somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

শের শায়রী
অমরত্বের লোভ কখনো আমাকে পায়না। মানব জীবনের নশ্বরতা নিয়েই আমার সুখ। লিখি নিজের জানার আনন্দে, তাতে কেউ যদি পড়ে সেটা অনেক বড় পাওয়া। কৃতজ্ঞতা জানানো ছাড়া আর কিছুই নেই।

ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা “র” এর অবিশ্বাস্য গোপন জগৎ

২৯ শে ডিসেম্বর, ২০১২ রাত ৯:১০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


শুরুর কথা
চায়না (১৯৬২) এবং পাকিস্তান (১৯৬৫) এর সাথে যুদ্বে পারাজ্য়ের পর ভারতীয় সরকার উপলদ্বি করে তাদের একটি শক্তিশালী গোয়েন্দা সংস্থা দরকার। এই উপলদ্বি থেকেই ১৯৬৮ সালের ২১ সেপ্টেম্বর প্রাক্তন বৃটিশ ইন্টেলিজেন্স অফিসার ও আইবি র ডেপুটি ডাইরেক্টর আর.এন.কাও র নেতৃত্বে ভারতে প্রতিষ্ঠা লাভ করে Research and Analysis Wing (RAW). কাও ইন্দিরা সরকার কে বুজাতে সক্ষম হন যে একটি শক্তিশালী গোয়েন্দা সংস্থা ছাড়া যুদ্বে জয়লাভ করা সম্ভব না। নিঊ দিল্লীতে “র” এর হেডকোয়ার্টার অবস্থিত


ইতিহাস

(১৯৩৩-১৯৬৮)
ব্রিটিশ সরকার ১৯৩৩ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্বে লোক নিয়োগ এবং সিমান্তে গোয়েন্দাগিরি চালানোর নিমিত্তে Intelligence bureau (IB) গঠন করেন, ১৯৪৭ সালে দেশ ভাগের পর সঞ্জীব পিল্লাই প্রথম ভারতীয় হিসাবে IB র ডিরেক্টর পদে আসীন হন। পিল্লাই ব্রিটিশ গোয়েন্দা সংস্থা M15 এর মত করে ভারতীয় IB কে সাজান কিন্তু ১৯৬২ র ইন্দো চায়না যুদ্বে (২০শে অক্টোবর-২১শে নভে ম্ব র১৯৬২) ভারতের শোচনীয় ব্যার্থতায় প্রধানমন্ত্রী নেহেরু ইন্ডিয়ান আর্মি চীপ জেনারেল জয়ন্ত নাথ চৌধুরী কে IB কে নতুন করে ঢেলে সাজাতে বলেন।
(১৯৬৮-বর্তমান)
এর পরম্পরায় ইন্দিরা গান্ধীর নির্দেশে কাও “র” র নীল নকশা আকেন। শুরুতে মাত্র ২৫০ জন জনবল নিয়ে ২ কোটি রুপী বাজেট নিয়ে কাও কাজে ঝাপিয়ে পড়েন। ১৯৭১ সালে কাও আকাশ গোয়েন্দা পরিচালনার জন্য Aviation Research Centre (ARC) গঠন করতে বাধ্য করেন। ১৯৯০ সালে “র” প্রথম প্যারা মিলিটারি বাহিনী Sepecial Frontier Force (SFF) গঠন করে। ভারত সরকার 2004 সালে এর সাথে যোগ করেন National Technical Facilities Organisation(NTFO), National Technical Research Organization (NTRO) র মত সংগঠন

ঊদ্দ্যেশ্য
পার্শবর্তী দেশসমুহ যাদের সাথে ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা সরাসরি জরিত তাদের রাজনৈতিক ও সামরিক কার্যকলাপ পর্যবেক্ষনের মাধ্যমে ঐ সব দেশের বৈদেশিক নীতি নির্ধারনে ভুমিকা রাখা।

প্রবাসে অবস্থানকারী ভারতীয় বা ভারতীয় বংশভুত জনগোস্টীকে ব্যাবহার করে আন্তর্জাতিক সমর্থন সহানুভুতি নিজের পক্ষে নিয়া আসা।

পশ্চিম ইউরোপ ও যুক্তরাস্ট্র থেকে পাওয়া পার্শবর্তি দেশগুলি বিশেষত পাকিস্তানের সমরাস্ত্র সাপ্লাই পর্যবেক্ষনে রাখা ও সীমিত করা চেস্টা।

