১৯২০ সালের আগে প্রায় তিনশো বছর সিসিলি তে যত অভিজাত মারা যেত তাদের খুব সুন্দর করে সাজিয়ে গুছিয়ে কবর না দিয়ে সুন্দর করে সাজিয়ে রাখা হত শব সংরক্ষনাগারে এক ক্যাটাকম্ব বলে। দেয়ালের শেলফে থরে থরে সাজানো থাকে এই সব মৃতদেহ।
কালের ধাক্কায় যদিও এর গায়ে কোন মাংস নেই, অনেকের হয়ত গায়ের পোষাক ও ধুলো হয়ে গেছে। কেউ দাড়িয়ে, কেউ বসে, বাচ্চারা খেলা করছে। বিভিন্ন ভঙ্গিতে আছে মৃতরা। সিসিলির এই ক্যাটাকম্বে প্রথম সংরক্ষিত হয় ফাদার সিলভেস্ত্রো দ্য গাভিও ১৫৯৯ সালে।
একই সময় সংরক্ষিত হয় ৪০ জন সন্ন্যাসীর মৃতদেহ। বলা হয় ওই সময় প্লেগ আক্রান্তদের সেবা দিতে গিয়ে ওই সন্ন্যাসীরাও আক্রান্ত হন প্লেগে আর মারা যান কাছাকাছি সময়।আর এই সময় থেকেই ক্যাটাকম্ব পরিচিত হয় এক পবিত্র ভাব গম্ভীর্যপূর্ন এলাকা হিসাবে। আর তৎকালীন ধনীরাও লালায়িত হয়ে ওঠেন এখানে তাদের মৃতদেহ সংরক্ষনের জন্য। কালক্রমে ক্যাটাকম্ব হয়ে ওঠে বড়লোকদের গোরস্থান।
মৃতদেহগুলো প্রথমে এক বিশেষ সেলারে ভরে রাখা হত টানা এক বছর। ওই সময়ের মধ্যে লাশ থেকে সব জলীয় বাস্প ঊড়ে যেত। তারপর রোদে শুকিয়ে মৃতদেহ গুলোকে গোসল করানো হত ভিনেগারে। তারপর সুন্দর করে জামা কাপড় প্রিয়ে এই আধুনিক মমিগুলোকে দাড় করিয়ে অথবা বসিয়ে দেয়া হত।
উনিশ শতকে মৃতদেহ সংরক্ষনে এসেছে নতুন পদ্বতি। তখন মৃতদেহগুলোকে গোসল করানো হত আর্সেনিক বা মিল্ক অভ ম্যগ্নেশিয়ায়। যাতে ত্বক আরো সতেজ দেখাত। তবে এসব নিয়ে এখন কার ধর্ম যাজকরা আর মুখ খুলতে চায় না।
১৮৮০ সালে এসে মৃতদেহ সংরক্ষন করা বন্ধ হয়ে যায়। তাই যে সব মৃতদেহ ঠিক মত সংরক্ষন করা হয়নি, সেগুলো পচে গলে একাকার। এরপর এক মাত্র ব্যাতিক্রম রোজেলিয়া লোম্বার্ডো। মাত্র দু বছর বয়সে ১৯২০ সালে এই ফুটফুটে মেয়েটি মারা যায়। এর উদভ্রান্ত চিকিৎসক বাবা ইঞ্জেকশন দিয়ে রোজেলিয়াকে সংরক্ষন করেন একটি কাচের কফিনে।
ভাল কথা ক্যাটাকম্ব লাশ সংরক্ষন কিন্তু ভূগর্ভে হত। উপরে প্রার্থনাগার। তাছাড়া সিসিলি ক্যাটাকম্ব এ শুরুর দিকে ৪০০ সন্ন্যসী ছিল থেকে এখন মাত্র ৪০ জন অবশিষ্ট। কালের বিবর্নতায় লাশের জাদুগর নিজেই লাশ হয়ে যাচ্ছে। শুধু সিসিলিই না পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গায় এই ক্যাটাকম্ব ছিল।
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই মার্চ, ২০১৩ সকাল ৭:৫০