সুইমিংপুলের কৃত্রীম জলে দাপাদাপি করেই আমরা খুশী থাকি..... নীল রং দেয়া আধারে সে পানি দেখতে ভীষন ভাল লাগে। কিন্তু এমন প্রকৃতিক জলাধার দেখে "কালার অব প্যারাডাইস" মুখ দিয়ে আমার এই কথাটাই বের হয়ে আসে।
কাক ডাকা ভোরে উঠে কুয়াশা ঘেরা চা বাগানে এক দফা ফটোসেশন শেষে আমরা ছুটে চলি সিলেটের দিকে- গন্তব্য লালা খাল। জাফলং রোডে সারি নদীর উপর একটা ব্রীজ আছে। সেখানে নেমে সারি নদীর উৎস মুখে গেলে সেটাই লালা খাল নামে পরিচিত।

এর আগে লালা খালের কিছু ছবি দেখে আমি সেটাকে সরাসরি ফটোশপের কারসাজি বলে ধরে নিয়েছিলাম। আর তাই লালা খালের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত দেখার ইচ্ছা মনের মধ্যে লালন করে চলেছিলাম।
একটা বড় ইন্জিন নৌকা ভাড়া করে শুরু হল আমাদের লালা খাল দর্শন। স্বচ্চ জলরাশি - অগভীর তলদেশ ও দৃশ্যমান। এই মুহুর্তে এটাই মনে হয় বাংলাদেশের সবচেয়ে পরিষ্কার পানির নমুনা।
যতই সামনে আগাই জলরং যেন ততই মুগ্ধ করতে থাকে আমাদের। কবি হলে নিশ্চিত কয়েক ছত্র লেখা হয়ে যেত । মুগ্ধতা বাড়তে থাকে..............এক সময় আমরা লালা খালের শেষ সীমায় এসে পড়ি, সেখানে বিডিআরের বিওপি আছে.।আরও কিছুদূর আগালে ভারত সীমান্ত।
ঐ নীল জলে অপলক তাকিয়ে থাকি , আমি ভাষা খুজে পাইনা.......কালার অব প্যারাডাইস বলে যেন নিজেকে প্রবোধ দিই । এমন জল দেখলে কার মাথা ঠিক থাকে, আমার ও ঠিক ছিলনা, নেমে পড়ি- এপাড় থেকে ওপাড় ।
(এইপারে ব্লগার পাথুরে ঐ পারে আমি !!!)
আমাদের দেশটা কত যে সুন্দর, মুগ্ধতা তার পড়তে পড়তে........জানি এই পৃথিবীর অনেক কিছু আরও অনেক বেশী সুন্দর, তার উপর তো আর আমার কোন অধিকার বোধ নেই । ক্ষুদ্র এই ভূমির প্রতি পড়তে পড়তে যে আমার অধিকার বোধ ছড়িয়ে আছে , স্বদম্ভে আমি বলতে পাড়ি এটা আমার দেশ, এই মাটি এই জলে আমার অধিকার।
মুগ্ধতা, ভাল লাগা নিয়ে ফিরতি পথে পা বাড়াই । ঢাকায় প্রবেশের আগে এফ এম রেডিও তে খবর শুনি............কাঁদা ছোঁড়া ছুঁড়ির গল্প শুনি। প্রতি মিনিটে লাখ টাকা খরচ করে চলে এই কাঁদা ছোঁড়া ছুঁড়ি ।
মুগ্ধতা, ভাল লাগা উবে যায়..........................তীব্র হতাশা সেখানে উঁকি দেয় । প্রচন্ড আশাবাদী আমিও কেমন মুষড়ে পড়ি - তবুও স্বপ্ন দেখি !!! একদিন আমরা, আমাদের দেশটা ...........