সংগঠন

রিসার্চ অ্যান্ড এনালাইসিস উইং এর সাংগঠনিক কাঠামো সম্পর্কে যতদুর জানা যায় তা মার্কিন সি আই এ ধাঁচে গঠিত। একজন ক্যাবিনেট সেক্রেটারির(রিসার্চ)পদর্যাদা সম্পন্ন প্রধানের অধীনে বিভিন্ন ডেস্ক ও অপারেশনাল গ্রুপে বিভক্ত।বিভিন্ন ডেস্কের অধীনস্তরা বেশির ভাগ চীন ও পাকিস্তান সম্পর্কে বিশেষজ্ঞ।“র”প্রধান প্রাশনিক ভাবে মন্ত্রী পরিষদ সচিবের কাছে রিপোর্ট করেন এবং মন্ত্রী পরিষদ সচিব প্রধানমন্ত্রীকে রিপর্ট করে থাকে। তবে ক্ষেত্র বিশেষে “র” সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর কাছেও রিপোর্ট করে থাকে। এছাড়া জাতীয় নিরাপত্তা উপদেস্টার কাছেও রুটিন মাফিক প্রতিদিন “র” প্রধান রিপোর্ট দেন।


“র” এর সংঠন ভৌগলিক এলাকা ও অপারেশনাল কার্যক্রমের ভিত্তিতে বিভক্ত।
দুইজন বিশেষ সচিবের ও একজন ডাইরেক্টর পদমর্যাদার এ্যাভিয়েশন রিসার্চ সেন্টারের জন্য
চারজন অতিরিক্ত সচিব পদমর্যাদার কর্মকর্তা বিভিন্ন ভৌগলিক এলাকার জন্য
এছাড়া ৪০টি ডেস্কে বিভক্ত কার্যক্রমের জন্য কমপক্ষে ৪০জন জয়েন্ট সেক্রেটারী পদমর্যাদা কর্মকর্তা বর্ত্মানে কর্মরত।

নয়াদিল্লীর লোদি রোডের সদর দফতর –আঞ্চলিক সদর দফতর-বিদেশে অবস্থিত স্টেষন অফিস-মাঠকর্মী। বিদেশে অবস্থিত স্টেষন অফিস গুলি একজন কন্ট্রোলিং আফিসারের অধীনে যারা মাঠ পর্যায়ে অবস্থানকারী কর্মীদের অ্যাসাইন্টমেন্ট প্রদান, নিয়ন্ত্রন, সুপারভিশন তথ্য সংগ্রহ ও সংরক্ষন করে থাকে। বিভিন্ন সুত্র থেকে ফিল্ড অফিসার ও সহকারী ফিল্ড অফিসাররা তথ্য সংগ্রহ করে সিনিয়ার ফিল্ড অফিসারকে দেয় সিনিয়ার ফিল্ড অফিসার বা স্টেশন অফিসার সেই প্রাপ্ত তথ্য যাচাই বাছাই করে আঞ্চলিক বা সদর দফতরের বিভিন্ন ডেস্কে প্রেরন করেন।এরপর ডেস্ক প্রধান সেই তথ্য গুরত্ব বিচারে আরো উপরে প্রেরন করেন। “র” এ কর্মীদের কে এজেন্ট হিসাবে না বলে রিসার্চ অফিসার বলা হয়। এই গোয়েন্দা সংস্থায় উল্লেখযোগ্য পরিমানে নারী অফিসার কাজ করে থাকে। বগত বছরে চীন ও পাকিস্তান ডেস্ক ভেঙ্গে আলাদা ভাবে চীনের জন্য একটি ডেস্ক করা হয়েছে।

এস এফ এফঃ এস্টাবলিশমেন্ট ২২ “র” পরিচালিত বিশেষ বাহিনী।যারা ক্ল্যান্ডেস্টাইন অপারেশন পরিচালনা করে থাকে।

