ইটিদের উদ্দেশ্যে বার্তা পাঠানো ঠিক না, কারন তারা হিংস্র কিনা তা আমরা জানি না। ইটিরা হিংস্র না দয়ালু এ বিতর্কের মাঝে আবার তৈরী হয়ে গেছে সত্যি সত্যি যদি তেমন কিছু ঘটে তবে এই গ্রহের মানুষ কিভাবে তা গ্রহন করবে তার জন্য “সেটি পোষ্ট ডিটেকশান টাক্স গ্রুপ” যার চেয়ারম্যান হলেন বিজ্ঞানী এবং বিজ্ঞান লেখক পল ডেভিস।
লেখা আর টানতে চাচ্ছি না, অনেক অনেক কিছুই আলোচনা একদম করিনি, বা করলেও অতি সামান্য ভাসা ভাসা। অভ্যাস মত দেখতে গেলাম নেটে এনিয়ে আমাদের ধর্মগ্রন্থে কি কিছু লেখা আছে কিনা? কি পেলাম জানেন আল্লাহ মহান ইরশাদ করেন, তাঁর ইঙ্গিত সমুহের একটি – নভোমণ্ডল ও ভূমণ্ডলের সৃষ্টি এবং এদের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়া জীব। তিনি যখন ইচ্ছা এদেরকে একত্র করতে সক্ষম। [আস শুরা : ২৯] তিনি আল্লাহ যিনি সপ্ত আকাশ সৃষ্টি করেছেন এবং সমসংখ্যক (৭টি) পৃথিবীও সৃষ্টি করেছেন। [তালাক্ব : ১২]
আল্লাহ মহান ইরশাদ করেন, মহান আল্লাহই জগতসমূহের প্রতিপালক। বিশ্বজগতের প্রতিপালক আল্লাহর জন্যই সকল প্রশংসা। [৪০: ৬৪-৬৫] জগতসমূহের প্রতিপালক- এই কথার মাঝে একাধিক জগতের অস্তিত্বের ইঙ্গিত রয়েছে। আল্লাহ মহান আরো ইরশাদ করেন, তিনি আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীসমূহ এবং উহাদিগের মধ্যবর্তী সমস্ত কিছুর প্রতিপালক যদি তোমরা নিশ্চিত বিশ্বাসী হও। [২৬:২৩-২৪] তাঁর এক নিদর্শন নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলের সৃষ্টি এবং এতদুভয়ের মধ্যে তিনি যেসব জীব-জন্তু ছড়িয়ে দিয়েছেন। [৪২ : ২৯] আল্লাহ তিনি, যিনি সৃষ্টি করেছেন অসংখ্য আকাশ আর অনুরূপ সংখ্যক পৃথিবী। উহাদের উপরও আল্লাহর নির্দেশ অবতীর্ণ হয়; (এ তথ্যটি) এই জন্য যে তোমরা যেন অবগত হও, আল্লাহ সর্বশক্তিমান ও সর্বাজ্ঞ। [৬৫ : ১২] আল-কুরআনের আরো অনেক আয়াতে ইঙ্গিত প্রদান করা হয়েছে যে- শুধু আমাদের এই পৃথিবীই নয়, অন্য কোন অজানা প্রান্তেও রয়েছে আল্লাহর সৃষ্টি জীব। কিন্তু এর বিপরীতে মহাবিশ্বের কোথাও প্রাণ নেই এরকম কোন বার্তা আল-কুরআনের কোথাও পাওযা যায় না।
সমাপ্ত
কৃতজ্ঞতাঃ বিভিন্ন বই, পত্রিকা, নেট, এবং ভারতীয় বিজ্ঞান লেখক পথিক গুহ
কেউ যদি এরিক ফন দানিকেনের "দেবতা কি গ্রহান্তরের মানুষ" এই বইটির বাংলা অনুবাদ পড়তে চান তবে ক্লিক করে ডাউন লোড করে পড়তে পারেন। মজা পাবেন।
প্রয়োজনীয় স্থানে লিঙ্ক দেয়া আছে নীল রং এ চাইলে ক্লিক করে দেখতে পারেন।
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৯ বিকাল ৩:২৩