somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ফ্রী মেসনারী- এক প্রাচীন সিক্রেট সোসাইটির বিল্ডিং ভ্রমন।

৩০ শে মে, ২০১৪ সকাল ৭:৫২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমেরিকার প্রথম বিল্ডার/ফাদার অফ দি নেশান হচ্ছে জর্জ ওয়াশিঙ্গটং, আধুনিক ফ্রান্সের জনক নেপোলিয়ন, আধুনিক ইংল্যান্ডের জনক ইংল্যান্ডের রয়াল ফ্যামিলি। এছাড়াও আধুনিক এমেরিকার যিনি প্রোগ্রেসিভ লিডার হিসেবে খ্যাত, যার জন্যে আমেরিকা বাংলাদেশের মত একটা কান্ট্রি থেকে উঠে আজকের সুপার পাওয়ার তার পিছনে অবদান টেডি রোসভেল্ট/থিওডর ডি রোসভেল্টের। তিনিই এই দেশটার ভেঙ্গে যাওয়া অর্থনীতিকে টেনে জাতে তুলেন, মনপলিজম কন্ট্রোল করে বিজনেসে কম্পিটিশন বৃধি করেন। এছাড়া জে এফ কেনেডি, ডব্লিও বুশরা তো আছেনই। এত কথা কেন বলছি?
বলার একটা কারণ আছে। অবাক হলেও সত্য এরা সবাই "ফ্রী মেসন" নামক এক সিক্রেট সোসাইটির সদস্য। এই সোসাইটির আনুষ্ঠানিক জন্ম এমেরিকান রিপাবলিকের জন্মেরও ৩০০ বছর আগে।
মনে প্রশ্ন জাগার কথা কি এই ফ্রী মেসন, কি করে তারা বা কি উদ্দেশ্য তাদের।
সত্যি কথা বলতে ফ্রী মেসন সত্যিকার অর্থে কি করে তা শুধু যারা ফ্রী মেসনের হাই লেভেলের (ওদের ভাষায় ডিগ্রীধারী) ছাড়া কেওই বলতে পারে না। এমনই সিক্রেট এই সোসাইটি বা কমিউনিটি। এরা নিজেদের কাজ কারবার নিয়ে নিজের বউয়ের সাথেও আলাপ করে না/ করতে পারে না।
প্রথম প্রথম যখন ব্লগে ঢুকি তখন কিছু ভাই এই ফ্রী মেসনারী কমিউনিটি নিয়ে কিছু লেখা পোস্ট করেছিলেন। তখন খুব একটা বুঝতাম না/ পাত্তা দিতাম না তাদের ক্ষমতা নিয়ে, ভাবতাম বাড়াবাড়ি করে লেখা।
কিন্তু আজকে স্কুল থেকে ফ্রী মেসনদের প্রাচীন এক বিল্ডিংয়ে ট্রিপে নিয়ে গেল। স্কুল নিয়ে গেছে তা না। কিছু টিচার যারা ফ্রী মেসনের সদস্য তারা নিয়ে গেছে। বিল্ডিঙের আক্ষরিক সৌন্দর্য বলে সময় নষ্ট করব না, শুধু এটাই বলব আমার জীবনের দেখা সবচেয়ে সুন্দর বিল্ডিং। ঢুকার সাথে সাথে মনে হল প্রাচীন মিসরীয় পিরামিডে ডুকে পরলাম। বিল্ডিংটি নির্মিত হয় ১৯১০ সালে।
আমাদের ২৫ জনকে একটা গ্রুপ করে একজনকে সাথে দেয়া হল, যে ২০ তলা বিল্ডিঙের বিভিন্ন রুম ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে দেখাবে। অবাক হলেও সত্য প্রত্যেকটা রুম এক কথায় একই রকম। মেসানরা যখন মিটিঙ্গে বসে তখন তাদের রুমের দরজা অবশ্যই বন্ধ রাখতে হয়। কেও ঢুকতে চাইলে নিদিষ্ট একটা কোড বলে দরজার ওপাশ থেকে তারপর ঢুকাতে হয়। রুমের পশ্চিম পাশে বসেন মাস্টার অফ দা লজ, পূর্ব পার্শে বসেন তার সেক্রেটারিরা। দক্ষিণ পাশে বসেন আরেক সেক্রেটারি আর উত্তর পাশ খালি। রুমের একদম মাঝখানে এক কাঠের বক্স তার চারপাশের ফ্লোর