রিক্রুটমেন্টঃ


স্বাধীন সংস্থা হিসাবে “র” এর কর্মকর্তা বা মাঠ পর্যায়ে কর্মী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে সাধারনত ধরাবাঁধা কোন নিয়ম নেই। সাধারনত ভারতীয় সেনা,নৌ,বিমান বাহিনীর স্পেশালফোর্স, পুলিশ বাহিনী, আই এ এস ক্যাডার, আই, বি, সিবিআই অথবা মেধা বিচারে সরাসরি বিশ্ববিদ্যালয় গ্রাজ্যুয়েট ও শিক্ষা প্রতিস্টান থেকেও নেয়া হয়ে থাকে। “র” এ কর্মরত চাকরিকে অ্যানালাইসিস ক্যাডার সার্ভিস বা আরএএস বলা হয়।

আই এ এস (বাংলাদেশি মান্দন্ডে বি সি এস) অফিসারদের মধ্য থেকে যারা “র” তে যেতে ইচ্ছুক তাদের ক্যাবিনেট সেক্রেটারিয়েট এর অধীনে ডেপুটি ফিল্ড অফিসার DFO পদের পরীক্ষায় বসতে হয়.পরীক্ষায় উত্তির্নদের মধ্য থেকে মেধার ভিত্তিতে সেরাদের বেছে নেয়া হয় এরা সবাই রিসার্চ অ্যান্ড এনালাইসিস ক্যাডার নামে পরিচিত হয়। কমপক্ষে ৮ বছর DFO থাকার পরে তাকে পরবর্তি লেভেলে ফিল্ড অফিসার FO পদে পদায়ন করা হয়। কমপক্ষে ৫ বছর FO থাকার পর তাকে সিনিয়ার ফিল্ড অফিসার SFO (ক্লাশ ওয়ান) হিসাবে প্রমোশল করা হয়। এরপরের ধাপে স্টেষন প্রধান বা রেসিডেন্স অফিসার RO হিসাবে নিয়োগ দেয়া হয়।এরপর তাকে কোন ডেস্ক প্রধান হিসাবে “র” আঞ্চলিক দফতর,সদর দফতর এ রাখা হয় অথবা নিজ নিজ বাহিনী বা ভারতের অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিসের যেকোন স্থানে পাঠানো হয়।

DFO FO SFO রা সরাসরি বিদেশের মাটিতে কর্মরত থাকে।তারা তাদের স্টেশন অফিসারের ভাগ করে দেয়া দায়িত্ব অনুযায়ি নেটওয়ার্ক গড়ে তোলে এবং ইনফর্মার হিসাবে স্থানীয় গুরুত্বপুর্ন ও প্রয়োজনিয় ব্যক্তিদের,ঐ দেশের গোয়েন্দা সংস্থা বা ঐ দেশে অবস্থানকারি তৃতীয় কোন দেশের গুপ্তচর কর্মীকে নিজের পক্ষে আনার চেস্টা করে।

পরিচালকরা
“র” প্রায় সব পরিচালকই ইন্ডিয়ান পুলিশ সার্ভিস থেকে এসেছে। একমাত্র অশোক চর্তুরবেদী ছাড়া সমস্ত পরিচালকেরা চীন, পাকিস্তান expert ছিলেন। অশোক চর্তুরবেদী ছিলেন নেপাল বিষেশজ্ঞ।
১।আর.এন.কাও এবং শঙ্কর নায়ার ইম্পেরিয়াল পুলিশ (IP) থেকে এসেছেন যা ব্রিটিশ ঔপনিবেশিকের পুলিশ সার্ভিস ছিল 1947 পর্যন্ত ।
২. এন.এফ. সান্তুক ভারতীয় নেভিতে পরে ভারতীয় পুলিশ সার্ভিস এবং Indian Frontier Adminastration Force এ ছিলেন.
৩।বিক্রমসুদ Indian Postal Service এ ছিল এবং পরে স্থায়ীভাবে RAS ক্যাডারে যান। এখন সে পর্যবেক্ষক উপদেষ্টা হিসাবে কাজ করে.
৪।এ.এস.দুলাত একজন ভারতীয় পুলিশ সার্ভিস অফিসার, ইন্টেলিজেন্স ব্যুরো থেকে আসেন।
৫।কে.সি. ভার্মা একজন ইন্টেলিজেন্স ব্যুরো অফিসার ছিলেন.
৬।সঞ্জীব ত্রিপাঠী বর্তমান ডিরেক্টর যিনি RAS থেকে এসেছেন.


