somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

স্বপ্ন এত ছোট কেনে?

২৯ শে নভেম্বর, ২০০৮ দুপুর ১:০১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

প্রথম ব্লগ। কি বিষয়ে লিখি তাই ভাবছিলাম। হঠাৎ মনে পড়ল কয়েকদিন আগে প্রথম আলোতে আনিসুল হকের "স্বপ্ন এত ছোট কেনে?" এই শিরোণামে একটি গদ্য কার্টুন পড়েছিলাম। তিনি শিরোণামটি নিয়েছেন তারা শংকরের 'কবি' উপন্যাসের নায়কের অনুকরণে। সেখানে অবশ্য নায়ক গেয়েছিল "হায়, জীবন এত ছোট কেনে?"। যাই হোক এই লেখার উপর ভিত্তি করেই আমার মনে আসা কিছু চিন্তা আপনাদের সাথে শেয়ার করছি:

কথায় বলে, ছালায় শুয়ে লাখ টাকার স্বপ্ন। মানে খুব বেশী স্বাপ্নিক হলে সমস্যা। এটি যেমন একটি সমস্যা তেমনি খুব ছোট স্বপ্ন হলেও সমস্যা। স্বপ্ন খুব ছোট হলে যে সমস্যা হয় তা হল, বড় স্বপ্ন পূরণের দিকে যাওয়ার অনুপ্রেরণা থাকেনা। এটি খুবই পরিষ্কার হবে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের দিকে তাকালে। ছোট খাট সাফল্যে দল ও দর্শক এমন খুশিতে ফেটে পড়ে যে ধারাবাহিক ভাবে ভাল করা এবং আরো ভাল পারফর্ম করার দিকে এগিয়ে যাওয়া সম্ভব হয় না। অতি আবেগের নেতিবাচক প্রভাব যে সত্যিই রয়েছে তার প্রমাণ খোদ বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক আশরাফুলের কথা থেকেই পাওয়া গেছে। একদিন তাকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল কেন তিনি ধারাবাহিক ভাবে ভাল করতে পারেননা। তার উত্তর ছিল অনেকটা এরকম: আসলে একদিন ভাল করার পর আমি এত বেশী খুশি হয়ে যাই যে তার প্রভাবে পরবর্তী অনেকদিন ভাল করতে পারিনা।

আসলেই আমরা জাতিগত ভাবেই খুবই আবেগ প্রবণ। আর আবেগ প্রবণ হবার কারণে আমরা খুব অল্পেই অতিশয় আবেগে উদ্বেলিত হয়ে পড়ি। আর এ বিষয়টিই প্রথম আলোতে আনিসুল হক তার "স্বপ্ন এত ছোট কেনে?" শিরোণামের গদ্যকার্টুনে তুলে ধরেছেন। তিনি সশস্ত্র বাহিনী দিবসে শেখ হাসিনা ও খালেদা জিয়ার সংক্ষিপ্ত কুশল বিনিময়ের ব্যপারে মিডিয়ার প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে লিখেছেন। আসলেই খালেদা ও হাসিনার কয়েক মিনিটের আলাপ মিডিয়া যে ভাবে হাইলাইট করল তা আমাকেও কিছুটা কৌতুকদ্দীপ্ত করে তুলেছিল। আনিসুল হক লিখেছেন, "সশস্ত্র বাহিনী দিবসে বেগম খালেদা জিয়া আর শেখ হাসিনা পাশাপাশি দাড়িয়েছিলেন। তাদের মুখে হাসি ছিল। তারা কুশল বিনিময় করেছেন। শেখ হাসিনা নাকি জানতে চেয়েছেন, বিশেষ কারাগারে যখন পাশাপাশি থাকতেন তারা, তখন বেগম জিয়ার জন্য তিনি খাবার রেধে পাঠিয়েছিলেন, সেটা বেগম জিয়া পেয়েছেন কি না! এরকমই কথা বার্তা। কিন্তু সেটাই হয়ে উঠল আমাদের টেলিভিশন ও খবরের কাগজগুলোর প্রধান খবর। একটার শিরোনাম ছিল, জাতির স্বপ্নপূরণ।"

আসলেই এ রকম শিরোনাম কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? অবশ্যই দু নেত্রীর কথা বলাকে, হাত মেলানোকে আমরা স্বাগত জানাব। বরং সরল দৃষ্টিতে তো মনে হচেছ কথা বলা, হাত মেলানো খুবই স্বাভাবিক। আর সে জন্যই একে এমনভাবে হাইলাইট করায় আমি নিতান্ত অবাক হতে হয়েছে। আমরা তো আশা করি দু নেত্রী শুধু কথা বলবেননা তারা দুজনের প্রতি সহনশীলতা প্রদর্শন করবেন। তাদের মতদ্বৈতা যেন জাতিকে দুভাগ করে না ফেলে, জাতিকে সংঘাতের মুখে ঠেলে না দেয় সেদিকে খেয়াল রাখবেন। অথচ অতীতে আমরা এমনটিই হতে দেখেছি বার বার। কিন্তু দুজনেই সাবেক প্রধান মন্ত্রী ছিলেন। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন -কোন দলের নয়! তাই আমাদের বিশ্বাস দু'জনেই এ দেশের ভালই চান। আর তাই জাতীয় স্বার্থে একাট্টা হয়ে কাজ করতে হবে তাদের। নতুবা জাতি দুর্বল থেকে দুর্বলতর হতেই থাকবে। তাই বলছিলাম আমাদের স্বপ্ন তো অনেক বড়। দু'জনে দু'মিনিট কথা বলাটা অবশ্যই ভাল হয়েছে। তবে আমাদের স্বপ্ন এতটুকুতেই সীমাবদ্ধ রাখতে চাই না। আমরা আরো বড় এবং গুরুত্বপূর্ণ স্বপ্নপূরণের জন্য অপেক্ষা করছি। সেজন্য তাদের অতি স্বাভাবিক সৌজন্যমূলক কুশল বিনিময়কে আমরা খুশির সাথেই নিতে চাই কিন্তু আহলাদে আটখানা হতে চাই না। আমরা দেখতে চাই রাজনীতিতেও তাদের এই সৌজন্য বজায় থাকবে।



সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে নভেম্বর, ২০০৮ দুপুর ১:০৩
১০টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ট্রাম্প ভাইয়ের প্রেসিডেন্সিয়াল টিমের সদস্য এর মধ্যে এই তিন জন সদস্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

লিখেছেন অতনু কুমার সেন , ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৮:৪৮

প্রথম জন হলো: জেডি ভান্স, উনি মেবি ভাইস প্রেসিডেন্ট হচ্ছেন। ভদ্রলোকের বউ আবার ইন্ডিয়ান হিন্দু। ওনার নাম উষা ভান্স। পেশায় তিনি একজন অ্যাডভোকেট।

দ্বিতীয় জন হলো বিবেক রামাস্বামী। এই ভদ্রলোক আরেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

দেশে ইসলামি আইন প্রতিষ্ঠা করা জরুরী?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:০২



বিশ্ব ইসলামের নিয়মে চলছে না।
এমনকি আমাদের দেশও ইসলামের নিয়মে চলছে না। দেশ চলিছে সংবিধান অনুযায়ী। ধর্মের নিয়ম কানুন মেনে চললে পুরো দেশ পিছিয়ে যাবে। ধর্ম যেই সময় (সামন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

আসল 'আয়না ঘর' থাকতে রেপ্লিকা 'আয়না ঘর ' তৈরির প্রয়োজন নেই।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১১:৩৮


স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকারের জুলুম থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য ৫ই আগস্ট সর্বস্তরের জনতা রাস্তায় নেমে এসে। শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যান। দীর্ঘ ১৫ বছরের শাসন আমলে অসংখ্য মানুষ কে... ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি হাজার কথা বলে

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ০৮ ই নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৩:৫৩

আগস্টের ৩ তারিখ আমি বাসা থেকে বের হয়ে প্রগতি স্মরণী গিয়ে আন্দোলনে শরিক হই। সন্ধ্যের নাগাদ পরিবারকে নিয়ে আমার শ্বশুর বাড়ি রেখে এসে পরদিনই দুপুরের মধ্যেই রওনা হয়ে যাই। আগস্টের... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। নিজের বানানো টেলিস্কোপ দিয়ে কালপুরুষ নীহারিকার ছবি

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৮ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১১:৩৯






ঢাকায় নিজের বাসার ছাদ থেকে কালপুরুষ নীহারিকার ছবি তুলেছেন বাংলাদেশি অ্যাস্ট্রোফটোগ্রাফার জুবায়ের কাওলিন। যে টেলিস্কোপ দিয়ে তিনি এই ছবি তুলেছেন, সেটিও স্থানীয় উপকরণ ব্যবহার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×