শুধু মোজাইক করা। রুমের বাকি ফ্লোর কার্পেট বিছানো। বাক্সের দুই পাশে দুটি আর এক পাশে একটি মোট তিনটি মোমবাতি যা তিনজন মাস্টারকে সিম্বলাইজ করে। পূর্ব পাশে বাম দিকে দুটি কলাম যার একটার উপর পৃথিবী আরেকটার উপর বিশ্বের গ্লোব যা মেসনারী ইউনিভার্সাল এটা সিম্বলাইজ করে। আর মাস্টার অফ দা লজের মাথার উপর ট্রাই-এঙ্গেলের মধ্যে একটা G যা মূলত জ্যামিতির প্রথম অক্ষর। আজকে যে রুম গুলোতে ঘুরলাম তার সবগুলোতে এই জিনিসগুলো সেইম, শুধু রুমের কালার, কার্পেটের কালার, কলামের কালার ভিন্ন। এই সেই রুম যেগুলোতে এমেরিকান প্রেসিডেন্ট রোসভেল্টরা বসেছেন, তারা এমেরিকান ভবিষ্যৎ নির্মাণ করেছেন। ভাবতেই গায়ে কাটা দিয়ে উঠল।
ঢুকার পর থেকে আমার প্রশ্নবাণে গাইড ভদ্রলোক অতিষ্ঠ ছিলেন। কিন্তু অনেক টেকনিক্যালি প্রশ্ন করেও কোন কিছুরই পূর্ণ উত্তর ভদ্রলোকের মুখ থেকে বের করতে পারি নি। কেন এই সোসাইটি সিক্রেট এটার উত্তরে উনি বলেন কারণ মেসন মেম্বার রা চায় না তাদের মিটিং অন্য কেও জানুক। কেন চায় না এই প্রশ্নের উত্তর আর দেন নি। কথা ঘুরিয়ে অন্য কথায় চলে যান।
কি মেসনদের লক্ষ্য বা কর্ম এই প্রশ্নের উত্তরে বলেন চ্যারিটি বা দান। তারা হসপিটাল বানায় এই বানায় সেই বানায়। কিন্তু এসবের পিছনে তাদের কি লাভ এটা জিজ্ঞেস করলে বলেন মেসানরা লাভের জন্যে এসব করে না ঈশ্বরকে সন্তুষ্ট করতে আর তাদের প্রাচীন পাপ থেকে মুক্তি পেতে করেন। কি তাদের প্রাচীন পাপ এই প্রশ্নের জবাব ভদ্র লোক আর দেন নি। কেন দেন নি আমি জানি না। তিনি হয়ত সেই অধিকার রাখেন না বা জানাতে নিষেধ আছে।
মেসন কিভাবে হতে হয় এটা কিন্তু আবার সুন্দর ভাবে ব্যাক্ষা করেন। মেসন হতে হলে মিনিমাম বয়স ২১ বছর হতে হবে। একজন সুপ্রিম গডে বিশ্বাস করতে হবে, কিন্তু সে গড আল্লাহ, নাকি জেওভা ইট ডাসেন্ট ম্যাটার। ম্যাসান হতে হলে বাইবেল/তোরাহ/কোরানে যেকোনো একটা বই অই মাঝখানের বক্সে রেখে তার উপর ম্যাসানদের প্রতীক স্কয়ার স্ক্যাল অ্যান্ড কম্পাস রেখে শপথ নিতে হবে। এই তিনটা বইতে মেসানরা বিশ্বাস করে। কোন এথিস্ট বা প্যাগান ম্যাসান হতে পারে না। কোন মহিলাও পারে না। তারপরেও অনেক কিছু অজানা থেকে যায়। যতদূর জানি এই সোসাইটির জন্ম সোলাইমান (আ)/কিং সোলোমন টেম্পল থেকে, এটা বলার পর ভদ্রলোক বলেন আসলে ঠিক। কিং সোলোমন তার টেম্পলে (বায়তুল মুকাদ্দাসে) পশ্চিম পাশে বসতেন তাই আমাদের মাস্টাররাও পশ্চিম দিকে বসেন। কিং সোলমনের রুমের মাঝে এরকম একটা বক্স ছিল যার চারপাশে মোজাইক করা আর এই রুমগুলোর বক্স সেটাই রিপ্রেসেন্ট করে। কিন্তু মেসনদের সাথে ইলুমিনাটির কি রিলেশন সেই প্রশ্নের পর ভদ্রলোক কোন জবাব না দিয়ে পাশ কাটান। এই ভাবেই কেটে যায় দিনটি।