প্রশিক্ষনঃ


রিক্রুট হিসাবে নির্বাচিত হওয়ার পড় নির্বাচিত ব্যাক্তিকে প্রয়োজন ভেদে সল্পমেয়াদি বেসিক ও দীর্ঘ মেয়াদি কালেক্টিভ ট্রেনিং প্রদান করা হয়। সল্প মেয়াদে ১০ দিনের ট্রেনিং এ প্রধানত রিক্রুটের মনবল বৃদ্ধির ব্যাবস্থা করা হয় পাশাপাশি বহির্দুনিয়া আর গোয়েন্দা জগতের পার্থক্য ব্যাখ্যা,প্রতিপক্ষের গোয়েন্দা চেনার উপায়,গোয়েন্দা জগতে শত্রু বা বন্ধু নেই সবাই প্রতিদন্দ্বি, সাধারন ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস ব্যাবহার যেমন রেডিও ট্রান্সমিটার ব্যাবহার ইত্যাদি।এই ট্রেনিং সাধারনত হরিয়ানার গুরুগাও এ ট্রেনিং স্কুলে প্রদান করা হয়। এছাড়া প্রশিক্ষিত অফিসারদের মুম্বাইয়ে ফিনান্সীয়াল ইন্টেলিজেন্স স্কুলে প্রশিক্ষন দেয়া হয়।

প্রাথামিক ট্রেনিং শেষ প্রয়োজনমাফিক দেরাদুনে ১-২ বছরের ফিল্ড ট্রেনিং প্রদান করা হয়।ফিল্ড ট্রেনিং এ আন্ডার কাভার অপারেশন,কাউন্টার ইন্টেলিজেন্স,স্যাবোটেজ,জনমত ম্যানিপুলেট ও দন্দ্ব সৃস্টির কৌশল সহ অনেক বিষয়ে ব্যাপক ট্রেনিং প্রদান করা হয়। ট্রেনিং সেন্টারে সবাই নিজ নিজ নাম পরিচয়ের বদলে কোড ব্যবহার করে থাকে।

সরাসরি নিয়োগকৃত DFO দের সাধারনত বেসিক ও অ্যাডভান্স দুই ধরনের ট্রেনিং সম্পন্ন করার পর বিদেশে ডেপুটি ফিল্ড অফিসার হিসাবে পাঠানো হয়।।সংস্লিস্ট দেশের স্থানীয় রিক্রুটদের মেধা,গুতুত্ব ও কাজের ধরন বুঝে শুধু বেসিক অথবা অ্যাডভান্স ট্রেনিং উভয়ই দেয়া হয়।

কর্ম পদ্ধতিঃ
“যা বল প্রয়োগে অর্জন সম্ভব নয় তা ধোঁকা দিয়ে সিদ্ধ করা যায়, বিষাক্ত গোখারা সাপও কাক আর সোনার হারের ফাঁদে পরাজিত হয়।“ –চানক্য

তথ্য সংগ্রহ: কভার্ট ও নন কভার্ট উভয় পদ্ধতি ব্যবহার করে “র” তথ্যা সংগ্রহ করে থাকে।

আক্রমনাত্তক গোয়েন্দাবৃত্তি: “র” এলাকা ভেদে আক্রমনাত্তক গোয়েন্দা কৌশল পরিচালনা করে। এরমধ্যে গুপ্তচরবৃত্তি,মানসিক যুদ্ধ পরিচালন,অন্তর্ঘাতমুলক কর্ম কান্ড।

ক্ল্যান্ডেস্টাইন অপারেশনঃ সাম্রিক বাহিনীর স্পেশাল ফোর্স থেকে নেয়া বিশেষ প্রশিক্ষনপ্রাপ্তদের সহায়তায় গুপ্তহত্যা পরিচালনা করা হয়।

প্রতিগোয়েন্দাবৃত্তি: “র” দেশের অভ্যন্তরে ও দেশের বাইরে প্রতিবেশি রাস্ট্রগুলিতে প্রতিদন্দ্বি গোয়েন্দা সংস্থার বিরুদ্ধে ব্যাপকভাবে কাউন্টার ইন্টেলিজেন্স পরিচালনা করে।

মেইল হ্যাকিং ও ইন্টার্সেপ্সহনঃ “র” আই টি এক্সপার্টরা নিয়নিত স্থানীয় গুতুত্বপুর্ন দফতর ও ব্যক্তির ইমেইল হ্যাক করে থাকে এবং পোস্টাল মেইল ইন্টার্সেপ্ট করে থাকে।

