সভ্য মানুষ ব্যবসার গন্ধ পেলে করবেনা এমন কাজ খুব কমই আছে মনে হয় । কুমীরের খামার তাই নামটা আমার পছন্দ হয় নাই। ভাল হইত কুমীর ফ্যাক্টরী দিলে। পেপারে অনেক আগে এই নিউজ দেখেছিলাম, বাংলাদেশে কুমীরের চাষ হচ্ছে । দেখার লোভ তখন থেকেই , অবশেষে সেই সুযোগ এল। টার্গেট ডেসটিনেশন ছিল শেরপুরের গজনী। যাবার পথে ঠিক করলাম কুমীরের খামারটাও দেখে যাব।
ময়মনসিংহ যাবার পথে ভালুকার ভরাডোবা হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির পাশ দিয়ে বামে গেলে উথরা বাজার। সেই বাজারের একটু সামনেই এই কুমীর ফ্যাক্টরী- Reptiles Farm ltd ।
বিশ্বমানের চামড়া সরবরাহকে টার্গেট করে যাত্রা শুরু এই খামারের। ২০১৫ সালের মাঝে বছরে ৫০০০ পিছ চামড়া রপ্তানী করে ৫ মিলিয়ন ডলার আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে কাজ করে চলেছে তারা। ৭৫টি কুমীরের আমদানীর মধ্য দিয়ে যাত্রা শুরু এই খামারের।
৬৭ টি এখন ও জীবিত আছে। ২০০৬ সালে প্রথম ডিম থেকে ৩টি বাচ্চা হলেও একটিও বাঁচেনি। পরের বারে হওয়া ১৪টিও নয়। সাফল্য আসে ২০০৭ এ। প্রায় ২৫০টি বাচ্চা হয়। তার পরের বার ৪০০টি। এখন প্রায় ৮০০টি বাচ্চা আছে এখানে।
মাঝারী মানের বাচ্চা গুলোকে চৌবাচ্চায় রাখা হলেও ছোট গুলোকে কই রাখা হয় আমাদের দেখতে দেয়া হয়নি
বড় গুলাকে মাংস , মুরগী দেয়া হয় প্রতি শনিবার । এক খাবারে সাত দিন পার করে দেয় ।ইস আমরাও যদি এমনটি পারতাম ।
চৌবাচ্চায় দেয়া হয় মুরগীর মাথা , মাংসের টুকরা। আর ইনকিউবিটরে দেয়া হয় মাংসের কিমা।
শীত কালে কুমীর কিছুই নাকি খায়না। মাসে প্রায় ২ লাখ টাকা যায় খাওয়া দাওয়ার পিছনে।
চামড়ার পাশাপাশি মাংস, হাড় , দাঁত সব কিছুর ই বানিজ্যিক মুল্য আছে। দাঁত দিয়ে তৈরি হয় অলংকার।
খামারের প্রবেশ ফি ২৫০ টাকা অনেক বেশী বলাতে ম্যানেজার নাছির ভাই জানালেন শুরুতে ২০ টাকা ছিল। মানুষ সামলানো দায় হয়ে পড়ত। কাছাকাছি যেতে না বললে উত্তর দিত টাকা দিয়ে ঢুকেছি সমস্যা কি। তাই ২৫০ টাকা করে দিছি, এখন যারা আসে তাদের কে নিয়ে তেমন একটা সমস্যা হয়না।
কিভাবে যাবেন :
ঢাকা থেকে ময়মনসিংহ এর বাসে করে যেতে পারেন। ভালুকার আগে ভরাডোবা পুলিশ ফাঁড়ির সামনে নামবেন। সেখান থেকে উথরা বাজার এর কিছু সামনে গেলেই পাবেন এই খামার।
আর ব্যক্তিগত গাড়ীতে যেতে পারলে আরও ভাল। পুরা পথেই সিএনজি পাম্প আছে।
http://www.reptilesfarm.net