(ছবিতে দেখা যাচ্ছে পূর্ব দিক, সেক্রেটারিদের চেয়ার আমার পিছনের দেয়ালে। আমারপিছনে সেই সোলোমন টেম্পলের বক্স। পিছনে দেখা যাচ্ছে দুই পাশে দুটি দরজা, এক দরজার পাশে দুটি ছোট কলাম একটার উপর পৃথিবীর গ্লোব আরেকটার উপর ইউনিভারসের গ্লোব। মাস্টার অফ দা লজ বসেন আমি যেদিকে তাকিয়ে আছি সেদিকের দেয়ালে। পিছনে অই ভদ্রলোক ব্যক্ষা করছেন সব। )
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে মে, ২০১৪ বিকাল ৪:২৯
৭টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ফখরুল সাহেব দেশটাকে বাঁচান।

লিখেছেন আহা রুবন, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:৫০





ফখরুল সাহেব দেশটাকে বাঁচান। আমরা দিন দিন কোথায় যাচ্ছি কিছু বুঝে উঠতে পারছি না। আপনার দলের লোকজন চাঁদাবাজি-দখলবাজি নিয়ে তো মহাব্যস্ত! সে পুরাতন কথা। কিন্তু নিজেদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হচ্ছে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। প্রধান উপদেষ্টাকে সাবেক মন্ত্রীর স্ত্রীর খোলা চিঠি!

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:০৩




সাবেক গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনকে মুক্তি দিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে খোলা চিঠি দিয়েছেন মোশাররফ হোসেনের স্ত্রী আয়েশা সুলতানা। মঙ্গলবার (২৯... ...বাকিটুকু পড়ুন

কেমন হবে জাতীয় পার্টির মহাসমাবেশ ?

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:৫৬


জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিক্ষুব্দ ছাত্র জনতা আগুন দিয়েছে তাতে বুড়ো গরু গুলোর মন খারাপ।বুড়ো গরু হচ্ছে তারা যারা এখনো গণমাধ্যমে ইনিয়ে বিনিয়ে স্বৈরাচারের পক্ষে কথা বলে ,ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ হওয়াতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

দ্বীনদার জীবন সঙ্গিনী

লিখেছেন সামিউল ইসলাম বাবু, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১২:১৩

ফিতনার এই জামানায়,
দ্বীনদার জীবন সঙ্গিনী খুব প্রয়োজন ..! (পর্ব- ৭৭)

সময়টা যাচ্ছে বেশ কঠিন, নানান রকম ফেতনার জালে ছেয়ে আছে পুরো পৃথিবী। এমন পরিস্থিতিতে নিজেকে গুনাহ মুক্ত রাখা অনেকটাই হাত... ...বাকিটুকু পড়ুন

জাতির জনক কে? একক পরিচয় বনাম বহুত্বের বাস্তবতা

লিখেছেন মুনতাসির, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৮:২৪

বাঙালি জাতির জনক কে, এই প্রশ্নটি শুনতে সোজা হলেও এর উত্তর ভীষণ জটিল। বাংলাদেশে জাতির জনক ধারণাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যেখানে একজন ব্যক্তিত্বকে জাতির প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে মর্যাদা দেওয়া হয়। তবে পশ্চিমবঙ্গের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×