গুরুত্বপুর্ন স্থাপনার কাছাকাছি ট্রান্সমিটার স্থাপনঃ সংশ্লিস্ট দেশের গুরুত্বপুর্ন স্থাপনা যেমন বিভিন্ন বাহিনী সদর দফতর,সরকারী গুরুত্বপুর্ন অফিস ও অত্যন্ত স্পর্ষ্কাতর ব্যক্তিবর্গর বাড়িতে টেলিফোনে আড়ি পাতে ও আশেপাশে স্থায়ী বা ভ্রাম্যমান হাই ফ্রিকোয়েন্সী ট্রান্সমিটার সহ প্রযুক্তি ব্যবহার করে নজরদারি ও তথ্য সংগ্রহ করে।

জনমত ঘুরানোঃ “র” বিভিন্ন কৌশল ব্যবহার করে সংশ্লিস্ট দেশের জনমত তার পছন্দ ও সুবিধা অনুযায়ি ঘুরাতে চেস্টা করে এজন্য RO নির্দেশনা অনুযায়ি ঐ দেশে অবশানকারি DFO এবং FO রা তাদের স্থানীয় নেটওয়ার্ক, লোকাল ইনফর্মার ও রিক্রুটদের ব্যবহার করে প্রকাশিত তথ্য ম্যানিপুলেট করার চেস্টা করে।

পর্যবেক্ষন,ম্যাসেজ ইন্টারসেপশন, সিগন্যাল ও পোস্টাল চ্যানেল ব্যাবহার,পর্যবেক্ষন,ফোন ট্যাপিং,ই মেইল হ্যাক,কোড উদ্ধারের মত আধুনিক গোয়েন্দা কৌশল ব্যাবহার করে তথ্যা সংগ্রহ করা হয়।একই তথ্য একাধিক উতস হলে সংগ্রহ করে ক্রস চেক করে দেখা হয়। এম্ন কি ব্ল্যাকবেরি কোম্পানীর পরিসেবা ও নেটওয়ার্ক “র” পর্যবেক্ষন ও নিয়ন্ত্রনের চেস্টা করে।

এপর্যন্ত পরিচালিত গুরুত্বপুর্ন অপারেশনঃ


হিমালয়ে ELINT অপারেশন যা ১৯৬৪ সালে চীনের পারমানবিক পরীক্ষা চালানোর পর সি আই এ ও “র” ১৯৬৮ সালে যৌথভাবে চীনের মিসাইল স্টেষন ও ঐ বিস্ফোরনের স্থান নিশ্চিত হওয়ার জন্য বিখ্যাত ভারপ্ত্যীয় পর্বতারোহী নন্দা দেবীর সহায়তায় পরিচালনা করে।


১৯৭১ এ বাংলাদেশ অপারেশনঃ বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে সক্রিয় অংশ গ্রহন। ১৯৭০ এ কাশ্মীরী বিচ্ছিন্নতাবাদি দের ব্যবহার করে ভারতের বিমান ছিনতাই করে পাকিস্তানে নিয়ে যাওয়া যার ফলশ্রুতিতে ভারত তার আকাশসীমার উপর দিয়ে পাকিস্তানে দুই পাশের বিমান চলাচল নিষিদ্ধ করে দিতে পারে।

অপারেশন স্মাইলিং বুদ্ধাঃ “র” এর দেয়া ১৯৭৪ সালে ভারতের পারমানবিক অস্ত্র প্রোগ্রাম এর কোড নেম।১৯৭৪ এর ১৮ মে পারমানবিক অস্ত্র তৈরী ও পরীক্ষার আগে পর্যন্ত গোপনীয়তা রক্ষা।

সিকিম দখলঃ ১৯৭৫ এ “র” এর সহোযোগীতায় ভারতীয় বাহিনী সিকিম একিভুত করে।

কাহুটা ব্লু প্রিন্ট ফাঁসঃ১৯৭৮ সালে পাকিস্তানের রাওয়াল পিন্ডিতে কাহুটা এলাকায় খান রিসার্চ ল্যাবটারিতে পাকিস্তানের পারমানবিক কর্মসুচির খবর উদ্ধার করে “র”। ল্যাবটারির কাছে তাদের পরিচালিত একটি নাপিতের দোকান থেকে সংগ্রহ করা চুলের স্যাম্পল এ বেডিয়েশন পরীক্ষা করে। এরপর তারা ক্ল্যান্ডেস্টাইন অপারেশন পরিচালনা করে প্রকল্প ধংস করতে চাইলে ভারতের ততকালীন প্রধান মন্ত্রী মোরাজি দেশাই তাদের নিবৃত্ত করেন এবং পাক প্রেসিডেন্ট জিয়াউল হক কে ফোন করে “র” এর পরিকল্পনার কথা জানিয়ে দেন।


