
রূপচাঁদা ফ্রাই, গলদা চিংড়ী ফ্রাই, বীফ শিক কাবাব, কাঁকড়া , নান, চিকেন বারবিকিউ আর ব্যাকগ্রাউন্ডে আইয়ূব বাচ্চুর " সেই তারা ভরা রাতে, আমি পারিনি বোঝাতে " -চারপাশ আলোকিত ক্যাম্প ফায়ারে, অথচ একসাথে পাওয়া এতগুলো প্রিয় খাবার চেখে দেবার অনুমতি মিলছেনা , লাইট -ক্যামেরা, এ্যাকশান- ফাইভ ফোর থ্রী টু ওয়ান !!!! কতক্ষনই আর এই কথা শুনতে ভাল লাগে । উপায় নেই, শুনতে হবে, না হলে যে খাবার মিলবেনা

লুমিক্স ক্লিক টু ফেইম এর দশ প্রতিযোগীর আর সাথে আমরা যারা আছি তাদের অভিজ্ঞতা ধারন রেকর্ড করা হচ্ছে। সমুদ্রের গর্জন আর গা জুড়ানো বাতাসে সাগরের বালিয়াড়িতে চলছে এই আয়োজন। প্রথম বারের মত টিভি ক্যামেরায় অভিজ্ঞতা বর্ণনা করার সুযোগ, কিছুটা নার্ভাস বোধতো আছেই , সেই সাথে এক রাস্তায় বারবার হেঁটে আসা, পরিচালকের দৃশ্যায়ন মনঃপূত না হওয়ায় । খুব বেশী সময় তারা নেননি, পরিচালক মিঠু ভাই আর রুমা আপুও নিশ্চিত উপরোক্ত খাবারের লোভে ক্যামেরা আর মাইক্রোফোন নিয়ে বেশী সময় নস্ট করতে চাননি


এর আগে সকালের নাস্তার পর প্রতিযোগীদের নিয়ে যাওয়া হয়েছিল মেরিন ড্রাইভ ধরে ইনানীর পথে। সেখানে তাদের কে গ্রুপে ভাগ করে ছেড়ে দেওয়া হয়। তারা মনের মত করে ছবি তুলতে থাকে, সাথে চলে ক্যামেরায় সে দৃশ্য ধারন। আমার কাজ উপভোগ করা, আমি তাইই করছি, কিন্তু ছবি তোলার শখ টাত আর চেপে রাখা যায়না। প্রতিযোগীতার জন্য না হউক আমার নিজের শখের বশে আমিও শার্টার ক্লিক করে চলি।
উপভোগ করার জন্য চাপ মুক্ত থাকা গুরুত্বপূর্ণ। একটা সাবজেক্ট পেলে সব প্রতিযোগীর সে দিকে ছুটে যাওয়া, তারপর এসে আক্ষেপ করা ধুর সবাই ই একই ছবি তুলে ফেলল- মজা লাগে শুনতে। কেউ কেউ নিজেই নেমে পড়ল সাবজেক্ট রেডী করার জন্য। সাগর পাড়ের জলকন্যাদের ডেকে নিয়ে কূলে থাকা লতাপাতা ফুল দিয়ে নিজেরাই তৈরি করে নিচ্ছে নিজের পছন্দ মত শর্ট।

অংশগ্রহনকারীদের মাঝে আছেন পঞ্চাশোর্ধ মহিলা থেকে বিশ বছরের টগবগে তরুন। উপভোগ্য বিষয় হচ্ছে ক্লান্তিহীন ভাবে সমান তালে তারা ছুটে চলেছেন। প্রতিযোগীদের প্রায় সবাই ফটোগ্রাফীতে নতুন , খুব বেশী বেসিক নলেজ যে তাদের নেই সেটাও বোখা যায় দৃশ্যধারনের প্রস্তুতি দেখে । অবশ্য আয়োজকদের কাছ থেকে জানা গেল লুমিক্স ব্র্যান্ডের উদ্দেশ্যই অনেকটা এই রকম নতুন ফটোগ্রাফারদের প্রমোট করা এবং এই চর্চাকে ছড়িয়ে দেয়া ।
ফটোগ্রাফীর জন্য সর্বাগ্রে প্রয়োজন দেখারমত চোখ আর তা ধারন করার জন্য টেকনিক্যাল নলেজের পাশাপাশি নিজস্ব মনন তথা কম্পোজিশন সেন্স। এর জন্য একটু লেখাপড়ার ও দরকার আছে। আগামী পর্বগুলোর আগে প্রতিযোগীরা যদি এই বিষয়ে একটু মনোনিবেশ করে তবে সেটা তাদের জন্যই লাভবান হবে। গতানুগতিক ছবি তোলার ছেয়ে একটু ভিন্ন দৃস্টিকোন থেকে দেখাটা একটা ছবিকে সম্পূর্ণ নতুন ভাবে উপস্হাপন করতে পারে। সবকিছু ছাপিয়ে যদিও প্রতিযোগীদের উৎসাহটাও অনেক উপভোগ্য, আর সাথে টিভি ইউনিটের কর্মব্যস্ততা আছে। ঘুরতে ঘুরতে ভাবছিলাম ফ্লীম মেকিং এ নেমে পড়ব কিনা


পরের গন্তব্য ছিল রাখাইন পল্লী। আমরা সৌভাগ্যবানই বলতে হবে সেখানে গিয়ে দেখলাম তাদের নতুন বর্ষবরন অনুস্ঠান হচ্ছে দেখে । জলছিটানো উৎসব আর রাখাইন গানে মেতে আছে পুরো এলাকা । রাখাইন গানে সত্যিই বিমোহিত হলাম। সাম্প্রদায়িক সম্প্রিতীর সুন্দর নিদর্শন বলতেই হবে,সবাই মিলে উপভোগ করাটাকে, জেলা প্রশাসক আছেন সেখানে অন্য কর্তারা সহ। আমরা বাংলাদেশীরা চাইলে কতসুন্দর একটি সমৃদ্ধ দেশ বানানো সম্ভব- আর কোন পথে আমরা হেঁটে চলেছি !!!!
সেখান থেকে আমাদের যাত্রা সূর্যাস্ত অবলোকনে , আর প্রতিযোগীরা ব্যস্ত তা ধারনে।
এভাবে শেষ হল প্রতিযোগীতার আউটডোরের প্রথম পর্ব। পরের গন্তব্য "দুটি পাতা একটি কুঁড়ি " তথা বাংলাদেশের চা রাজধানী শ্রীমঙ্গল।
-----------------------------------------------------------
আমার তোলা কিছু ছবি:
আমাদের সচেতনতা:

কক্সবাজারেও এখন সার্ফিং হয়:

আমার বাংলাদেশ:
স্বপ্ন গুলো বাঁধা জল আর ধোঁয়ায়:

জলকন্যা ফুল সাজে:

ধারনের ধারন পর্ব:

পারাপার:

একটি ছবি দে না আমায়:

দুরন্ত শৈশব:

অপেক্ষা :

কঠিন পদার্থ ভাল শব্দ পরিবাহক:

মারমেইড ইকো রিসোর্ট:

আমার প্রিয় সময়:

