জনাব ফখরুল স্যার তার জন্মদিনে সবার শুভেচ্ছা গ্রহণ করে অভিনন্দন জানিয়েছেন সাথে নির্বাচন দ্রুত দেওয়ার জন্য আহবান করেছেন!! বিএনপি সব নেতার মুখে একটাই শব্দ নির্বাচন! নির্বাচন!
নির্বাচনের বল কিন্তু বিএনপির কোটে এটা বিএনপি বুঝেও না বোঝার ভান করছে কারণ তারা বুঝলে তাদের অনেকের জন্য রাজনীতি করা কঠিন হয়ে যাবে, আসুন একটু ব্যাখ্যা করি।
এই সরকার মূলত এসেছে ছাত্র-জনতার সফল অভ্যুত্থানের ফলে বিএনপি জামায়ত সহ সরকার বিরোধী সব দলের অংশগ্রহন থাকলেও মূলত ছাত্ররা সম্মুখে সারিতে ছিল এই জন্য এই সরকারে তাদের একটি প্রভাব বলয় তো আছেই আবার সরকার তাদের মতামতকে যথেষ্ট সম্মান করছে। ছাত্ররা তাদের সহপাঠীদের লাশ আর রক্তে রাজপথে ভিজানো দৃশ্য দেখেছে অতএব কোনভাবেই যেনতেন নির্বাচন তারা আর চায় না, যে নির্বাচন অদূর ভবিষ্যতে আরো একটি দানব তৈরি হওয়ার সুযোগ থাকে, বরং তারা পূর্ণ সংস্কারের পরে নির্বাচন চায় আর এই জন্য সব দলের মধ্যে মতৈক্য আদায়ের চেষ্টা করছে কারণ সংস্কার হওয়ার পর তা পাশ করার জন্য নির্বাচিত সংসদ লাগবে অতএব মতৈক্য হয়ে গেলে আর সমস্যা থাকবে না কারণ লিখিত চুক্তি থাকবে।
বিএনপিও সংস্কার চাচ্ছে তবে অল্প কিছু সংস্কার যা নির্বাচন নির্বাচন খেলা পর্যন্ত যাওয়া যায়!! কেন?
কারণ সংবিধান সংস্কার কমিশন যে সুপারিশগুলো করেছে তার ভিতরের কয়েকটি মোটা দাগে বিএনপি কোনভাবেই মানবে না আবার প্রকাশ্যে বিরুদ্ধে যেতেও পারছে না কারণ ঐ পয়েন্টগুলি সাধারণ জনগনের পূর্ণ সম্মতিত।
এক, দুই বারের বেশি কেউ প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি হতে পারবে না!! দুইবার প্রধানমন্ত্রী হলে পরে আর রাষ্ট্রপতি হতে পারবে না।
বিএনপি এটা মানবে না তারা ৩১ দফায় বলছে পরপর দুইবার হয়ে বিরতি নিয়ে আবার হতে পারবে!! পরিবারতন্ত্র বাঁচিয়ে রাখতে হলে এটার বিকল্প বিএনপির হাতে নেই!!
দুই, যে প্রধানমন্ত্রী হবে যে দলে প্রধান হতে পারবে না!!
এই প্রস্তাব মানলে পরিবারতন্ত্র বিলুপ্ত হবে কিন্তু যারা শহীদ জিয়ার নাম ভাঙ্গিয়ে রাজনীতি করে হালুয়া-রুটি উপার্জন করে তাদের মাথায় হাত উঠবে তারা কি প্রস্তাব মানবে?
তিন, চার বছর মেয়াদী হবে নিম্নকক্ষ ও উচ্চকক্ষ!!
এটা যারা রাজনীতিকে পেশা নিয়ে আয় রোজগার করে তাদের জন্য খুব সমস্যা হবে অতএব তারা মানবে না।
বিএনপি ৩১ দফায় উচ্চকক্ষের কথা বলেছে কিন্তু উচ্চকক্ষ কিভাবে হবে তা উল্লেখ করেনি তাদের কোন বক্তব্যে শুনেছি বলে মনে হয় না সম্ভত তারা চেয়েছিল সংরক্ষিত নারী আসনের মত করে নির্বাচিত করতে সংসদীয় আসনের উপর নির্ভর করতে কিন্তু এখন যেভাবে প্রস্তাব আছে তাতে কোন দল উচ্চকক্ষে সংখ্যাগরিষ্টতা পাবে না আর আইন পাশ করতে হলে উভয় কক্ষে পাশ হতে হবে!! এমন ঝামেলা কি বিএনপি মেনে নেবে?

বল তাহলে কিভাবে বিএনপি কোটে?
বিএনপি যতই লাফালাফি করুক আন্দোলনের ভয় দেখাক একটা ভারসম্য সংস্কার না আসা পর্যন্ত ছাত্ররা নির্বাচন করতে দিবে না, দেশের সাধারণ জনগন ও ডিপ স্টেট তাদের সাথেই আছে। বিএনপি এর পরেও যদি আন্দোলন করতে মাঠে নামে তাহলে তাদের সাথে নামবে লীগের সন্ত্রাসীগোষ্টি ইউনুচ সরকার উৎখাত হলেও মধু কিন্তু বিএনপি খেতে পারবে না, লীগ এখনো দমে যায়নি তাছাড়া তাদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে এলাকায় তাদের মামলা থেকে বিএনপি চমৎকারভাবে দূরে রেখে লালন করছে।
বিএনপি সবচেয়ে ভাল হয় যত দ্রুত পারে সংস্কার বিষয়ে তাদের মতামত প্রকাশ করা প্রয়োজনে নিজেদের উদ্যোগে সর্বদলীয় বৈঠক আহবান করে দেশের বুদ্ধিজীবিদের অংগ্রহণ নিশ্চিত করে আলোচনা চালিয়ে যাওয়া যতক্ষন পর্যন্ত একটা মতৈক্য না আসে। বিএনপি যদি ভাবে আমরা বড় দল হেন করবো তেন করবো তাহলে বোকার স্বর্গে বাস করছে।
সংস্কারের একটা ভাল অবস্থান তৈরি হলে সাধারণ জনগনও নির্বাচনমূখী হওয়ার জন্য আওয়াজ তুলবে তখন বিএনপি তাদের জনপ্রিয়তা যাচাইয়ের সুযোগ পাবে।
বিএনপির এক হাফ সেলেব্রেটি দেখি নাহিদকে শিশু উপদেষ্টা বলে টিটকারী দিয়ে পোষ্ট করছে নিয়মিত কিন্তু তাকে দেখলাম সালাউদ্দিনের ব্যাগ টেনে বিমান বন্দরের বিদায় জানাতে গেছে!! শিশু উপদেষ্টারা যোগ্যাতায় মন্ত্রালয় চালাচ্ছে আর এরা হালুয়া রুটির আশায় ইতিমধ্যে সিনিয়রদের তেলমারা শুরু করেছে!!
বিএনপি যদি ধরা খায় এবার তা খাবে তাদের অতি আত্নবিশ্বাস আর অংহকারের জন্য।
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে জানুয়ারি, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:৩৯