অপারেশন মেঘদুতঃ ১৯৮২ তে ভারতের সেনা বাহিনীর যে ধরনের স্নো ওয়ার্ফেয়ারের গীয়ার ব্যবহার করে একই ধরনের আর্টিক ওয়ার্ফেয়ারের গীয়ার পাকিস্তান লন্ডনের একটি কোম্পানী থেকে সংগ্রহ করছে জানতে পারে “র”।যার ফলে ভারতীয় সেনা বাহিনী পাকিস্তানি দের পুর্বেই সিয়াচেল হিমবাহের সিংভাগ দখল করে নেয়।

ক্ল্যান্ডেস্টাইন অপারেশনঃ মধ্য আশির দশক জুড়ে পাকিস্তানের অবস্থিত খালিস্তানি (শিখ) বিদ্রোহীদের ঘাটিতে ক্ল্যান্ডেস্টাইন অপারেশন পরিচালনা করে।


অপারেশন ক্যাকটাসঃ ২০০ তামিল গেরিলার হাতে দখল হয়ে যাওয়া মালদ্বীপ কে সহায়তায় “র’ ও ভারতীয় বিমান বাহিনী একসাথে অভিযান পরিচালনা করে। ৩ রা নভেম্বর ১৯৮৮ ইন্ডিয়ান এয়ারফোর্সের সহায়তায় মালদ্বীপ ক্ষ্মতা পূর্ন্দখল।

শ্রীলংকায় তামিল ট্রেনিংঃ আশির দশক ধরে “র” শ্রীলংকায় তামিলদের স্বাধীন রাস্ট্রের জন্য উদ্বুদ্ধকরন ট্রেনিং পরিচালনা সহ পরবর্তিতে ভারতীয় বাহিনীর অভিযানে সহায়তা করে।

অপারেশন চানক্যঃ পুরো ৯০ এর দশক ধরে কাশ্মীর উপত্যাকায় আই এস আই ও তাদের ট্রেনিং প্রাপ্ত গেরিলাদের ধরতে এ অভিযান চালানো হয়।
অ্যান্টি অ্যাপারটিড মুভমেন্টঃ RAW অনেক স্বাধীন আফ্রিকান দেশের গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ এবং দক্ষিণ আফ্রিকা ও নামিবিয়া বিরোধী জাতিবিদ্বেষ সংগ্রাম করতে সাহায্য করে. RAW অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কিছু আফ্রিকান দেশের গোয়েন্দা সংস্থার প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান কাজ সহায়তা করে।
অপারেশন লিচঃ মায়নমার কে দমন করার জন্য কোচিন বিদ্রোহীদের অস্ত্র দিয়ে সাহায্য করে, পরে নিজেরাই KIA (Kochin Independence Army) র ৬ জন শীর্ষ নেতাদের হ ত্যা করে আসলেই গোয়েন্দা কর্মকান্ডে কোন শত্রুমিত্র নেই।

নর্দান এলায়েন্সঃ এছাড়া আফগান গৃহযুদ্ধে ৯০ দশকের মাঝামাঝি সময়ে নর্দান অ্যালায়েন্স কে র” সহায়তা করে। মার্কিন যুক্তরাস্ট্র পরিচালিত ওয়ার অন টেরর এ সক্রিয়ভাবে সি আই এ মোসাদ সহ অন্যান্য পশ্চিমা গোয়েন্দা সংস্থার সাথে অংশগ্রহন।

অপারেশ মেহেরানঃ ২০১১ সালে পাকিস্তানের মেহেরান নৌ ঘাঁটিতে হামলা চালিয়ে তিনটি অত্যাধুনি আর্লি ওয়ার্নিং রাডারযুক্ত পাকিস্তানের একমাত্র আর্লি ওয়ার্নিং বিমান স্কোয়াড্রন ধংস করা।

