অচিন মেঘনৃত্য । গ্যাব্রিয়েল সুমন
যে সমস্ত স্নেহে তোমার নিজস্ব নির্জনতা মেশানো
সেখানে আমারও এক চিলতে নীল আছে। অথচ
বিষাদী ডিমপাড়া গাংচিল রেখে গেল প্রিয় নাকফুল
অচিন মেঘনৃত্যে। মেঘ, তুমি জানো আমার কোন
দ্বিচক্রযান নেই। এমনকি আমার ভ্রমণবৃত্তান্ত তোমার
কররেখার চাইতেও স্বচ্ছ। যেসব উদোম বাতাসের
রাত্রিতে তুমি অগ্নি অগ্নি বলে চিৎকার করো—
সে শুধু রঙহীনতার স্বচ্ছ প্রলাপ; অতিরঞ্জিত কাশফুল।
প্রকাশ: ৩০ সেপ্টেম্বর, ইত্তেফাক সাময়িকী।
কুয়াশা কাশবন ও কাগজের শাদা মিথ । গ্যাব্রিয়েল সুমন
আমার কিছু চুপচাপ মুহূর্তের রূপকথা বলবার ছিল
কুয়াশার কাছে। ফিনফিনে আশ্বিনের ধোঁয়াট বিকেলে
কুয়াশাকে এখন কোথায় পাই? চায়ের কাপের ধোঁয়া
মাত্রই সর্বাঙ্গীন অতীতকে ভুলে যায়। সেসব ভুলেরা
ফুল হয়ে তারাকুঞ্জে ফুটে থাকলে, সকালের বিভ্রান্ত
কাঠশালিক তাকে নিয়ে এক ধরনের মাইন্ডগেম খেলে।
কুয়াশাস্তর খুঁজতে গিয়ে হুট করে আমি তাকে ভুলে যাই।
কুয়াশার সান্ধ্যকালীন ভ্রমণকে একটি রোদ কালারের
এনভেলাপে ভরে, তার বুকের উপর লিখে দিই আনমনে
দুলতে থাকা কাশফুলের নাম-ঠিকানা। কাশফুলের সাথে
শুভ্র কুয়াশার দেখা হলো কিনা সেসব অন্তরঙ্গ দৃশ্যমালা
ডাকপিয়ন কিংবা উৎসুক সিনেমাওয়ালাদের জানা থাক।
এবং যেসব অনুভুতি নির্মোহভাবে শাদা কাগজকে
গর্ভবতী করে আমি তাকে ভিজিয়ে দেই। এসব
কুয়াশা কাশবন ও কাগজে চন্দ্রবোড়ার হেঁটে যাবার
নিষিদ্ধ ইতিহাস আলগোছে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকলেও
জোছনালিপি নিঃসংকোচে মেঘছায়ায় ঘুমিয়ে পড়ে।
কবিতাকেন্দ্রিক প্রোটাগনিস্ট মাত্রই ঘুমঘর চেনে।
জলডাক প্রখর হলেও তাকে আমি ডেকে তুলি না।
প্রকাশ: ২৮ অক্টোবর, শিলালিপি (কালের কন্ঠ)