পাকিস্তানের বালুচিস্তানে বিদ্রোহীদের প্রশিক্ষন ও অস্ত্র প্রদান।পাকিস্তানের করাচী ভিত্তিক রাজৈতিক হত্যাকান্ড পরিচালনা।নেপালের রাজা বিরেন্দ্র বীর বিক্রম কে নির্বংশ করা।৯০ এর দশকে নেয়া এক পরিকল্পনার অংশ হিসাবে মধ্যপ্রাচ্যের আরব দেশগুলিতে গত দেড় দশক ধরে ৫,০০০ ভারতীয় তরুনীদের বিয়ের জন্য উপযুক্ত পাত্রী হিসাবে তৈরী করে প্রেরন করা হয়েছে।

সমালোচনা
১।8 ফেব্রুয়ারি 2010 “আউটলুক ম্যাগাজিন” রিপোর্ট করে সাবেক চীফ অশোক চর্তুরবেদীকে নিয়ে, ভারত সরকারের তহবিল ব্যবহার করে তার স্ত্রীকে নিয়ে আন্তর্জাতিক ভ্রমণ করে অবসর গ্রহণ করার পরে, অশোক চর্তুরবেদীর কুটনৈতিক পাসপোর্ট সারেন্ডার তো করেইনি উপরন্ত তার স্ত্রী জন্য জারি করে আর একটি.

২।অবসর গ্রহন করার পর মেজর জেনারেল ভি কে সিং “র” এর আভ্যান্ত্রীন দূর্নীতি নিয়ে একটি বই লেখেন। এরপর ই “অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট” র আওতায় গ্রেফতার হন


৩। ১৯শে অগষ্ট ২০০৯ “র” এর গুরগাও প্রশিক্ষন একাডেমির ভাষা পরিচালক ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর অফিসের সামনে আত্নহত্যা করতে উদ্যত হন। এ ব্যাপারে খুব বেশি কিছু জানা যায় না

৪।একজন সিনিয়র প্রযুক্তিগত অফিসার সিবিআই দ্বারা ঘুস গ্রহনের অভিযোগে গ্রেপ্তার হন 4 ফেব্রুয়ারী 2009, ডিরেক্টর স্তরের এই কর্মী, যে "সংবেদনশীল" প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত সরঞ্জাম এর এক্সপোর্ট লাইসেন্স মঞ্জুর কাজ করত। তার বিরুদ্বে অভিযোগ ১ লক্ষ রুপি ঘুস গ্রহনের।
৫।সেপ্টেম্বর ২০০৯, ৭ জন RAS ক্যাডার এ.বি.মথুর কে special secretary র(IPS cader) বিধিবর্হিরভূত পদোন্নতি প্রদান করায় পদ ত্যাগ করে

বাংলাদেশে এ “র” এর অপারেশন ও কার্যক্রমঃ


বাংলাদেশে কমপক্ষে ১ লক্ষ ‘র” কর্মী ও ইনফর্মার সক্রিয় আছে বলে জানা যায় এর মধ্যে ভারতীয় ৪,০০০ এর মত (স্পেকুলেশন) আর বাকিরা ইনফর্মার ,ধর্মীয় ও মতাদর্শগতভাবে 'র" এর প্রতি চরম সহানুভুতিশীল যাদের যেকোন কাজে লাগানো সম্ভব।

বাংলাদেশে যে সব বড় ঘটনার সাথে রিসার্চ অ্যান্ড এনালাইসিস উইং এর সংশ্লিস্টতা নিয়ে আঙ্গুল তোলা হয়ঃ

বাংলাদেশে পার্বত্য চট্টগ্রামের শান্তি বাহিনী গঠন ও পরিচালনায় “র” জরিত আছে বলে ধারনা করা হয়।
১৯৮১ সালে জিয়াউর রহমান হত্যা পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে র” এর সংশ্লিস্টতা ছিলো বলে ধরা হয়।
এরশাদের ক্ষমতায় আরোহন এ সহযোগীতা ও তাকে ডবল এজেন্ট সন্দেহে এরশাদের পতনে সহায়তা।

১৯৯৬ এর জেনারেল নাসিমের ব্যার্থ অভ্যুত্থান প্রচেস্টা।

সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এম এস কিবরিয়া হত্যাকান্ড।

১/১১ বি্ডিআর বিদ্রোহ

ইলি্য়াস আলী নিরুদ্দেশ

এছাড়া বাংলাদেশের গার্মেন্টস সেক্টরে অস্থিরতা তৈরীর জন্য রিসার্চ অ্যান্ড এনালাইসিস উইং কে দায়ি করা হয়।

অসর্মথিত সুত্র
বাংলাদেশের প্রতিটি রাজনৈতিক দল,এন জিও,সরকারী প্রতিস্টান,বানিজ্য অ্যাসোসিয়েশন থেকে শুরু করে প্রতিটি সরকারী বেসরকারি গুরুত্বপুর্ন প্রতিস্টানের মধ্যে রিসার্চ অ্যান্ড এনালাইসিস উইং এর কর্মীরা সক্রিয় আছেন। বাংলাদেশে তাদের প্রধানতম রিক্রুটিং মাধ্যম হচ্ছে "ইন্ডিয়ান কালচারাল সেন্টার"। ঢাকা শহরের অন্তত দুইটি মসজিদ এর ইমাম অথবা সহকারি হিসাবে "র" কর্মকর্তা কাজ করছেন। চট্টগ্রাম, সৈয়দপুর, গোপালগঞ্জ ও সিলেটের একাধিক মাদ্রাসার শিক্ষক কভারে "র" অফিসার কর্মরত আছেন।বাংলাদেশের প্রতিটা গ্যারিসন শহরের প্রবেশ মুখে এবং আশেপাশে একাধিক "র" সার্ভেইলেন্স পোস্ট এ "র" অফিসাররা কর্মরত আছেন। অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে বিচারের মুখামুখি হওয়া জামাতের একজন নেতা(এখনো চার্জ গঠন করা হয় নি) "র" এর পুরানো সক্রিয় কর্মী।
সুত্র
Click This Link
Click This Link
Click This Link



সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই মার্চ, ২০১৩ সকাল ৮:০৭
৪৯টি মন্তব্য ৪৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ফখরুল সাহেব দেশটাকে বাঁচান।

লিখেছেন আহা রুবন, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:৫০





ফখরুল সাহেব দেশটাকে বাঁচান। আমরা দিন দিন কোথায় যাচ্ছি কিছু বুঝে উঠতে পারছি না। আপনার দলের লোকজন চাঁদাবাজি-দখলবাজি নিয়ে তো মহাব্যস্ত! সে পুরাতন কথা। কিন্তু নিজেদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হচ্ছে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। প্রধান উপদেষ্টাকে সাবেক মন্ত্রীর স্ত্রীর খোলা চিঠি!

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:০৩




সাবেক গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনকে মুক্তি দিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে খোলা চিঠি দিয়েছেন মোশাররফ হোসেনের স্ত্রী আয়েশা সুলতানা। মঙ্গলবার (২৯... ...বাকিটুকু পড়ুন

কেমন হবে জাতীয় পার্টির মহাসমাবেশ ?

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:৫৬


জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিক্ষুব্দ ছাত্র জনতা আগুন দিয়েছে তাতে বুড়ো গরু গুলোর মন খারাপ।বুড়ো গরু হচ্ছে তারা যারা এখনো গণমাধ্যমে ইনিয়ে বিনিয়ে স্বৈরাচারের পক্ষে কথা বলে ,ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ হওয়াতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

দ্বীনদার জীবন সঙ্গিনী

লিখেছেন সামিউল ইসলাম বাবু, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১২:১৩

ফিতনার এই জামানায়,
দ্বীনদার জীবন সঙ্গিনী খুব প্রয়োজন ..! (পর্ব- ৭৭)

সময়টা যাচ্ছে বেশ কঠিন, নানান রকম ফেতনার জালে ছেয়ে আছে পুরো পৃথিবী। এমন পরিস্থিতিতে নিজেকে গুনাহ মুক্ত রাখা অনেকটাই হাত... ...বাকিটুকু পড়ুন

জাতির জনক কে? একক পরিচয় বনাম বহুত্বের বাস্তবতা

লিখেছেন মুনতাসির, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৮:২৪

বাঙালি জাতির জনক কে, এই প্রশ্নটি শুনতে সোজা হলেও এর উত্তর ভীষণ জটিল। বাংলাদেশে জাতির জনক ধারণাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যেখানে একজন ব্যক্তিত্বকে জাতির প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে মর্যাদা দেওয়া হয়। তবে পশ্চিমবঙ্গের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×